ঢাকা ১০ চৈত্র ১৪৩১, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
English

আসছে বৈষম্যবিরোধীদের ছাত্রসংগঠন, পাল্টে যাবে ছাত্ররাজনীতির সমীকরণ

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২০ পিএম
আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
আসছে বৈষম্যবিরোধীদের ছাত্রসংগঠন, পাল্টে যাবে ছাত্ররাজনীতির সমীকরণ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ছাত্ররাজনীতি নিয়ে নানা ধরনের আলাপ হচ্ছে। বিগত সময়ে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা (বর্তমানে নিষিদ্ধ) শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধের কারণে প্রথমে দাবি উঠেছিল ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার। একই সঙ্গে কার্যকর ছাত্র সংসদ চালুর। তবে ছাত্রদলের কার্যক্রম ও শিবিরের আত্মপ্রকাশের পর নিষিদ্ধের পরিবর্তে আলাপ শুরু হয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি চলবে না।

কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নতুন ছাত্রসংগঠন আনছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে ছাত্ররাজনীতির সমীকরণ পাল্টে যাবে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। তাদের মতে, ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও নতুন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় কোনো ছাড় দেবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে ত্রিমুখী সংঘাত কিংবা বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েটে) ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এরপর একে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি, বক্তব্য ও কর্মসূচি ঘোষিত হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে ক্যাম্পাসগুলোতে দীর্ঘদিন পর ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হন শিক্ষার্থীরা। বাধ্যতামূলক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ থেকে মুক্তির পাশাপাশি গণরুম, গেস্টরুম সংস্কৃতি থেকেও রেহাই মেলে। অনেক আবাসিক হলে মেধার ভিত্তিতে বণ্টন করা হয় সিট। এ ছাড়া জুলাই আন্দোলনে ভূমিকা রাখা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে যুক্ত হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে ‘সমন্বয়করা’ বিভিন্ন বিষয়ে মতামত দেন। এ নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি নেওয়া হয় ছাত্রসংগঠনগেুলোর পক্ষ থেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে নিজেদের তুলে ধরার প্রবণতা লক্ষ করা যায়।

ক্যাম্পাসে সংঘাতের শঙ্কা
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, জুলাই আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী পরস্পরের বিরুদ্ধে সমালোচনায় লিপ্ত হন। শিবিরের বিরুদ্ধে গোপন রাজনীতি করা নিয়ে ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায় থেকেও মন্তব্য করা হয়। দুই দলের অনুসারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে ব্যাপক বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রশাসনের বৈঠকে দুই সংগঠনই ভিন্নমত পোষণ করে। এর মধ্যে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো থেকেও শিবিরের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে ছাত্রদের নতুন দল গঠন নিয়ে বিরোধ। 

গত সোমবারই নতুন ছাত্রসংগঠন গঠন করার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়করা। এরপরই ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী প্রতিক্রিয়া দেখান। ছাত্রদল নেতাদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের স্লোগান দেওয়া ব্যক্তিরাই আবার ছাত্রসংগঠন তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের এক নেতা। পরক্ষণেই সেই মন্তব্যের ‘স্ক্রিনশট’ নিয়ে অন্যরা এটাকে সংঘাতের রাজনীতির সূচনা বলে মন্তব্য করেন। গতকাল কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সময় রামদা হাতে দেখা যায় বহিরাগতদের। ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শিবির ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলা হচ্ছে। 

এ নিয়ে ফেবসুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির লেখেন, ‘ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশে রাজনীতি করার সুযোগ দিলে যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানো সম্ভব। কথিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে গোপন সংগঠন এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের আড়ালে বিরাজনীতিকীকরণের চেষ্টা করা হলে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস হবে এবং শুধু বাংলাদেশবিরোধী গোপন নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর তৎপরতা বাড়বে।’ 

ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন লেখেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সহযোগী থেকে যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পুনরায় আত্মপরিচয় লুকিয়ে ছাত্রলীগের মতো ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে অতীতের মতোই নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস বিনির্মাণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তার লড়াই-সংগ্রাম জারি রাখবে।’

শিবিরের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক লেখেন, ‘আমার ভাইবোনদের ওপর নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় রক্ত ঝরাল ছাত্রদল। কুয়েটে ছাত্রদলের সংঘবদ্ধ হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ছাত্র-জনতা আবার রুখে দাঁড়াও। নব্য ফ্যাসিজমের সম্ভাবনাকে গুঁড়িয়ে দাও। জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী সময়ে দখলদারত্বের রাজনীতির কিছুতেই প্রশ্রয়-আশ্রয় দেওয়া হবে না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দেওয়া হয়, ‘ছাত্রদলের সন্ত্রাস রুখে দাঁড়াও ছাত্রসমাজ।’ কুয়েটে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে ঘোষণা করা হয় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি। অন্যদিকে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে উল্টো ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে দাবি করে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি দেওয়া হয়। সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘যে ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে তার পরিণতি ছাত্রলীগের মতো হবে।’

ছাত্রসংগঠনগুলোর এসব কার্যক্রম নিয়ে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। ফেসবুকে একজন লেখেন, ‘এ দেশে ছাত্ররাজনীতি কোনোদি ন ভালো হবে না।’

কেমন হবে নতুন ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম
নতুন ছাত্রসংগঠনের বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের কোনো মাদার সংগঠন থাকবে না। আমাদের কমিটি হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়। নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই সংগঠনের নেতা হবেন। আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি পালন করব। যখন লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি হয়, তখন কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া উপেক্ষিত থাকে। যখন আপনি মাদার সংগঠনের কাছে ধরা থাকবেন, সেখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ উপেক্ষিত থাকবে। আমরা জুলাই স্পিরিটকে ধারণ করে শুধু শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করব।’

তবে তার এই বক্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের ধারণা, জাতীয় নাগরিক কমিটি যে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবে সেই দলের ছাত্রসংগঠন হিসেবে কাজ করতে পারে নতুন ছাত্রসংগঠনটি। নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর একটা মন্তব্য ফেসবুকে আলোচনায় এসেছে। সেখানে তিনি নতুন ছাত্রসংগঠনে যুক্ত হতে আগ্রহীদের আবু বাকের মজুমদারের নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলেন। একই সঙ্গে দুই প্ল্যাটফর্ম থেকেও একই ধরনের প্রচারণা দেখা গেছে। 

ছাত্ররাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফেসবুকে সরব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান। খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি জুলাই অভ্যুত্থানের দিকে তাকাই তবে দেখব নেতৃত্বের কেউ সাধারণ ছাত্র ছিল না। প্রায় সবাই ছিল কোনো না কোনো পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। যার ফলে অভ্যুত্থানের পরে কিছুদিন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের হাইপ থাকলেও এখন সেটা নেই। এখন বরং নতুন নতুন ছাত্রসংগঠন তৈরি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, সাবেক গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূল নেতৃত্ব; এই ৩টা পক্ষই মূলত জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করেছে। নতুন রাজনৈতিক দলের মূল নেতাও তারা হবেন বলেই মোটামুটি সবাই নিশ্চিত। এখন নতুন ছাত্রসংগঠনের ঘোষণাও তারাই দিচ্ছেন। নতুন ছাত্রসংগঠন হবে নতুন রাজনৈতিক দলের মতোই মধ্যপন্থি। অর্থাৎ আদর্শিক দিক থেকে দুটি দল একই হবে। সবকিছু মিলিয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে সবাই এটাই বিশ্বাস করে যে, নতুন দলের ছাত্রসংগঠনের দায়িত্বই পালন করবে নতুন ছাত্রসংগঠনটি।

চার জেলায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৯ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৫০ পিএম
চার জেলায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি
বিএনপি

গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর ও সাতক্ষীরা জেলার পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। 

সোমবার (২৪ মার্চ) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

গাজীপুর: ফজলুল হক মিলনকে আহ্বায়ক ও ব্যারিস্টার চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীকে সদস্য সচিব করে ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট গাজীপুর জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যরা হলেন- যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম (বাচ্চু), শাহ রিয়াজুল হান্নান। 

সদস্যরা হলেন- পীরজাদা রুহুল আমিন, হুমায়ুন মাস্টার, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, সাখাওয়াত হোসেন সবুজ এ ভিপি মো. হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। 

নারায়ণগঞ্জ: অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে আহ্বায়ক করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন- মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু, মাশুকুল ইসলাম রাজিব ও শরিফ আহমেদ টুটুল।
সদস্যরা হলেন- মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, আজহারুল ইসলাম মান্নান, গোলাম ফারুক খোকন, লুৎফর রহমান আবদু, অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন, মো. ইউসুফ আলী ভুঁইয়া ও শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

নাটোর: রহিম নেওয়াজকে আহ্বায়ক ও আসাদুজ্জামান আসাদকে সদস্য সচিব করে ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট নাটোর জেলা বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

সাতক্ষীরা: এইচ এম রহমাতুল্লাহ পলাশকে আহ্বায়ক ও আবু জাহিদ ডাবলুকে সদস্য সচিব করে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। চারজন যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হাসান হাদী যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন- তাজকিন আহম্মেদ চিশতি, ড. মো. মনিরুজ্জামান ও মো. আখতারুল ইসলাম।

সদস্যরা হলেন- অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী, আব্দুল আলীম, হাবিবুর রহমান হাবিব, শেখ তারিকুল হাসান, মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ, অধ্যক্ষ রইচ উদ্দিন ও মো. আব্দুর রশিদ প্রমুখ। 

শফিকুল ইসলাম/সুমন/

‘হাসনাত-সারজিসের মন্তব্য আরেকটা ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরির নামান্তর’

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
‘হাসনাত-সারজিসের মন্তব্য আরেকটা ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরির নামান্তর’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ছবি: খবরের কাগজ

হাসনাত-সারজিস কিংবা নাগরিক পার্টি-সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের সাম্প্রতিক মন্তব্য আরেকটা ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তৈরির নামান্তর বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেছেন, তাদের বয়স ২৩-২৪ বছর, তারা ছাত্র যাই হোক না কেন, তাদের কথার গুরুত্ব আছে। তাদের কথা মানুষ শোনেন। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, সোশ্যাল মিডিয়ার মতো ট্রেন্ডে আছেন তারা, ক্লিক করলেই তাদের নিউজ দেখা যায়। বিশেষ করে নতুন রাজনৈতিক দল নাগরিক পার্টির সংশ্লিষ্ট ছাত্র-নেতাদের যে বক্তব্য শুনলাম, সেটা দেশের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে। কয়েকদিন ধরে সাধারণ মানুষ থেকে প্রশাসন- সর্বত্র একটা অস্থিরতা লক্ষ্য করেছি। 

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল মহানগর ও জেলা কমিটির কর্মিসভা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নুর বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, আওয়ামী লীগের অপতৎপরতা নতুন করে শুরু হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রধান এবং পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে দিল্লি থেকে নানা ধরনের উসকানিমূলক ষড়যন্ত্র বক্তব্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং তার নেতা-কর্মীদের উত্তেজিত করে তুলছেন। রাস্তায় নামিয়ে নৈরাজ্য তৈরির অপচেষ্টা করে আসছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার অপতৎপরতার দায় দিল্লি এড়াতে পারে না। ভারত যদি বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে চায় তাহলে বাংলাদেশের গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা এবং গণহত্যার দোসর আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের ফেরত দিতে হবে।’



এ্যাবের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২৩ পিএম
এ্যাবের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ
এ্যাবের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরণ। ছবি: খবরের কাগজ

প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (এ্যাব) সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির নেতাদের উদ্যোগে দ্বিতীয় দিনের মতো সাধারণ পথচারী ও প্রান্তিক মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই আয়োজন করা হয়।  

ইফতার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এ্যাবের সদ্য সাবেক মাহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, প্রকৌশলী এটিএম তানভির-উল হাসান তমাল, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দীন ভূঁইয়া ও প্রকৌশলী রুহুল আলম, প্রকৌশলী মুহাম্মাদ আহসানুল রাসেল ও প্রকৌশলী বশির শাকিল প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সুমন/

স্বেচ্ছাসেবক দল অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া শাখার পরিচিতি সভা

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:২২ পিএম
আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৬ পিএম
স্বেচ্ছাসেবক দল অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া শাখার পরিচিতি সভা
ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ভিক্টোরিয়া শাখার নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভা এবং তাদের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) মেলবোর্নে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা ফুটস ক্রেতে স্বেচ্ছাসেবক দল ভিক্টোরিয়া শাখার আহ্বায়ক মো. রহমত উল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব আব্দুল রবের পরিচালনায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী, আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হক।

এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইয়াসিন আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) মো. অমি ফেরদৌস, স্বেচ্ছাসেবক দল অস্ট্রেলিয়া শাখার আহ্বায়ক মো. মশিউর রহমান তুহিন, সদসসচিব জাহিদুর রহমান। 

আরও বক্তব্য দেন অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহ-সভাপতি আরিফ খান, বিএনপি ভিক্টোরিয়া শাখার ওমর শরীফ শিহান, আগা আরেফিন প্রমুখ।

সালমান/

সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা চলছে: তারেক রহমান

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা চলছে: তারেক রহমান
দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে- এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

তিনি বলেন, ‘কদিন আগে আমরা দেখেছি সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে, ঠিক একইভাবে সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে বুঝি, এর পেছনে কোনো না কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে। দেশপ্রেমিক সব মানুষ যদি সচেতন ও সতর্ক থাকি, তাহলে অবশ্যই আমরা এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হব। আমাদের যেকোনো মূল্যে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’

সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে বিএনপি মিডিয়া সেল আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকি। সেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

সাংবাদিকদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি সত্য ঘটনা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক সমাজের একজন সদস্য হিসেবে এখানে আপনাদের বিরাট ভূমিকা আছে। বর্তমানে বিভিন্ন বিষয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আপনারা যদি আপনাদের জায়গা থেকে সত্য ঘটনা তুলে ধরেন, তাহলে আমরা এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হব। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের জন্য। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার সমন্নুত রাখার জন্য সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের জীবন দিয়েছে। গত ১৬-১৭ বছরে গণতান্ত্রিক উত্তরণের লড়াইয়ে যারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, তাদের ত্যাগ যেন বৃথা না যায়, তা নিয়ে আসুন আমরা কাজ করি।’ 

তারেক রহমান বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যেসব নাগরিক স্বৈরাচারকে বিদায় করার জন্য, নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, প্রতিটি মানুষের এই জীবন উৎসর্গ যেন সার্থক হয়, তার জন্য সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।’

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কোথাও কেউ একজন কিছু একটা করার চেষ্টা করছে। পতিত স্বৈরাচার সরকারের একটি অংশ এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি তাহলে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হব। আমাদের সর্বপ্রথম এবং একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত- এই দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যেকোনো মূল্যে প্রতিষ্ঠা করা ও দেশের মানুষের অর্থনীতির স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’

বিএনপির পক্ষ থেকে উত্থাপিত সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘সে সময়ে যেভাবে সাংবাদিকরা আমাদের পাশে ছিলেন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাংলাদেশের পাশে ছিলেন, সেজন্য তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা।’ আগামী দিনেও তিনি সাংবাদিকদের বিএনপির পাশে থাকার আহ্বান জানান।

ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যেন বিপন্ন হয়, আমরা যেন আবার অরক্ষিত হয়ে পড়ি, আমাদের সেই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, যারা দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে জাতির পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, তাদের আবার বিতর্কিত করার হীন প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে একটি নতুন চক্রান্ত শুরু হয়েছে। চক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশকে আবার অস্থিতিশীল করার, আবার বিপদে নিমজ্জিত করার জন্য। বাংলাদেশের যে প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাদেরও বিতর্কিত করে ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করে ফেলা হচ্ছে। এর পেছনে বড় কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে না, এটার উদ্দেশ্য একটাই, ঠিক অতীতে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করা হয়েছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দেশে একটি ব্যতিক্রমী অবস্থা বিরাজ করছে। কখনো নতুন রাজনৈতিক দল, কখনো পুরোনো রাজনৈতিক দল, কখনো প্রফেশনাল লোকের কথাবার্তা শুনে যতটুক আশান্বিত হয়েছিলাম, ততটুকু হতাশ হচ্ছি। কেমন জানি একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যেটা বিশ্লেষণ করা খুবই কঠিন। শুধু বলব, যেমন আবহাওয়া থাকুক, ৫ আগস্টের আগে যেমন পরিস্থিতি ছিল, ৫ আগস্টের পরের পরিস্থিতি অটুট রাখতে হবে। তা না হলে দেশের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। দেশের অস্তিত্বকে নষ্ট করার জন্য দেশে-বিদেশে বহু চক্র কাজ করছে।’

ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এবং মিডিয়া সেলের সদস্যসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, মিডিয়া সেলের সদস্য ড. মোর্শেদ হাসান খান, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং শামসুদ্দিন দিদারসহ অন্যরা।