ঢাকা ৬ বৈশাখ ১৪৩২, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
English

হিযবুত তাহরীর আ.লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে: গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ১০:২৪ পিএম
হিযবুত তাহরীর আ.লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে: গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্য কর্মসূচি ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতারা। ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্যে কর্মসূচি দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টার মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতারা।

শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্য কর্মসূচি ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে নেতারা এই অভিযোগ তোলেন।

হিযবুত তাহরীর আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘৫ আগস্টের পর যখন বাকস্বাধীনতা ফিরে এলে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। বিশ্বজুড়ে একটি বিষয় চাউর হয়েছে যে, জঙ্গিগোষ্ঠী হাসিনাকে সরিয়েছে। হাসিনার যে মতবাদ তা প্রতিষ্ঠার জন্য এ দেশে জঙ্গিবাদ মিছিল-মিটিং এবং মেয়েদের হেনস্তা করার চেষ্টা করছে। আমরা বলতে চাই, যারা শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে, তাদের এক হয়ে প্রতিহত করব। যাদের নীরবতার কারণে প্রকাশ্যে হিযবুত তাহরীর উগ্রবাদী মিছিল করছে, সেই সব শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী মদদদাতাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা উগ্রবাদের মিছিল বের করেছিল, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।’

হিযবুত তাহরীরের এমন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে ফিরয়ে আনতে চায় মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন সমাবেশের আগে মেট্রোরেলের পিলারসহ বিভিন্ন জায়গায় তারা প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। এত কিছুর পরও এই নিষিদ্ধ সংগঠনটির বিরুদ্ধে এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। পুলিশ জুলাই বিপ্লবে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালাতে পারে, কিন্তু তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করে। এখন এই বিষয়টি ভাবার সময় এসেছে। হিযবুত তাহরীর যেই আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতে চায়, তার সঙ্গে এ দেশের মুসলমান, আলেম সমাজের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করে গণ-অভ্যুত্থানকে বানচালের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে চায়। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে সুবিধা দেয়, এমন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বাস্তবায়ন হতে দেব না।’

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সব সময়ই এই বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছেন। আমরা বাংলাদেশকে সেই জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা হতে দেব না। বায়তুল মোকাররমে যখন হিযবুত তাহরীর মিছিল করছিল, তখন মনে হচ্ছিল পুলিশ তাদের কোনো একটা রাজনৈতিক দল সামাজিক সমস্যা নিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে, এভাবে ট্রিট করছিল। এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থতার কারণে তারা জমায়েত হতে পেরে মিছিল করতে পেরেছে। এর জবাব এই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে এবং এই ব্যর্থতার দায় স্বীকার করতে হবে।’

এতে অন্যদের মধ্যে ঢাবি মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম ও মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে হিযবুত তাহরীরের প্রকাশ্যে এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে মশাল মিছিল করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। ঢাবির মধুর ক্যানটিন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা ‘আমার মাটি, আমার মা’, ‘জঙ্গিবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘একটা জঙ্গি ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

মাহফুজ

ডিসেম্বরের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় বিএনপি: কায়কোবাদ

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫০ পিএম
ডিসেম্বরের মধ্যেই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় বিএনপি: কায়কোবাদ
ছবি: খবরের কাগজ

দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় বিএনপি এবং সেটি ডিসেম্বর মধ্যেই আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ। 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকুট ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে বাঙ্গরাজারের হায়দরাবাদ সামসুল হক কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

জনসভায় কায়কোবাদ বলেন, 'দীর্ঘ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের পর অবশেষে আল্লাহর রহমতে ফ্যাসিবাদ দেশ থেকে বিদায় হয়েছে। এখন আমাদেরকে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আমরা একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি বিপুল পরিমাণ জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করবে। বিএনপি চায় আগামী ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারির মধ্যেই যেন এ নির্বাচন আয়োজন করা হয়।' 

মুরাদনগরে আওয়ামী লীগকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে কায়কোবাদ বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন তারা সফল হবে না, হতে দেওয়া হবে না।  আমাদের নেতা-কর্মীদেরকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করুন। মুরাদনগরের সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে। নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন, ষড়যন্ত্র করছেন-নির্বাচনের পর কোথায় যাবেন আপনারা।?'

কায়কোবাদ বলেন, 'ইদানীং লক্ষ্য করছি ছাত্রদের নামে অনেকেই উচ্ছৃঙ্খলা করছে। যারা প্রকৃত ছাত্র তারা কখনোই উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে পারে না। আমার প্রকৃত ছাত্র ভাইয়েরা লেখাপড়ায় ব্যস্ত। তারা পড়ালেখা করে একদিন বড় হবে। এমপি হবে মন্ত্রী হবে প্রধানমন্ত্রী হবে। ছাত্রদের নামে গুটিকয়েক মানুষ উচ্ছৃঙ্খলতা করছে।'

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন পার্টি করা ব্যক্তিরা যদি নির্বাচন করতে চান সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করেন। আমি যদি নির্বাচন করি তাদের প্রার্থীকে মঞ্চে তুলে কথা বলার সুযোগ দেব। 

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের সভাপতিত্বে জনসভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগ সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান ও মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুঁইয়াসহ অন্যান্য নেতারা।

জহির/মেহেদী/

সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা: জি এম কাদের

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা: জি এম কাদের
রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে দলের বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ছবি: খবরের কাগজ

সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে দলের বর্ধিত সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, 'এই সরকার যে সংস্কারই করুক তা নির্বাচিত সংসদে পাশ করতে হবে। তাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন সংস্কারের প্রয়োজন নেই। দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে বাদ দিয়ে এই সরকার যে সংস্কার করতে চাচ্ছে, তা কোনদিনই কার্যকর হবে না। সংস্কার হচ্ছে নির্বাচন পেছানোর বাহানা। নির্বাচন পেছানোর কারণে তারা কতবড় গর্তে পড়বে তা তারা বুঝতে পারছে না।'

জি এম কাদের বলেন, বিচার ব্যবস্থায় কেউ বাধা দিচ্ছে না। বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে বিভিন্ন অজুহাতে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বুঝতে পারছে না, নির্বাচন দীর্ঘায়িত করে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না।'

তিনি বলেন, 'পুলিশ ও প্রশাসন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার যেন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে সে নিশ্চয়তা থাকতে হবে। ডিসেম্বর বা ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন হলেও আমাদের আপত্তি নেই। অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচনে ডিসি ও এসপিরা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবেন। বর্তমান সরকার তাদের দলের জন্য কী ভূমিকা নেবেন তাও পরিষ্কার হওয়া দরকার।' 

এ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো ঠিক করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জয়ন্ত/মেহেদী/

‘সংস্কার না হলে ফের চোর-ডাকাতরা নির্বাচিত হবে’

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১১ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
‘সংস্কার না হলে ফের চোর-ডাকাতরা নির্বাচিত হবে’
ছবি: খবরের কাগজ

সংস্কার না হয়ে যদি নির্বাচন হয় তাহলে বিগত আমলের মতো চোর-ডাকাতরা নির্বাচিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, এখন থেকেই বহু লোক চুরি- ডাকাতি শুরু করেছে। তারা নির্বাচিত হলে বিগত সরকারে যেমন চুরি-ডাকাতি হয়েছে, আবারও সেই অবস্থার সৃষ্টি হবে। তাই আগে সংস্কার, তার পরে নির্বাচন। তবে সংস্কারের নামে যদি সময় ক্ষেপণ ককরা হয় তাহলে সংস্কার হবে না। এ জন্য দ্রুত সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের যশোর জেলা শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

শিক্ষকদের উদ্দেশ্য নায়েবে আমীর বলেন, 'বিগত সময়ে পাতানো নির্বাচনে অনেক শিক্ষকেরা জড়িত। পাতানো নির্বাচনে শিক্ষকদের স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছিলো, শতকরা ৪ থেকে ৫ শতাংশ ভোট পড়লেও, লিখতে বলা হয়েছে ৪১ থেকে ৪৫ শতাংশ। অনেকেকই সেই সময়ে চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে লিখতে হয়েছে। শাসক যদি চোর হয় সেই জমিনে যারা বসবাস করবে তারাও চোর হবে।

এ সময় উপস্থিত শিক্ষকদের হাত উঁচু করিয়ে আগামী নির্বাচনে দায়িত্বরত প্রিজাইজিং কর্মকর্তাদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার অঙ্গীকার করান অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

শিক্ষক ফেডারেশনের যশোর জেলার সভাপতি অধ্যাপক আবুল হাশিম রেজার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় জেনারেল সেক্রেটারি অধ্যাপক এ বি এম ফজলুল করীম ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. আলমগীর বিশ্বাস, মদনপুর সম্মিলনী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ড. শফিকুল ইসলাম, আল হেরা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম প্রমুখ। 

তুহিন/সিফাত/

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সংহতি কমিটির সমাবেশ

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২৬ পিএম
ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সংহতি কমিটির সমাবেশ
ছবি: খবরের কাগজ

ফিলিস্তিনিদের ওপর দখলদার ইসরায়েলি নারকীয় আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শুরু হয়েছে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশ- এর গণসমাবেশ। 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া এ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন ইমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজসহ বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতারা। 

সমাবেশের শুরুতে বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা প্রতিবাদী নাটিকা পরিবেশন করেন।

 

সমাবেশে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি, বাংলাদেশ এর পাঁচ দফা দাবি পাঠ করেন বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সদস্য সু্স্মিতা রায় সুপ্তি। 

এ দাবিগুলো হল

. ফিলিস্তিনিদের উপর দখলদার ইসরায়েলি নারকীয় আগ্রাসন ও গণহত্যা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

. ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও নিয়ন্ত্রণের পরিপূর্ণ অবসান ঘটিয়ে ফিলিস্তিনের উভয় অংশের মানুষের জানমাল, জীবন-জীবিকা, নিরাপত্তা, পরিপূর্ণ মানবাধিকার এবং মর্যাদা রক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

. আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন চুক্তি, প্রস্তাব ও শর্ত/মানদণ্ড অনুযায়ী স্বাধীন ও সার্বভৌম প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করতে হবে।

. অবিলম্বে ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের গোপন ও পরোক্ষ সব সম্পর্ক ও লেনদেন ছেদ করার স্বচ্ছ ব্যবস্থা নিতে হবে। ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে বাংলাদেশকে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা ও জাতিসংঘে দৃঢ় ও স্বচ্ছ ভূমিকা নিতে হবে।

. ফিলিস্তিনি মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সারা বিশ্বে ইসরায়েলি পণ্য বর্জন করে অর্থনৈতিক চাপ তৈরির বৈশ্বিক আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে পণ্য বর্জনের আন্দোলনের অজুহাতে উচ্ছৃঙ্খল দাঙ্গাবাজরা দেশের বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট করে এই আন্দোলন এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে কলুষিত করেছে; সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এমন ঘটনার জন্য দায়ী সকলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের প্রদান করতে হবে। 

সমাবেশে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটির লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুস্মিতা। 

তিনি বলেন, 'আমরা জানি যে, ইসরায়েলের নৃশংস বর্বরতা অবর্ণনীয় তাণ্ডবে রূপ নিয়েছে। এর পেছনে আছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা এবং নেতৃস্থানীয় আরব ও মুসলিম দেশগুলোর লজ্জাজনক নীরবতা। সে কারণে দেশে দেশে সক্রিয় প্রতিবাদ জানানো আরও বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই ফিলিস্তিনের ন্যায়সংগত স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানাতে এবং  মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের প্রতিবাদে দলমত, ধর্ম, লিঙ্গ, জাতি ও বয়স নির্বিশেষে আজকের এ সমাবেশে এসেছি আমরা।' 

ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিশ্বের নানা দেশে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের জন্য যে সংহতি সমাবেশ হচ্ছে সেটি 'বিশ্বে সবচাইতে আশাব্যঞ্জক ঘটনা' বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

তিনি বলেন, 'একদিকে যেমন অনেক মুসলিমপ্রধান দেশ ফিলিস্তিনিদের পাশে সক্রিয়ভাবে না দাঁড়িয়ে বরং ইসরায়েলকে সহায়তা করছে, তার বিপরীতে আবার বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে খ্রিস্টান-ইহুদীসহ বিভিন্ন ধর্ম ও মতাবলম্বীর মানুষরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদ করছেন অত্যন্ত জোরালো পন্থায়। এমন ঘটনাগুলো এটাই স্পষ্ট করে যে, ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরাইলি জুলুম, গণহত্যা, দখলদারিত্ব আর তার বিরুদ্ধে লড়াই ইহুদী-মুসলিম ধর্মীয় বিরোধের বিষয় নয়। এ লড়াই সাম্রাজ্যবাদী-ফ্যাসিবাদী দখলদার জালেম অপশক্তির বিরুদ্ধে সব ধর্ম-বর্ণের মুক্তিকামী মজলুম বিশ্ব মানবতার লড়াই।'

জয়ন্ত/মেহেদী/

ট্রাম্প-শি-মোদি এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে যাবে না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম
ট্রাম্প-শি-মোদি এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে যাবে না: মির্জা ফখরুল
রাজধানীর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: খবরের কাগজ

আমেরিকা থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, চীনের শি জিনপিং, ভারতের নরেন্দ্র মোদি এসে ধাক্কা দিয়ে কিছু করে দিয়ে যাবে না, যা করার নিজেদের করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের দূরদৃষ্টিতে ক্ষমতায়ন বাংলাদেশ-নেতৃত্ব-ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথে কূটনীতি-শাসনব্যবস্থা রূপান্তরমূলক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

সভার আয়োজন করে এমপাওয়ারমেন্ট বাংলাদেশ ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে যেমন আমরা বহুতবাদ এক হয়ে যুদ্ধ করেছি। তেমনি করে ২৪ সালে ছাত্রদের ওপর যখন গুলি চালায়, তখন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’ 

যেভাবে গণঅভ্যুত্থানে সবাই এক হয়েছিল সেভাবে এক হয়ে কাজ করতে আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চারদিকে টেলিভিশনের টকশো, বিদ্বান মানুষের কথা ও রাজনৈতিক বক্তব্যসহ সবকিছু শুনে সবাই কেমন যেন হতাশ হয়ে পড়ছে। এতো যে রক্তপাত, মানুষের বুক খালি হলো, শেষ পর্যন্ত তার পরিণতি কী হবে? আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভালো হবে, খুব ভালো হবে। কারণ আমরা দেশের মানুষরা চিরকাল ভালোর জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছি এবং জয়ী হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণ ছেলেরা, আজ বাংলাদেশের যা কিছু ভালো অর্জন, সবই তাদের জন্য। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেছে তরুণরা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের লোকের সংখ্যা ছিল ৭ কোটি আর এখন ১৮ কোটি। সে সময়ে আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল ২৮ লাখ মেট্রিক টন আর এখন খাদ্য ঘাটতি নেই বললেই চলে। আর এই খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে খাদ্য নিরাপত্তায় কাজ করেছে দেশের কৃষক ও কৃষি বিজ্ঞানীরা। যেটা আমরা মনে করি না বুঝিও না।’

দেশের কৃষিখাতে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কৃষকদের প্রতি গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। মাঠে-ঘাটে যারা কাজ করছেন, তাদের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।’

তিনি বলেন, ‘সবাই এখন ভিন্ন দিকে নজর দিচ্ছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে ট্যারিফ দিয়েছে তা দেশের জন্য একটু বিপদে পড়ার মতোই। যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া বাড়তি শুল্ক দ্রুত সমাধান করতে না পারলে সমস্যা আরও বাড়বে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গ্রামের যে মানুষগুলো খেত-খামারে পরিশ্রম করে দেশকে নিয়ে যাচ্ছে, যে নারী মাত্র ১৫ হাজার টাকার বেতনে কাজ করে দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াচ্ছে। আমরা যদি তাদেরকে নিয়ে না ভাবি, তাহলে কোনভাবেই দেশ এগিয়ে যাবে না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে তাদেরকে নিয়ে ভাবি, তবেই দেশ এগিয়ে যাবে।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আশা করি ড. ইউনূস সফল হবেন। আসুন সবাই মিলে তাকে সাহায্য করে আমরা নিজেরা নিজেদের সাহায্য করি।’ 

তিনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমাদেরকে ভাবতে হবে। সমস্যা থাকবে, সমাধানও হবে। ইতোমধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। তবে একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। এটা চর্চা করতে হবে।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়রাম্যানের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম সবুজের মেয়ে সাবরিনা ইসলাম রহমান।

শফিকুল/পপি/