
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালে চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে নাজিরপুর ইউনিয়নে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদারের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এর জেরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল বাউফল উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদারের সমর্থিত ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ তার কর্মীদের নিয়ে জনসভার প্রচারণার জন্য নাজিরপুর ইউনিয়নে যান। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন খানের সমর্থকদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যা রক্তক্ষয়ী রূপ নেয়।
আহত ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল ফাহাদের অভিযোগ, এনায়েত হোসেন খানের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। আমাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেন খান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। বরং উল্টো আমাদের ছেলেদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
এ ঘটনায় বাউফল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. পলাশের নামও উঠে এসেছে। ছাত্রদল নেতা ফাহাদের দাবি, হামলার আগে তাকে ফোনে হুমকি দিয়েছিলেন যুবদল নেতা পলাশ। তবে পলাশ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ঢাকায় আছি। মারামারির ঘটনা শুনেছি, তবে আমি এতে জড়িত নই।
এদিকে বাউফল উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্তি করা হয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকারিয়া আহম্মেদ। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাউফল উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি বাতিল করা হয়েছে।'
বাউফল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, 'সংঘর্ষের ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এই সংঘর্ষের ফলে স্থানীয় বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভক্তি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
হাসিবুর রহমান/জোবাইদা/