
গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে চাইলে জনগণ আবারো রাজপথে নেমে আসবে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। তারা বলেছেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহতরা এখন চিকিৎসার দাবিতে সড়কে নেমে আসলেও সরকারের তাতে টনক নড়ছে না।
বুধবার (১৫ জানয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। বিভিন্ন পণ্যে বর্ধিত ভ্যাট-শুল্ক প্রত্যাহারসহ জনজীবনের সংকট নিরসন, ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদ, সংস্কার ও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, নিহতদের ক্ষতিপূরণ, আহতদের পুনর্বাসনের দাবিতে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাসদ (মার্কসবাদী) ও বাম জোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক কাজী রুহুল আমীন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য রাশেদ শাহরিয়ার।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশ বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার।
বাম জোট নেতারা বলেন, ‘সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে চাইলে জনগণ আবারো রাজপথে নেমে আসবে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে বাম নেতারা বলেন, ‘এখন দেখা যাচ্ছে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার অর্থনীতি বহাল আছে। সেই ধারাবাহিকতায় শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে।’
তারা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। এই অভ্যুত্থানে প্রায় দু’হাজার মানুষ শহিদ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে। অনেকে চোখ হারিয়েছে, অনেকে পঙ্গু হয়েছে। অন্তবর্তী সরকার পাঁচ মাসেও শহিদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করতে পারেনি। আহতদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে পারেনি। আহতরা চিকিৎসার দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন পর্যন্ত করছে। অথচ সরকারের টনক নড়ছে না।’
বুধবার সকালে এনসিটিবির সামনে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ কর্মসূচিতে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’-র সদস্যরাই হামলা করেছেন বলে বাম জোটের সভায় অভিযোগ আনেন নেতারা। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জয়ন্ত সাহা/মাহফুজ