
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, একটা নির্বাচন আদায় করার জন্য জনগণকে যেন রাস্তায় গুলি খেয়ে মরতে না হয়। আপনারা সময়মতো নির্বাচন দেন তাতে আপনারা ফুলের পাপড়িতে ঢাকা পড়বেন। আশা করি, আমাদের ধৈর্যের বাধ ভাঙার আগেই অন্তর্বতীকালীন সরকার যথাযথভাবে নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দলের ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আপনাদেরকে (অন্তর্বর্তী সরকার) আমরা সম্মানের সঙ্গে আনছি, সম্মানের সঙ্গেই বিদায় দিতে চাই। আর যদি আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত মাঠে নামাতে হয় তাহলে কতটুকু সময় টিকবেন সেটা একটু ভেবে দেখবেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে ফয়সালা হয়ে যাবে জণগণ কাকে ক্ষমতায় বসাবে। জনগণই দেশের মালিক, ক্ষমতার উৎস। সেই জনগণ যদি ১৯৭১-এর যুদ্ধের বিরোধীদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনে, আমার আপত্তি নেই। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে যাবে এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সারা জীবন রাখতে হবে! আর তারা যতক্ষণ পর্যন্ত সুস্থ-সবল না হবে, নতুন দল না হবে ততদিন পর্যন্ত নির্বাচন দেবেন না এটা তো পক্ষপাতিত্বমূলক।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই সরকার যদি একবার পক্ষে যায় সেটা যদি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে তো আমাদের নিজ পক্ষে অবস্থান নিতে হবে। এমন একটা দিন আসুক আমরা চাই না। যা হওয়ার হয়েছে, এখন একটা নির্বাচন হোক। আর যদি আসে তাহলে তো আমরা চুপ করে বসে থাকব, তাও কিন্তু না।
গয়েশ্বর বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের আগে ২০১৭ সালে খালেদা জিয়া ২০৩০ ভিশন দিলেন। পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করেছি এবং ৬২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। তাহলে নতুন করে সংস্কারের জন্য আর নতুন দলের দরকার নাই। সংস্কার কমিশনের সেখানে কি বাদ দেবে, বা তাদের কোনো ভাবনা থাকলে যোগ করতে পারেন। একেকটা কমিশন ২০০ পৃষ্ঠা, ৩০০ পৃষ্ঠা লিখে পাঠাবে আর সারাদিন এগুলো পড়ব, এটা হয়? হয় না।'
তিনি আরও বলেন, এই যে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা, ইতিবাচক মনোভাব এটা তো কম কথা না। আমাদের দেশের লোকজন সুন্দর লেখে ও কথা বলে। কিন্তু কাজ করার সময় তাদের আর পাওয়া যায় না। রাজপথে রক্ত দেয় সাইদ, নূর-আলম। এমনকি ভোটের দিন এই শিক্ষিত লোকগুলো বাড়িতে বসে টিভি দেখে, ভালমন্দ খায়। লাইনে দাঁড়াইয়া ভোটও দিতে যায় না। কিন্তু একজন খামারি ঠিকই সারাদিন দাড়িয়ে ভোট দেয়।
শফিকুল ইসলাম/এমএ/