ঢাকা ৪ ফাল্গুন ১৪৩১, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১

প্রতিদিন একজন করে উপদেষ্টার হাসপাতালে যাওয়া উচিত: কায়কোবাদ

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১২ পিএম
প্রতিদিন একজন করে উপদেষ্টার হাসপাতালে যাওয়া উচিত: কায়কোবাদ
আহতদের দেখতে হাসপাতালে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিতে প্রতিদিন একজন করে উপদেষ্টার হাসপাতালে যাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও পাঁচবারের সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। 

সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল) ও জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি বলেন, ‘এখানে এসে আমি বাকরুদ্ধ। কত নির্মমভাবে নির্যাতন করে তরুণ ছেলেদের পঙ্গু করে দিয়েছে জালিম স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকার। এখনো আহতরা পরিপূর্ণ চিকিৎসা পাচ্ছে না। তাদের অবিলম্বে যথার্থ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।’ 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আস্থা রেখে মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অনেক আন্তরিক। আমি অনুরোধ করব, প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে একজন করে উপদেষ্টা যেন হাসপাতালে আসেন। এতে করে আহতরা উৎসাহ, সাহস পাবে এবং হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরাও যথার্থ চিকিৎসা দিতে বাধ্য থাকবে।’

জমজমের পানি, খেজুর ও ফল নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতাকে দেখতে যান এই সাবেক এমপি। তাকে পেয়ে মনোবল ফিরে পেয়েছে আহতরা। নিজেদের মনের আক্ষেপ জানালেন এই নেতার কাছে। তাদের পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে যথার্থ চিকিৎসা ও মর্যাদার আশ্বাস দেন তিনি। 

পুলিশের গুলিতে দুই চোখ হারানো জামাল হোসেন বলেন, আপনার কথা অনেক শুনেছি। আপনাকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। তবে আজ এমন এক সময়ে আপনাকে কাছে পেলাম যখন আমি পুলিশের গুলিতে অন্ধ।

হাসপাতালে চিকিৎসারত কুষ্টিয়ার সমন্বয়ক হিল্লোল বলেন, আমি দেশের পাঁচজন নেতাকে আইডল মানি। তার মধ্যে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ অন্যতম। আপনি এসেছেন, আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনার কাছে অনুরোধ, আমাদের ওপর যেন বৈষম্য না হয়।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মুরাদনগরের শহিদ ৭ পরিবারকে প্রথম পর্বে ৫০ হাজার টাকা করে, দ্বিতীয় পর্বে ১০ হাজার টাকা এবং তিনটি পরিবারকে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেন এই সাবেক মন্ত্রী। এ ছাড়া মুরাদনগরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা খরচ এবং ঢাকা এনে চিকিৎসাসেবা দেন তিনি।

সালমান/

 

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে: সেলিমা রহমান

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে: সেলিমা রহমান
মাদারীপুরে বিএনপি আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন সেলিনা রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান অভিযোগ করেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ বলছে সংস্কারের কথা, কেউ বলছে স্থানীয় নির্বাচন। কিন্তু বিএনপি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে- জাতীয় নির্বাচনের আগেই অন্য কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। কারণ জনগণের আস্থা ফেরাতে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন প্রয়োজন।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মাদারীপুর শহরের শকুনী লেকেরপাড় স্বাধীনতা অঙ্গনে বিএনপি আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে আয়োজিত এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জাফর আলী মিয়া।

সেলিমা রহমান বলেন, ‘গুম, খুনের জন্য শেখ হাসিনা এবং তার দল দায়ী। তাদের বিচার হতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে ছাত্রদল ও যুবদলকে মাঠে নামতে হবে। আওয়ামী লীগ যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কারাবাস ও শারীরিক অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী ১৫ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন, মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। গত ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা সরকার বিএনপির ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। খুন, গুমের জন্য দায়ীদের বিচার অবশ্যই হবে।’

জনসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামা ওবায়েদ, খোন্দকার মাশুকুর রহমান, হেলেন জেরিন খান, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, কাজী হুমায়ুন কবিরসহ জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। বক্তারা সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

রফিকুল/তাওফিক/ 

বন্ধু হলে তিস্তার পানি ও সীমান্তহত্যা বন্ধ করুন, ভারতকে মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৪ পিএম
বন্ধু হলে তিস্তার পানি ও সীমান্তহত্যা বন্ধ করুন, ভারতকে মির্জা ফখরুল
সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: খবরের কাগজ

অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারতের কাছে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা চাইতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভারতকে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে দাদাগিরি করা চলবে না। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হলে প্রথমে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। সীমান্তহত্যা বন্ধ করতে হবে। তাহলে বন্ধুত্ব হতে পারে।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চর পয়েন্টে তিস্তা রক্ষা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এদিন একই সঙ্গে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১ পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।’ টানা ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ‘তিস্তা নদী রক্ষা কমিটি’র প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। 

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সমাপনী দিনে সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ৫ জেলার ১১ পয়েন্টে বক্তব্য রাখবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার নিজেদের নিরপেক্ষ সরকার বলে। তাই ভারতের কাছে তিস্তার ন্যায্য পানি চাইতে হবে। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই। তবে ন্যায্য পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দিতে হবে। সীমান্তে আমাদের নাগরিককে গুলি করে হত্যা বন্ধ করতে হবে।’ 

উপস্থিত মানুষদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘লড়াই না করে কিছু পাওয়া যায় না। লড়াই করে আমাদের অধিকারগুলো আদায় করব, ন্যায্য পাওনা বুঝে নেব। এখন নতুন লড়াই শুরু হয়েছে। সেটা হলো- বাঁচা মরার লড়াই, স্বাধীনতার লড়াই। জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে বাংলাদেশকে বেচে দিছে, কিন্তু তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারে নাই। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫৪টি নদী আছে, প্রতিটি নদীতেই তারা বাঁধ বসিয়ে রেখেছে। একদিকে ভারত আমাদের পানি দেয় না, অন্যদিকে বাংলাদেশের শত্রু হাসিনাকে তারা বসিয়ে রেখেছে। ওখান থেকে বসে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হুকুম দিচ্ছেন।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের যে আন্দোলন শুরু হচ্ছে এটা কি আমরা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাব? মওলানা ভাসানী যেমন তিস্তা রক্ষার আন্দোলন শুরু করেছিলেন, বহুদিন পর আজ আসাদুল হাবিব দুলু ভাই সেই আন্দোলন আবার শুরু করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচন দিন। জনগণ অনেক বছর ভোট দিতে পারেনি। তাই জনগণ চায় ভোট দিয়ে নিজের প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠিয়ে তাদের দিয়ে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করাতে। ভোট হলে দেশে যে অস্থিতিশীলতা চলছে, তা বন্ধ হবে। জনগণ প্রতিনিধি পাবে তাদের কথা বলার।’ 

জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, “বাংলায় কথা আছে ঠেলার নাম বাবাজি। আজকের এই কর্মসূচি যখন ৬০ দিন আগে ঘোষণা করা হয়েছিল এরপর গত কয়েক দিন আগে ভারত পানি ছাড়া শুরু করেছে। ভারত যদি তিস্তার ন্যায্য হিস্যা না দেয় তাহলে আমরা এককভাবে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করব। স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের অধিকার আছে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেবার। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তিস্তার এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব।”

বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘শুকনো মৌসুমে ভারত উজানের পানি আটকে রাখে, আর বর্ষার মৌসুমে ছেড়ে দেয়। যার ফলে আমাদের এখানে বন্যায় সব ভেসে যায়। এটা কি কোনো বন্ধুর পরিচয়? কোনোভাবেই না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব এখন সময় এসেছে ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলার। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পেতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশের সরকারকে যেতে হবে। মওলানা ভাসানীর মতো প্রয়োজন হলে আবারও আমরা লং মার্চের আয়োজন করব। এবাই তিস্তার লড়াই আমাদের জিততেই হবে, যদি এই জনপদের লোকদের বাঁচাতে চাই।’

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ‘রংপুর ছিল রঙ্গে রসে ভরপুর। তাকে আজ বিরানভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। ছিন্নমূল মানুষ বাড়িঘর হারিয়ে দেশান্তরী হয়ে কোথায় চলে গেছে আমরা বলতে পারি না।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে পাওয়া, তিস্তা নিয়ে একটি পরিকল্পনা হয়েছে, সেই পরিকল্পনার মাধ্যমে তিস্তাকে শাসন করা, ড্রেজিং করা, এখানে শিল্পকারখানা তৈরি করা এবং কর্মসংস্থান তৈরি করা। অবিলম্বে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। আগামীকাল আমরা তিস্তার পানিতে নামব, কেননা আমরা দেখিয়ে দিতে চাই তিস্তার পানি এখন হাঁটুর নিচে।’

কর্মসূচি বাস্তবায়নে তিস্তার বুকে মঞ্চ তৈরি, খাবারের ব্যবস্থা ও তাঁবু টানিয়ে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী, কৃষক, মৎস্যজীবী, পরিবেশকর্মী, শিক্ষক, চিকিৎসক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। তারা সবাই শুকিয়ে যাওয়া তিস্তাকে রক্ষায় একত্রিত হয়েছেন। 

শফিকুল/সালমান/

তিস্তার বঞ্চনার বিরুদ্ধে জেগেছে মানুষ, ন্যায্য দাবিতে গণআন্দোলন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
তিস্তার বঞ্চনার বিরুদ্ধে জেগেছে মানুষ, ন্যায্য দাবিতে গণআন্দোলন
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু। ছবি: খবরের কাগজ

উত্তরের পাঁচ জেলার মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে তিস্তা নদী। কখনো বন্যায় ভাসিয়ে নেয় ঘরবাড়ি, কখনো খরায় পোড়ায় ফসল। বছরের পর বছর ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার আশ্বাস শুনলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এবার তিস্তা পাড়ের মানুষ বঞ্চনার অবসান চায়। তাদের কণ্ঠে একটাই স্লোগান- ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই!’

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট তিস্তা নদীর পাড়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

এ সময় তিনি বলেন, ‘ভারত ইচ্ছেমতো তিস্তার পানি ব্যবহার করলেও আমাদের বেলায় নেই। বর্তমান সরকার কখনোই ভারতের কাছে ন্যায্য দাবি তুলে ধরতে পারেনি। এবার তিস্তার সমস্যা সমাধান করতেই হবে।’

এ কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুর রহমান রানা এবং স্থানীয় বিএনপি নেতারা। তারা সবাই তিস্তার ভয়াবহ ভাঙন ও পানির সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেন।

একই সময়ে জেলার উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাকার মাথায় তিস্তা পাড়ে আরেকটি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনে আসা মানুষের জন্য রাতে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

বাংলাদেশের লালমনিরহাট হয়ে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। লালমনিরহাটে এর উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কর্মসূচির শেষ দিনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে তিস্তা পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বক্তব্য শুনবেন এবং দিকনির্দেশনা দেবেন। 

সিরাজ/তাওফিক/ 

তিস্তা বাঁচাতে গাইবান্ধায় বিএনপির সমাবেশ

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
তিস্তা বাঁচাতে গাইবান্ধায় বিএনপির সমাবেশ
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। ছবি: খবরের কাগজ

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিএনপির বিশাল জনসমাবেশ। 

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’- এর উদ্যোগে আয়োজিত হয় এই সমাবেশ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। এই সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান সাদিক। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী, সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাবুল আহমেদসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বুলু বলেছেন, দেশের মানুষ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি আমাদের ক্ষমতা দেন, তাহলে তারেক রহমান আন্দোলনের পথে নয়, সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন। তখন দেশব্যাপী উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার হবে, নতুন করে খাল খনন কর্মসূচি শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি এ দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি, যাকে বাতাসের ঝাপটায় ফেলে দেওয়া যাবে না। বিএনপি টিকে থাকবে এবং আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফিরে আসবে।’

এদিকে আজ (সোমবার) তিস্তা বাঁচাতে লালমনিরহাট থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি বিএনপি। যা দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লালমনিরহাটে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এবং মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।

রফিক/তাওফিক/ 

নির্বাচন বিলম্ব নয়, সংস্কার চলমান থাকুক: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
নির্বাচন বিলম্ব নয়, সংস্কার চলমান থাকুক: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো তার আগেই সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তবে সেটিকে অজুহাত বানিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তাই অবিলম্বে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা মাঠে অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে কক্সবাজার জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে আওয়ামী লীগকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দলটি এখন রাজনৈতিকভাবে মৃত।’ শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘কাপনের কাপড় পরে দিল্লি গিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের বিচার দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি চায়।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন পেছানো চলবে না। এ বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। যারা অনুপাতিক ভোটের কথা বলছেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখেন না।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে আয়োজনের প্রস্তাবনাকেও তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই সবার আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া জরুরি।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার দোসরদের হাতেই দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিলেন, তাদের বাদ দিতে হবে এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’

বাজার পরিস্থিতির অবনতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ান, সিন্ডিকেট ভাঙুন। জনগণ সংস্কার বোঝে না, তারা স্থিতিশীল বাজার চায়। রমজান মাসে কোনোভাবেই যেন পণ্যের দাম না বাড়ে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা জরুরি।’

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্নার সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা।

মুহিব/তাওফিক/