
দ্য লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে সময় লাগছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়। নতুন করে হার্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা উন্নতির চেষ্টা করছেন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে লন্ডন থেকে এসব তথ্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য।
তিনি জানান, ম্যাডাম দেশে অনেক ধকলের মধ্যে ছিলেন। ৭ বছর পর তিনি লন্ডনে এসেছেন। লন্ডনে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে। এ ছাড়া এই হাসপাতালে এর আগে তিনি চিকিৎসা নেননি। এই অবস্থায় নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে তার সময় লাগছে।
ওই চিকিৎসক জানান, গত দুই দিন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। নতুন করে হার্টের কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছে। যদিও এতে বড় উদ্বেগের কিছু নেই। মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। তবে আশানুরূপ উন্নতি হয়নি বলে এখনো লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়নি। এ জন্য খালেদা জিয়ার ফিটনেস (শারীরিক সক্ষমতা) বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জানান, লন্ডন ক্লিনিকে বললেই সবকিছু তাৎক্ষণিক হয়ে যায় না। সব প্রক্রিয়া মেনে করতে হয়। ম্যাডাম ছেলের বাসায়ও যেতে চাচ্ছেন। দীর্ঘদিন একটানা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকাও কষ্টের।
এদিকে বৃহস্পতিবার লন্ডন ক্লিনিকের সামনে ব্রিফিংকালে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) স্বাস্থ্যগত সব পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার পরই ‘লিভার প্রতিস্থাপনের’ সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে তার বয়স এখন ৭৯ বছর। এ কারণে আদৌ লিভার প্রতিস্থাপন করার মতো শারীরিক অবস্থায় তিনি আছেন কি না বা কীভাবে করলে ম্যাডাম আরও ভালো থাকতে পারবেন? এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় অতি দ্রুত যেসব পরিবর্তন আনা দরকার, সেগুলোই চিকিৎসকরা বিবেচনায় নিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের পরবর্তী চিকিৎসা এখন কতটুকু প্রয়োজন, সে বিষয়েই আলোচনা হচ্ছে। তার লিভার ডিজিজ এবং হার্টের যে সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর রিপোর্ট এখনো কমপ্লিট হয়নি। তার লিভার, কিডনি, হার্টের জটিলতা রয়েছে। প্রতিটি ‘অ্যাড্রেস’ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কাজেই সব মিলিয়ে আগামী কয়েক দিন আরও বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন এখানকার চিকিৎসকরা।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বে ৬-৭ চিকিৎসকের পরামর্শে তার চিকিৎসা চলছে।