ঢাকা ৭ চৈত্র ১৪৩১, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
English
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১

নির্বাচন বিলম্ব নয়, সংস্কার চলমান থাকুক: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
নির্বাচন বিলম্ব নয়, সংস্কার চলমান থাকুক: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো তার আগেই সম্পন্ন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তবে সেটিকে অজুহাত বানিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তাই অবিলম্বে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা মাঠে অনুষ্ঠিত এক বিশাল সমাবেশে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে কক্সবাজার জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে আওয়ামী লীগকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দলটি এখন রাজনৈতিকভাবে মৃত।’ শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘কাপনের কাপড় পরে দিল্লি গিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের বিচার দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি চায়।’

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচন পেছানো চলবে না। এ বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। যারা অনুপাতিক ভোটের কথা বলছেন, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখেন না।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে আয়োজনের প্রস্তাবনাকেও তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই সবার আগে জাতীয় নির্বাচন হওয়া জরুরি।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শেখ হাসিনার দোসরদের হাতেই দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগী ছিলেন, তাদের বাদ দিতে হবে এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’

বাজার পরিস্থিতির অবনতির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ান, সিন্ডিকেট ভাঙুন। জনগণ সংস্কার বোঝে না, তারা স্থিতিশীল বাজার চায়। রমজান মাসে কোনোভাবেই যেন পণ্যের দাম না বাড়ে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা জরুরি।’

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্নার সঞ্চালনায় আয়োজিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা।

মুহিব/তাওফিক/ 

কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখতে হবে: বরকত উল্লাহ বুলু

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১২:২৩ এএম
কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখতে হবে: বরকত উল্লাহ বুলু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন কঠিন সময় পার করছে। এই সময়ে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে ফ্যাসিবাদীরা ফের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করবে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) শহিদ ডা. মিলন হলে আলোচনা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএমইউর বৈষম্যবিরোধী শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এ ইফতারের আয়োজন করে।

আগামীতে নির্বাচনের মাধ্যমে ২৫০ আসন পেয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলেও রাষ্ট্র মেরামত ও দেশকে এগিয়ে  নিতে জাতীয় সরকার গঠন করবে বলেও জানান বরকত উল্লাহ বুলু।

ড্যাবের বিএমইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিএমইউর প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ ফরহাদ বলেন, ‘দেশবাসী তারেক রহমানের ফেরার জন্য অধীর  অপেক্ষায় রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন টিটো বলেন, ‘দেশবাসী গত ১৭ বছর ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই-সংগ্রাম করে যাচ্ছে। চূড়ান্ত বিজয় এখনো আসেনি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যদি ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের দলকে ক্ষমতায় পাঠাতে পারে, সেটাই হবে চূড়ান্ত বিজয়।

বৈষম্যবিরোধী ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন টিটোর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ডা. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লবের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ, সহসভাপতি ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, বৈষম্যবিরোধী ঐক্য পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মো. মওদুদুল হক, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমীন, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শামীম আহমেদ, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, বিএমইউর ড্যাবের সভাপতি ও পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সহযোগী অধ্যাপক ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, বিএমইউ শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিএমইউর প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ডা. শেখ ফরহাদ, এনডিএফ কেন্দ্রীয় পরিষদের সহসভাপতি সহকারী অধ্যাপক ডা. আতিয়ার রহমান। ইফতার ও দোয়া মাহফিলে গণ-অভ্যুত্থানে আহত বিএমইউতে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা অংশ নেন।

সংবিধানকে যারা মুছে ফেলতে চায়, তারা সফল হবে না: টুকু

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:২৬ পিএম
সংবিধানকে যারা মুছে ফেলতে চায়, তারা সফল হবে না: টুকু
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির হাতে দেশে যত সংস্কার হয়েছে, তা কারও হাত দিয়ে হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। তিনি বলেন, দেশে আন্দোলন হয়েছে গণতন্ত্রহীনতার জন্য। আর গণতন্ত্রের মূল শর্ত হচ্ছে ভোটাধিকার। আজকে সংবিধানকে যারা মুছে ফেলতে চায় তারা সফল হবে না।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার (নির্বাচনী আসন-৫) কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে, নেতাকর্মীদের সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়ে টুকু বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। পরাজিত শক্তি দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র করছে তা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলেও দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়নি। তাই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য, সাহসিকতা ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থেকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাদের দ্রুত বিদায় নেওয়া দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতো ভয়াবহ স্মরণকালে কেউ দেখেনি।

আগামী দিনে বিএনপি একটি সুন্দর মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায় বলে মন্তব্য করে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ধানের শীষ ঐক্যের প্রতীক। আগামীতে দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে ধানের শীষকে জয়যুক্ত করতে হবে। আর এর জন্য জনগণের কাছে যেতে হবে, তাদের সুখ-দুঃখের সাথী হতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে এদেশের সব মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন যুবদলের সাবেক এই সভাপতি।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বিএনপিকে ভয় পেত। তারা এদেশের জনগণকে ভয় পেত। কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত ছিল না। তারা ছিল জনবিচ্ছিন্ন। স্বৈরাচার হাসিনা সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। গত ১৬ বছর দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। স্বৈরাচারের পতনের পর মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সরকারকে নির্বাচন দিয়ে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সভাপতি আজগর আলী, জেলা মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজ করিম, সদর উপজেলা বিএনপির  সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন বিপ্লব, টাঙ্গাইল কাকুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে আমরা নির্বাচনে যাব: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:২২ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:৩০ পিএম
রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে আমরা নির্বাচনে যাব: নাহিদ ইসলাম
বরিশাল মহানগর জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মহফিল ও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: খবরের কাগজ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচনটি হতে হবে গণপরিষদ নির্বাচন। রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন, সেই সংস্কারের ভিত্তিতে আমরা নির্বাচনে যাব।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় বরিশাল ক্লাবে অনুষ্ঠিত বরিশাল মহানগর জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার মহফিল ও মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে নাহিদ বলেন, ‘আমরা ন্যূনতম সংস্কারের কথা বলছি। আমাদের মৌলিক ও গুণগত সংস্কার করতে হবে এবং এ সংস্কার বর্তমান সরকারের অধীনে হতে হবে। মানুষ রক্ত দিয়ে বর্তমান সরকারকে এনেছে পরিবর্তনের জন্য, বিচারের জন্য। সেই ওয়াদা বর্তমান সরকার এবং আমাদের রয়েছে। যে সময়সীমা রয়েছে তার মধ্যে সংস্কার এবং দৃশ্যমান বিচারের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের দিকে যেতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্যের জায়গাটা হচ্ছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, শহিদদের আকাঙ্ক্ষা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা।’

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব ও যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতুসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।

এর আগে নাহিদ ইসলাম গতকাল দুপুর ১টার দিকে দুমকিতে ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে যান। সেখানে তিনি ভুক্তভোগী সেই কলেজছাত্রী ও তার পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেশব্যাপী ধর্ষণের ঘটনাগুলো উদ্বেগ তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘দুমকির ঘটনাটি আমাদের জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা রোধ করার জন্য কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যে আইন পরিবর্তনের চিন্তা-ভাবনা করছে বা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন চাই আমরা।’

তিনি বলেন, ‘শুধু শহিদ পরিবারের কন্যা হিসেবেই না, একজন সাধারণ মেয়ে হিসেবে, সাধারণ নাগরিক হিসেবে, আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকেও এই মর্মান্তিক ঘটনার দ্রুত বিচার চাচ্ছি।’

এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘’পটুয়াখালীর দুমকিতে জুলাই বিপ্লবে শহিদের মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দুই আসামির নাম শোনা গেছে। একজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হবে।

উল্লেখ্য, ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে মেয়েটির বাবা শহিদ হন। গত মঙ্গলবার শহিদ বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মেয়েটিকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়।

দুদকের আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন: জি এম কাদের

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:১৫ পিএম
দুদকের আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন: জি এম কাদের
কাকরাইলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদাবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলীয় ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন জি এম কাদের। 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহুম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে এক আয়োজনে তিনি এ কথা বলেন। 

বৃহস্পতিবার দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কাকরাইলের অনুষ্ঠানে জি এম কাদেরকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সরকারের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে আমি কথা বলছি। তাই আজ আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০১৮ সালের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তখন আমাদের নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় পার্টির রাজনীতি ও নীতি নির্ধারণী বিষয় সিদ্ধান্ত নিতেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তখন নাকি আমি দুর্নীতি করেছি। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। 

পদবাণিজ্য ও এমপি থাকাকালীন নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, আমি এমপি থাকা অবস্থায় গম ও বিভিন্ন যে সহায়তা দেওয়ার যে বিধান রয়েছে তাতে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই বা ছিল না। 

জি এম কাদের বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও দায়ের করা মামলাগুলো জনগণ মেনে নেবে না। তিনি আইনি পথে মামলা মোকাবেলা করবেন বলে জানান সভায়। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের পতন থেকে বর্তমান সরকারও শিক্ষা নিচ্ছে না। এই দিন না আরও দিন আছে, এই দিনেরে নিয়ে যাব সেই দিনেরও কাছে।’

সরকারের সমালোচনায় জি এম কাদের বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে জুলাই আন্দোলনে জয়লাভের পর মুষ্টিমেয় মানুষ এই জয়ের কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল তা ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। নব্য ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

আশঙ্কা প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমেরিকার সরকার থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের রপ্তানি বন্ধ হয়ে আয় ইনকাম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা চাল উৎপাদনেও স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়, সবকিছুই কিনতে হয়। তাই, রপ্তানিক আয় ও রেমিটেন্স বন্ধ হলে দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। জঙ্গী ইস্যুতে আমেরিকা চাপ দিলে মধ্যপ্রাচ্য থেকেও আমাদের প্রবাসী আয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, মনিরুল ইসলাম মিলনসহ আরও অনেকে। 

জয়ন্ত সাহা/মাহফুজ

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৩ পিএম
মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের

বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য, পদ-বাণিজ্য ও দলীয় ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুদকের মুখপাত্র ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে দুদকে আসা অভিযোগের গোপন অনুসন্ধানে যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে। ফলে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। 

দুদকে আসা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জি এম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় মনোনয়ন ও পদ-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন। যা পরবর্তীতে গোপনে দেশে-বিদেশে (সিঙ্গাপুর, লন্ডন, সিডনি) পাচার করে নামে-বেনামে সম্পদ গড়েছেন। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট হলেও বর্তমানে ৬০০ থেকে ৬৫০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পদ-বাণিজ্যের প্রমাণ।

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি পদে দলীয় মনোনয়নে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ঘুষ নেন জাপার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের। চুক্তি অনুযায়ী টাকা পরিশোধ না করায় প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে মনোনয়ন বঞ্চিতসহ দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন জি এম কাদের। প্রফেসর মাসুদার স্থলে জি এম কাদেরের স্ত্রী শরিফা কাদের সংসদ সদস্য হন।

২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী, জি এম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রী শরিফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। 

জি এম কাদের জাতীয় পার্টি হতে ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯-১৪ সময়ে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।

মাহফুজ/