
বিএনপি নির্বাচনের ধারণা নয়, নির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
ভোট নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যের সাধুবাদ জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচিত সরকার না আসবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। আমরা চাই, এই সরকার একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করুক। আশাকরি সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেবে।’
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী শ্রদ্ধা জানান।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এদেশের মানুষ ভোটের অধিকার চায়। আমরা দেখেছি, ভোটের কথা বললে, ইলেকশনের কথা বললে অনেকে মুখ বাঁকা হয়ে যায়। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, আমাদের নেতা তারেক রহমান পরিষ্কার বলেছেন, আমাদেরকে কতদিন অপেক্ষা করতে হবে, এটা একটু আমাদেরকে জানিয়ে দিন। আমরা অপেক্ষা করতে রাজি আছি, সংস্কারের জন্য অপেক্ষা করব। কিন্তু যুগ যুগ ধরে এভাবে চলতে পারে না।’
তিনি বলেন, আজকে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ, আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষ বাঁচার আশ্রয় খুঁজছে। মানুষ কথা বলতে পারছে ঠিকই কিন্তু দেশের মানুষের অভাবের তাড়না রয়ে গেছে।
মির্জা আব্বাবস বলেন, সংস্কার যুগ যুগ ধরে চলবে, এটা নতুন কিছু নয়। এটা প্যাকেট নয়, একটা প্যাকেটে করে এনে আমি সংস্কার হয়ে গেলাম। সময়ের বিবর্তনে, সময়ের চাহিদায় সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আশা করছি, এই সরকার দ্রুততম সময়ে জনগনের ভোটের অধিকার জনগনের হাতে ফেরত দেবে।
‘যদি অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয় তাহলে ২০২৫ সালের শেষ দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। আর যদি এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি তাহলে অন্তত আরও ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে’, বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের একটি ধারণা দিয়েছেন। কিন্তু বিএনপি ধারণা নয়, নির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মির্জা আব্বাস।
বিজয় দিবসে বিএনপি প্রত্যাশা কি জানতে চাইলে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই বিজয় দিবসে আজকে যে জনগনের ঢল আমার জীবনে আমি কখনো দেখিনি। এর একটাই মাত্র কারণ, জনগনের বাধভাঙা উল্লাস। এদেশের মানুষ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। এদেশের মানুষ চায় এক স্বৈরাচারমুক্ত করে আমরা জনগন যেন আর কোনো স্বৈরাচারের হাতে না পড়ি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মাসুদ আহমেদ তালুকদার, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, সাইফুল আলম নিরব, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, মহানগর উত্তর বিএনপির আমিনুল হক, দক্ষিণের তানভীর আহমেদ রবিন, যুব দলের আবদুল মোনায়েম মুন্নাসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
শফিকুল/অমিয়/