কক্সবাজার শহরে একটি আবাসিক হোটেল থেকে আওয়ামীপন্থি ১৯ ইউপি সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে ইউনি রিসোর্টের পঞ্চম তলার হলরুম থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকদের দাবি, জেলার ৯টি উপজেলার ইউপি সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠন মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভা চলছিল। এ সময় পুলিশ ও অর্ধশতাধিক কথিত সমন্বয়ক তাদের হলরুম ঘেরাও করে। এরপর পুলিশ ও সমন্বয়ক পরিচয়ধারীরা এসে তল্লাশি শুরু করে।
এ বিষয়ে পুলিশ বলছে, আওয়ামীপন্থি ইউপি সদস্যরা গোপনে বৈঠক করছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
বৈঠকে ৭০ জন ইউপি সদস্য ছিলেন। তবে বাকিদের ছেড়ে দেওয়ার কারণ স্পষ্ট করেনি পুলিশ।
এদিকে, হোটেল ঘেরাও করায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয় আশপাশের এলাকায়। এমনকি পর্যটকদের হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতেও দেখা যায়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম নোমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি সদস্যরা ইউনি রিসোর্টে গোপন বৈঠক করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। এখানে অনেক ইউপি সদস্য আছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের আটক করা হয়েছে এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই, তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
তবে পুলিশের অভিযানে অর্ধশতাধিক কথিত সমন্বয়ক কেন? এমন প্রশ্নের জবাব দেননি পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আটক টেকনাফ সদর ইউপির সদস্য জহির আহমেদ বলেন, ‘আজ জেলার ইউপি সদস্যের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভা ছিল। আমরা প্রায় ৭০ জন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলাম। দেশের ক্রান্তিকালে কীভাবে কাজ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। হঠাৎ পুলিশ ও সমন্বয়ক ঢুকে আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আটক করে।’
গোপন বৈঠক হলে সড়কের পাশে হোটেলে ঘটা করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো না দাবি জহিরের। তাদের অকারণে হয়রানি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পুলিশি হেফাজত থেকে ছাড়া পেয়ে মহেশখালী এলাকার ইউপি সদস্য সেলিম জানান, তাদের মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভা ছিল। সেখানে সব রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরাই ছিলেন।
পুলিশের অতর্কিত তল্লাশির প্রতি নিন্দা জানান তিনি।
পর্যটক মিরাজ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে এই হোটেলে উঠেছিলাম। হঠাৎ পুলিশ হোটেল ঘেরাও করে। এর কিছুক্ষণ পর ছাত্র পরিচয়ে কিছু লোক হোটেলে ঢুকে পড়েন। আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছি না। তাই চলে যাচ্ছি।’
এদিকে অভিযানের নিউজ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ভিডিও ফুটেজ নিতে বাধা দেন সমন্বয়ক পরিচয়ধারী কিছু লোক। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার অভিযোগও ওঠে।
মুহিবুল্লাহ/নাইমুর/অমিয়/