
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৬ বছরে দেশে লুটপাট, চাঁদাবাজি, গণহত্যা, গুম-খুনের ভয়াল রাজত্ব কায়েম করেছিল। শেখ মুজিব একবার একাত্তর-পরবর্তী দেশে গণহত্যা চালিয়েছিলেন। জাসদসহ বিভিন্ন দলের ৩০ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছেন। ২৪ সালে এসে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বার গণহত্যা চলেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দেশে দুবার গণহত্যা চালিয়েছে। আমরা আর তৃতীয়বার আওয়ামী লীগকে গণহত্যার সুযোগ দেব না।’
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ঝিনাইদহের একটি হোটেলে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের স্মরণে দোয়া এবং মাদক, দুর্নীতি, দুঃশাসন ও চাঁদাবাজমুক্ত বৈষম্যহীন সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠনে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
রাশেদ খান বলেন, ‘দেশে আওয়ামী শাসনের পতন ঘটেছে। দেশে আর তাদের রাজনীতি চলবে না। জুলাই বিপ্লবে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্য ধরে রাখতে না পারে, তাহলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। বিপ্লব ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ আবার দেশে ফিরে এসে কাউকে রেহাই দেবে না। তারা সবাইকে ফাঁসিতে ঝোলাবে। তাই নিজেদের মধ্যে একতা ধরে রাখতে হবে।’
জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি রকিবুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইকবাল রাজন, পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ব্যাংকার রাসেল আহমেদ, ছাত্র অধিকারের আব্দুল্লাহ আল মামুন, আল সোয়াইব মেরাজ প্রমুখ।
রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেন, ‘ঝিনাইদহে দলীয় পরিচয়ে চাঁদাবাজি, দখলদারত্ব, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতি হচ্ছে। এভাবে দখলদারত্ব চলতে থাকলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বীর শহিদদের আত্মত্যাগ নস্যাৎ হবে। দেশে এখন তারুণ্যনির্ভর পরিবর্তনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। ঝিনাইদহে যারা রাজনীতি করেন, তাদের ভুলে গেলে চলবে না, দেশে এখন আর হাসিনার আমলের রাজনীতি নেই। সম্প্রীতি ও ভালোবাসার নজির তৈরি করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি জনগণের নেতা হবেন, নাকি জনগণ কর্তৃক গণধিকৃত হবেন।’
কয়েকজন উপদেষ্টার প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কেউ কেউ কিংস পার্টি গঠনের চেষ্টা করছেন। এটা করলে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে দেশের মানুষ। কিংস পার্টিকে দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। তারা সরকারের সুবিধাভোগী।’
জাতীয় সরকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘দেশ চালাতে জাতীয় সরকার লাগবে। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে জাতীয় সরকার ছাড়া উপায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান যে ৩১ দফা দিয়েছেন সেটা শুধু বিএনপির নয়, আমাদেরও। ৪৫টি দল মিলে এই ৩১ দফা দিয়েছেন। কাজেই জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে।’