ঢাকা ১ আশ্বিন ১৪৩১, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১৫ আগস্ট কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে নামবে আ.লীগ

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:০৫ এএম
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১১:১৩ এএম
১৫ আগস্ট কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে নামবে আ.লীগ
আওয়ামী লীগ

আগামী ১৫ আগস্ট ঘিরে মাঠে নামতে চায় আওয়ামী লীগ। ওই দিন বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণ দিবস ও জাতীয় শোক দিবসে ঐতিহাসিক ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে কর্মসূচি পালন করবেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা। সেই লক্ষ্যে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দলটির নেতা-কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। দলীয় একাধিক সূত্রে এমন খবর জানা গেছে। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ১৫ আগস্ট মাঠে নামলেই এটাই হবে আওয়ামী লীগের প্রথম রাজনৈতিক মাঠে জানান দেওয়া। শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার এক সপ্তাহের বেশি সময় রাজনৈতিক মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ ও দলের সব সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দলটির প্রায় অর্ধেকের বেশি নেতা এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন। এখন পর্যন্ত দলের শীর্ষ কোনো নেতা প্রকাশ্যে আসেননি। কিন্তু আগামী ১৫ আগস্ট ‘জাতীয় শোক’ দিবসে দলের নেতা-কর্মীরা রাজনৈতিক মাঠে আসতে চাইছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায় থেকে নেতারা কর্মীদের ১৫ আগস্টে শান্তিপূর্ণভাবে মাঠে নামার বার্তা দিয়েছেন। 

এদিকে ‘জাতীয় শোক’ দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের সরকারি ছুটি বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে উপদেষ্টা পরিষদ। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সরকারিভাবে পালন করা হতে পারে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নির্দেশনায় দলের অন্যান্য সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ঢাকা ও আশপাশের নেতা-কর্মীদের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রাঙ্গণে সমাগত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সারা দেশে নেতা-কর্মীরা স্ব স্ব এলাকায় কর্মসূচি পালন করবেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা, মৌন মিছিল, মোমবাতি প্রজ্বালন, মিলাদ-দোয়া মাহফিল, শোক মিছিলসহ অন্যান্য কর্মসূচি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির এক নেতা খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর আহ্বান জানিয়েছি। নেতা-কর্মীরা শ্রদ্ধা জানানো শেষে দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন। কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়াবেন না তারা।’ একই কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর আরেক নেতাও। সাবেক ছাত্রনেতারাও ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। তাদের একাধিক নেতা টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানা গেছে। 

এদিকে ১৫ আগস্টের বিষয়ে গত রবিবার রাতে নিজের ফেসবুকে এসে কথা বলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যে বঙ্গবন্ধু আপনাদের স্বাধীনতা দিয়েছে, আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে, এই ১৫ আগস্ট আপনাদের প্রতি আহ্বান- শান্তিপূর্ণভাবে ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসুন। দোয়া করবেন বঙ্গবন্ধুর জন্য, স্বাধীনতার চেতনার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য।’ বঙ্গবন্ধু একটি দলীয় বিষয় না উল্লেখ করে জয় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হচ্ছে জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু না থাকলে আজকে আমরা বাংলাদেশ হতাম না। পাকিস্তান হয়ে থাকতাম।’ 

তবে ১৫ আগস্ট দলীয় কর্মসূচি পালনের বিষয়ে অনুমতি চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ- এমন একটি খবর একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে হানিফের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টিকে ‘ফেক নিউজ’ বলে জানান। 

১৫ আগস্ট শোক দিবসে একাধিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন আওয়ামী যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল সাড়ে ৭টায় শোক র‌্যালি (ধানমন্ডি ৩২ থেকে কলাবাগান মাঠ), ৮টায় বনানী কবরস্থানে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। ঢাকা মহানগর যুবলীগের দুই নেতা জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের ‘বার্তা’ পাঠিয়ে দিয়েছেন। নেতা-কর্মীরা ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে হাজির হয়ে কর্মসূচি পালন করবেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ধানমন্ডির কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। শ্রদ্ধা জানানো হবে ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের প্রতি।

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। ধানমন্ডি ও গোপালগঞ্জের কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে। 

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এর মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করা হবে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জমায়েত বড় করতে নেতারা ইতোমধ্যে কাজ করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ১৫ আগস্ট ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি পালন করবেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। সাংস্কৃতিক অঙ্গন, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতি সহানুভূতিশীল এমন সাধারণ নাগরিকদের এ কর্মসূচিতে যোগদানের আহ্বান জানানো হবে।

এদিকে মহিলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রোকেয়া প্রাচী ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন- ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে মিছিল নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে উপস্থিত হওয়ার। গতকাল সোমবার ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা জেগে উঠব এই ধ্বংস থেকে। জেগে উঠব আগুনে পোড়া ৩২-এর এই ঘর থেকে। জেগে উঠব নিভে যাওয়া ছাই থেকে। জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ভেবেছ সব সাহস পুড়েছে? পুড়েছ তোমরা! আমরা বাঙালি এই ছাইভস্ম থেকেই উঠব আবার আগুন হয়ে জেগে! জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।’

এদিকে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ জি এম সাহাবুদ্দীন আজম।

তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনা ছাড়া বিকল্প নেই। নেত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন। উনি শুধু রক্তপাত বন্ধে মানুষের কথা চিন্তা করে দেশ ছাড়তে রাজি হয়েছেন। তিনি দেশ ছাড়তে চাননি, তিনি টুঙ্গিপাড়ায় আসতে চেয়েছেন। তাকে জোর করে ষড়যন্ত্রকারীরা দেশত্যাগে বাধ্য করেছেন।’

১৫ আগস্ট কর্মসূচির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন উল্লেখ করে সাহাবুদ্দীন আজম বলেন, ‘নেত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। নেত্রী জাতীয় শোক দিবসে কর্মসূচি পালনের জন্য নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। গোপালগঞ্জ থেকে কাউকে ঢাকা যেতে বলা হয়নি। ঢাকা ও আশপাশের এলাকার নেতা-কর্মীরা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে যাবেন। আমরা গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাব, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। এসব কর্মসূচিতে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন।’

১৭ বছরের প্রতিটি রাত ছিল কালোরাত : শফিকুর রহমান

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পিএম
১৭ বছরের প্রতিটি রাত ছিল কালোরাত : শফিকুর রহমান
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি : খবরের কাগজ

শেখ হাসিনা সরকারের আমলের ১৭ বছরের প্রতিটি রাত কালোরাত ছিল বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘মানুষ ছিল বন্দি কারাগারে, শেখ হাসিনার জন্য কেউ মন খুলে কথা বলতে পারেনি।’ 

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের পৌরউদ্যানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের মাগফিরাত কামনা, আহত ও শহিদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় এবং দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর বলেন, ‘বাবা-ছেলে একসঙ্গে খাচ্ছে সে সময় ছেলেকে তুলে নেওয়া হতো। বিদেশে বসে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ করলে তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর অত্যাচার চালানো হতো। তারা বিডিআর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, হত্যা করে ড্রেনে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার সব থেকে বেশি অত্যাচার করেছে জামায়াত ও ছাত্র শিবিরকে। আর কোনো দলের প্রতি এতে অত্যাচার করা হয়নি। বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে, তারা নারীদের ওপর হামলা করছে, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের ওপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। জামায়াতের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দিয়ে শীর্ষ ১১ নেতাকে তারা হত্যা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে ধর্ষক বানানো হয়েছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতন করা হয়েছে বিএনপির ওপর, গণঅধিকার পরিষদের ওপর, ছাত্রদের ওপর। শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে রাজাকার বলেছেন।’  

জেলা আমির আহসান হাবীব মাসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ড. মাও. খলিলুর রহমান ও টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মতিউল্লাহ। 

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। 

জুয়েল রানা/সালমান/

 

‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে জনগণের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না’

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৯ পিএম
‘জামায়াত ক্ষমতায় গেলে জনগণের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না’
প্রীতি সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি : খবরের কাগজ

জামায়াতে ইসলামী আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে জনগণের ওপর জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে নারীদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেবে, বোরকা পরতে বাধ্য করবে, ঘরের বাইরে যেতে দেবে না বলে একটি ষড়যন্ত্রকারী চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে। দেশের জনগণই তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।’

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সাথী-সদস্যদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ডা. আব্দুল্লাহ তাহের বলেন, ‘ইসলামে কারও ওপর কোনো কিছু জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়ার বিধান নেই। ইসলামের চেয়ে বেশি ও প্রকৃত স্বাধীনতা অন্য কোথাও দেওয়া হয়নি। যারা সত্যের জন্য লড়াই করে, স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে, সম্পদের মোহ্ ছেড়ে আল্লাহর দ্বীনের জন্য লড়াই করে তারা কখনো কারও ওপর জোরপূর্বক কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না, দেয় না।’ 

তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লব আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও বিজয়। এই বিজয়ের মাধ্যমে মানবতার বিজয়ের সূচনা হয়েছে। এই বিজয় পূর্ণাঙ্গ হবে যখন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে, মানুষ ন্যায়বিচার ও মৌলিক অধিকার পাবে।’ 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘যারা বিগত ১৬ বছর ধরে আমাদের প্রকাশ্য সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি তারা আজ কেউ কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, আবার কেউ দেশে আত্মগোপনে আছে। জনগণ ও নিজ দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের আজ কোনো সম্পর্ক নেই। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার ছেলে জয় প্রকাশ্যে বলেছে, এখন আর আমাদের দেশ ও দলীয় নেতা-কর্মী নিয়ে কোনো চিন্তা নেই।’ 

জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়াবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশে বহু বিপ্লব ঘটেছে। তবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লব ব্যতিক্রম। এই বিপ্লবে কোনো রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছিল না। এই বিপ্লবে আওয়ামী লীগের বহু নেতা গোপনে দেশত্যাগ করে পালিয়েছে। আওয়ামী লীগ রাজাকার শব্দ ব্যবহার করে বিরোধী যেকোনো মতকে হেয় করেছে। সর্বশেষে ছাত্রদেরসহ পুরো জাতিকে শেখ হাসিনা রাজাকার বানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গঠিত আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্ট প্রকাশ করে বলেছে, বাংলাদেশে গঠিত আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রহসনের ট্রাইব্যুনাল। আর্ন্তজাতিক মান সেখানে বজায় রাখা হয়নি। এই ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে অবিচার করা হয়েছে। এ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে দণ্ড দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। তার দণ্ড বাতিল করে অনতিবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে।’ 

সভাপতির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ছাত্ররা বলছে উই ওয়ান্ট জাস্টিস। তারা ন্যায়বিচার চায়। এই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে কেবল আল্লার বিধান কায়েম হলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত অনেক আগেই দেশ সংস্কারের দাবি তুলেছিল। এখন দেশের প্রতিটি মানুষ সংস্কারের পক্ষে। আর মানুষ মনে করছে ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলেই প্রকৃত অর্থে দেশ সংস্কার হবে। দেশ সংস্কারের জন্য প্রয়োজন নিজের সংস্কার, মানুষের সংস্কার। আর জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে একজন ব্যক্তিকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে তৈরি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’

জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, আমির আব্দুস সবুর ফকির, দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন, মু. কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখ। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

অন্তর্বর্তী সরকারকে অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় রাখার চক্রান্ত করা হচ্ছে: ফখরুল

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২০ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারকে অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় রাখার চক্রান্ত করা হচ্ছে: ফখরুল
ছবি : খবরের কাগজ

অন্তবর্তী সরকারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় রাখতে একটি বিশেষ মহল চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে ইতোমধ্যে বিশেষ মহল তাদের কাজ শুরু করে দিয়েছে। তারা নাকি একবারে দেশটাকে সংস্কার করে পরিবর্তন করে ফেলবে। তাহলে তো জনগণের দরকার নেই, পার্লামেন্টের দরকার নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা জনগণ মানবে না।’

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত ‘দ্বি-কক্ষ পার্লামেন্ট : উচ্চকক্ষের গঠন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- ১২ দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহামুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি পত্রিকায় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট জরিপ করে দেখিয়েছে- যতদিন খুশি এই সরকার থাকুক। আমি জানিনা তারা কীভাবে এই জরিপ করলো। কিন্তু জনগণতো এটা মেনে নেবে না। জরুরি সংস্কার শেষ অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দেওয়ার বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।’

নতুন রাজনৈতিক দল তৈরির প্রস্তাবনাকে নতুন চক্রান্ত বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের মধ্যে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারাও বলছেন নতুন দল গঠন করতে হবে। তাহলে তারা কীভাবে নিরপেক্ষ হবে? নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হচ্ছে, নতুন সরকারের দীর্ঘমেয়াদী সময় নিয়ে ক্ষমতায় থাকার কথাও বলা হচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ পেয়েছি তা নস্যাৎ করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এ জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার গত ১৫বছর ক্ষমতায় থেকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান নষ্ট করে ফেলছে।’

তিনি নূন্যতম যে সংস্কার প্রয়োজন তা করে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেন। জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হলে অবশ্যই পার্লামেন্ট প্রয়োজন। পার্লামেন্ট না হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। ফলে দ্রুত অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার পর সেই সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কোথায় কোন জায়গায় পরিবর্তন করতে হবে। তখন সংবিধান নতুন করে লিখতে হবে নাকি সংশোধন হবে সেটা সংসদ সিদ্ধান্ত নেবে।’ 

অভ্যুত্থানের পরে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও শহিদদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘আজকে দীর্ঘ ত্যাগ তিতিক্ষার পরে ১৫ থেকে ১৭ বছর নির্যাতিত হয়েছি। বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্যাতিত হয়ে বিদেশে আছেন। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারদের হয়ে যারা কাজ করেছে তাদের সে সমস্ত জায়গা থেকে অপসারণ করা হয়নি। অতি দ্রুত তাদের চিহ্নি করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

আলোচনাসভায় বক্তারা দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের নানা ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, ‘এ রকম সংসদে দেশের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন সংসদ সদস্যরা।’

শফিকুল ইসলাম/জোবাইদা/অমিয়/

বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের জরুরি যৌথসভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম
বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের জরুরি যৌথসভা অনুষ্ঠিত
ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের জরুরি যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদভুক্ত ২১টি শ্রমিক সংগঠন নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রকৌশলী ফয়েজ আহম্মেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন বামপন্থী নেতা কমরেড টিপু বিশ্বাস।

প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন চলমান শ্রমিক-কর্মচারী আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকট শিমুল বিশ্বাস।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, এসএসপি’র মোশারফ হোসেন, মোশারেফ হোসেন মন্টু, হারুনুর রশিদ, আব্দুর রহমান, মীর মোফাজ্জল হোসেন, সোহেল সিকদার, রফিকুল ইসলাম পথিক, বাবুল বিশ্বাস, নেক মোহাম্মদ, বাচ্চু ভূইয়া, শ্রমিক দলের রফিকুল ইসলাম, মন্জুরুল ইসলাম মন্জু , এসএসপি’র সোহেল সিকদার, সোহেল রানা সম্পদ, সাইফুল ইসলাম, মওলানা ওমর ফারুক, কাইয়ুম হোসেন, দেবাশীষ বিশ্বাস, ফিরোজ মিয়া, জামিল হোসাইন, একেএম আওয়াল প্রমূখ।

সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। 

সভায় বিবিএস’এর সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে সাত কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক কর্মচারী রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

সভা বিবিএসের হিসাব মতো সব শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য, অসংগঠিত শ্রমিক-কর্মচারীদের সংগঠিত করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং শিল্পকারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা ও শ্রমিক-কর্মচারীদের নায্য মজুরি প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদভুক্ত ২১টি শ্রমিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সভায় ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত শ্রমিক-কর্মচারীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসার জন্য রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সভায় ফ্যাসিবাদের সব চিহৃ উচ্ছেদের জন্য সরকারকে সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করে গণতন্ত্র সুসংহত করার জন্য নির্বাচিত সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়।

সভায় শিল্পকারখানায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা ও শ্রমিক-কর্মচারীদের নায্য মজুরি আদায়ের জন্য শিল্পাঞ্চল, কল-কারখানা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক-কর্মচারীদের সভা করার সিদ্ধান্ত হয়।

অমিয়/

কাদের গনি চৌধুরী আল্লাহর ভালোবাসা পেতে রাসুলের (সা.) পথ অনুসরণ করতে হবে

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম
আল্লাহর ভালোবাসা পেতে রাসুলের (সা.) পথ অনুসরণ করতে হবে
ছবি : খবরের কাগজ

‘আল্লাহর বিধান প্রতিপালন ও প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণই দুনিয়ার শান্তি ও পরকালে মুক্তির একমাত্র পথ। পবিত্র কুরআনের বর্ণনায়- প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসা মুমিনের ইমান; আর তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ তথা, সুন্নাতের অনুসরণই হচ্ছে তাকে ভালোবাসার প্রমাণ।’

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।

আহলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন আলহাজ হয়রত মওলানা শাহসূফি সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের (ম.জি.আ.) সভাপতি আলোচনায় অংশ নেন- মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ মাইনুল ইসলাম জুনায়েদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল, আলহাজ শহিদুল ইসলাম বাবুল, হাজী সেলিম আহমেদ সালেম প্রমুখ।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘‘বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা এবং প্রতিপালক মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বিশ্ববাসী সব সৃষ্টির ইহকালীন শান্তি ও পারলৌকিক মুক্তির জন্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছিলেন এই ধরাধামে। প্রথম নবী হযরত আদম আলাইহিস সালাম থেকে শুরু করে নবুয়তের ধারাবাহিকতায় তিনি এ পৃথিবীতে আগত সর্বশেষ নবী এবং রাসূল। তাঁর আগমনে গোটা বিশ্বজাহান আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠেছিল। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছিল মুক্তির বারতা। তাঁর আগমনে স্রষ্টাকে ভুলে যাওয়া মানবজাতি নতুন করে সন্ধান পেয়েছিল মুক্তিপথের। তাওহিদের অমিয় বাণী কালিমা ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তথা এক আল্লাহ ব্যতিত আর কোনো উপাস্য নেই- এই মহাসত্যের বুলন্দ আওয়াজ ছড়িয়ে পড়েছিল জগতময়। সত্যের পথে, শান্তির পথে, মুক্তির পথে ফিরে আসার সুযোগ লাভ করেছিল জগৎবাসী। লাত, মানাত, উযযা, হুবলদের মতো মিথ্যে এবং অসার উপাস্যদের বিদায়ের বারতা ঘোষিত হয় বিশ্বময়। মানব সৃজিত অন্ধকার এবং পঙ্কিলতার পথ ছেড়ে বনি আদম পুনরায় মাথা নত করার শিক্ষা লাভ করে এক আল্লাহর সামনে। আজকের বিশ্ববাসীর কল্যাণ ও মুক্তিও তাঁর রেখে যাওয়া সুমহান আদর্শ ধারণ করার মধ্যেই। সেই মহান আদর্শের ছায়াতলেই হোক আমাদের পথচলা।’

সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, ‘‘হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন ইনসানে কামিল বা পরিপূর্ণ মানব। মানবীয় অবয়বে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার গুণাবলী যতটুকু ধারণ করা সম্ভব, তার সর্বোচ্চ সমাহার ঘটেছিল মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মধ্যে। আয়শা রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহার বাচনিকে, ‘প্রিয় নবীজীর জীবন ছিল জীবন্ত কুরআন’। তাঁর শুভাগমনে ইসলামের পরিপূর্ণতা ঘটেছে।’’

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুমহান আদর্শ ও সর্বোত্তম চরিত্র অনুসরণ করার মধ্যেই সফলতা, স্বার্থকতা, মুক্তি এবং চূড়ান্ত কামিয়াবি। ইহকাল পরকালে সফলতা ও নাজাতের জন্য বিশ্ববাসী প্রত্যেকের জন্য তাঁর অনুসরণই একমাত্র কর্তব্য।’

তিনি নবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিহাসের অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব উল্লেখ করে বলেন, ‘‘অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাঁকে মানবজাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সংস্কারক ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তার বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ’ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। ব্রিটিশ মনীষী সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ বলেছেন, এই অশান্ত পৃথিবীতে তার মতো একজন মানুষের প্রয়োজন। তিনি বেঁচে থাকলে পৃথিবী জুড়ে সুখের সুবাতাস বইতো। তার আগমনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল, দুনিয়া জুড়ে তা বিস্তৃত হয়েছে।’’

ইসলাম প্রতিশোধে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর তাবত আদর্শ এবং মতবাদ খুঁজেও এর দ্বিতীয় একটি নজির পাওয়া যাবে না। ইসলামের শিক্ষা, ‘প্রতিবাদের শ্রেষ্ঠ পন্থা উত্তম আচরণ’। প্রিয় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সারা জীবনের আদর্শ ছিল এটাই। মন্দের প্রতিবাদ তিনি কোনদিন মন্দ কাজ দিয়ে করেননি। প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সারা জীবনের চরিত্র ছিল উত্তম এবং শ্রেষ্ঠতম আচরণ প্রদর্শন করতেন। ঘোরতর শত্রুদের সঙ্গেও সর্বাবস্থায় তিনি ছিলেন কোমল এবং সর্বোত্তম আচরণের মূর্ত প্রতীক।’

অমিয়/