ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রতিবিপ্লবের শিকড় শুরুতেই উৎপাটনের আহ্বান ১২-দলীয় জোটের

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম
আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
প্রতিবিপ্লবের শিকড় শুরুতেই উৎপাটনের আহ্বান ১২-দলীয় জোটের
১২-দলীয় জোট

১৫ আগস্ট ঘিরে প্রতিবিপ্লবের শিকড় শুরুতেই উৎপাটন করার আহ্বান জানিয়েছেন ১২-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে দেশ রক্ষায় ন্যূনতম নমনীয়তা দেখানো যাবে না। ১৫ আগস্ট দেশকে অস্থিতিশীল করার যে হীন পাঁয়তারা, প্রোপাগান্ডা চলছে তা কঠোর হস্তে দমন করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার, সেনাবাহিনী ও ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জোটের নেতারা এ আহ্বান জানান। 

জোট নেতারা বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে পতিত স্বৈরাচার দেশকে আবারও গভীর অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাওয়ার যে ষড়যন্ত্র করছে, তার বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনগণকে সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে। হত্যাকাণ্ডের বহু মদদদাতা ও হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া অনেকেই বহাল তবিয়তে অবস্থান নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করছেন। এদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

তাদের দাবি, ‘স্বৈরাচার হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেব জয়ের বক্তব্য ও ভিডিও ক্লিপ প্রচার অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হবে।’ 

বিবৃতিদাতারা হলেন ১২-দলীয় জোটপ্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, জাগপা সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ প্রমুখ।

শোভাযাত্রা পরিহারসহ নেতা-কর্মীদের বিশেষ বার্তা বিএনপির

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৯ পিএম
শোভাযাত্রা পরিহারসহ নেতা-কর্মীদের বিশেষ বার্তা বিএনপির
বিএনপি (লোগো)

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে মোটরসাইকেল বা যানবাহনের শোভাযাত্রা পরিহারসহ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিয়েছে বিএনপি। 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, জাতীয় নির্বাহী কমিটি ও তৃণমূল পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিএনপি এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাসহ সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য নির্দেশক্রমে জানানো যাচ্ছে, আপনাদের অধীনস্থ কোনো ইউনিটে সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনো ধরনের মোটরসাইকেল বহর ও কারসহ অন্য কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা পরিহার করতে হবে। এই সমস্ত শোভাযাত্রার কারণে পাশ দিয়ে চলাচলরত সাধারণ মানুষের যানবাহন বা পথচারীদের যাতায়াতে ভয়ানক বিঘ্ন ঘটে। যে এলাকায় সাংগঠনিক সভা, কর্মীসভা অথবা জনসভা অনুষ্ঠিত হয় সেই এলাকায় ঊর্ধ্বতন নেতাদের আগমন ঘটলে শোভাযাত্রার কারণে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয় এবং মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়-যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।’

এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেহেতু বিএনপি গণসম্পৃক্ত একটি রাজনৈতিক দল সেহেতু জনগণকে দুর্ভোগের মধ্যে না ফেলে মোটরসাইকেল বহর বা অন্য কোনো যানবাহনের শোভাযাত্রা পরিহার করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইতোমধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের রং-বেরঙয়ের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করতে। এটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু, অনভিপ্রেত এবং দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী। দলের অতি উৎসাহী কতিপয় নেতা নিজেদের ছবি সম্বলিত পোস্টার প্রকাশ করছেন এবং ফেস্টুন ও ব্যানার ঝুলিয়ে রাখছেন। এহেন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করা থেকে নেতা-কর্মীদের বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

বরগুনার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রশিদকে মারধর

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ পিএম
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ এএম
বরগুনার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রশিদকে মারধর
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদকে মারধর করছেন এক যুবদল নেতা। ভিডিও থেকে নেওয়া

বরগুনার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশিদকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছেন যুবদলের এক নেতা। 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ওই যুবদল নেতার নাম শাওন মোল্লা। তিনি বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক মোল্লার ছেলে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদকে চড়থাপ্পড় মারছেন শাওন মোল্লা। এ সময় এক পথচারী তাকে শান্ত করতে গেলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন শাওন। এরপর সদর থানার এক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এ বিষয়ে হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে আমি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গেলে সেখানে থাকা বিএনপি নেতা ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লা আমাকে ডেকে বাইরে নিয়ে বকাঝকা ও লাঞ্ছিত করে। সেখানে অনেক লোক ছিল। এ ঘটনায় আমি আইনি পদক্ষেপে যাব।’

একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও শাওন মোল্লার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। তাই এই বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’

জনগণের সরকার না আসা পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে: তারেক রহমান

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০১ পিএম
জনগণের সরকার না আসা পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’ 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা ফুটবল মাঠে উপ‌জেলা ও পৌর বিএন‌পি আ‌য়ো‌জিত জনসভায় ভার্চুয়া‌লি যুক্ত হয়ে প্রধান অতি‌থির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। 

তিনি বলেন, ‘দেশের কিছু রাজ‌নৈ‌তিক দল বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে প্র‌তি‌বেশী দে‌শ ভারতের ফাঁদে পা দি‌য়ে‌ছে। তাদের সব ষড়যন্ত্রের বিষদাঁত ভেঙে দিয়ে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’ 

তারেক রহমান ব‌লেন, ‘বিএনপি চায় দেশের প্রতিটি সম্ভাবনাকে বের করে সেগুলোকে কাজে লাগাতে। সম্ভাবনাগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার, জনগণের সরকারই জনগণকে নিয়ে ভাবে। বিএনপির রাজনীতি উৎপাদন, উন্নয়নের রাজনীতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নৃশংসতা দেখেছে পুরো জাতি। দেশের মানুষ শান্তি চায়, উন্নয়ন চায়। বিএনপি দেশের জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ করবে। বিএনপির রাজনীতি জনগণের জন্য।’

সাতক্ষীরা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জীবন-জীবিকার উন্নয়নের দায়িত্ব নেবে। শুধু সাতক্ষীরা নয়, প্রতিটি জেলাকে নিয়ে কাজ করতে চাই। যেন দেশের জনগণ শান্তিতে থাকতে পারে।’

এর আগে সদ্য কারামুক্ত সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দীন, খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম প্রমুখ। 

‘ইসলামি জোট’ গঠনের বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন-খেলাফত মজলিসের বৈঠক

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম
‘ইসলামি জোট’ গঠনের বিষয়ে ইসলামী আন্দোলন-খেলাফত মজলিসের বৈঠক
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস (লোগো)

‘ইসলামি জোট’ গঠন বিষয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস বৈঠক করেছে। 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী দলসমূহের মধ্যে কার্যকর ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে সবাইকে ময়দানে ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের ব্যাপারে একমত হয়েছেন দুই দলের শীর্ষ নেতারা।

বৈঠকে অংশ নেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, আলহাজ খন্দকার গোলাম মাওলা, সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম আতিকুর রহমান, প্রফেসর ডা. আক্কাস আলী সরকার, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিন, অ্যাডভোকেট হাছিবুল ইসলাম।

অপরদিকে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা অব্দুল বাছিত আজাদ, মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম।

বৈঠকে নেতারা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে সুসংহত এবং পতিত স্বৈরাচারের অভ্যুত্থানবিরোধী ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। দেশকে অস্থিতিশীল করার নানামুখী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বাংলাদেশের ওপর নজর রাখার নির্দেশনাকে সামরিক উসকানি হিসেবে অভিহিত করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কেউ কেউ বলেন, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদী ও অপতৎপরতার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দুই দলের নেতারা।

জাতীয় নাগরিক কমিটি ঘোষণা, আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ পিএম
আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ এএম
জাতীয় নাগরিক কমিটি ঘোষণা, আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক কমিটি আত্মপ্রকাশ করে। ছবি : মাসুদ মিলন

দেশের রাজনীতিতে নতুন বন্দোবস্ত নির্ধারণ করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির উদ্যোগে ৫৫ সদস্যের নাগরিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক ও আখতার হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন সামান্তা শারমিন।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে মুখপাত্র সামান্তা বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মাধ্যমে কাজ শুরু করছে। এ কমিটির সদস্য সংখ্যা আরও বাড়বে। শিগগিরই সব মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব। তৃণমূল পর্যন্ত এ কমিটির বিস্তৃতি ঘটানোর মাধ্যমে আমরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাব।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য সব দলের লোক নিয়ে এটি করেছি। শিগগিরই আমাদের সদস্যদের নিয়ে বেশ কিছু সেল গঠন করা হবে। এই কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ নয়। কমিটি বর্ধিত করা হবে। এটিকে আমরা গ্রামপর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে চাই।’

এদিকে মুখপাত্র সামান্তা শারমিনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সংহতি ও প্রতিরোধের চেতনা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলার শক্তি। এই নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে পূর্ণ বিজয় অর্জন করতে হবে। গণহত্যাকারীদের যথাযথ বিচার, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন, জনস্বার্থের প্রতি সংবেদনশীল নীতিনির্ধারণ নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পূর্বশর্ত।’

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজপথে নেমে আসা জনতাকে সংগঠিত করা, ৮ আগস্টে গঠিত সরকারকে যুগপৎ সহযোগিতা করা এবং জবাবদিহির আওতায় আনা, তদুপরি জনস্বার্থের পক্ষে নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে আমরা নাগরিক দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা। ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর এবি পার্টিতে যোগ দেন এবং সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সমাজসেবা সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন তিনি।

অন্যদিকে আখতার হোসেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক। তিনিসহ কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে ২০২৩ সালে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি’ নামে একটি ছাত্রসংগঠনের ঘোষণা দেন। এর আগে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। 

কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী এবং নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের নেতা হিসেবে পরিচিত।

৫২ জন সদস্য: ৫২ জনকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। তারা হলেন আরিফুল ইসলাম আদীব, সাইফ মোস্তাফিজ, মনিরা শারমিন, নাহিদা সারোয়ার চৌধুরী, সারোয়ার তুষার, মুতাসিম বিল্লাহ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, অনিক রায়, জাবেদ রাসিন, মো. নিজাম উদ্দিন, সাবহানাজ রশীদ দিয়া, প্রাঞ্জল কস্তা, মঈনুল ইসলাম তুহিন, আব্দুল্লাহ আল আমিন, হুযাইফা ইবনে ওমর, শ্রবণা শফিক দীপ্তি, সায়ক চাকমা, সানজিদা রহমান তুলি, আবু রায়হান খান, মাহমুদা আলম মিতু, অলিক মৃ, সাগুফতা বুশরা মিশমা, সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ, তাসনিম জারা, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, মো. আজহার উদ্দিন অনিক, মো. মেসবাহ কামাল, আতাউল্লাহ, এস এম শাহরিয়ার, মানজুর-আল-মতিন, প্রীতম দাশ, তাজনূভা জাবীন, অর্পিতা শ্যামা দেব, মাজহারুল ইসলাম ফকির, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মুশফিক উস সালেহীন, তাহসীন রিয়াজ, হাসান আলী খান, মো. আব্দুল আহাদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, মশিউর রহমান, আতিক মুজাহিদ, তানজিল মাহমুদ, আবদুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, এস এম সুজা, মো. আরিফুর রাহমান, কানেতা ইয়া লাম লাম, সৈয়দা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার, সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির ও আকরাম হুসেইন।

কমিটিতে ইউটিউবার সালমান মুক্তাদির ও আইনজীবী মতিন: এই নাগরিক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ইউটিউবার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির। তিনি এ কমিটিতে ৫৪ নম্বরে রয়েছেন। এ ছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আইনজীবী মানজুর আল মতিন। তিনি এই কমিটির ৩৪ নম্বর সদস্য।

প্রাথমিক কাজ: এ সময় আহ্বায়ক কমিটির প্রাথমিক কাজ ঘোষণা করা হয়। সেগুলো হলো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হওয়া সামষ্টিক অভিপ্রায় ও গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত করা। ছাত্র-জনতার ওপর সংঘটিত নির্মম হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ। রাষ্ট্রের জরুরি সংস্কার ও পুনর্গঠন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা ও জবাবদিহির পরিসর তৈরি। 

বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগের সঙ্গে আলোচনা, মতবিনিময় ও গণমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বস্তরের জনতাকে সংহত করার লক্ষ্যে কাজ করা। দেশের সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সংহত করে গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদী কাঠামো ও শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা। জনস্বার্থের পক্ষে নীতিনির্ধারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিষয়ভিত্তিক সংলাপের আয়োজন করা। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিনির্ধারণী প্রস্তাবনা তৈরি ও সেটা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। গণপরিষদ গঠন করে গণভোটের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরির জন্য গণ-আলোচনার আয়োজন করা।