বিএনপি জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের নতুন সুযোগে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে আমরা বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক, আধুনিক রাষ্ট্র ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মিরপুরের শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে পাক-হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, বৈজ্ঞানিক এবং সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। ১৯৭১ সালে আমরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিল একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য। এটি হয়েছিল শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আজ আমরা সবাই মিলে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের মাগফিরাত কামনা করছি। আজকের এই দিনে আমরা শপথ গ্রহণ করেছি বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যে কারণে যুদ্ধ করেছিল একটা স্বাধীন, গণতান্ত্রিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য।’
জনগণের ইচ্ছানুযায়ী খুব দ্রুত একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব সময় আশাবাদী। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমরা সহযোগিতা করছি। আশা করি, খুব দ্রুত জনগণের ইচ্ছানুযায়ী একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা ও গণহত্যা করে আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই কারণে তারা আজ উপস্থিত হতে পারেনি।’
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে গতকাল শুক্রবার একজন উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিরাজনীতিকরণের একটি প্রয়াস।’
পৃথিবীতে যত সংস্কার হয়েছে তা রাজনীতিবিদরা করেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন - বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, খায়রুল কবির খোকন, হাবীব উন নবী খান সোহেল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, শামীমুর রহমান শামীম, মাহবুবুল ইসলাম মাহবুব, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মোস্তাফা জামান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহীদুল ইসলাম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম, নাছির উদ্দিন নাছিরসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক হাজারো নেতা-কর্মী।
শফিকুল ইসলাম/অমিয়/