
আগামী ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে শহিদ বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত পদযাত্রা করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভায় রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বাসদ (মার্কসবাদী) কার্যালয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
বামজোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সদস্য শহীদুল ইসলাম সবুজ ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, সদস্য রুবেল শিকদার।
সভায় নেতরা বলেন, গত চার মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অসহনীয় পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। মূল্যস্ফীতি ৪% বেড়েছে। আওয়ামী লীগ আমলের মতোই শুল্ক হ্রাস করেও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো যাচ্ছে না। অর্থাৎ মুনাফাখোর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আগের মতোই শক্তিশালী। নিত্যপণ্যের মূল্য কমানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাকি সব কাজ করতে হবে। এই অভ্যুত্থানে অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আওয়ামী লীগ শাসনে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল। সেই শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষদের বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করা অভ্যুত্থানের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত। বাজার ব্যবস্থার সংস্কার করে দরিদ্র-নিম্নবিত্ত জনসাধারণের জন্য দ্রুত রেশনের ব্যবস্থা চালু করা দরকার।
সভায় নেতারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অজুহাতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দিবসে আলোচনা অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ, মেলা ও কুচকাওয়াজ না করা ও কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করার যে সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় নিয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও সাম্প্রদায়িক উস্কানি রুখে দাঁড়ানোর জন্য দুই দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা। পাশাপাশি দুই দেশের মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে উভয় দেশের সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
নেতারা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও সংস্কার ও নির্বাচনের কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয় নি। বরং নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রথম সভার পর ভোটার হালনাগাদ করার জন্য যে সময়ের পরিকল্পনা হাজির করেছে তাতে নির্বাচন করার সময় অনেকখানি পিছিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে যতটুকু নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারসহ অন্যান্য সংস্কার সম্ভব তা সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
কর্মসূচি
আগামী ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে শহিদ বুদ্ধিজীবী হত্যার বিচার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার পর্যন্ত পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। সারাদেশে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণের জন্যও আহ্বান জানানো হচ্ছে।
মাহফুজ/এমএ/