ঢাকা ৩ মাঘ ১৪৩১, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫

এবি পার্টির কাউন্সিল: চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত লড়াইয়ে ৩ প্রার্থী

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৪ পিএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
এবি পার্টির কাউন্সিল: চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত লড়াইয়ে ৩ প্রার্থী
এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, লে. কর্ণেল (অব.) দিদারুল আলম ও মজিবুর রহমান মঞ্জু

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন ততই জমে উঠছে। যাচাই-বাছাই শেষে এখন চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত লড়াইয়ে তিন প্রার্থী রয়েছেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিনে আরও দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। 

তারা হলেন- দলের বর্তমান আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার ও যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া। 

চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত লড়াইয়ে তিন প্রার্থী হলেন- দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক সাবেক সচিব এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, দলের যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ও দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। 

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত কমিশনের প্রধান অধ্যাপক এ কে এম ওয়ারেসুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলের নির্বাহী পরিষদের ২১ সদস্য পদের জন্য চূড়ান্ত প্রার্থী হলো ৬০ জন। আগামী ২৮ ডিসেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল এবং সেদিনই দলের নতুন চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি ও ২১ জন নির্বাহী কাউন্সিল সদস্যপদে নির্বাচিতদের নাম ঘোষণার কথা রয়েছে। 

আজ (শুক্রবার) থেকে শুরু হবে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। ইতোমধ্যে প্রার্থী ও দলের নানা স্তরের কাউন্সিলরদের আনাগোনায় বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে। অনলাইনে চলছে পোস্টার দিয়ে প্রচারণা। কেউ কেউ দল পরিচালনায় নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও অঙ্গীকারের কথাও বলছেন। নির্বাচনকে প্রাণবন্ত এবং গণতান্ত্রিক ধারা শক্তিশালী করতে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের মধ্যে অনলাইন ডিবেটের আয়োজন করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

শফিকুল/পপি/

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে: চরমোনাই পীর

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে: চরমোনাই পীর
ইসলামী যুব আন্দোলনের কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। ছবি: খবরের কগজ

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী যুব আন্দোলনের পঞ্চম জাতীয় যুব কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে আপনাদের ভয় কোথায়? বাঁধা কোথায়? বর্তমান পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে এককভাবে ক্ষমতায় গিয়ে আবারও জুলুমের স্টিমরোলার জনগণের ওপর চাপিয়ে দেবেন, এটা আর হবে না। উচ্চকক্ষ হোক আর নিম্নকক্ষ হোক সব নির্বাচনই পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।

কনভেশনে ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদকে সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার মারুফ শেখকে সহ-সভাপতি ও মাওলানা মানছুর আহমদ সাকীকে সেক্রেটারি জেনারেল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।

রেজাউল করিম বলেন, গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু আপনাদের অনেক কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। আপনাদের দুর্বলতা কোথায়? চাঁদাবাজ ও খুনিদেরকে এদেশের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায় না। পরিবর্তন করে সুন্দর পরিবেশ তৈরির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোকে অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করেছেন তাদেরকে নির্বাচনের জন্য আহ্বান করছেন, কিছু দল তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করছেন, ফ্যাসিবাদদের দোসরদের নিয়ে আবার ক্ষমতা দখল করবেন, এটা আর কখনো হবে না। এই ধোঁকাবাজি জনগণ বুঝে গেছে।

চরমোনাই পীর বলেন, ৫৩ বছর দেশ স্বাধীনতায় যারা শাসন করেছে, তারা নতুন করে কোনো আশা দেখাতে পারবে না। এখন পরিবর্তন দরকার, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে হবে। মায়ের কোল খালি করবে, বিদেশে টাকা পাচার করবে, বেগম পাড়া তৈরি করবে- তাদের রাজনীতি দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। তার জন্য যদি আবারও প্রয়োজন হয় আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।

আগামী নির্বাচনে যুবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তি বাড়াতে হবে। এজন্য ইসলামের পক্ষে যুবকদেরকে নিয়ে আসতে মাসে কমপক্ষে ৪ জনকে দাওয়াত দিতে হবে। আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামী নীতি আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হবে।

কনভেনশনে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, অতীতের সরকার সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। ফলে সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। এককক্ষ বা দ্বি-কক্ষ যাই হোক সব নির্বাচন পিআর পদ্ধতির হতে হবে। অন্যথায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।

অনুষ্ঠানে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ১৬ বছর আলেম ওলামাদের জুলুমের কারণে অনেককে বিদেশ চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবে আপনাদের যে ত্যাগ ছিল, তা জাতি চিরদিন স্বরণ করবে।

ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, প্রকৌশলী মারুফ শেখ ও মাওলানা রহমাতুল্লাহ বিন হাবিবের যৌথ সঞ্চালনায় কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল আউয়াল, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/নাবিল/এমএ/

দেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল জামায়াত: আমির

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
দেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল জামায়াত: আমির
চুয়াডাঙ্গায় জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আমীর ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল জামায়াত বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলার টাউন মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈষম্যহীন, মানবিক, দুর্নীতি-দুঃশাসন মুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থামবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গত সাড়ে ১৫ বছরে জামায়াতের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, হাজারও নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে, ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। হাট-ঘাট, মসজিদ-মাদরাসা এমনকি মন্দিরেও লুটপাট চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা চাটিবাটি নিয়ে পালিয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজ সবাই পালিয়েছে।'

আওয়ামী লীগের শাসনামলের প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াত আমির বলেন, ‘ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা দেশের জ্ঞানী, শিক্ষিত, মার্জিত ও অভিজ্ঞ মানুষদের হত্যা করেছে। হাজারও মানুষকে নির্যাতন করেছে। তারা শত শত মানুষকে গুম-খুন করেছে। মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে। উন্নয়নের বুলি শুনিয়ে তারা দেশের সম্পদ লুট করেছে।’

দেশের মানুষের সামনে দাঁড়ানোর মতো সৎ সাহস শেখ হাসিনার ছিল না, যে কারণে তিনিসহ তার দোসররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘পর পর তিন তিনটি নির্বাচনে তারা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই-আগস্টে আমাদের সন্তানেরা বিপ্লব ঘটিয়ে ২৪-এ স্বাধীনতা এনেছেন। ফলে স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। যারা আমাদের সন্তানদের ওপর গুলি চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছিল জনগণ তাদেরকে এক দফা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।'

ছাত্র-জনতার অবদানকে স্মরণ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে এই জাতি দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে। তরুণ-যুব সমাজ চাঁদাবাজমুক্ত, দখলবাজমুক্ত ও পেশীশক্তি মুক্ত নতুন দেশ চায়। আমরাও সাম্যের বাংলাদেশ চাই। এই প্রজন্ম বুকের রক্ত দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দিয়ে হলেও এই স্বাধীনতা ধরে রাখব।'

নির্বাচন কেন্দ্রিক ষড়যন্ত্র চলছে, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কারো টাকার কাছে নিজেদের ভোট বিক্রি করব না। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। কালো টাকা ও পেশীশক্তির কাছে আমরা মাথানত করব না। যারা কালো টাকা দিয়ে ভোটের মাঠে আসবে, তাদেরকে না বলে দিতে হবে।'

আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ২৬ লাখ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেছে। এসব টাকা জাল ফেলে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে দেশে ফেরত আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের খুঁজে এনে ওই কাশিমপুর জেলে পাঠাতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির অ্যাড. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য খন্দকার আলী মোহসিন, যশোর জেলা শাখার আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম, কুষ্টিয়া জেলা আমির মাওলানা অধ্যাপক আবুল হাশেম, মেহেরপুর জেলা আমির মাওলানা তাজ উদ্দীন খাঁন, চুয়াডাঙ্গা জেল জামায়াতের সাবেক আমির আনোয়ারুল হক মালিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম অর্ক এবং জেলা জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল প্রমুখ।

আফজালুল/নাবিল/সিফাত