ঢাকা ২৬ মাঘ ১৪৩১, রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
রোববার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১

দেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল জামায়াত: আমির

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
দেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল জামায়াত: আমির
চুয়াডাঙ্গায় জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আমীর ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মজলুম দল জামায়াত বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে চুয়াডাঙ্গা জেলার টাউন মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈষম্যহীন, মানবিক, দুর্নীতি-দুঃশাসন মুক্ত বাংলাদেশ কায়েম না পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থামবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গত সাড়ে ১৫ বছরে জামায়াতের নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, হাজারও নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে, ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। হাট-ঘাট, মসজিদ-মাদরাসা এমনকি মন্দিরেও লুটপাট চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা চাটিবাটি নিয়ে পালিয়ে গেছে। দুর্নীতিবাজ সবাই পালিয়েছে।'

আওয়ামী লীগের শাসনামলের প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াত আমির বলেন, ‘ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা দেশের জ্ঞানী, শিক্ষিত, মার্জিত ও অভিজ্ঞ মানুষদের হত্যা করেছে। হাজারও মানুষকে নির্যাতন করেছে। তারা শত শত মানুষকে গুম-খুন করেছে। মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছে। উন্নয়নের বুলি শুনিয়ে তারা দেশের সম্পদ লুট করেছে।’

দেশের মানুষের সামনে দাঁড়ানোর মতো সৎ সাহস শেখ হাসিনার ছিল না, যে কারণে তিনিসহ তার দোসররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘পর পর তিন তিনটি নির্বাচনে তারা মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই-আগস্টে আমাদের সন্তানেরা বিপ্লব ঘটিয়ে ২৪-এ স্বাধীনতা এনেছেন। ফলে স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। যারা আমাদের সন্তানদের ওপর গুলি চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছিল জনগণ তাদেরকে এক দফা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।'

ছাত্র-জনতার অবদানকে স্মরণ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে এই জাতি দেশবিরোধী যেকোনো ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে। তরুণ-যুব সমাজ চাঁদাবাজমুক্ত, দখলবাজমুক্ত ও পেশীশক্তি মুক্ত নতুন দেশ চায়। আমরাও সাম্যের বাংলাদেশ চাই। এই প্রজন্ম বুকের রক্ত দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দিয়ে হলেও এই স্বাধীনতা ধরে রাখব।'

নির্বাচন কেন্দ্রিক ষড়যন্ত্র চলছে, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা কারো টাকার কাছে নিজেদের ভোট বিক্রি করব না। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। কালো টাকা ও পেশীশক্তির কাছে আমরা মাথানত করব না। যারা কালো টাকা দিয়ে ভোটের মাঠে আসবে, তাদেরকে না বলে দিতে হবে।'

আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা ২৬ লাখ কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেছে। এসব টাকা জাল ফেলে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করে দেশে ফেরত আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের খুঁজে এনে ওই কাশিমপুর জেলে পাঠাতে হবে। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির অ্যাড. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসেন, যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য খন্দকার আলী মোহসিন, যশোর জেলা শাখার আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম, কুষ্টিয়া জেলা আমির মাওলানা অধ্যাপক আবুল হাশেম, মেহেরপুর জেলা আমির মাওলানা তাজ উদ্দীন খাঁন, চুয়াডাঙ্গা জেল জামায়াতের সাবেক আমির আনোয়ারুল হক মালিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম অর্ক এবং জেলা জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল প্রমুখ।

আফজালুল/নাবিল/সিফাত

জনগণের ভোটে সরকার গঠন করবে বিএনপি: খন্দকার মোশাররফ

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২২ এএম
জনগণের ভোটে সরকার গঠন করবে বিএনপি: খন্দকার মোশাররফ
ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক দল হলো বিএনপি। জনগণের ভোটে বারবার তারা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করেছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে বিএনপি সরকার গঠন করবে।’

গতকাল শনিবার কুমিল্লার দাউদকান্দিতে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ও তার দোসররা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বৈষম্যহীন ও দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই।’ 

তিনি বলেন, ‘পরপর তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের ছাত্র-জনতা হাজারও প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেছে। স্বৈরাচার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশের মানুষের সামনে দাঁড়ানোর সৎসাহস শেখ হাসিনার ছিল না।’

দাউদকান্দি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ সেলিম সরকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মারুফ হোসেন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির নেতা এ কে এম সামছুল হক, আলহাজ আবুল হাসেম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. শাহ আলম, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রোমান খন্দকারসহ অন্যরা।

হবিগঞ্জে জেলা ছাত্রদলের ১ মাসের কমিটি হতে দেড় বছর পার

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৭ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৩ এএম
হবিগঞ্জে জেলা ছাত্রদলের ১ মাসের কমিটি হতে দেড় বছর পার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

২০২৩ সালের ৮ জুন। সাত বছর পর হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের ছয় সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে শাহ রাজিব আহমেদ রিংগনকে সভাপতি ও জিল্লুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

এ ছাড়া সিনিয়র সহসভাপতি হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ তুষার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহিবুর রহমান শাওন ও সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মাহবুবের নামও ছিল তালিকায়। 

কমিটি ঘোষণার সময় ছাত্রদলের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। কিন্তু দেড় বছর পার হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়নি। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা বলছেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল দীর্ঘদিন ধরে দলীয় আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। 

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সংগঠনটি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। হবিগঞ্জেও ছাত্রদল নানা আন্দোলন-সংগ্রামে সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। অনেক নেতা-কর্মী জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। তবে সম্প্রতি এসব ত্যাগী নেতাকর্মীর মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ দীর্ঘ দেড় বছরেও হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

একাধিক ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘আমরা স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলাম। জেল খেটেছি, বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি। এখন দলের সুসময় আসতে শুরু করেছে, আর তখনই কিছু সুবিধাবাদী নেতা সামনে এসে নেতৃত্বের চেষ্টা করছে। আমাদের দাবি, অতিদ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হোক এবং প্রকৃত ত্যাগীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হোক।’

তারা আরও বলেন, ‘অনেক নেতা রাতের পর রাত বাড়িতে থাকতে পারেননি, হাওরে রাত কাটিয়েছেন। তাদের খুঁজে বের করে কমিটিতে স্থান দিতে হবে। একই সঙ্গে, যারা হাইব্রিড নেতা, তাদের যেন ছাত্রদল বা বিএনপির কাছাকাছিও আসতে দেওয়া না হয়।’

বিভিন্ন আন্দোলনে সামনের সাড়িতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এক নেতা বলেন, ‘দেড় বছর আগে ছয় সদস্যের কমিটি করা হলেও একজন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। ফলে পাঁচজন দিয়েই কার্যক্রম চলছে। আন্দোলনের সময় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কারাগারে ছিলেন, ফলে দল অনেকটাই অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিল। তবুও নেতা-কর্মীরা নিজেদের জায়গা থেকে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।’

হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজ রাসেল বলেন, ‘ছাত্রদল গণতান্ত্রিক সংগঠন। এখানে প্রকৃত ছাত্রদের নেতৃত্বে আনা জরুরি। দীর্ঘদিন আন্দোলন করা অনেক নেতা পদবঞ্চিত রয়েছেন। আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অনুরোধ করব, দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রদলকে আরও গতিশীল করা হোক।’

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এতদিন আমরা আন্দোলন ও জেল-জুলুমের জন্য কমিটি গঠন করতে পারিনি। তবে ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর স্বৈরাচার সরকার বিতাড়িত হয়েছে, এখন আমরা দল গোছানোর কাজ করছি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল কলেজ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। সেই কাজ শেষ হলেই জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কাজ শুরু হবে।’

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজিব আহমেদ রিংগন বলেন, ‘বর্তমানে সারা দেশেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া স্তব্ধ রয়েছে। তবে আমরা এরই মধ্যে একটি তালিকা তৈরি করেছি। কেন্দ্র থেকে চাওয়া হলেই আমরা সেটি পাঠিয়ে দেব। ৫ আগস্টের আন্দোলনের সময় যারা মাঠে ছিলেন, তাদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কোনো তদবির চলবে না।’

ক্ষমতায় গেলে আপনাদের মনে রাখব: মঈন খান