ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

দেশের মানুষ ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে দেবে না: নুর

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
দেশের মানুষ ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে দেবে না: নুর
রংপুরে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি নুরুল হক নূর। ছবি: খবরের কাগজ

দেশের মানুষ ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নুর।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মাল্টিপারপাস হলরুমে আয়োজিত সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ভারতকে কড়া হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতের বিএসএফের সঙ্গে গোলাগুলি হচ্ছে। সীমান্তে তারা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আমাদের কিছু ভূমি দখলের পায়তারা তারা করছে। কারণ শেখ হাসিনা সরকার অনেক ক্ষেত্রে তাদেরকে এই সুযোগ দিয়েছিল।’

ভারতের উদ্দেশে নুর বলেন, ‘আপনাদের পালিত গোলাম ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আপনারা বাংলাদেশ নিয়ে যে খেলা শুরু করেছেন এই খেলা বন্ধ করুন। অন্যথায় আপনাদের জন্য সেটা শুভ হবে না। আমাদের দেশে একটা লাশ পড়লে তাদের দুইটা লাশ ফেলতে হবে।’

নুরুল হক নুর বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন একটি মরা লাশ। জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে তারা ক্ষমতার লোভে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিল। দেশে গণতন্ত্র এখন নামমাত্র। বিরোধী দল ও মতকে দমন করার জন্য সরকার প্রশাসন ও জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে তারা ক্ষমতার লোভে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিল। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কবর রচনা করেছে। তারা রাজনীতি করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। নতুন করে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের অধিকার আওয়ামী লীগের নেই।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘শুধু ভোট আর নির্বাচনের জন্য এই গণঅভ্যুত্থান হয়নি। রাষ্ট্র পুনর্গঠন, রাষ্ট্র সংস্কার এবং রাষ্ট্র মেরামতের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও জন আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণে জায়গা থেকেই এই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। কাজেই রাষ্ট্র সংস্কার অনিবার্য হয়ে ‍উঠেছে।বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

সভায় বিশেষ ঘোষণায় নুরুল হক নুর রংপুর-১ আসনের উচ্চতর পরিষদ সদস্য এবং গণঅধিকার পরিষদের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয়কারী হানিফ খান সজীবকে ট্রাক প্রতীক নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।

উচ্চতর পরিষদ সদস্য এবং রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয়কারী হানিফ খান সজীবের সভাপতিত্বে ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শেরে খোদা আসাদুল্লাহর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা মোন্নাফ।

আরও উপন্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম খোকন, হাজী মো. কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম, এরশাদুল হক , মামুনুর রশিদ, রাকিবুল ইসলামসহ রংপুর বিভাগীয় নেতারা।

সেলিম/নাবিল/

নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে দেরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:২২ পিএম
নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে দেরি হলে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা দিতে যত দেরি হবে, তত বেশি সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে জাতির মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে প্রাজ্ঞ ও সামর্থ্যের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, যার শুরু হওয়া উচিত দ্রুত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমানে বিএনপি মহাসচিব থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ফেসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুল লেখেন, ‘চোখের একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনের পর চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিমান ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে। তবু আমি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং চেষ্টা করছি একটি ইতিবাচক ফলাফল নিয়ে আসতে।’

তিনি বলেন, ‘গতকালের (সোমবার) বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমি আশা বোধ করেছি। আমি অপেক্ষা করছি, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণের ক্ষেত্রে স্পষ্ট অগ্রগতি, গত ১৫ বছরে (বিশেষত জুলাই ২০২৪-এ) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের প্রতি ন্যায়বিচার এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের জন্য অপেক্ষায় আছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে গণতান্ত্রিক পথে উত্তরণ, বিচার ও সংস্কার—এই তিনটি বিষয় একে অপরের পরিপন্থি নয়। এগুলো এক সঙ্গেই হতে পারে। এটাই আমাদের জাতির জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়ার উত্তম পথ। আসুন, বাংলাদেশকে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রে রূপান্তরের পথে এগিয়ে নেওয়ার এই সুযোগ যেন হাতছাড়া না করে ফেলি।’

টালবাহানা বাদ দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন: আমিনুল হক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০১ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০৩ পিএম
টালবাহানা বাদ দিয়ে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন: আমিনুল হক
শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেন আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, টালবাহানা বাদ দিয়ে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের সকল রাজনৈতিক দল আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। অনতিবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দিনব্যাপি মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে পল্লবী থানা যুবদল, দোয়ারীপাড়ায় রূপনগর ৯২নং ওয়ার্ড বিএনপি ও ট-ব্লক স্বেচ্ছাসেবকদল রূপনগর থানাসহ বেশ কয়েকটি স্থানে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৪৪ তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

অন্তবর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে সংস্কার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে আমিনুল হক বলেন, আপনারা সংস্কার চান, আমরাও অনেক আগে থেকেই সংস্কার চাই। এদেশের সাধারণ মানুষ সংস্কার চায়। কিন্তু সেটা হতে হবে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকারের অধীনে। কারণ সংস্কার ও বিচারের নামে গত ১০ মাসে এখন পর্যন্ত আপনারা কোনো সংস্কার করতে পারেন নাই। আপনারা এখন পর্যন্ত পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে পারেন নাই। আপনারা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাঙ্ক্ষিত অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন নাই।

বাংলাদেশের মানুষের ভিতরে স্থিতিশীল অবস্থা আসেনি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে মন্তব্য করে আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অবস্থা ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। তারপরও আমরা আশা করছিলাম পতিত স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যে দূর্বল করে দিয়ে গেছে, এই অন্তবর্তী সরকারের সময়ে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সুদৃঢ় হবে। দূর্বল অর্থনীতিতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু ১০ মাস পার হয়ে গেছে এখনও পর্যন্ত দেশে কোনো বিনিয়োগ আসছে না। বিনিয়োগ না আসার অন্যতম কারণ বাংলাদেশের মানুষের ভিতরে স্থিতিশীলতা আসেনি, মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এটার মূল হচ্ছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। তাই সেই দিক থেকে চিন্তা করলে নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং আমরা আশা করব, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করে মানুষের ক্ষমতা মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

অন্তবর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা শুরু করে দিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, অন্তবর্তী সরকারের ভিতরে কিছু পতিত আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রকারী, কিছু বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী এবং এই অন্তবর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টারা তারা নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। কারণ তারা ক্ষমতার মোহে পড়ে গেছে।  

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছর ধরে এদেশের সাধারণ মানুষ তারা ভোট দিতে পারেনি। মানুষ ভোট দিতে চায়। ভোটের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জনকল্যাণে কাজ করবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।  

বিকেলে পল্লবীতে অসুস্থ বিএনপি নেতা মো. হারুনকে দেখতে তার বাসভবনে যান আমিনুল হক। এসময় স্হানীয় বিএনপিও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।

বাজেটে অর্থনৈতিক রূপান্তরের ভিশন নেই: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
বাজেটে অর্থনৈতিক রূপান্তরের ভিশন নেই: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের চেষ্টা থাকলেও অর্থনৈতিক রূপান্তরের ভিশন নেই বলে মনে করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বাজেট বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের চেষ্টা ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক রূপান্তরের সেই ভিশন এই বাজেটে আসেনি বলে আমরা মনে করি। সরকার সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারলেও সমাধানগুলো বাস্তবমুখী করতে পারেনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বরাদ্দকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এই টাকাটা যেন যথাযথভাবে খরচ করা হয়। তাদের যেন যথাযথ পুনর্বাসন করা হয়। পরিকল্পনা মাফিক যেন এই টাকা খরচ করা হয়। তাদের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সেটা যেন দ্রুত সময়ে পালন করা হয়।

বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা উচিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, করদাতাদের বিষয়ে বাজেটে আগের মতোই পদক্ষেপ লক্ষ করা গেছে। যারা কর ফাঁকি দেয়, তাদের করের আওতায় আনার প্রচেষ্টা দেখা যায়নি। উল্টো মধ্যবিত্তের ওপর চাপ বেড়েছে। বাজেটে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর নেই। এ ছাড়া ই-কমার্সে কর বৃদ্ধি উদ্যোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বড়ো বড়ো রাঘব-বোয়ালদের করের আওতায় এনে জবাবদিহি নিশ্চিতের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি এবারের বাজেটে।

বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কমবে না মূল্যস্ফীতি: বাম জোট

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৬:৩৫ পিএম
বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কমবে না মূল্যস্ফীতি: বাম জোট
ছবি: সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে মোট দেশজ প্রবৃদ্ধির যে টার্গেট ধরা হয়েছে তা মোটেই অর্জিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাম জোট নেতারা। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে নতুন অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান তারা।

এর আগে সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাব পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

অর্থ উপদেষ্টা বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাময়িক হিসাবে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ হয়েছে, যা চূড়ান্ত হিসাবে কিছুটা বাড়তে পারে। তবে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এটি বৃদ্ধি পাবে এবং মধ্যমেয়াদে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আমরা আশা করছি।’

এতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বাম জোট নেতারা বলেন, ‘বৈষম্য দূর করার কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না থাকায় দেশে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য আরও বাড়বে।’

প্রবৃদ্ধি প্রস্তাবনায় অসন্তোষ জানিয়ে বাম জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম প্রবৃদ্ধির যে টার্গেট ধরা হয়েছে তা মোটেই অর্জিত হবে না। মূল্যস্ফীতি যথাযথভাবে কমানো যাবে বলে মনে হচ্ছে না।’

বাম জোট নেতারা বলেন, ‘এই বাজেটে বৈষম্যহীনতা ও টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হলেও বাস্তবে মুক্তবাজারের পুরোনো ধারাবাহিকতার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়েছে, যা বৈষম্য, বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ সংকট কোনোটাই মোকাবিলা করতে পারবে না।’

সার্বজনীন রেশন ব্যবস্থা, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা নিয়ে বাজেটে সুষ্পষ্ট বক্তব্য না আসায় হতাশা প্রকাশ করে তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘লুটেরা পুঁজিবাদী শাসকদের ধারাবাহিকতায় অনুপার্জিত আয়কে বৈধতা দেওয়ার জন্য সংবিধান বহির্ভূতভাবে কালো টাকাকে সাদা করার বিধান রাখা হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

এ ছাড়া বাজেট প্রস্তাবনায় শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের অর্থের ওপর বাজেটে ১০ শতাংশ কর ধার্য করার কথা বলায় বাম জোট নেতারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। 

জয়ন্ত/মেহেদী/

প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী: জি এম কাদের

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর ও নব্য ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দর্শনের’ প্রতিফলন বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

তিনি বলেছেন, ‘এই বাজেটের প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সম্ভব হবে না, স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যহত হবে এবং কম রাজস্ব আদায় হবে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত এই হার ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ পর্যন্ত আনা সম্ভব হয়েছে। সামনের দিকে মূল্যস্ফীতির হার কমবে এমন কোনো লক্ষণ আমরা দেখছি না।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে ২০২৫-২০২৬ সালের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন জি এম কাদের। 

প্রবৃদ্ধির নিম্নগামী অবস্থানের কারণে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা বাণিজ্যের মন্দাভাব দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রাক্কলিত মুল্যস্ফীতি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে মনে হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর অবস্থায় পৌঁছাবে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে অর্ধভুক্ত ও অভুক্ত মানুষের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছি।’

বর্তমান বাজেট ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে তা অবাস্তব বা কাছাকাছি যাওয়াও সম্ভব নয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে। যতদিন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন বিদেশি ঋণ বা সাহায্য পাওয়া নিয়েও সংশয় আছে। ফলে বাজেট ঘাটতি আকার অনেক বড় হবে।’

বাজেট প্রস্তাবনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখায় তার কড়া সমালোচনা করেন জাপা চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করতে দেয়া নীতিবহির্ভূত বা গর্হিত কাজ। বর্তমান সরকারও দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখেছে।’

সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অপ্রতুল বরাদ্দের সমালোচনা করেন তিনি। পরে তিনি বলেন, ‘রাজস্ব দিয়ে সরকার পরিচালনা করতে হবে, তাহলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে কিভাবে? যেসব কথা বলা হয়েছে তা কিভাবে বাস্তবায়ন করবে? বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে এই বাজেট দিয়ে সরকার কিভাবে কাজ করবে তা পরিস্কার নয়। উদ্যোক্তা তৈরির বিষয়টি আগেও ছিল, এবার বাজেট দেখে মনে হচ্ছে ছাত্ররা সবাই লেখাপড়া বাদ দিয়ে উদ্যোক্তা হবেন।’

জয়ন্ত সাহা/এমএ/