ঢাকা ৪ ফাল্গুন ১৪৩১, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১

গাজীপুরে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় মামলা, যুবদল নেতা বহিষ্কার

প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
গাজীপুরে শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় মামলা, যুবদল নেতা বহিষ্কার
বহিষ্কৃত যুবদল কর্মী রাশেদুল ইসলাম রনি । ছবি: খবরের কাগজ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় এক শিক্ষককে ধরে এনে মারধরের ঘটনায় রাশেদুল ইসলাম রনি নামে জেলা যুবদলের এক নেতাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে একই ধরনের অপরাধ করে বহালে রয়েছেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন আহমেদ ও যুবদল কর্মী রাকিব হাসান। 

রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতেই তাকে বহিষ্কার করার পত্র দিয়েছেন বিএনপির যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া।

অপরদিকে এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বশির উদ্দিনের স্ত্রী সিফাত-ই মনোয়ার বাদি হয়ে কালিয়াকৈর থানায় এটি মামলা করেছেন।

পুলিশ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, রবিবার উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বসির উদ্দিন ও প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমার কথা বলছিলেন। এ সময় জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রনির নেতৃত্বে উপজেলার যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন আহমেদ, যুবদল কর্মী রাকিব হাসান ও তাজিদ মিয়া লাঠিসোঁটা নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ঢুকে সহকারী শিক্ষক বসির উদ্দিনকে জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। এ সময়ে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রিজভী আহাম্মেদ সজিব ওই শিক্ষককে রক্ষা করতে গেলে তাকেও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে বিদ্যালয়ের দপ্তরিসহ আশপাশের লোকজন তাদের আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। 

শিক্ষক বশির উদ্দিনের স্ত্রী সিফাত-ই মনোয়ারের করা মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত পত্রে লেখা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে গাজীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রনিকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নিবেনা। যুবদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান বলেন, দলের সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিকভাবে রাশেদুলকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধেও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জামিল হোসেন বলেন, শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

পলাশ প্রধান/মেহেদী

ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদন ছাত্রলীগকে হামলার উসকানি দেন কাদের-সাদ্দাম

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৫ এএম
ছাত্রলীগকে হামলার উসকানি দেন কাদের-সাদ্দাম
ওবায়দুল কাদের ও সাদ্দাম হোসেন

জুলাই-আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভয় ধরাতে সরকারের বিরামহীন তৎপরতা ছিল। এর লক্ষ্য ছিল ছাত্র আন্দোলন কোনোমতেই যেন যৌক্তিকতা না পায়। গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো আন্দোলন শুরু হওয়ার পর পরই সরকারকে রিপোর্ট দিয়েছিল যে গ্রীষ্মের এই আন্দোলন সরকারের জন্য গলার কাঁটা হতে চলেছে। তাই আন্দোলন দমানোর অংশ হিসেবে ছাত্রলীগকে মাঠে নামানো হয়। ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের নানা হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। ১৫ জুলাই তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ওই হামলার জন্য ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উসকানি দিয়েছিলেন এবং সংগঠিত করেছিলেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ‘জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এ বাংলাদেশে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১ জুলাই ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আন্দোলনকারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘কেউ কেউ আন্দোলনকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তাদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত ছাত্রলীগ।’ তার হুঁশিয়ারির পর ওই দিনই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের মিছিলে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্য আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। শেখ হাসিনা সেদিন বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি ছাত্রদের এত গাত্রদাহ কেন? যদি মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা কোটা সুবিধা না পায়, তা হলে কী রাজাকারের নাতি-পুতিরা কোটা সুবিধা পাবে?’

শিক্ষার্থীরা তার ওই বক্তব্যে ফুঁসে ওঠেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর বলা ‘রাজাকার’ শব্দটিকে ব্যক্তিগতভাবে নেন। ওই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা স্লোগান দিতে থাকেন ‘তুমি কে? আমি কে? রাজাকার রাজাকার। কে বলেছে? কে বলেছে? স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত ছাত্রী হলের তালা ভেঙে রাতেই সেই মিছিলে যোগ দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালাতে ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উসকানি দেন এবং তাদের সংগঠিত করেন। পরের দুই দিন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা চলতে থাকে। বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এভাবে আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। হামলায় পুলিশ ছাত্রলীগের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। শটগানের গুলি ছোড়ে। এই অবস্থায় ১৬ জুলাই দেশব্যাপী বিভিন্ন হামলায় ছয়জন নিহত হন। তাদের একজন ছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৪ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ছাত্রলীগের বেশির ভাগ হামলা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক। ছাত্রলীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও এসব হামলায় অংশ নেন। ধারালো ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। আওয়ামী লীগ ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা এসব হামলায় উসকানি দেন। ১৪ জুলাই রাত থেকে শুরু করে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ১৪ জুলাই রাত ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমর্থকদের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সোমবার (১৫ জুলাই) থেকে বাংলাদেশের রাস্তায় কোনো রাজাকার থাকবে না। প্রতিটি জেলা, নগর, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি সুষ্পষ্ট নির্দেশনা, যারা নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে উপহাস করবে, তাদের রাস্তায় মোকাবিলা করা হবে।’ 

১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা এখন মারমুখী। আমরাও তাদের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। ছাত্রলীগ কোটা আন্দোলনকারী নেতাদের মন্তব্যের জবাব দিতে প্রস্তুত। আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় রাজাকার নিয়ে যে ধরনের স্লোগান দিয়েছে, তাতে আমাদের জাতীয় সেন্টিমেন্টে আঘাত হেনেছে। আমরা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করব।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্লোগান দিয়েই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা ওএইচসিএইচআরকে এসব বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, মোটরবাইকে হেলমেট পরে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ পদ্ধতিতে হামলা চালিয়েছেন। 

১৪ জুলাই সন্ধ্যার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দেন, ‘চাইতে গিয়ে অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার।’ ছাত্রলীগ কর্মীরা সেখানে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করতে হামলা চালান। বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আহত হন। ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে মিছিল বের হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনকারীও একই সময়ে মিছিল বের করলে বিজয় একাত্তর হলে প্রথম সংঘর্ষ হয়। এ সময় আন্দোলনকারীরা সহকর্মীদের মুক্ত করতে জিয়াউর রহমান হলে যান। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা তাদের আটকে রেখেছিলেন। ছাত্রলীগের সমর্থকরা এ সময় হেলমেট মাথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সশস্ত্র অবস্থান নেন। বেলা ৩টায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর ক্যাম্পাসে হামলা চালান। এ সময় ছাত্রীদেরও নির্মমভাবে পেটানো হয়। তাদের লাঞ্ছিত করা হয় এবং ধর্ষণের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়।

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনই একমাত্র পথ: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নির্বাচনই একমাত্র পথ: মির্জা ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে নির্বাচনই হচ্ছে একমাত্র পথ। যার মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রে পৌঁছাতে পারি। 

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় বড় মাঠে জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে জেলা বিএনপি। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফুটবলকে বলুন ক্রিকেটকে বলুন ক্রীড়াঙ্গনকে বলুন সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে বলুন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বলুন সর্বক্ষেত্রে সেটাই হচ্ছে একমাত্র পথ যেখান থেকে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারি। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আরও সামনে নিয়ে যেতে পারি। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে আজকে আবার নতুন করে আমাদের আরেকটা সংগ্রাম শুরু করি।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ একটা ভয়ংকর সময় পার হয়ে এসেছে। প্রায় ১৫ বছর একটা পাথর আমাদের বুকের মধ্যে চেপে বসেছিল। সেই পাথর আমাদের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে দানবের মতো ধ্বংস করে ফেলেছে। এই খেলার মাঠগুলোকেও ধ্বংস করে ফেলেছিল। এই ফুটবলকে আমাদের আবার জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। এটা একটা ইউনিক ব্যাপার যে একটা রাজনৈতিক দল আজকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনে। সারা বাংলাদেশে ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের তরুণরা, ছাত্ররা যেভাবে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করার একটা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে সেই সুযোগটা যেন আমরা গ্রহণ করি। শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, সেটা আমরা সর্বক্ষেত্রেই খেলাধুলা, সংস্কৃতি, আমাদের জীবন, সামাজিক জীবন, শিক্ষা ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে যেন আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাই।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় আমিনুল হক, বিএনপির পল্লী ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরীফ প্রমুখ।

জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে জেলা বিএনপির রংপুর বিভাগের আটটি দল অংশ নিচ্ছে। দলগুলো হলো ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি, দিনাজপুর জেলা বিএনপি, পঞ্চগড় জেলা বিএনপি, সৈয়দপুর জেলা বিএনপি, লালমনিরহাট জেলা বিএনপি, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি, গাইবান্ধা জেলা বিএনপি, রংপুর জেলা বিএনপি। উদ্বোধনী খেলায় পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির দল অংশ নেয়।



ছাত্রদের রাজনৈতিক দল সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে: সারজিস

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে: সারজিস
ক্যাম্পেইনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: খবরের কাগজ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্টবিরোধী ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে আয়োজিত ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টের কনভেনশন সেন্টারে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ক্যাম্পেইন আয়োজন করে। 

সারজিস আলম বলেন, ‘বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সামনের সারিতে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আমরা নাহিদ ইসলামকে এই দলের দায়িত্ব নিয়ে জনগণের কাতারে এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলে পদ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। কিছু মিডিয়া দলের পদ-পদবি নিয়ে নানা কথা লিখছে। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে দেশের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, এখনো আছি।’ 

সারজিস আলম রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করার চেষ্টা করলে দেশে আরেকটা গণবিপ্লব হবে। আগামী নির্বাচন হবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে সামনে রেখে। এই নির্বাচনে কোনো দল যদি ৩০০ আসনেই জয়ী হয়, তবে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। আমরা সেটি মেনে নেব।’ 

সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আসছে, থানা পুলিশ ও কোর্টের অনেক বিচারক টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুক্তদের সুযোগ দিচ্ছেন। রাজনৈতিক দলের অনেক নেতা নানা কিছুর বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের শেল্টার দিচ্ছেন। দয়া করে এই কাজ করবেন না। তাহলে আপনাদের পরিণতি হাসিনার মতো হবে। কাজেই আমাদের গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমার যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে আমাদের কোনো দেশি-বিদেশি শক্তির শেল্টারের প্রয়োজন হবে না। খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন করছিলাম, তখন আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। তখন আমাদের কোনো শেল্টারের প্রয়োজন হয়নি।’ 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নিহত মেহেদী হাসানের বাবা সানাউল্লাহ, নিহত ইমাম হোসেনর মা কোহিনুর ইসলাম, আহত শাকিল আহমেদ, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা তুহিন মাহমুদ, সোনারগাঁয়ের সংগঠক শাকিল সাইফুল্লাহ, বাঁধন, সাব্বির আল রাজসহ অন্যরা।

জয়পুরহাটে বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা, ১৪৪ ধারা জারি

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম
জয়পুরহাটে বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা, ১৪৪ ধারা জারি
খবরের কাগজ গ্রাফিকস্‌

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপি কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন বিএনপির অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি ) বিকেলে কালাই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইফতেকার রহমান এ আদেশ জারি করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুরে পুনট ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়কদের উপস্থিতিতে কাউন্সিলরদের কণ্ঠ ভোটে ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

কিন্তু ঘোষণার পরপরই আরেক গ্রপ পকেট কমিটির অভিযোগ এনে প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নামে। তাদের প্রতিহত করতে ঘোষিত কমিটির পক্ষের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিলে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর সংঘর্ষের আশঙ্কায় বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

প্রশাসনের নির্দেশে বলা হয়, ‘জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নে ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি ঘোষণা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় ও জনসাধারণের জান-মাল ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এজন্য, ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮’র Schedule-iii(vi)(9)-এর ক্ষমতাবলে কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ সমগ্র ইউনিয়নে রবিবার বিকেল ৩টা থেকে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হলো।

এ আদেশের আওতায় সব ধরণের সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, মাইক ব্যবহার, অস্ত্র বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অবস্থান বা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।’

এ প্রসঙ্গে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ তৎপর রয়েছে।’

সাগর কুমার/নাইমুর/

নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর-সম্পাদক মনিরুল পুনর্নির্বাচিত

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর-সম্পাদক মনিরুল পুনর্নির্বাচিত
নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হলেন বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম ও মনিরুল ইসলাম। ছবি : খবরের কাগজ

নড়াইল জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনিরুল ইসলাম পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ ইসলাম অমিত, খুলনা বিভাগের বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ, সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হক, অ্যাডভোকেট আলমগীর মিয়া শেখ ও অ্যাডভোকেট তারিকুজ্জামান লিটু।

নির্বাচনে জাহাঙ্গীর ৪৫৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জুলফিকার আলী মন্ডল পেয়েছেন ২৩৮ ভোট।

সাধারণ সম্পাদক পদে মনিরুল ইসলাম ৪৩৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাহারিয়ার রিজভী জর্জ পেয়েছেন ২৬৩ ভোট।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে খন্দকার এজাজুল হাসান বাবু ২৯৭ ভোট, অ্যাডভোকেট মাহাবুব মুর্শেদ জাপল ২৭২ ভোট ও টিপু সুলতান ১২৪ ভোট পেয়ে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন।

রবিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ৭০৭ জন ভোটারের মধ্যে ৭০১ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

এর আগে সকালে নড়াইল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শরিফুল/নাইমুর/