ঢাকা ৪ ফাল্গুন ১৪৩১, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১

দল সমৃদ্ধ করতে মেধাবী-আদর্শবানদের আনতে হবে: তারেক রহমান

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
দল সমৃদ্ধ করতে মেধাবী-আদর্শবানদের আনতে হবে: তারেক রহমান
বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

দলকে সমৃদ্ধ করতে মেধাবী ও আদর্শবান লোকদের দলে আনতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

তিনি বলেন, ‘মেধাবী, সততা ও আদর্শবান মানুষকে দলে আনতে হবে। আমাদের ভালো মানুষ দরকার। দলকে সমৃদ্ধ করতে হবে। রাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেজন্যই কাজের লোকদের বের করে আনতে হবে।’ 

সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় ২০ টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করে নিজের সদস্যপদ নবায়ন করেন তারেক রহমান। পরে মির্জা ফখরুল, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কোষাধ্যক্ষ রাশিদুজ্জামান মিল্লাতসহ কয়েকজন নির্ধারিত ফি দিয়ে একসঙ্গে সদস্যপদ নবায়ন করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে সদস্য ফরম সংগ্রহ করা যাবে।  

তারেক রহমান বলেন, ‘সদস্যপদ নবায়ন করার দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের। দীর্ঘদিন গ্রাম-গঞ্জের অসংখ্য নেতা-কর্মী অবর্ণনীয় নির্যাতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। তা-ও আজকে তারা এই দলের সঙ্গে আছেন। এখনো যারা দল ধরে রেখেছে, তাদের আবারও আমরা একত্রিত করতে চাই। সেজন্যই সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রম শুরু। সারা দেশে লাখ কোটি নেতা-কর্মীর মাঝে আমরা আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা জনগণের সমর্থন পাব, ইনশাআল্লাহ।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশের ওপর দিয়ে একটা ঝড় গেছে। যাতে দেশটি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। প্রত্যেক সেক্টরকে লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের গুম-খুন করা হয়েছে। বিএনপিসহ অন্য দলের নেতা-কর্মীদের গুম-খুন ও পঙ্গু করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিষ্পেষিত করা হয়েছে। এখন সেই ঝড় কেটে গেছে। তবে মানুষ ঝড়ের পর কিন্তু লন্ডভন্ড অবস্থার পুনর্গঠন করে। এই ঝড়ে আমরা বহু সহকর্মীকে হারিয়েছি। অনেকেই হয়তো রাজনীতি থেকে সরে গেছেন।’ 

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দল পুনর্গঠনের পর আমরা রাষ্ট্রকেও পুনর্গঠন করব। ৩১ দফা কার্যকর করা হবে। সেজন্য মেধাবী, সততা ও আদর্শবান মানুষকে দলে আনতে হবে। যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকরা কিন্তু এই কাজ বাস্তবায়ন করবেন। সারা দেশের নেতা-কর্মী ও মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। অতীতের মতোই আপনারা এই কর্মসূচিটি সফল করবেন।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘গতবার কিন্তু আমাদের কর্মসূচিতে একটি দুর্বলতা ছিল। এবার সেটিকে পাশ কাটিয়ে আমাদের তৃণমূলের আরও গভীরে যেতে হবে। বক্তৃতা নয়, আমাদের দরকার কাজ। যে উদ্যম নিয়ে আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, আসুন আমরা সবাই মিলে কাজ শুরু করি যাতে দল এবং দেশকে পুনর্গঠন করতে পারি।’ 

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সদস্যপদ নবায়ন চলমান প্রক্রিয়া। যারা সদস্য আছেন তারাই নবায়ন করবেন। কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে জেলায়, জেলা থেকে উপজেলায় এবং সেখান থেকে ইউনিয়নে যাবে। এটা সাংগঠনিক সম্পাদকরা করবেন। তাহলে আমরা এক মাসের মধ্যেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।’  

অতীতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অতীতে যেটা হয়েছে, বিশেষ করে দলের আগ্রহী এমপি পদপ্রার্থী, তারা সবগুলো কিনে নিয়ে চলে গেছেন। এটা খেয়াল রাখতে হবে। এটা যেন সাংগঠনিকভাবেই যায়, যারা এমপি পদপ্রার্থী তারা যেন আবার না নিয়ে চলে যায়। আমাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে খুব বেশি। আমাদের নেতা-কর্মীরা কেন জানি রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘গত ১৫-১৭ বছর কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মী বা সদস্য নির্যাতন, গুম-খুন ও লোভ-লালসা অতিক্রম করে ঐক্যবদ্ধ থেকেছে। তাদের কারণেই তো আমরা আজ নেতা। সেজন্য তাদের কাছেই প্রথমে গিয়ে সদস্যপদ নবায়ন করতে হবে। সদস্যপদ নবায়ন করতে গিয়ে এবার একটি তালিকা থাকা দরকার। তবে এমন লোকদের দলে আনা যাবে না, যাদের আনলে বদনাম হবে। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সদস্য নবায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাব। মেধাবী নেতৃত্ব তৈরি করতে হলে এর বিকল্প নেই। মেধাবীরাই কিন্তু আগামীর সংসদ সদস্য। যারা জাতিকে নেতৃত্ব দেবে, শাসনব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করবে। আমি প্রত্যাশা করি, জিয়াউর রহমান যেভাবে জাতিকে সমৃদ্ধ করার জন্য মাঝে মধ্যে মেধাবীদের বেড়াতে নিয়ে যেতেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সেটি করবেন।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখা আরও গভীরভাবে সারা দেশে মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে। সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যায় অপকর্মের খতিয়ান জাতির কাছে তুলে ধরতে হবে। আমরা জাতির কাছে ম্যাসেজ দিতে চাই যে, আগামীর বাংলাদেশ নতুন বাংলাদেশ। শহিদদের প্রত্যাশার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে হবে। আমাদের কেউ যাতে সমালোচনার সুযোগ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ 

বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, কোষাধ্যক্ষ রাশিদুজ্জামান মিল্লাত প্রমুখ।  

শফিকুল/সালমান/

 

তিস্তার বঞ্চনার বিরুদ্ধে জেগেছে মানুষ, ন্যায্য দাবিতে গণআন্দোলন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
তিস্তার বঞ্চনার বিরুদ্ধে জেগেছে মানুষ, ন্যায্য দাবিতে গণআন্দোলন
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু। ছবি: খবরের কাগজ

উত্তরের পাঁচ জেলার মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে তিস্তা নদী। কখনো বন্যায় ভাসিয়ে নেয় ঘরবাড়ি, কখনো খরায় পোড়ায় ফসল। বছরের পর বছর ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার আশ্বাস শুনলেও বাস্তবে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। এবার তিস্তা পাড়ের মানুষ বঞ্চনার অবসান চায়। তাদের কণ্ঠে একটাই স্লোগান- ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই!’

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট তিস্তা নদীর পাড়ে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

এ সময় তিনি বলেন, ‘ভারত ইচ্ছেমতো তিস্তার পানি ব্যবহার করলেও আমাদের বেলায় নেই। বর্তমান সরকার কখনোই ভারতের কাছে ন্যায্য দাবি তুলে ধরতে পারেনি। এবার তিস্তার সমস্যা সমাধান করতেই হবে।’

এ কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুর রহমান রানা এবং স্থানীয় বিএনপি নেতারা। তারা সবাই তিস্তার ভয়াবহ ভাঙন ও পানির সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেন।

একই সময়ে জেলার উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের পাকার মাথায় তিস্তা পাড়ে আরেকটি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনে আসা মানুষের জন্য রাতে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

বাংলাদেশের লালমনিরহাট হয়ে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। লালমনিরহাটে এর উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কর্মসূচির শেষ দিনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে তিস্তা পাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বক্তব্য শুনবেন এবং দিকনির্দেশনা দেবেন। 

সিরাজ/তাওফিক/ 

তিস্তা বাঁচাতে গাইবান্ধায় বিএনপির সমাবেশ

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
তিস্তা বাঁচাতে গাইবান্ধায় বিএনপির সমাবেশ
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। ছবি: খবরের কাগজ

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিএনপির বিশাল জনসমাবেশ। 

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেল তিনটায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’- এর উদ্যোগে আয়োজিত হয় এই সমাবেশ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। এই সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান সাদিক। এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী, সহ-সভাপতি মোজাহারুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাবুল আহমেদসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বুলু বলেছেন, দেশের মানুষ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যদি আমাদের ক্ষমতা দেন, তাহলে তারেক রহমান আন্দোলনের পথে নয়, সরাসরি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন। তখন দেশব্যাপী উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার হবে, নতুন করে খাল খনন কর্মসূচি শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি এ দেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি, যাকে বাতাসের ঝাপটায় ফেলে দেওয়া যাবে না। বিএনপি টিকে থাকবে এবং আগামী দিনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফিরে আসবে।’

এদিকে আজ (সোমবার) তিস্তা বাঁচাতে লালমনিরহাট থেকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার কর্মসূচি বিএনপি। যা দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লালমনিরহাটে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এবং মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।

রফিক/তাওফিক/ 

নির্বাচন বিলম্ব নয়, সংস্কার চলমান থাকুক: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
নির্বাচন বিলম্ব নয়, সংস্কার চলমান থাকুক: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো তার আগেই সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তবে সেটিকে অজুহাত বানিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তাই অবিলম্বে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা মাঠে অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে কক্সবাজার জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে আওয়ামী লীগকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দলটি এখন রাজনৈতিকভাবে মৃত।’ শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘কাপনের কাপড় পরে দিল্লি গিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের বিচার দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি চায়।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন পেছানো চলবে না। এ বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। যারা অনুপাতিক ভোটের কথা বলছেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখেন না।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে আয়োজনের প্রস্তাবনাকেও তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই সবার আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া জরুরি।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার দোসরদের হাতেই দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিলেন, তাদের বাদ দিতে হবে এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’

বাজার পরিস্থিতির অবনতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ান, সিন্ডিকেট ভাঙুন। জনগণ সংস্কার বোঝে না, তারা স্থিতিশীল বাজার চায়। রমজান মাসে কোনোভাবেই যেন পণ্যের দাম না বাড়ে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা জরুরি।’

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্নার সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা।

মুহিব/তাওফিক/ 

দেশব্যাপী জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল মঙ্গলবার

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৭ পিএম
দেশব্যাপী জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল মঙ্গলবার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মজলুম এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলকরবে দলটি। 

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় পল্টন মোড়ে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। একই সঙ্গে দেশের সব মহানগর এবং জেলায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। 

সমাবেশ ও মিছিল সফল করার আহ্বান জানিয়ে  মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে আটক আছেন। তাকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বেশ কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুও দেওয়া হয়নি।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশবাসী আশা করেছিল, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে মুক্তি পাবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ৯ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রমগুলো সারা বিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেপ্তার এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক।’ 

শফিকুল/সালমান/

 

নতুন রাজনৈতিক দলে নারী নেতৃত্ব দেখতে চাই: সামান্তা শারমিন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৪ পিএম
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
নতুন রাজনৈতিক দলে নারী নেতৃত্ব দেখতে চাই: সামান্তা শারমিন
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের ৫৩ বছরের সংগ্রামের ইতিহাস আছে। এই সংগ্রামের প্রতিটি পরতে পরতে নারীদের অবদান রয়েছে। জুলাই আন্দোলনেও নারীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। সুতরাং, জুলাই পরবর্তী যে নতুন রাজনৈতিক দল আসবে, সেখানে আমরা নারীদের নেতৃত্ব দেখতে চাই। তাই নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাদুঘরের সামনে ‘জুলাইয়ের নারীরা’ ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে অংশ নেন জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও শহিদ পরিবারের নারীরা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ সবচেয়ে কঠিন করেছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা ১৬ বছরে যে গুম, খুন, আয়নাঘরের রাজনীতি কায়েম করেছিল তাতে দেশের মানুষ নারী নেতৃত্বে বিশ্বাস করতে সময় নেবে। শেখ হাসিনার এই পাপের ফল আমাদের সবাইকে ভুগতে হচ্ছে। এ জন্য পুনরায় যদি নারীদেরকে রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হয়, সবার আগে প্রয়োজন শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করা।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘২৪-এর অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সর্বস্তরের সব শ্রেণির মানুষ অংশ নিয়ে ছিলেন। আন্দোলনে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি আমরা দেখেছি, মায়েরা খাবার রান্না করে খাইয়েছেন, আঁচল দিয়ে আহতদের কপাল বেঁধে দিয়েছেন। জুলাইয়ে বাংলাদেশে যারা বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদেরকে যদি বিচারের আওতায় আনা না যায়, তাহলে এদেশের কোনো মানুষেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সুতরাং, বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সমাবেশ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নারী সেল সম্পাদক সাদিয়া ফারজানা দিনা। আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য সিনথিয়া জাহান আয়েশা ও জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া অর্পিতা শ্যামা দাসসহ অন্যরা।