
জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে দেশ পরিচালনার জন্য নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির উদ্যোগে, স্বাধীনতার ঘোষক ও শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা ভাচ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, পৃথিবীর সব দেশে গণআন্দোলনের শেষে জনগণের ভোটাধিকার সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তারই ফলস্বরূপ বাংলাদেশের অবিলম্বে যৌক্তিক সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রে বিশ্বাস করতেন। তাই তিনি বাংলাদেশকে একটি বহু দলীয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাষ্ট্রবিনির্মাণে জিয়াউর রহমান সততা মেধা এবং দক্ষতাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তার ১৯ দফা ছিল বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের চাবিকাঠি।
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং ১৯৯১ সালের জনগণের ভোটে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের নিরলস ভাবে কাজ করে গেছেন খালেদা জিয়া। স্বৈরাচারিনী শেখ হাসিনা সাজানো মামলায়, কারাগারে পাঠালেও তিনি কোনো আপোষ করেনি।'
রিপন বলেন, 'বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানক আগামী দিনের বাংলাদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর আন্দোলন সংগ্রাম নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারই ফলশ্রুতিতে আজকের বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।'
সভাপতির বক্তব্য ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, 'মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে যারা সরকার গঠনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন, তারা বাংলাদেশকে গণতন্ত্রবিহীন এবং জনদুর্ভোগের রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। সেই সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকার জন্য বাকশাল কায়েম করেছিল। ৭৫ এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের মাধ্যমে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি সততা, মেধা এবং দক্ষতার মাধ্যমে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরবর্তীতে দেশী এবং বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে হত্যা করে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিকে স্তম্ভ করে দেওয়া হয়েছিল।'
তিনি বলেন, 'গত ১৫ বছর শেখ হাসিনার কর্তৃক গণতন্ত্র হত্যা, বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করাসহ প্রশাসনকে দলীয়করণ করে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে জনগণকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। অবশেষে ছাত্র জনতার আন্দোলনের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকাকে যৌক্তিক সময়ের মাধ্যমে সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানান।'
সভার শুরুতেই পবিত্র কুরাআন তিলাওয়াত ও মোনাজাত পরিচালনা করেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মাওলানা ওমর ফারুক। মোনাজাতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আরাফাত রহমান কোকো আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা এবং জুলাই ২৪ এর শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
এ সময় সভায় উপস্তিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোশারফ হোসেন সবুজ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক (যুগ্ন সম্পাদকের পদমর্যাদা) সাবেক ছাত্রনেতা মাকসুদুল হক চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরাম যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, ছাত্রনেতা জুনায়েদ আল জাফর। আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন আবু সুফিয়ান, শাহ আলম, নাছিম আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, কাজী জামান, মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, মৃধা মোহাম্মদ জসীম, নুরে আলম, হাবিবুর রহমান হাবিব, মাযহারুল ইসলাম মিরন, আবুল কালাম, আজিজুল বারি তিতাস, প্রফেসর আহসান উল্লাহ মিন্টু, ব্যারিস্টার জিন্নুর রাইন চৌধুরী, সেলিনা আক্তার প্রমুখ।
আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ তালুকদার, যুবদল নেতা ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ কাশেম, মো. মাসুদ হোসেন, আশরাফুজ্জামান আশরাফ, রাশেদ রহমান, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, হুমায়ুন কবির, জসিম উদ্দিন ফিরোজ আলম, সাইফুল ইসলাম সৈকত ভূঁইয়া, আমিনুল ইসলাম, বাবর, আক্তার হোসেন, ডা: রফিকুল ইসলাম, রুহুল আমিন, শাহীন আলম, আব্দুস সোবাহান প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/জোবাইদা/