ঢাকা ২৭ কার্তিক ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশকে স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে: মঈন খান

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম
আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৭ পিএম
বাংলাদেশকে স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করতে হবে: মঈন খান
ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারকে বাংলাদেশকে স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে রূপান্তর করার মান্ডেট দিয়েছে জনগণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) একমাত্র সহজ মান্ডেট হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু এখন সরকার যদি মনে করে, তাদের সব কিছু সংস্কার করার মান্ডেট দিয়েছে, আগামী ১০০ বছর তারা ক্ষমতায় থাকবে- এই মান্ডেট ছাত্র-জনতা তাদেরকে দেয়নি। এটা ছাত্ররাও ভাবলে তারা ভুল ভাবছে।  

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে দ্যা মিলিনিয়াম ইউনিভার্সিটি আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাস শীর্ষক গোলটেবিল’ আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মিলিনিয়াম ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট রোখসানা খন্দকার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ। 

মঈন খান বলেন, ছাত্র-জনতার কথাই বাইবেল নয়, বাংলাদেশের মানুষ ‘পলিটিক্যাল সাইন্স’ ভালো জানে। এবং এদেশে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নিতে হয় তাও জানে। আসুন আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরে যাই, মানুষের সত্যিকার অধিকার তাদের কাছে ফিরিয়ে দেই। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে মধ্যে ১৯৯১ সালে নির্বাচন ছিল সবচেয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন। সেখান থেকেও সরকার শিক্ষা নিতে পারে।
    
বিগত দুই মাস অন্তর্বর্তী সরকার কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিশেষ করে ১৫ আগস্ট ঘিরে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল কিন্তু সেই ধোঁয়াশা রাজনৈতিক আকাশে বিলীন হয়ে গেছে। তারা সফল হয়েছে। এরপর পরিকল্পিতভাবে জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার, সংখ্যালঘু ইস্যু, ভারতসৃষ্ট বন্যা, গার্মেন্টস শিল্প, পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিরতা তৈরি, দ্রব্যমূল্য বাড়ানো, সীমান্তের ওপর থেকে অডিও ফাঁস এবং সবশেষ দূগাপুজা নিয়ে দেশে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু জনগণ এবারও প্রতিহত করবে।  

মঈন খান বলেন, জনগণের প্রশ্ন- এই সরকার সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন কিনা? তারা যত দ্রুত কাজ দরকার ছিল তারা করতে পারছেন কিনা? বিপ্লবী সরকার স্বল্প সময়ের মধ্যে নতুন করে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারবে? সংস্কার ও নির্বাচন সমান্তরালভাবে চলবে আজকে সরকারও এটা স্বীকার করেছে। জনগণের মতামত দেওয়ার যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তা কিছুটা হলেও কাজ করছে। এটা একটি শুভলক্ষণ।  

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছিল, বাংলাদেশ হচ্ছে উদার মুসলিম দেশ। মূলত গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ ছিল না বরং ধর্মহীন ছিল। এদেশের মুসলমান কখনো মৌলবাদ ছিল না, এখনো নেই। মুসলমানদের বার বার ভুল বুঝিয়ে মৌলবাদী প্রমাণ করে পশ্চিমাদের সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ। দূর্গাপুর্জা সামনে রেখে আবারও বিশ্বে একই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।  

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার দেশে ফেরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ভারত ছাড়া অন্য কোন দেশে আশ্রয় পাচ্ছে না। এমনকি ইংল্যান্ডেও না। এর কারণ একটাই আন্তর্জাতিক বিশ্ব জানে তিনি কত বড় ভয়ংকর ফ্যাসিস্ট। গণহত্যায় জড়িতদের বিচার অবশ্যই করতে হবে। তবে এ বিষয়ে সরকারের ভূমিকা তা অনেকটাই ঢিলেঢালা। সরকারের অবস্থান যদি এমন ঢিলেঢালা অবস্থায় থাকে, তবে স্বৈরাচার আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে বলেও মন্তব্য করেন।

শফিকুল ইসলাম/এমএ/

অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ পিএম
অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে : মির্জা ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : খবরের কাগজ

অন্তর্বর্তী সরকারকে সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে যৌক্তিক সময় দিতে হবে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সহনশীলতা দেখাতে হবে, সব সমস্যা রাজনীতিতে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।’

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটের বড়বাড়িতে শহিদ জিয়া স্মৃতি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান সরকারে বিতর্কিত কাউকে যেন উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। আমাদেরও সহনশীল হতে হবে। যাতে সুন্দর ও শৃঙ্খলভাবে দেশের সব সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে পারে। দেশের এমন একটি বিপ্লবের পর সব স্তর ভেঙে পড়েছিল।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার প্রত্যেক সেক্টরকে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। তাই সংস্কার দ্রুতই সম্ভব নয়। যৌক্তিক সময় দেওয়া হলে সংস্কার পরিপূর্ণ হবে।’

লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি তাবিথ আউয়াল, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।  

বকুল/সালমান/

ইচ্ছেমতো উপদেষ্টা বানালে মানুষ মানবে না: ফয়জুল করীম

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫০ পিএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
ইচ্ছেমতো উপদেষ্টা বানালে মানুষ মানবে না: ফয়জুল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম কাসেমী। ছবি: খবরের কাগজ

যাকে ইচ্ছা তাকে উপদেষ্টা বানালে মানুষ মানবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম কাসেমী।

তিনি বলেন, ‘যাকে ইচ্ছা তাকেই উপদেষ্টা বানাবেন, ক্ষমতা দেবেন, এটা বাংলাদেশের মানুষ মানবে না।’

সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় জয়পুরহাট শহিদ ডা. আবুল কাসেম ময়দানে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘কোনো নাস্তিককে আমরা বাংলাদেশে উপদেষ্টা দেখতে চাই না। ঠিকভাবে দেশ চালান, এতে ব্যর্থ হলে ভূমিকম্প হয়ে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাজপথে নেমেছিলাম জীবনের মায়া ত্যাগ করে এবং মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেব বলে। যেখানে থাকবে না লুটপাট, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, গুম, খুন, অত্যাচার, অবিচার ও দখলদারি। ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পরে সাম্য রক্ষা হবে, জুলুম-অত্যাচার দূর হবে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করবে, চাঁদা থাকবে না। মানুষ নির্বিঘ্নে হাঁটবে, ভয় থাকবে না।’

ফয়জুল করীম কাসেমী বলেন, ‘একজন মহিলা একা একা হাঁটলে ধর্ষিত হবেন না, ইভটিজিংয়ের শিকার হবেন না। যেখানে শ্রমিকসহ সবার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু আমরা কি দেখলাম, ৫ আগস্টের পর আবারও দখলদারি, চাঁদাবাজি, খুন, মিথ্যা মামলা, জুলুম, অত্যাচার, অবিচার হচ্ছে।’

ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, দলটির নায়েবে আমীর আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী যুব আন্দোলনের রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ মিনহাজুল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন জয়পুরহাট জেলার উপদেষ্টা মাওলানা শহিদুল ইসলাম।

সাগর কুমার/সুমন/অমিয়/

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো নিয়ে যা বললেন রিজভী

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো নিয়ে যা বললেন রিজভী

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো উচিত হয়নি মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার সংশোধনী পাঠিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মু. মুনির হোসেন সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সংশোধনী পাঠানো হয়।

সংশোধনীতে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচতলায় বিএনপি আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি’ মর্মে একটি সংবাদ অনলাইনে প্রকাশিত হচ্ছে।

আজ গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে’ মর্মে একটি সংবাদের প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। আমি মনে করেছিলাম, বঙ্গভবনের দরবার কক্ষে যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি থাকে সেখান থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে। মূলতঃ ছবিটি সরানো হয়েছিল বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে শেখ মুজিবের ছবি রাখার বাধ্যতামূলক আইন করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদী আইনের কোনো কার্যকারিতা থাকতে পারে না। অফিস-আদালত সর্বত্রই দুঃশাসনের চিহ্ন রাখা উচিত নয়। অনাকাঙ্খিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখিত।

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো প্রসঙ্গে রুহুল কবীর রিজভী বলেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা মাহফুজ সাহেব বলেছেন ‘বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে’। ‘দেখুন- এটা করেছেন ঠিক আছে। ৭২ পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ের হত্যা, খুন, লুণ্ঠন ধর্ষণ সবই হয়েছে, এটা সবার জানা। তবে খন্দকার মোশতাক শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেললে সেটি কিন্তু জিয়াউর রহমান প্রতিস্থাপন করেছেন। জাতীয় স্বাধীকার আন্দোলনে তো তার অবদান আছে। আমি মনে করি, শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো উচিত হয়নি। ইতিহাস বিচার করবে, জনগণ বিচার করবে। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের আন্দোলনের তার যে অবদান সেটা তো অস্বীকার করা যায় না। আমরা তো আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণ মনের নই। এজন্য বলছি, শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো উচিত হয়নি।’

অমিয়/

আ.লীগকে ভোটের মাধ্যমে বাতিল করতে হবে: আমীর খসরু

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৪ পিএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
আ.লীগকে ভোটের মাধ্যমে বাতিল করতে হবে: আমীর খসরু
জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী লীগকে ক্যানসেল (বাতিল) করতে হলে জনগণের ভোটের মাধ্যমে করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

এ সভার আয়োজন করে ভয়েস অব ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস।

সভায় আমীর খসরু বলেন, ‘আপনি যদি আওয়ামী লীগকে ক্যানসেল করে দিতে চান অন্য কোনোভাবে এগুলো টিকে থাকে না। ফ্যাসিস্টকে ক্যানসেল করবেন ভোটের মাধ্যমে চরমভাবে পরাজিত করে। অন্য কোনোভাবে ক্যানসেল করলে কোনো সুফল বয়ে আনবে না।’ 

তিনি বলেন, ‘বিএনপির জন্য সংস্কার নতুন কিছু নয়। খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ভিশন ২০৩০ সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল। তারেক রহমানও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দলের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন। শুধু সবাইকে নিয়ে নয়, বাস্তবায়নের জন্য ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে থাকা সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে। জনগণের আস্থা নিয়ে সংস্কার করবে হবে। সেটা একমাত্র সম্ভব নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে। অনির্বাচিত কোনো সরকার তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা ও দর্শনের সেভাবে সংস্কার করতে পারে না। যেসব সংস্কারে ঐকমত্য আছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

আমীর খসরু বলেন, ‘জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে তা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের একটা বয়ান ছিল, স্বৈরাচারের একটা ছিল এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার একটা বয়ান ছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বলেছিল- উন্নয়নের উপরে গণতন্ত্র। কিন্তু উন্নয়নের সঙ্গে গণতন্ত্র হাতে হাত মিলিয়ে চলতে হয়। গণতন্ত্র বাদ দিয়ে উন্নয়ন করলে হবে লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচারের উন্নয়ন। গণতন্ত্র বাদ দিয়ে উন্নয়ন করলে হবে পকেটের উন্নয়ন। একমাত্র বয়ান হবে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। এর বাইরে নতুন বয়ান শুনতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ১৬ বছরে জ্বলে-পুড়ে বিএনপি খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। ত্যাগ-জুলুমের মধ্যে দিয়ে নতুন বিএনপিতে পরিণত হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা ত্যাগ করতে শিখেছে, রক্ত দিতে শিখেছে ও জীবন দিতে শিখেছে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াই থেমে থাকবে না।’ 

আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। আমরা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি এবং যাব। সবাই মিলে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছি। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করতে হবে। হাসিনা পালানোর পর দেশের মানুষের মনোজগতের পরিবর্তন হয়েছে। যে দল ও ব্যক্তি বুঝতে পারবে না, তাদের রাজনীতি বেশিদূর এগোতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি শুধু বিপ্লব নয়, বিএনপি সংহতি। বিএনপি জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের কথা বলছে। আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে যেটা প্রতিষ্ঠিত করব সেটাই থাকবে। তাই আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। স্বাধীন মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। দেশকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমতুল্লাহ। 

শফিকুল/পপি/

সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাক, সাবেক এমপি করিম, সাবেক আইজিপি শহীদুল রিমান্ডে

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৯ পিএম
সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাক, সাবেক এমপি করিম, সাবেক আইজিপি শহীদুল রিমান্ডে
সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক এমপি ফজলে করিম, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক। ছবি: সংগৃহিত

দুই সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ও রাশেদ খান মেনন, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এবং সাবেক এমপি আব্দুস সোবহান গোলাপকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। 


এ ছাড়া পৃথক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজ উদ্দিন আহমেদকে (মেহেদী) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার পৃথক মামলায় ঢাকার দুইটি আদালত এসব আদেশ দেন।


এ ছাড়াও চট্টগ্রামে সাবেক এমপি ফজলে করিমকে ৩ দিন, টাঙ্গাইলের সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে ১৫ দিন এবং কুমিল্লায় সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সংসদ সচিবালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব কিবরিয়াসহ তিনজনকে দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন তিনটি আদালত।

 
আদালত সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা শামীমকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গতকাল শাজাহান খান, রাশেদ খান মেনন, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন ও আব্দুস সোবহান গোলাপকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত। 
এর আগে তাদের আদালতে হাজির করে শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।


এদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মনোয়ারা হাসপাতালের সামনে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় গতকাল আহমদ হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন একই আদালত। 
এ ছাড়া রাজধানীর মিরপুরে দুই হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত। 


এদিকে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার আজমপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন আলমগীর হোসেন (৩৪) নামে এক বাস চালক। এ মামলায় গতকাল মমতাজ উদ্দিন আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এই আদেশ দেন।


এর আগে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তবে মামলার মূল নথি মহানগর দায়রা জজ আদালতে থাকায় এদিন রিমান্ড শুনানি হয়নি।

সাবেক এমপি ফজলে করিমের ৩ দিনের রিমান্ড 
অস্ত্র মামলায় চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সহিদুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেন। 


চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন বলেন, রাউজান থানার অস্ত্র মামলায় ফজলে করিম চৌধুরীর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


আদালত সূত্রে জানা যায়, রাউজান উপজেলার গহিরায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর ফজলে করিম চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি থেকে একটি পয়েন্ট ২২ বোরের রাইফেল, একটি এলজি, একটি রিভলবার, একটি শটগান ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। এর মধ্যে শুধু রাইফেলের লাইসেন্স ছিল। বাকিগুলো অবৈধ অস্ত্র। এ ঘটনায় রাউজান থানায় মামলা হয়। 

সাবেক মন্ত্রী রাজ্জাক ১৫ দিনের রিমান্ডে 
টাঙ্গাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দুই শিক্ষার্থীকে হত্যা এবং ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার ঘটনায় করা তিন মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার টাঙ্গাইল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ রায় দেন। 


এর আগে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বিকেলের দিকে রাজ্জাককে আদালতে নেওয়ার সময় তারা ডিম ছুড়ে মারে। 


টাঙ্গাইল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পিপি শফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, আজকে (সোমবার) তিনটি মামলায় আব্দুর রাজ্জাককে ১৫ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে মধুপুর উপজেলায় গত ৪ আগস্ট হামলার ঘটনায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা ও অপর দুটি হলো মির্জাপুরে ইমন হত্যা ও টাঙ্গাইল সদরে মারুফ হত্যা মামলা। 

সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব কিবরিয়ার ২ দিনের রিমান্ড
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে ৮ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শহীদুল হক, গোলাম কিবরিয়া ও জহিরুল ইসলাম সেলিম নামের এক ব্যক্তির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সকালে কুমিল্লার সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এই আদেশ দেন। সেলিম কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাসিন্দা।


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি ও মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু।


২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে আইকন পরিবহনের একটি বাসে পেট্রল বোমা নিক্ষেপে ৮ যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। তবে ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর গত ১১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা আদালতে একই ঘটনায় ১৯০ জনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন বাসটির তত্ত্বাবধায়ক পরিচয়দানকারী আবুল খায়ের।