অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সময় দিলাম কিন্তু মৃত ব্যক্তির ভোট যেন আর না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমাদের নেতা তারেক রহমান রাজনীতি করেন না। আমরা সময় দিলাম কিন্তু মৃত ব্যক্তির ভোট যেন আর না হয়। ১৯৯১ সালে এই দেশে শাহাবুদ্দিনের আমলে যেভাবে রশি টানিয়ে ভোট হয়েছে, সেই নির্বাচন ব্যবস্থা করলে তারেক রহমান জনগণের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হবেন ইনশাআল্লাহ। বাধা দেওয়ার শক্তি আল্লাহ ছাড়া কারও নেই।’
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের উদ্যোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে স্বৈরাচার হাসিনার আমলে দায়েরকৃত সব ষড়যন্ত্রমূলক মামলা অবিলম্বে নিঃশর্ত প্রত্যাহারের দাবিতে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৬ বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আওয়ামী লীগ। কানাডায় বেগম পাড়া করেছেন তাদের নেতারা। দুবাইতে বাড়ি করেছে। ইউটিউবে শুনি আমাদের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী তারও নাকি কিছু কিছু বাড়িঘর দেশের বাইরে দেখা যায়। লজ্জা-শরম লাগে না।’
ফারুক বলেন, ‘তারেক রহমান যদি একুশে আগস্ট মামলায় বিনা কারণে আসামি হতে পারে। খালেদা জিয়া যদি দুই কোটি টাকার মামলায় পাঁচ বছর জেল খাটতে পারে। ১১৮টা মামলার জন্য শেখ হাসিনাকে হিন্দুস্থান থেকে এনে ১০০ বছর জেল হওয়া উচিত।’
সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, ‘গত ১৬ বছরের ওই মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর জন্য যে চেষ্টা আপনি করে গেছেন। বাংলাদেশের ছাত্র জনতা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আপনার সেই আশা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে।’
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘ইউটিউব থেকে শুনেছি তিনি বাংলাদেশের বর্ডারের কাছে আছেন। এমন কথা বলতে তার লজ্জা লাগে না। হোসেন মোহাম্মদ এরশাদও জোর করে ক্ষমতা দখল করেছিল তবুও সে কিন্তু দেশ থেকে পালিয়ে যায় নাই। আপনার যদি আপনার পিতা ও পরিবারকে নিয়ে এত অহংকার। স্বাধীনতা নিয়ে এনেছেন নাকি আপনারা তাহলে পালালেন কেন? কারণ আপনি ছিলেন চোর-ডাকাত। আপনি ছিলেন গণতন্ত্র হত্যাকারী, আপনি ইলিয়াস আলী চৌধুরী, আলমকে গুম করেছেন। আপনি ছিলেন বেগম জিয়াকে বিনা কারণে মামলার দেওয়ার হুকুমদাতা।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যে লোক আমার পা অচল করে দিয়েছেন। যে লোকটি সংসদ ভবনের সামনে ৩১ জন সংসদ সদস্যকে পিটিয়ে লাশ করে দিয়েছে। সেই হারুন বিএনপির অফিসকে তছনছ করেছে, বিপ্লব-মেহেদিরা বিএনপির অফিসে ঢুকে অস্ত্র রেখে আমাদেরকে মামলা দিয়েছে। জনাব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করি, তাদেরকে আইনের আওতায় আনেন। মানুষকে একটু দেখান। এরাই অত্যাচারী এরাই ক্ষমতা লিপ্সু। এরাই শেখ হাসিনার ডান হাত।’
‘বাংলাদেশ তারেক রহমানের নেতৃত্বে এমন একটি দেশ হবে যে দেশে গণতন্ত্র থাকবে। যে দেশে মিটিং করতে কোন অনুমতি লাগবে না। যে দেশে মানুষ নিত্ প্রয়োজনীয় দ্রব্য তৈরির সিন্ডিকেট তৈরি করবে না। এমন একটি সরকার বাংলাদেশের আসবে ইনশাল্লাহ।’
আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘কোথায় মায়া চৌধুরী, কোথায় মতিয়া চৌধুরী? কোথায় আবদুল হামিদ? কোথায় শাহাজান খান? কোথায় শামীম ওসমান? আপনাদের চেহারা তো দেখি না। পালাইছেন নাকি বাংলাদেশে আছেন? কয়দিন পালাইয়া থাকবেন। তত্ত্ববোধক সরকার ইনশাল্লাহ সময় মতোই নির্বাচন দিবেন সে নির্বাচনে বাংলাদেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একমাথা এক ভোটে নির্বাচনে জয়লাভ করে আসলে কোন দুর্নীতি কোন স্বজন প্রীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী কাজ করবে। আইনের আওতায় আপনারাও নিশ্চয়ই আসবেন।’
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরাম এর সভাপতি মনজুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমুসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীরা।
শফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/