
দীর্ঘ ৩০ বছর পর বৃহত্তর পরিসরে কর্মী সম্মেলন করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখার নেতা-কর্মীরা।
মঙ্গলবার(২০ জানুয়ারি) নগরীর বান্দ রোডের হেমায়েত উদ্দীন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে সম্মেলন করবে দলটি।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
এর আগে ১৯৯৪ সালের মে মাসে নগরীর বেলস পার্ক ময়দানে (বঙ্গবন্ধু উদ্যানে) সর্ববৃহৎ সমাবেশ করেছিলো জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। ওই সমাবেশ প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতের তৎকালীন আমির ইসলামী অধ্যাপক গোলাম আযম।
সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গত রবিবার নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে সমাবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন জামায়াতের নেতারা।
কর্মী সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির গণমাধ্যম ও প্রকাশনা পরিষদের আহ্বায়ক বরিশাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম খসরু বলেন, গত ১৭ বছর জামায়াত ইসলাম বাংলাদেশ বরিশালে প্রকাশ্যে কোন সভা সমাবেশ করতে পারেনি। যে কারণে বেশির ভাগ নেতাদের সঙ্গে কর্মীদের তেমন একটা দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি, বক্তব্য শুনেনি। তাদের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান।
সম্মেলনটি দুইটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি নারী কর্মীদের জন্য আর একটি পুরুষ কর্মীদের জন্য। ইতিমধ্যে সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ সকাল ১০টার মধ্যে মঞ্চ সজ্জার কাজও সম্পন্ন হবে।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে যে কাল বরিশালে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ভোটার সমাবেশ ঘটানো হবে। ১৯৯৪ সালের পরে এটাই হবে জামায়াতে ইসলামীর স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ।সভাস্থলসহ আশপাশ এলাকার শৃঙ্খলার উপর সর্বোচ্চ উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মেট্রো ট্র্যাফিক পুলিশের নেতৃত্ব যানবাহনের শৃঙ্খলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি জামায়াত ইসলামীর বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখার স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করবেন।
বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মু. বাবর বলেন, বরিশালের ইতিহাসে ২১ জানুয়ারি সব থেকে বড় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিগত দিনে যে কথাগুলো বলতে পারিনি সেগুলো শুনতে আমাদের প্রতিনিধি, কর্মী, সমর্থকসহ নগরবাসী আসবেন। আমরা একটি সুন্দর প্রোগ্রাম করতে চাই। এদিন নগরবাসীর একটু কষ্ট হবে, তবে তাদের কষ্ট লাঘবে আমাদের সর্বোচ্চ উদ্যোগ রয়েছে। তারপরও
ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানান জহির উদ্দিন মু. বাবর।
বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার তার বক্তব্যে বলেন, আমরা ১৬-১৭ বছর কথা বলতে পারিনি স্বৈরশাসকদের কারণে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষও তাদের মত প্রকাশ করতে পারেনি। এখন সময় এসেছে দেশ গঠন করার, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। জামায়াত ইসলাম দেশে ইনসাফ চায়, ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আল্লাহর দেওয়া বিধানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটি কল্যাণময় রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই
আমরা।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল বলেছেন, রাজনৈতিক দল জনগণের জন্য কাজ করে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক ধারায় বিভিন্ন ধরনের ব্যত্যয় হয়েছে, হচ্ছে। আমরা এ ধারাকে পাল্টাতে চাই। জামায়াত ইসলাম যে রাজনৈতিক ধারা করছে সে বিষয়ে বক্তব্য আগামী ২১ জানুয়ারির কর্মী সম্মেলনে আমিরে জামায়াতের আমির বক্তব্য রাখবেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, জামায়াত ইসলাম একটি চরিত্রের পরিবর্তনের ধারা তৈরি করেছে এবং ৫৩ বছরে জামায়াত ইসলামের এমপি-মন্ত্রী থেকে মেম্বার পর্যন্ত এ ধারায় একদল নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক সেবক তৈরি হয়েছে। মানুষকে পরিবর্তন করার জন্য সবাই মিলে যদি আমরা সে ইতিবাচক ধারা দিতে পারি তাহলে বাংলাদেশকে কেউ পিছিয়ে ফেলতে পারবে না।
সবুজ/মেহেদী/