দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে আওয়ামী লীগবিরোধী হিন্দু সমাজের ‘শান্তির পথে আমরা বাংলাদেশি’ শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
নিতাই রায় চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেমনিভাবে হিটলার, মুসোলিনি, চেঙ্গিস খান, টিক্কা খান, ইয়াহিয়া খান ফিরে আসে নাই, ঠিক তেমনি শেখ হাসিনা ফিরে আসবেন না। কিন্তু হিন্দুদের একটি অংশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পরাজিত শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের এই পাতানো সাম্প্রদায়িক উসকানিতে কেউ পা দেবেন না।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ করছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আরেকটি অংশ। তাদের উদ্দেশে নিতাই রায় বলেন, ‘এই গণ-অভ্যুত্থানে হিন্দু, মুসলিম ছাত্র-জনতা সবাই যোগ দিয়েছে। এখানে কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের ব্যাপার ছিল না। এখানে কোনো সাম্প্রদায়িকতা ছিল না। আজকে কোনো সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব হচ্ছে না। এই দ্বন্দ্ব হচ্ছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। তারা যেটাকে সাম্প্রদায়িকতা বলতে চাচ্ছে, এটা সাম্প্রদায়িকতা নয়।’
বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইবোনকে বলব, আওয়ামী লীগ থেকে খুব সাবধান। যতবার তারা ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে, তারা আপনাদেরকে ব্যবহার করেছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তো এ রকম হয় নাই। যেটা আমরা নাসিরনগরে দেখেছি, রামুতে দেখেছি, যশোরে দেখেছি, অভয়নগরে দেখেছি। আমাদের সময় তো এ রকম হয় নাই। ইনশাআল্লাহ আপনাদের ভোটে যদি বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে, তাহলে একজন মুসলমান, একজন হিন্দু, একজন বৌদ্ধ ও একজন খ্রিষ্টানের মধ্যে কোনো রকম বৈষম্য হবে না। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ একই অধিকার ভোগ করবে।’
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘আজকের অবস্থান কর্মসূচিতে হিন্দু-বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দিদি ও দাদার এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বোনেরা ও ভাইয়েরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছে। এটা হলো বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র। এই চিত্র ও বিজয়কে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা নস্যাৎ করতে চায়। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নস্যাৎ করতে চায়। কোনো লাভ হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনা পালিয়ে গেছে। ছাত্র-জনতার বিজয় হয়েছে। কোনো অপচেষ্টা করে লাভ নাই। আপনারা প্রত্যেকে পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায়-মহল্লায় পাহারা দেবেন, যাতে দুর্বৃত্তরা, সন্ত্রাসীরা ও স্বৈরাচারীরা বাংলাদেশের মাটিতে কোনো অপকর্ম ও ষড়যন্ত্র করতে না পারে।’
সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ রায় সাহস বক্তব্য দেন।