রাজধানীতে জলাবদ্ধতা ও যানজটের সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কবে কাজ শুরু করবে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি নেতারা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নগরজুড়ে দুর্ভোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দলীয় সমাবেশে তারা এ মন্তব্য করেন।
সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, জলি তালুকদার, ডা. সাজেদুল হক রুবেলসহ অনেকে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিবি নেতারা বলেন, অতীতের শাসকরা উন্নয়নের নামে জনগণকে সম্পৃক্ত না করে সংকট হলেই এক একটা প্রজেক্ট নিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করেছে। এ সময় তারা তো ক্ষমতাই নেই। এ সরকার এসব সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে পারবে-সেটি আমরা আশা করি না। তবে এসব সংকট সমাধানের কার্যক্রম শুরু হলো না কেন? আমরা এটা জানতে চাই।
সমাবেশে সিপিবি নেতারা দেশের সর্বত্র ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান এবং নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা দিতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, এলাকায়-এলাকায় সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ সময়ে কেউ যদি অপতৎপরতা করার দুঃসাহস দেখায় তাদের চিহ্নিত ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
শ্রমিক হত্যার বিচার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশন ব্যবস্থা চালু, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনজীবনে শান্তি, সর্বত্র সম্প্রীতি রক্ষা, দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব বন্ধ, পাচারের টাকা-খেলাপী ঋণ আদায়, শ্রমিকের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি, কৃষক-ক্ষেতমজুরের স্বার্থে নীতি প্রণয়ন, সবার জন্য কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য-শিক্ষার নিশ্চয়তা, কালাকানুন আইন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন প্রবর্তন, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি আসে সমাবেশ থেকে।
সিপিবি নেতারা নানা অভিযোগ এনে বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দাবির কাছে সরকার নতজানু হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় এসব অপশক্তি দাপট দেখাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে এরা জেঁকে বসছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রকৃত অপরাধীদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয় নাই। বরং অনেক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে মূল ঘটনাকে হালকা করে ফেলা হচ্ছে।
তারা বলেন, বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের আন্দোলনকারী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ব্যক্তি এবং সংগঠককে উপেক্ষা করে বিশেষ কতক গোষ্ঠীর স্বার্থেই সরকার তার কাজ পরিচালনা করছে।
চলমান সংকটের অবসান ঘটাতে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য কতক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের রূপরেখা তৈরি ও নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের আলোচনা শুরু এবং নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।
জয়ন্ত সাহা/এমএ/