ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হলেন অধ্যাপক নার্গিস বেগম

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:১৭ এএম
আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫, ১১:৫২ এএম
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হলেন অধ্যাপক নার্গিস বেগম
অধ্যাপক নার্গিস বেগম। ছবি: সংগৃহীত

যশোর জেলা বিএনপির সদ্য সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নার্গিস বেগম বিএনপির প্রয়াত স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের স্ত্রী এবং দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের মা।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যশোর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করা হয়েছে। তিনি দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে সক্ষম হবেন বলে বিএনপি আশাবাদী।’

দলীয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২০ মে যশোর জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। দলের দুঃসময়ে তিনি আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন।

সর্বশেষ গত ২২ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে তিনি সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান। তখন অনেকেই ধারণা করেছিলেন, বয়সজনিত কারণে হয়তো তিনি রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছেন। তবে নতুন চমক দেখিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

অধ্যাপক নার্গিস বেগমের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়াকে নেতা-কর্মীরা দলের প্রতি তার অবিচল আনুগত্যের স্বীকৃতি হিসেবে দেখছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, ‘দলের কঠিন সময়ে নেতৃত্ব ধরে রাখার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।’

তুহিন/তাওফিক/

ফখরুল ও চুলিক বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে ‘দীর্ঘ আলোচনা’

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২১ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২২ এএম
ফখরুল ও চুলিক বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে ‘দীর্ঘ আলোচনা’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল অ্যান চুলিক

সফররত মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল অ্যান চুলিকের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ‘দীর্ঘ আলোচনা’ হয়েছে। 

গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে বৈঠকের পর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ আরোপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় গুলশানে যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ।

আমীর খসরু বলেন, ‘আলোচনার মধ্যে প্রথমত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয় আলোচনা হয়েছে। সেখানে অর্থনীতির কথাও ওঠে এসেছে। ট্যারিফ আরোপের বিষয়টা ওঠে এসেছে। ট্যারিফের বিষয়ে বাংলাদেশ কী চিন্তা করছে সেটা আলোচনায় ওঠে এসেছে। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমরা সবাই মিলে ট্যারিফ ইস্যুটা কীভাবে অ্যাড্রেস করা যায়, এটা করতে হবে। ট্যারিফের বিষয়টা একটা টলারেবল লিমিটের মধ্যে না আনলে তো আমাদের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চুলিকের সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। ওই বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, যেখানে আমীর খসরুও উপস্থিত ছিলেন।

নিকোল চুলিকের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠকেও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই জানতে চাচ্ছেন নির্বাচন কবে, আমরা কী চিন্তা করছি। এটা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।’

আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে না এলে আমরা বলেছি যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের ভেতরে বাইরে যে সিদ্ধান্তগুলো স্থগিত আছে, যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একটা নির্বাচিত সরকার আসার পরে যে সিদ্ধান্তগুলো সহজে আসবে এবং জনগণের সমর্থনে যে সরকার থাকে তাদের সিদ্ধান্তগুলো নিতে যত সহজ হয়, এটা অন্য ক্ষেত্রে হয় না।’

সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিনিয়োগ করবে এটা তো সংক্ষিপ্ত কিছু না, এটা স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। সে জন্য সবাই অপেক্ষা করছে একটা নির্বাচিত সরকারের দিকে, তাদের নীতি কী হবে, তারা জানতে চেয়েছেন। বিএনপির নীতি কী হবে, অর্থনৈতিক নীতি কী হবে, সেটা আমরা বিস্তারিত তাদের বলেছি।’

আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশে যত সংস্কার হয়েছে অর্থনৈতিক সংস্কার, রাজনৈতিক সংস্কার সব বিএনপির সময় হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্ত বাজার অর্থনীতি, বিচার বিভাগের সংস্কার সব বিএনপির সময়ে হয়েছে। অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা যেটা এসেছে তা বিএনপির অর্থনৈতিক সংস্কারের কারণেই এসেছে। আগামী দিনে আমরা বড় অর্থনৈতিক সংস্কারে যাব, সেটাতে তারা আশ্বস্ত হয়েছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা আপনাদেরকে কী বলেছে জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, ‘ট্যারিফের বিষয়টা নিয়ে আমরা যেরকম শঙ্কার মধ্যে আছি, তারাও আছে। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক তো কিছুটা ব্যাঘাত ঘটবে। সে জন্য তারা জানতে চেয়েছে, আমরা কী করতে যাচ্ছি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা যেটা চিন্তা করেছি সেটা বলেছি। আমরা এটা ওপরে আরও কাজ করছি।’

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক তিন দিনের সফরে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে আসেন। আগামীকাল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত সফরে প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: ন্যাপ

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫২ এএম
শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: ন্যাপ
বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি

নতুন শিল্পের ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ  ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ প্রতিবাদ জানান।

তারা বলেন, বাংলাদেশের শিল্প খাতে জ্বালানি একটি প্রধানতম সমস্যা। অপ্রতুল জ্বালানি এবং জ্বালানির দাম নিয়ে স্থিতিশীল কোনো নীতি না থাকার কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা সব সময় দ্বিধাগ্রস্ত থাকেন।

তারা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের উদ্যোগের সময় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নতুন শিল্পের জন্য গ্যাসের মূল্য ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

জেবেল-মোস্তফা আরও বলেন, গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত নতুন শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি করবে। একই খাতে ব্যবসারত পুরোনো কারখানা কম মূল্যে গ্যাস পাবে। নতুন কারখানাকে বর্ধিত মূল্য পরিশোধ করতে হবে এই নীতি গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। এই ভুল নীতির ফলে নতুনরা পুরোনোদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিপাকে পড়বেন।

তারা বলেন, ব্যবসার ক্ষেত্রে নীতির ধারাবাহিকতা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নীতি অনিশ্চয়তা বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে দ্বিধাগ্রস্ত করে। ফলে নতুন শিল্পের জন্য ৩৩ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং ব্যবসা সংক্রান্ত নীতিতে ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, একদিকে সরকার বিজনেস সামিট করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার কথা প্রচার করছে। অন্যদিকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় জিনিস গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বিনিয়োগকারীদেরকে নিরুৎসাহিত করবে। এটা সরকারের দ্বিমুখী আচরণের বহিঃপ্রকাশ। 

বিবৃতিতে তারা শিল্প ক্ষেত্রে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

অমিয়/

সিলেটে মাঠে তৎপর লুনা-সালমা

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৩ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৮ এএম
সিলেটে মাঠে তৎপর লুনা-সালমা
এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনা, সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা আক্তার

ব্যস্ত রাজনীতিবিদের জীবনসঙ্গী হিসেবে তাদেরও ব্যস্ততা ছিল। তবে তা ছিল অন্তরালে। বিশেষ কোনো উপলক্ষ ছাড়া তাদের দেখা যেত না। অন্তরালের সেই রুটিন পুরোটাই পাল্টে গেছে স্বামীর অবর্তমানে। নিজেদের এতটাই বদলে দিয়েছেন যে, রাজনীতির মাঠ চষে পরিবারও সামাল দিচ্ছেন। এতে করে দৃশ্যপটে না থেকেও স্বামীর রাজনৈতিক প্রভাব দৃশ্যমান রয়েছে। 

রাজনীতির মাঠে নিজেদের এভাবেই নিবেদিত করে রেখেছেন সিলেট অঞ্চলে ভোটের রাজনীতির অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দুই রাজনীতিবিদের স্ত্রীরা। তাদের একজন তাহসিনা রুশদীর লুনা। তিনি সিলেট-২ নির্বাচনি এলাকার বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী। অন্যজন সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনি এলাকার একাধিকবারের সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনের স্ত্রী সালমা আক্তার। 

ইলিয়াস আলী বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচিত একটি নাম। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল গাড়িচালকসহ তিনি ‘গুম’ হন। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই। রাজনীতিবিদ স্বামীর অবর্তমানে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তাহসিনা রুশদীর লুনা তার নির্বাচনি এলাকায় রাজনৈতিকভাবে তৎপর রয়েছেন। এ জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদের চাকরিও ছেড়ে দিয়েছেন। 

রাজনীতিতে পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে স্বামীর আসনে (সিলেট-২, বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচন কমিশন অযাচিতভাবে তার প্রার্থিতা বাতিল করে। অভিযোগ ছিল, আওয়ামী লীগের পছন্দের প্রার্থীকে জেতাতে রুশদীর লুনার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।

এদিকে, হাওরাঞ্চলের আসনখ্যাত সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধরমপাশা-মধ্যনগর) নির্বাচনি এলাকার একাধিকবারের সংসদ সদস্য নজির হোসেন ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ আকস্মিক মৃত্যুবরণ করেন। তার অকস্মাৎ মৃত্যু নির্বাচনি এলাকায় দলমতনির্বিশেষে মানুষকে শোকাহত করে। এই পরিস্থিতিতে, সালমা আক্তার, যিনি ব্যাংকের চাকরি থেকে অবসর জীবন যাপন করছিলেন, তিনি মাঠে তৎপর হন। 

এলাকাবাসী জানান, গত এক বছরে দলের তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মন জয় করায় সালমা আক্তার এখন ‘সালমা নজির’ নামে পরিচিত। জুলাই-আগস্ট পরবর্তী সময়ে তৃণমূলে বিএনপি পুনর্গঠনে সালমা তার স্বামীর নির্বাচনি এলাকার একটি উপজেলা কমিটির সদস্য পদেও আসীন হয়েছেন।

গণমুখী হতেই ‘গুম’
ছাত্রাবস্থা থেকে সাহসী চরিত্রের ইলিয়াস আলী বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন একজন নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে আবাসিক হলের নেতা থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসীন হন। ১৯৮৩ সালে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ১৯৮৬ সালে প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সচিব নির্বাচিত হন। আশির দশকের মধ্যভাগে রাজধানীতে ছাত্ররাজনীতির চালিকাশক্তি হয়ে ইলিয়াসই প্রথম সেই সময়কার সামরিক শাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এ জন্য ১৯৮৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃতও হন।

১৯৮৮ সালে গ্রেপ্তার হয়ে সাত মাস কারাভোগ করেন। ১৯৯২ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আবার কারাবন্দি হন। ২৩ মাস কারাভোগের পেছনে ছিল অন্তর্দলীয় ষড়যন্ত্র। তা ভেদ করেন কারামুক্তির মধ্য দিয়ে। তখন বয়সে তরুণ হলেও মূল দলে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।  কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত ইলিয়াস ভোটের রাজনীতিতে নেমেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন। এরপর ২০০৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তার সমর্থকদের অভিযোগ ছিল, ‘ওয়ান-ইলেভেন ষড়যন্ত্রে’ তাকে হারানো হয়। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ তাকে তুলে নেওয়া হয়। সেই থেকে তার আর কোনো সন্ধান মেলেনি। 

ইলিয়াস আলী সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তার সাংগঠনিক দায়িত্বে সিলেটে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যে সমাবেশ হয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশে পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি উত্থাপন করে ইলিয়াস ভারতের আগ্রাসী তৎপরতার প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ জানান। এরপর সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে ভারতের টিপাইমুখের বাঁধবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন। আন্দোলনে সম্পৃক্তরা বলেছেন, এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে ওঠায় ইলিয়াসও গণমুখী হয়ে উঠেছিলেন। গণমুখী হতেই তিনি ‘গুম’ হন। 

রাজনীতির বিজ্ঞজন নজির হোসেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত নিয়ে পড়াশোনা শেষ করা নজির হোসেন ভূ-রাজনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করতে ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে যান। সেখানে তিনি ১৮ মাস ছিলেন। এর আগে ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি সিলেট জেলা (বর্তমানে বিভাগ) ছাত্র ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। ‘সুনামগঞ্জ সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ’-এর সহ-সম্পাদক ও যুদ্ধ চলাকালে টেকেরঘাট সাব-সেক্টরের সহ-অধিনায়কের (বেসামরিক) দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৫ সালে সামরিক শাসনের বিরোধিতা করে হাওরে ভাসান পানির আন্দোলন সংঘটিত করে ৬ মাস কারাবরণ করেন। ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর তৎকালীন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় তিন জোটের রূপরেখা তৈরিতেও ভূমিকা রেখেছিলেন।

পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নজির হোসেন সুনামগঞ্জ-১ আসনে প্রথম নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের প্রেক্ষাপটে ১৯৯৩ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে এ দুটো নির্বাচনে জয়ী হতে না পারার জন্য পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের ভোটাধিকার হরণকে দায়ী করেন তার সমর্থকরা। 

রাজনীতির বিজ্ঞজন হিসেবে সমাদৃত ছিলেন নজির হোসেন। মোট পাঁচবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ ২০০১ সালের নির্বাচনে বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ানখ্যাত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। ভোটের রাজনীতিতে সেই হারজিৎ ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। বলা হয়েছিল ‘নজিরের নজিরবিহীন বিজয়’। বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে শীর্ষ নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংগঠনিক দক্ষতার জনপ্রিয়তায় তিনি দলীয় কাউন্সিলরদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। 

মাঠের দৃশ্যপট
‘সিলেটের সঙ্গে আমি রক্তঋণে আবদ্ধ!’ রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বক্তৃতায় ইলিয়াস তার সিলেটের প্রতি টান এভাবেই প্রকাশ করতেন। দলীয় রাজনীতির বাইরে সর্বশেষ আন্দোলনও ছিল নিজ এলাকার জন্য। ভারতের টিপাইমুখ বাঁধবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ইলিয়াসের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার (এপিএস) দায়িত্ব পালন করা ময়নুল হক বলেন, ‘আন্দোলনটি সিলেট থেকে বাংলাদেশের সমগ্র ভাটি অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলেন। ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর স্বতঃস্ফূর্ত একটি হরতাল পালনের পর ছয় মাসের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এ কর্মসূচি আর শেষ করতে পারেননি। তাকে গুম করে আন্দোলনটিও নস্যাৎ করা হয়। মানুষ বলছেন এ আন্দোলন অব্যাহত থাকলে ২০১২ সালেই জুলাই-বিপ্লবের মতো একটা কিছু ঘটত, ১২ বছর আগেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হতো।’

এদিকে, সুনামগঞ্জ-১ আসনটি সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সম্পদশালী। নজির হোসেন তার নির্বাচনি এলাকাকে বাংলাদেশে ‘হাওরের রাজধানী’বলে উপস্থাপন করতেন। জলাভূমির জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বড় বড় জলমহাল ব্যবস্থাপনা নিয়ে গৎবাঁধা উন্নয়নের বিপরীতে তার ছিল গণমুখী ভাবনা। 

উদ্ভাবনী উন্নয়নচিন্তার বাস্তবায়নে বিকল্প মেলেনি বলে এলাকাবাসী সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনকে ভুলতে পারছে না বলে জানিয়েছেন তার এপিএসের দায়িত্ব পালন করা আব্দুল কাদির। তিনি বলেন, ‘নৌ-বাণিজ্যের জন্য ব্রিটিশ আমল থেকে প্রসিদ্ধ জাদুকাটার জলমোহনায় বাংলাদেশের প্রথম নৌ-স্থল পথ সুবিধার বন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এটি বাস্তবায়নে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তৎপর ছিলেন। স্থানীয় সম্পদ ও লোকবলকে কাজে লাগিয়ে প্রচলিত উন্নয়নের বাইরে নিজস্ব চিন্তাভাবনা ছিল। এ জন্যই তার নির্বাচনি এলাকার টাঙ্গুয়ার হাওর বিখ্যাত হয়েছে। যদিও এই হাওর ব্যবস্থাপনায় তার মতামত এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’ 

দুই এলাকা ঘুরে জানা গেছে, নিজেদের নির্বাচনি এলাকায় ইলিয়াস আলী ও নজির হোসেনের শূন্যতাকে ‘টান’ হিসেবে দেখছেন এলাকাবাসী। তা মেটাতেই মাঠে তৎপর লুনা-সালমা। রাজনীতিবিদ স্বামীর রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়েও রাজনীতির মাঠে আলোচনা রয়েছেন। তবে এ নিয়ে তারা নীরব। দুই এলাকায় দুজন সম্পর্কে এলাকাবাসীর ভাষ্য, ‘এলাকার টান আর স্বামীর টান থেকেই মানুষের খোঁজ-খবর নিতে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন তারা। তাদের এ ভূমিকায় ভোটের রাজনীতিতে না থেকেও আলোচনায় আছেন ইলিয়াস-নজির।’ 

লুনা-সালমা রাজনীতির মাঠে থাকা দলের জন্য বাড়তি পাওয়া বলে মনে করেন সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আন্দোলনমুখী, উন্নয়নমুখী ও এলাকামুখী রাজনীতিবিদ হিসেবে তাদের প্রতি এলাকার মানুষের বিশেষ টান রয়েছে। এই টান বংশপরম্পরায় টিকে থাকুক, এটা সবার চাওয়া।’

গাজীপুরে বিএনপি নেতার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫১ এএম
গাজীপুরে বিএনপি নেতার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনিরের কয়েকটি অশ্লীল ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার পর গাজীপুরে হৈচৈ পড়ে গেছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে সমালোচনা এবং নিন্দার ঝড় উঠেছে।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের লিড নিউজে ছাপা হওয়া 'ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজছে বিএনপি' নিউজের কাটিংয়ের সঙ্গে মনিরুল ইসলাম মনির নিজের ছবি জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। এখন তার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেলে অনেকেই ব্যঙ্গ করে দুটি ছবি শেয়ার করে বলছেন এই হলো বাসন থানা বিএনপি নেতার ক্লিন ইমেজের নমুনা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলোতে তাকে বস্ত্রহীন এবং আপত্তিকর অবস্থায় দেখা গেছে।

এ দিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সুপার এডিট করা দাবি করে মনিরুল ইসলাম মনির জানান, 'ভিডিওটি তিনি দেখেছেন কিন্তু এগুলো কীভাবে তার হতে পারে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এমন ভিডিও তার বলে মনে পড়ে না। তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।'

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, 'ভিডিওটি আমি কিছুক্ষণ আগে দেখেছি। থানা বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন কাজে জড়িত হতে পারে বিষয়টি আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। কি বলব আমি খুবই লজ্জিত। আশা করি দলের হাইকমান্ড বিষয়টি দেখবেন। তারা যে নির্দেশনা দিবে আমরাও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'

পলাশ/মেহেদী/

মৌলিক সংস্কার ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে কি না, তা বিবেচনার বিষয়: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম
মৌলিক সংস্কার ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে কি না, তা বিবেচনার বিষয়: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

মৌলিক রাষ্ট্রীয় সংস্কার ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে জানিয়েছি, ন্যূনতম সংস্কার নয়, বরং আমরা চাই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার। এই পরিবর্তনগুলো ছাড়া অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে এনসিপি অংশ নেবে কি না, তা এখনো বিবেচনার বিষয়।’

তিনি জানান, ‘সংস্কার কমিশনে জমা দেওয়া দলটির প্রস্তাবনাগুলোর বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমাদের তিনটি প্রধান দাবি সংস্কার, বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচন। এগুলো বাস্তবায়ন ছাড়া একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

এ সময় বর্তমান প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এনসিপির আহ্বায়ক। নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থানে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হলেও তারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছেন। অনেক জায়গায় প্রশাসন বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে এবং চাঁদাবাজির ঘটনায়ও তারা নীরব দর্শক। এ ধরনের প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হলে নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র ও পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরেছি।’

নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের দেওয়া টাইমলাইন ডিসেম্বর থেকে জুনের বিষয়টিতে আমাদের সমর্থন রয়েছে বলে তাদের অবহিত করেছি। তবে সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচন নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে দলটির বিচারের আগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার বিষয়ে আগের অবস্থানেই আছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।

তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রতিনিধিদল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা আমাদের বিষয়গুলো তুলে ধরেছি।’

মার্কিন ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে এ সাক্ষাতে নাহিদসহ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চার সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। অন্যরা হলেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা।