জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশ বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) বলেছে, অভ্যুত্থানের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে অস্থিরতা ও দীর্ঘসূত্রতা কোনটাই কাম্য নয়। জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করতে না পারলে সংস্কারমূলক কোনো পদক্ষেপই সফল করা যাবে না। কমিশনগুলো যেন দ্রুত কাজ শুরু এবং কোনো দীর্ঘসূত্রতায় জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে বলেও মনে করেন দলটির নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এই অভিমত ব্যক্ত করেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন প্রমুখ।
অন্তর্বর্তী সরকারের একমাস পূর্তির পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচন কমিশন, সংবিধান, পুলিশ প্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কারের জন্য ৬টি কমিশন গঠন করায় সংবাদ সম্মেলনে সাধুবাদ জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘অনেক ত্যাগ ও জীবনের বিনিময়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের আমরা সাফল্য চাই। তাদের ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু যে সিদ্ধান্ত নিতে একদিন লাগার কথা তা পাঁচ দিনেও হচ্ছে না, উপরন্তু প্রশাসনে চলছে অস্থিরতা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বার বার দৃষ্টি আকর্ষণ করার পরও এখনো পুলিশকে সক্রিয় করার কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। ইতোমধ্যেই জনপ্রশাসনের অস্থিরতার বিষয়ে আলী ইমাম মজুমদারের ভূমিকা নিয়ে বিরাট প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেখানে অস্থিরতার কোনো সুযোগ নাই। প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে বার বার ছাত্র-জনতার বিপ্লবের কথা বলছেন, আমরা সরকারের ভূমিকায় সত্যিকার অর্থেই বিপ্লবের চেতনা দেখতে চাই।’
সারা দেশে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও প্রমোশন, পদায়ন এবং পোস্টিংসহ নানা কারণে জনপ্রশাসনের অস্থিরতা নিরসনের আহ্বান জানিয়ে মঞ্জু অভিযোগ করেন, ‘স্থানীয় সরকার বিভাগে ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা না থাকায় মানুষ কোনো সেবা পাচ্ছে না। এ বিষয়েও সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে।’
কমিশন গঠনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন নিজেই একটা কমিশন। এখানে যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের সরাসরি কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিলেই তারা যথেষ্ট সংস্কার করতে পারতেন। নতুন করে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ফেলার কোনো প্রয়োজন ছিল না। তবে সরকারের ইতিবাচক ভূমিকার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে আমরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছি, সংস্কারের জন্য অন্তত একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা বার বার বলছি এখনি পুলিশকে সক্রিয় করতে হবে এবং প্রশাসনের সব অস্থিরতা দূর করতে হবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, এনামুল হক শিকদার, এবি ওয়াহেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার ফারুক, আব্দুল হালিম খোকন, মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, আব্দুর রহমান, শরণ চৌধুরী, পল্টন থানার আহ্বায়ক মুন্সি আব্দুল কাদের প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/সালমান/