বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘আগে অনেকে অনেক কথা বলতে না পারলেও এখন দেশে কথা বলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় কৃষক পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন জি এম কাদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে মাহমুদুল হাসান জয় (১৪) নামের কিশোর হত্যার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় গত ১১ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে, আসামি করা হয়েছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরকেও।
এ প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে মামলায় আসামি করা হচ্ছে। এটা মোটেই কাম্য নয়। আমরা জনগণের সঙ্গেই ছিলাম। জনগণ পরিবর্তন আশা করে বুকের রক্ত দিয়ে আওয়ামী সরকারকে উৎখাত করেছে। কতিপয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটছে; যা পরিবর্তনের জন্য মোটেই সুখকর নয়। জনগণ এটাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না।’
পরপর তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসা জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের অন্যায়-জুলুমের প্রতিবাদ জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেন জি এম কাদের।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে সখ্যতা থাকার পরেও আমরা তাদের অন্যায়-জুলুমের প্রতিবাদ করেছি। দেশের জনগণকে সুবিধাভোগী ও নির্যাতিত এই দুইভাগে ভাগ করার অপরাজনীতি তৈরি করা হচ্ছিল, আমরাই প্রথম তা তুলে ধরে বিরোধিতা করেছিলাম। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সব দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার ছিলাম। যার ফলশ্রুতিতে আমাকে অন্যায়ভাবে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
জাপার অবস্থান ব্যাখ্যা করে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, ‘২০২৪ সালে বিভিন্ন টালবাহানা করে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করার অঙ্গীকার করেও নির্বাচনে তা রক্ষা করা হয়নি। আমরা নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন হতো না বা নির্বাচন বৈধতা পেত না এই রকম পরিস্থিতি ছিল না।’
জি এম কাদের বলেন, ‘জাতি এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। একটা বিশাল পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। আমাদের জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের নমুনা দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমরা রাজনীতি কী করছি, অতীতে কী করেছি এবং ভবিষ্যতে কী করব তার একটা ধারণা থাকা দরকার।’
জাতীয় কৃষক পার্টির সভাপতি লিয়াকত হোসেন চাকলাদারের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. খলিলুর রহমান খলিল, মো. মোস্তফা মহসিনসহ আরও অনেকে।
জয়ন্ত সাহা/সালমান/