
দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।
চট্টগ্রামে সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না করে হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তারা বলেন, ‘আইনজীবী হত্যা দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তা তদন্ত করে উদঘাটন করতে হবে।’
নেতারা বলেন, ‘ইসকন ও সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার ও জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে তার অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া আদালত ও আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়। মসজিদের মুসল্লিসহ পথচারীদের আক্রমণ ও হামলার টার্গেট করা হয়। যা দেশ-জাতি ও রাষ্ট্রের জন্য প্রচ্ছন্ন হুমকি।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘‘যদিও ৮ নভেম্বর একটি সংবাদ সম্মেলনে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ইসকনের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার তথ্য জানিয়েছিল সংগঠনটি। কিন্তু, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আটকের বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন)। তিনি ‘বাংলাদেশে ইসকনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা’ উল্লেখ করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রমান করেছে বাংলাদেশের ইসকনের দেওয়া তথ্য সত্য নয়। তারা শুধু নিজেদের অপরাধ আড়াল করতেই মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।’’
তারা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতনের পর অবাধ গণতন্ত্রের সুযোগে দেশের ভেতরের বিভিন্ন অপশক্তি এবং বাইরের ষড়যন্ত্রকারীরা সম্মিলিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। যখন দেশের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার প্রশ্নে সংবিধান সংস্কার, প্রশাসনিক সংস্কার, পুলিশ সংস্কারসহ সব ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র বিনির্মাণের সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে - তখন সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে অপশক্তির বিরুদ্ধে।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সুযোগ এসেছে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের জন্য একটি পরিবর্তন নিয়ে আসার। কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মাত্র তিন মাসের মাথায় রাস্তায় রাস্তায় লড়াই শুরু হয়ে গেছে। ফ্যাসিবাদী শক্তির পতনের লক্ষে যারা শাহাদৎবরণ করলো তারা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছে? অশুভ শক্তির পতনের তিন মাস হয়নি অথচ একজন আরেকজনের রক্ত ঝরাচ্ছে। পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আহালে হাদিস-সালাফি নামক উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠী মাজার, দরবার, দরগাহ্তে আক্রমণ করছে। এসব কিসের লক্ষণ? এসব লক্ষণ শুভ নয়।’
তারা বলেন, ‘ধর্মকে নিয়ে উন্মাদনা সৃষ্টি করে আসলে বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা? বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যারা নষ্ট করতে চাচ্ছে তারা দেশ-সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। ধর্মীয় লেবাসে তারা দেশ ও জাতিতে বিভক্ত করে দিতে চাচ্ছে। দরবারে হামলা, মত ভিন্নতার কারণে অন্যের মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া কোনো শুভ লক্ষন নয়। এ সকল অতি উগ্রবাদী ও উম্মাদ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
অমিয়/