
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, মানুষ ২০১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে যে নির্বাচন হলো সেটা নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলে না? এক-এগারোর যে পরিকল্পনা ছিল, বিরাজনীতিকরণ; সেই সমস্যা আজকে কিন্তু দেখতে পাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করবেন। তার একটি ইঙ্গিত নতুন করে চলে এসেছে।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই’ বিষয়ক জাতীয় সংলাপে তিনি এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এ সেমিনার আয়োজন করে স্কুল অব লিডারশীপ ইউএসএ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মঈন খান বলেন, এখানে আলোচনা করতে এসেছি নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই। বিরাজনীতিকরণ হলে এসব কিন্তু ভেস্তে যাবে। সরকার যদি নিজেই জবাবদিহিমূলক না থাকে, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে সবকিছু নির্ধারণ করা যায়না।
বিএনপির চলমান আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো স্বৈরাচারী পদ্ধতি থেকে আমাদেরকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রূপান্তরিত করবে। এজন্যই এই সরকার। এটাই দেশের ১৮ কোটি মানুষের চাওয়া।
মঈন খান বলেন, কেউ বলেন আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা চলতেই থাকবে। সংস্কার শেষ করে নির্বাচন হতে হবে এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করতে হবে। নির্বাচন শেষে কি সংস্কার বন্ধ হয়ে যাবে? আইনের যদি প্রয়োগ না থাকে তাহলে হাজার হাজার আইন করে কোনো লাভ নেই।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, পদ-পদবি, এমপি-মন্ত্রী হওয়াই যদি মুখ্য হয়, তাহলে রাজনীতি তো মুখ্য হয় না। আজকে ফুলের মালা দিচ্ছে, কাল ক্ষমতা গেলে আমাকে প্রশ্ন করবে জনগণ। এটাই গণতন্ত্রে হওয়া উচিৎ। ক্ষমতায় আসলে বিত্ত-বৈভব সব তার, এ চিন্তা থেকে প্রার্থীসহ সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি গণতন্ত্র বিশ্বাস করি তাহলে জনগণের ওপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমার এলাকার ৪ লাখ ভোটারের মধ্যে একজন সৎ হলে আমি ওই একজনের দিকেই যাব।
সেমিনারে অংশ নিয়ে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, দলবাজি করে কর্মী নিয়ে রাস্তায় হাঁটলে চলবে না, কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার। মন জয় করেই নেতা হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সত্যিকারের নারী ক্ষমতায়নের জন্য সরাসরি নির্বাচনে কত শতাংশ নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, তা পরিষ্কার করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে।
স্কুল অব লিডারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) রুহুল আমিন চৌধুরীসভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক ড. জামিল আহমেদের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসনের অধ্যাপক এ কে মতিনুর রহমান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজসহ রাজনীতিবিদ, গবেষক, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ