জাতীয় নির্বাচনের পর পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসনব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘১৬ বছর ও ৫৩ বছরের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন করতে হবে। যারা নির্বাচনের কথা বলে তারা মনে হয় ষড়যন্ত্রকারীদের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছে। আমাদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য থাকতে হবে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরাদের নেতৃত্বে যারা আওয়ামী লীগকে আনতে চায় তারা দেশের শত্রু।’
অতীতের নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করে রেজাউল করিম বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ইসলামি ছাত্র আন্দোলন রাজপথে ব্যানার নিয়ে আন্দোলন করেছে। এই সংগঠনের অনেক ছাত্র শাহাদাত বরণ করেছে, আহত হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। ইসলামী আন্দোলন বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছিল।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপত্তি করার পরও ফারুকীকে সরিয়ে দেওয়া হয়নি। আশা করি সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি এখনো বন্ধ হয়নি। মানুষের অধিকার পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি নুরুল বশর আজিজীর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ মুনতাসির আহমদের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল আউয়াল, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ।
সম্মেলনে ইউসুফ আহমদ মানসুরকে সভাপতি, মুহাম্মাদ মুনতাসির আহমদকে সহসভাপতি ও শেখ মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমানকে সেক্রেটারি জেনারেল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সম্মেলনে ১৩ দফা উপস্থাপন করেন আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি ইউসুফ আহমদ মানসুর।
দাবিগুলো হলো- পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ ও তার সব সহযোগী সংগঠনকে বিচারের আওতায় এনে বিগত ১৬ বছরের দুঃশাসনের বিচার করতে হবে, জুলাই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী, হামলার নির্দেশদাতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে, ভারতীয় আগ্রাসন প্রতিরোধে শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে ভারতের নিকট থেকে নিজেদের সব হিস্যা বুঝে নিতে হবে, প্রচলিত ছাত্র রাজনীতি নয়, বরং জনকল্যাণমুখী ও শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্ররাজনীতি চর্চা এবং ছাত্রসংসদ নির্বাচন দিতে হবে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ পরিবারের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে, আহতদের পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ইত্যাদি।
শফিকুল ইসলাম/নাবিল/এমএ/