ঢাকা ১৮ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪

রাজশাহী নগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩৮ পিএম
রাজশাহী নগর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু গ্রেপ্তার
ডাবলু সরকার

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র্যাব)।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাতে নওগাঁ সদর উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজশাহী মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডাবলু সরকারের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট তার নেতৃত্বে নগরীর আলুপট্টি এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আরও একজন। ওই দিনই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গাঢাকা দেন তিনি।

র্যাব-৫-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফিরোজ কবীর জানান, শুক্রবার রাতে নওগাঁ থেকে ডাবলু সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার নামে ৫ আগস্ট রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থী আবু রায়হান ও সাকিব আনজুম হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে র্যাব ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ডাবলুর নামে নওগাঁ অথবা জয়পুরহাটে কোনো মামলা থাকলে সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আর মামলা না থাকলে রাজশাহীর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

এনায়েত করিম/জোবাইদা/অমিয়/

টিএসসিতে জাপা-আ.লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতীকী ফাঁসি সোমবার

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পিএম
টিএসসিতে জাপা-আ.লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতীকী ফাঁসি সোমবার
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। ছবি : খবরের কাগজ

জাতীয় পার্টি (জাপা) আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। আওয়ামী লীগ ও জাপাকে নিয়ে বিএনপি পার্লামেন্টে বসতে চায় কিনা সে বিষয়ে দলটির অবস্থান পরিষ্কারেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আগামীকাল সোমবার (৪ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষককেন্দ্রে (টিএসসি) জাপা-আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতীকী ফাঁসি কর্মসূচি পালন করবে ছাত্র অধিকার পরিষদ।

রবিবার (৩ নভেম্বর) ঢাবির টিএসসিতে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি। 

বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ইনিয়ে-বিনিয়ে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার কাজ করছে। রংপুরে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে জঙ্গি মিছিল করেছে। তাদের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সারা দেশ থেকে লোক পাঠাচ্ছে, জিএম কাদের এটা স্বীকারও করেছেন। জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে মশাল মিছিলে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা হামলা চালিয়েছে। অথচ সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ছাত্রলীগকে যেভাবে গ্যাজেটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেভাবে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদী দলগুলোকে নিষিদ্ধ করুন, দোষীদের গ্রেপ্তার করুন। কেননা জনতার রায় হলো এই ফ্যাসিবাদী শত্রুদের নিষিদ্ধ করতে হবে।’

বিএনপিকে অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শত শত শহিদ-আহত পরিবারের লোকজন বিচারের দাবি জানাচ্ছে। তারা আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের পুনরুত্থান চান না। যারা গুম-খুন-হত্যা করেছে, তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। আপনারা (বিএনপি) বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আপনারা যদি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে পার্লামেন্টে বসতে চান, তা স্পষ্ট করুন। জনগণ আপনাদের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চায়।’

এদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে টিএসসিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদী দলের নেতাদের প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হবে। সেখানে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ফ্যাসিবাদী নেতা-কর্মীদের প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হবে বলে জানান বিন ইয়ামিন মোল্লা। 

সংবাদ সম্মেলনে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার পক্ষে দুটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদের দোসর যে দলগুলো গুম, খুন, গণহত্যায় জড়িত, তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে। আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে হবে। এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের অন্যতম সংগঠক আহমাদ ইসমাইল বন্ধন ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটির (স্বারক) আহ্বায়ক সাঈদ আহমেদ সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সরকারের বিশেষ ব্যক্তি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে: মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৯ পিএম
সরকারের বিশেষ ব্যক্তি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে: মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার কাছে এমন একজন বিশেষ ব্যক্তি আছেন, যিনি দেশকে ধ্বংসের শেষ দিকে নিয়ে যাবে। যদি না তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়।’

রবিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণ সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। 

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি খুবই ঘোলাটে। সচিবালয় থেকে শুরু করে প্রশাসনসহ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসরা এখনো বসে আছে। নির্বাচন তাড়াতাড়ি দেবেন বলেও মনে হয় না। যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন না করতে পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন দেবে বলে মনে হচ্ছে না।’ 

বন্ধু সাদেক হোসেন খোকার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘খোকার সঙ্গে আমার দ্বন্দ্বের কথা বলে অনেকে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটা আমি আর খোকা জানতাম। আমার ও খোকার মধ্যে বিরোধ ছিল না। খোকার উদ্দেশে আমার লেখা শেষ চিঠিটা তাকে ফোনে শুনিয়েছিলাম।’  

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকারের কারণে বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী বাইরে চিকিৎসা নিতে পারেনি। আমাদের নেত্রী চিকিৎসা নিতে পারেননি। হয়তো এখন তিনি চিকিৎসা পাবেন, বিদেশে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সময়মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসা হয়নি।’ 

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘ভারত ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া সম্ভব নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে তারেক রহমানকে প্রয়োজন। তাই তারেক রহমানের সব মামলা প্রত্যাহার করে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমার বাবাকে সাড়ে ৫ বছর নিজ শহরে আসতে দেয়নি স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দেশে আসার পাসপোর্ট দেয়নি পতিত স্বৈরাচার সরকার। সেই পাসপোর্টের এখনো হদিস পায়নি। শেষে বাক্সবন্দি লাশ হয়ে দেশে আসতে হয়েছে। উনার মনোবল খুব শক্ত ছিল, ভেবেছিলেন হয়তো দেশে পরিবর্তন আসবে, জীবিত দেশে ফিরতে পারবে। দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে ৫ আগস্ট। কিন্তু আমার বাবা শেখ হাসিনার পতন দেখে যেতে পারেননি। যতদিন বেঁচে থাকব অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাব।’ 

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘সাদেক হোসেন খোকার আর্দশ বুকে ধারণ করে আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। আজকে ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হয়েছে, কিন্তু আমরা এখনো গণতন্ত্র পাইনি। একটা ফ্যাসিবাদী শক্তির পর আরেকটা ফ্যাসিবাদের উত্থান যেন না ঘটে সে ব্যাপারে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।’ 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান প্রমুখ। 

শফিকুল/সালমান/

বিরাজনীতিকরণ রাস্তায় যাওয়ার চিন্তা করবেন না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৫ পিএম
বিরাজনীতিকরণ রাস্তায় যাওয়ার চিন্তা করবেন না: মির্জা ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপিকে বাদ দিয়ে আবারও চক্রান্ত করে কিছু করার চেষ্টা করতে যাবেন না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্তর্রর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না। একবার বিরাজনীতিকরণ মাইনাস টু করার খুব চেষ্টা করা হয়েছিল। আবারও ওই রাস্তায় (বিরাজনীতিকরণ) যাওয়ার কথা কেউ চিন্তা করবেন না।

রবিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন (আইইবি) মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, একজন উপদেষ্টা বলেছেন, রাজনীতিবিদরা নাকি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করছেন। আপনারা এই ধরণের কথা বলবেন, এটা আমরা আশা করি না। বাংলাদেশকে হাসিনামুক্ত করতে বিএনপি যুদ্ধ করেছে, নেতা-কর্মীরা প্রাণ দিয়েছে। এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য যুদ্ধ করছি। আমরা তো ক্ষমতা যেতেই চাই। নির্বাচন করব, ক্ষমতায় যাব। এটার জন্যই তো রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করে থাকেন।

তিনি বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছেন, শত প্রতিকুলতার মাঝেও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। গত ১৫ বছর বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ কিন্তু পারেনি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হামলা-মামলার কারণে নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারেনি। জীবন দিয়েছে, গুম হয়েছেন, কারাগারে গেছেন- এই ত্যাগ উপেক্ষা করা যাবে না।

অন্তর্বর্তী সরকারকে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যত দেরি হবে ততই স্বৈরাচার হাসিনা ফিরে আসবে। দেশে সংকট সৃষ্টি হবে। অতিদ্রুত জঞ্জাল পরিষ্কার করে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন। আমরা সহযোহিতা করেছি, আপনারাও সহযোগিতা করুন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো ভয়াবহ দানবের হাত থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। বুকের ওপর থেকে পাথর চলে গেছে। দানবীয় পাথর গেলেও কোথায় যেন আটকে আছি। এখনো জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাতা করতে পারেনি। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫-১৬ বছরের আওয়ামী লীগ দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে। পত্রিকায় দেখলাম, প্রতিবছর ১২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি মানুষের নৈতিক ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। যেখানেই যান সেখানেই চোর, আওয়ামী লীগের চোর। 

সাদেক হোসেন খোকার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জীবনের স্মতিচারণ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, খোকা ভাই ছিলেন একজন লিজেন্ড। শুধু বিএনপির সঙ্গে নয়, সব দলের নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। ঢাকা শহরের সব সড়কের নামগুলো বিশিষ্ট মানুষের নামে করে দিয়েছিলেন সাদেক হোসেন খোকা। শেখ হাসিনাও খোকা ভাইয়ের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। আমি তাকে কখনো উত্তেজিত হতে দেখেনি, অত্যন্ত ভাবনা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতেন। যখন কোনো সংকটে পড়তাম, তখন খোকা ভাইয়ের অভাববোধ করেছি। তার মৃত্যু আমাদের পাহাড়ের মতো ভারি হয়েছিল।  

তরুণদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন তরুণ প্রজন্মের যুগ। যখন আব্বাস ও খোকা ভাই ছিলেন তখন ঢাকা শহর কাঁপতো। তোমাদেরও কাঁপাতে হবে। আমরা এমন কিছু করে যাবে না যাতে কেউ যেন দলের বিরুদ্ধে আঙুল দিয়ে দেখাতে পারে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজুন সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/এমএ/

দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি বিএনপির কঠোর সতর্কবার্তা

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৪ পিএম
দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি বিএনপির কঠোর সতর্কবার্তা
ছবি : খবরের কাগজ

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের প্রতি মানুষকে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নীতি, আদর্শ পরিপন্থী, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী, সমাজবিচ্ছিন্ন ও বেআইনি কর্মকাণ্ড জড়িত না হতে সতর্কবার্তা দিয়েছেন মহানগর ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে এক জরুরি সভায় এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।

সভায় নেতারা বলেন, বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে যেকোনো অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারা বলেন, কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। প্রতিহিংসা-প্রতিশোধে লিপ্ত হবেন না। কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দিন।

এ ছাড়া বিভেদ, হিংসা, প্রতিহিংসা ভুলে সবাই মিলে দেশ গঠনে মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম, সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, কৃষক দলের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলমগীর ও সদস্যসচিব মো. সাবের।

মেহেদী/অমিয়/

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন চায় সুজন

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন চায় সুজন
ছবি : খবরের কাগজ

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থা চায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। একইসঙ্গে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও ‘না’ ভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তনের দাবিও জানায় সংগঠনটি। এজন্য দেশের সাতটি বিভাগে কর্মসূচি করবে তারা।

শনিবার (২ নভেম্বর) বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের থিয়েটার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান সুজনের নেতারা।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর কাছে জনআকাঙ্ক্ষাভিত্তিক বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরতে ও ভোটার সচেতনতা এবং নাগরিক সক্রিয়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই আয়োজন করে সংগঠনটি। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী। 

এ সময় কমিটির আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান ও সুজনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক দিলীপ সরকারও উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনকে কিছু সুপারিশ অগ্রাধিকার হিসেবে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সুজন।

এগুলো হলো, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন, এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচন ব্যবস্থার প্রবর্তন, উচ্চকক্ষের জন্য নির্বাচন পদ্ধতি নির্ধারণ, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠা ও উচ্চকক্ষকে পেশাভিত্তিক পার্লামেন্টে রূপ দেওয়া, এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবার প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না এমন বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি, সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদের সংস্কার করা এবং সংবিধানকে প্রকৃত অর্থেই অসাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্যের সংবিধানে পরিণত করা।

অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ না থাকলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে হবে এমনভাবে যেন যে দলই ক্ষমতায় আসুক, তারা সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং অন্যান্য দল তাতে সমর্থন দেবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন বাতিল করে নতুন করে আইন প্রণয়ন, সার্চ কমিটিতে সরকারি ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, জনবল নিয়োগের ক্ষমতা কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা, না-ভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনসহ আরও বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে।

এ ছাড়াও বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের কাছে সুজন আরও উল্লেখযোগ্য সুপারিশও করেছে। এগুলো হচ্ছে, পুলিশ ও জনপ্রশাসনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণমুক্ত করে রাষ্ট্রের কাছে দায়বদ্ধ করা, ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিকে সরকারি কর্মসূচিতে পরিণত না করা, দলীয় কর্মসূচিতে পুলিশ ও জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা, বিচারপতি নিয়োগে আইন প্রণয়ন, বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বলয় থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনকে মুক্ত করা।

গণমাধ্যমের ওয়াচডগের ভূমিকা পালনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পরিপন্থী সব নিবর্তনমূলক আইন বাতিলের সুপারিশও করা হয়েছে।

এছাড়া স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কাছে সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যবীমা চালু, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অবসান ঘটানো এবং শ্রমিক অধিকারবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কাছে শ্রমিকের সংজ্ঞায় কৃষিশ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করা, শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালুসহ আরও কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

মেহেদী/অমিয়/