ঢাকা ১৯ আশ্বিন ১৪৩১, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪

শৃঙ্খলা ফেরাতে জিয়ার নীতিতে হাঁটছে বিএনপি

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ এএম
শৃঙ্খলা ফেরাতে জিয়ার নীতিতে হাঁটছে বিএনপি

দলের শৃঙ্খলা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নীতি বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে বিএনপি। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ‘উচ্ছৃঙ্খল’ নেতা-কর্মীদের যেভাবে শাস্তি দিতেন, সেই পথই অনুসরণ করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পাশাপাশি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেখানো পথও অনুসরণ করছেন তিনি। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নেতা-কর্মীদের শাস্তি দেওয়ার একই নিয়ম অব্যাহত রাখতে চান তারেক রহমান। 

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দলের শৃঙ্খলা ফেরানোর ব্যাপারে তিনি কোনো ছাড় দেবেন না। কে কত বড় নেতা, তার কতটা ঘনিষ্ঠ এসব বিষয় আমলে নিচ্ছেন না। দলে শৃঙ্খলা ফেরাতে বদ্ধপরিকর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে যারা দলকে বিব্রত করবেন যত বড় নেতাই হোন, তাকে শাস্তি পেতেই হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস খবরের কাগজকে বলেন, “শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আমলে এমন ঘটনা ঘটেনি। গত ১৫ বছরের ক্ষোভ, আক্রোশ বা ক্রোধ থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটছে। কিন্তু মিডিয়ায় অতিরঞ্জিত করে প্রকাশ করা হচ্ছে। আবার প্রকৃত ঘটনার আংশিক ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। বিএনপির নামে ‘ট্যাগ’ দিয়ে একশ্রেণির নেতা-কর্মীকে কালার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।”

তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে যেসব জায়গায় অভিযোগ করা হচ্ছে, খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে বেশির ভাগই আগে ছাত্রলীগ-যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল।’ 

দলীয় সূত্রমতে, জিয়াউর রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন দুই পদ্ধতিতে। প্রথমত, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসত, ঘটনার তদন্তে নিজস্ব সোর্স দিয়ে গোপন রিপোর্ট সংগ্রহ করতেন। দ্বিতীয়ত, দলের সাংগঠনিক রিপোর্ট সংগ্রহ করতেন। এরপর এই দুই রিপোর্ট যাচাই-বাছাই করতেন। তারপর অভিযুক্তদের নিয়ে একসঙ্গে বসতেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেন। গুরুতর অপরাধ হলে বহিষ্কার, অপরাধ কম হলে লঘুদণ্ড দিতেন। 

যত বড় নেতা হোক না কেন, তাকে ছাড় দিতেন না। জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার দেখানো পথে হাঁটছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি চাঁদাবাজি, জায়গা-জমি দখলসহ দলকে যারা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলছেন তাদের বিরুদ্ধে এই দুই নীতি অবলম্বন করে শাস্তি দিচ্ছেন। এই ধারা আগামী দিনেও দলে অব্যাহত থাকবে। বিএনপি সঠিক পথেই আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য খবরের কাগজকে বলেন, ‘দলের কিছু অতি উৎসাহী, বেয়াদব ও উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী সারা দেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছিলেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যারা দলকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন বা আগামী দিনেও ফেলবেন তাদের আজীবন বহিষ্কার বা অব্যাহতি দেওয়া হবে। শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের হাইকমান্ড ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে আগামী দিনেও জিয়াউর রহমানের নীতি বাস্তবায়নে কঠোর থাকবে বিএনপি।’

জিয়াউর রহমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে রাজনীতিতে ছিলেন এমন দুজন সিনিয়র নেতা খবরের কাগজকে বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সব সময় অপরাধ দমনে কঠোর নীতি অবলম্বন করতেন। তার আমলে চাঁদাবাজি, ঘুষ-দুর্নীতি ও দখলদারত্ব ছিল না। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি মেধাবীদের স্থান দিয়ে ছাত্রদলের প্রথম কমিটি গঠন করেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী মিলে ‘গ্রুপ অব বয়েজ’ নামে পৃথক গ্রুপ গঠন করেন। তারা রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়েন।

তাদের দমন করতে জিয়াউর রহমান গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসেন। আবার অনেকে ভয়ে বিদেশে যেতে বাধ্য হন এবং কাউকে কাউকে বিদেশেও পাঠিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে এমন ঘৃণিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর সাহস দেখাননি দলের কেউই। খালেদা জিয়ার আমলেও যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজি ছিল না। সেই সময়ে যাদের নামে চাঁদাবাজি ও দখলের অভিযোগ উঠেছিল, তাদের বিরুদ্ধেও বহিষ্কার করার মতো কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে তারেক রহমানও একই পথ অনুসরণ করছেন। 

বিএনপির সূত্রমতে, জিয়াউর রহমান মেধাবী ও যোগ্যদের সব সময় মূল্যায়ন করতেন। রাষ্ট্রপতি থাকার সময় থেকেই তিনি শহর-গ্রামগঞ্জে সব সময় ছুটে বেড়িয়েছেন। যার মধ্যে সম্ভাবনা দেখতেন তাকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে কাছে টেনে নিতেন। তার পথ অনুসরণ করে তারেক রহমানও বর্তমানে সারা দেশের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অভিযোগ উঠলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার নিজস্ব সোর্স দিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। ফলে দলের কেউ নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়ালে তাকে সরাসরি বহিষ্কার করছেন।

জানা গেছে, তৃণমূল তো বটেই, কেন্দ্রীয় নেতারাও মানছেন না দলীয় শৃঙ্খলা। দলের নীতিনির্ধারকদের কড়া হুঁশিয়ারি ও নির্দেশনার পরও থামছে না অপকর্ম। বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ অব্যাহত রয়েছে। দলের চেইন অব কমান্ড তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। পৃথক দুটি ঘটনায় ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকনকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 

সরাসরি বহিষ্কার করার চেয়েও তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বেশি কার্যকর হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দলের শৃঙ্খলার ব্যাপারে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি এবং সরকারদলীয় নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের যোগসাজশের কারণে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কমিটি বাতিল এবং শীর্ষ নেতা আবু সুফিয়ানসহ তিন নেতার সব পদ স্থগিত করা হয়েছে। সম্প্রতি চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদ আহমেদ মানিক ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে বাড়িঘর দখলের অভিযোগ উঠেছে।

বিএনপি সূত্র জানায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর নানা অভিযোগে এখন পর্যন্ত বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের দেড় শতাধিক নেতাকে বহিষ্কার ও পদ স্থগিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্রদলের ৩০ ও যুবদলের ৫৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া যুবদলের চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শাস্তি দেওয়া নেতাদের বেশির ভাগই হচ্ছেন ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম, বগুড়া, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরিশাল, পঞ্চগড়, গাজীপুর, নরসিংদী, নোয়াখালী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট ও লক্ষ্মীপুর জেলার। 

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান খবরের কাগজকে বলেন, ‘দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও পত্রিকায় ভুল নিউজের ওপর ভিত্তি করে তার পদ স্থগিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দলের হাইকমান্ডের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বিশৃঙ্খলা যেকোনো মূল্যে ঠেকাতে হবে। দীর্ঘ ১৬ বছরের দমবন্ধকর পরিবেশ থেকে নেতা-কর্মীরা মুক্তি পেয়ে হয়তো কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন বা পড়ছেন। তবে আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করে যাচ্ছি।’ 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু খবরের কাগজকে বলেন, ‘দলকে যারা বিব্রত করছেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও এদের দ্রুত বিচার করা হবে। দলের যতই বড় নেতা হোক না কেন, অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান।’

তিনি বলেন, ‘অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ক্ষমতা ছাড়াই ১৭ বছর বিএনপির হাল ধরেছেন তারেক রহমান। দল চালানোর ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পথ অনুসরণ করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রাজনীতির বর্তমান ধারায় সফলও তিনি।’

জামায়াতকে যারা নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল তারাই জনগণের ভয়ে পালিয়েছে: আব্দুল হালিম

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
জামায়াতকে যারা নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিল তারাই জনগণের ভয়ে পালিয়েছে: আব্দুল হালিম
ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতকে যারা নিষিদ্ধ করেছিল, তারা গত ৫ আগস্ট জনগণের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। 

তিনি বলেন, আল্লাহর মেহেরবানীতে জামায়াত স্বমহিমায় জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা নিয়ে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।  

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে নেত্রকোনার পাবলিক হলে জেলা জামায়াতের আমীর নির্বাচনের লক্ষ্যে আয়োজিত এক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

কেন্দ্রীয় সংগঠনের নির্দেশনার আলোকে ২০২৫-২০২৬ কার্যকালের জন্য রুকনগণ (পুরুষ ও মহিলা) জেলা জামায়াতের আমীর নির্বাচনের লক্ষ্যে গোপন ব্যালটে প্রত্যক্ষভাবে ভোট প্রদান করেছেন।  

আব্দুল হালিম বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর দেশে অপরাজনীতি করেছে এবং এখনও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই ঐক্যের পক্ষে ভূমিকা পালন করে আসছে।  

রুকনদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, দ্বীন প্রতিষ্ঠায় মুয়াজ্জিনের ভূমিকা পালন করতে হবে। সকল মানুষকে কল্যাণের দিকে আহ্বান করতে হবে। আত্মগঠন, জনশক্তির মানোন্নয়ন, পরিবার গঠন এবং মানবসেবা ও সমাজকল্যাণমূলক তৎপরতায় রুকনগণকে সক্রিয় ও একনিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের ওপর সীমাহীন জুলুম করেছিল। এখন তারা পালাতে বাধ্য হয়েছে। ৫ আগস্টের পরে আমাদের দায়িত্ব বহুগুণে বেড়ে গেছে। আমাদের প্রতি দেশের মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। মানুষের এই প্রত্যাশা পূরণে জামায়াতের রুকনদের জাগতিক ও নৈতিক যোগ্যতা বাড়াতে হবে। 

জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা সাদেক আহমাদ হারিছের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জেলা জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক মাওলানা এনামুল হক, ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল করিম প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/এমএ/

রাজধানীর জলাবদ্ধতা-যানজটের সমাধান কবে, জানতে চায় সিপিবি

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪০ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
রাজধানীর জলাবদ্ধতা-যানজটের সমাধান কবে, জানতে চায় সিপিবি
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে জলাবদ্ধতা ও যানজটের সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কবে কাজ শুরু করবে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি নেতারা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নগরজুড়ে দুর্ভোগের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দলীয় সমাবেশে তারা এ মন্তব্য করেন।

সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, জলি তালুকদার, ডা. সাজেদুল হক রুবেলসহ অনেকে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিবি নেতারা বলেন, অতীতের শাসকরা উন্নয়নের নামে জনগণকে সম্পৃক্ত না করে সংকট হলেই এক একটা প্রজেক্ট নিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করেছে। এ সময় তারা তো ক্ষমতাই নেই। এ সরকার এসব সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করতে পারবে-সেটি আমরা আশা করি না। তবে এসব সংকট সমাধানের কার্যক্রম শুরু হলো না কেন? আমরা এটা জানতে চাই।

সমাবেশে সিপিবি নেতারা দেশের সর্বত্র ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান এবং নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের নিশ্চয়তা দিতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, এলাকায়-এলাকায় সম্প্রীতির পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ সময়ে কেউ যদি অপতৎপরতা করার দুঃসাহস দেখায় তাদের চিহ্নিত ও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

শ্রমিক হত্যার বিচার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, রেশন ব্যবস্থা চালু, আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে জনজীবনে শান্তি, সর্বত্র সম্প্রীতি রক্ষা, দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব বন্ধ, পাচারের টাকা-খেলাপী ঋণ আদায়, শ্রমিকের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি, কৃষক-ক্ষেতমজুরের স্বার্থে নীতি প্রণয়ন, সবার জন্য কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য-শিক্ষার নিশ্চয়তা, কালাকানুন আইন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন প্রবর্তন, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি আসে সমাবেশ থেকে।

সিপিবি নেতারা নানা অভিযোগ এনে বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দাবির কাছে সরকার নতজানু হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় এসব অপশক্তি দাপট দেখাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে এরা জেঁকে বসছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রকৃত অপরাধীদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয় নাই। বরং অনেক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে মূল ঘটনাকে হালকা করে ফেলা হচ্ছে।

তারা বলেন, বিতর্কিত ব্যক্তিকে বিচার ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের আন্দোলনকারী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ব্যক্তি এবং সংগঠককে উপেক্ষা করে বিশেষ কতক গোষ্ঠীর স্বার্থেই সরকার তার কাজ পরিচালনা করছে।

চলমান সংকটের অবসান ঘটাতে রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য কতক প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের রূপরেখা তৈরি ও নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের আলোচনা শুরু এবং নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান।

জয়ন্ত সাহা/এমএ/ 

শহিদদের কোনো দলীয় ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না : জামায়াত আমির

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
শহিদদের কোনো দলীয় ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না : জামায়াত আমির
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি : খবরের কাগজ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা শহিদদের কোনো দলীয় ভিত্তিতে ভাগ করতে চাই না। শহিদরা জাতির সম্পদ, ইজ্জতের চূড়ান্ত সীমায় আমরা তাদের রাখতে চাই, দেখতে চাই। 

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে গাজীপুরের রাজবাড়ি ময়দানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা লড়াই করে, বুকের রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে এ সমাজকে মুক্তি এনে দিয়েছেন এই পরিবারগুলোর প্রতি সরকারকে অবশ্যই তার নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। জাতিকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাব শহিদদের সঠিক স্বীকৃতি যেন দেওয়া হয়। পাঠ্যপুস্তক কারিকুলামে আগামী দিনের নাগরিকরা যেন জানে তাদেরও আবু সাঈদরা ছিল।’ 

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘প্রতিটি শহিদ পরিবার থেকে কমপক্ষে একজনকে যেন সরকার সম্মানজনক চাকরি তাদের হাতে তুলে দেয়। লড়াই করে যারা আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে, তাদেরও যেন সম্মানজনক চাকরি দেওয়া হয়। তারা যেন আজীবন কারও করুণার পাত্র হয়ে না থাকে।’ 

জামায়াতে ইসলামীর গাজীপুর মহানগর শাখার সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ জামাল উদদীনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ।

এতে আরও বক্তব্য দেন দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. খলিলুর রহমান, ঢাকা উত্তর অঞ্চল টিমের সদস্য আবুল হাসেম খান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন, গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ খায়রুল হাসান, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি আবু সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সালাউদ্দিন আইউবী প্রমুখ।

পলাশ প্রধান/সালমান/

১০ সদস্যের প্রশিক্ষণ কমিটি গঠন বিএনপির

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫২ পিএম
আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৩ পিএম
১০ সদস্যের প্রশিক্ষণ কমিটি গঠন বিএনপির
বিএনপি (লোগো)

দলের নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি’ গঠন করেছে বিএনপি।

কমিটিতে বিএনপির স্থায়ী সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেনকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই প্রশিক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়। পরে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলী, গণশিক্ষাবিষয়ক সহ-সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

বিএনপিকে দিয়ে শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৬ পিএম
বিএনপিকে দিয়ে শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ
বিএনপি (লোগো)

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে আগামী শনিবার (৫ অক্টোবর)। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ছয়টি কমিশনের কাজ নিয়ে আলোচনা হবে। ওই দিন বেলা আড়াইটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিএনপিকে দিয়ে শুরু হচ্ছে এই সংলাপ। বিএনপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক দলগুলোকে কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানাবে। উপদেষ্টারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের (রাজনৈতিক নেতাদের) সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং তাদের পরামর্শ নেবেন।’ 

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘দু-তিন দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠন করা হবে যাতে তারা পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কমিশনের প্রধানরা ইতোমধ্যে তাদের কাজ শুরু করেছেন এবং কমিশনগুলোর কার্যপরিধি (টিওআর) ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংলাপ একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলবে।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘সংস্কার কমিশনগুলো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের নিজ নিজ রিপোর্ট জমা দেবে এবং তারপর উপদেষ্টা পরিষদ আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।’

সরকার সমালোচনাকে স্বাগত জানায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং কেউ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়।’