
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম চরমোনাই পীর।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী যুব আন্দোলনের পঞ্চম জাতীয় যুব কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে আপনাদের ভয় কোথায়? বাঁধা কোথায়? বর্তমান পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমে এককভাবে ক্ষমতায় গিয়ে আবারও জুলুমের স্টিমরোলার জনগণের ওপর চাপিয়ে দেবেন, এটা আর হবে না। উচ্চকক্ষ হোক আর নিম্নকক্ষ হোক সব নির্বাচনই পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।
কনভেশনে ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান মুজাহিদকে সভাপতি, ইঞ্জিনিয়ার মারুফ শেখকে সহ-সভাপতি ও মাওলানা মানছুর আহমদ সাকীকে সেক্রেটারি জেনারেল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।
রেজাউল করিম বলেন, গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। কিন্তু আপনাদের অনেক কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ। আপনাদের দুর্বলতা কোথায়? চাঁদাবাজ ও খুনিদেরকে এদেশের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায় না। পরিবর্তন করে সুন্দর পরিবেশ তৈরির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করেছেন তাদেরকে নির্বাচনের জন্য আহ্বান করছেন, কিছু দল তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করছেন, ফ্যাসিবাদদের দোসরদের নিয়ে আবার ক্ষমতা দখল করবেন, এটা আর কখনো হবে না। এই ধোঁকাবাজি জনগণ বুঝে গেছে।
চরমোনাই পীর বলেন, ৫৩ বছর দেশ স্বাধীনতায় যারা শাসন করেছে, তারা নতুন করে কোনো আশা দেখাতে পারবে না। এখন পরিবর্তন দরকার, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে হবে। মায়ের কোল খালি করবে, বিদেশে টাকা পাচার করবে, বেগম পাড়া তৈরি করবে- তাদের রাজনীতি দেশের জনগণ আর দেখতে চায় না। তার জন্য যদি আবারও প্রয়োজন হয় আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।
আগামী নির্বাচনে যুবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা আহ্বান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তি বাড়াতে হবে। এজন্য ইসলামের পক্ষে যুবকদেরকে নিয়ে আসতে মাসে কমপক্ষে ৪ জনকে দাওয়াত দিতে হবে। আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামী নীতি আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হবে।
কনভেনশনে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, অতীতের সরকার সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। ফলে সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। এককক্ষ বা দ্বি-কক্ষ যাই হোক সব নির্বাচন পিআর পদ্ধতির হতে হবে। অন্যথায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ১৬ বছর আলেম ওলামাদের জুলুমের কারণে অনেককে বিদেশ চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবে আপনাদের যে ত্যাগ ছিল, তা জাতি চিরদিন স্বরণ করবে।
ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, প্রকৌশলী মারুফ শেখ ও মাওলানা রহমাতুল্লাহ বিন হাবিবের যৌথ সঞ্চালনায় কনভেনশনে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল আউয়াল, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/নাবিল/এমএ/