ঢাকা ৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
English
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না: আমিনুল হক

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৪ পিএম
ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকলে কেউ ক্ষতি করতে পারবে না: আমিনুল হক
মিরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজ ও এমডিসি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, আমরা সকলে একসঙ্গে দেশ গড়ার কাজে ঐক্যবদ্ধ হতে চাই। আমরা সকলে যদি ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত থাকতে পারি তাহলে কোনো ষড়যন্ত্রকারী দেশ এবং দেশের মানুষের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে মিরপুর বাংলা স্কুল এন্ড কলেজ ও এমডিসি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ এর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া অনুষ্ঠান এবং পল্লবীতে স্বেচ্ছাসেবকদলের আয়োজনে স্থানীয় সুশীল সমাজের জন্য ইফতার ও দোয়ায় বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা সুন্দর একটি বাংলাদেশ রেখে যেতে চাই মন্তব্য করে আমিনুল হক বলেন,স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের পরে বাংলাদেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। সেই স্বস্তির নিঃশ্বাসে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। সেই স্বপ্ন সুন্দর একটি সমাজ গড়ার। সুন্দর একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ার। 

এসময় তিনি বলেন, মানবিক বাংলাদেশ গড়তে একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। প্রত্যকটি নাগরিক হিসেবে আমরা যার যার অবস্থান থেকে যদি দায়িত্ব পালন করতে পারি তাহলেই আমরা একটি সুন্দর সমাজ গড়তে পারব।

এসময় বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে আমরা দেখেছি স্বৈরাচার সরকার বাংলাদেশের মানুষের ওপরে প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করেছিল। 

এসময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার তার ১৫টা বছরের শাসনামলে তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতায় বসেছিল। ১৭ বছর ধরে আমাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে গত জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আমরা স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছি। 

এছাড়াও খিলক্ষেত থানার ৪৩নং ওয়ার্ডের আয়োজনে ইফতার মাহফিল, পল্লবীতে আহলে হাদিস জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা ইফতার মাহফিল এবং পল্লবী রুপনগরে দুইটি ইফতার বিতরণ কর্মসূচিতেও অংশ নেন আমিনুল হক।

মাহফুজ/

বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে: দুদু

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৯ পিএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে: দুদু
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের সন্ধানের দাবি’তে এক যুব সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য জাতীয় নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। 

তিনি বলেন, ‘এই সরকারের কাজ দেখে দেশবাসী উদ্বিগ্ন। তারা আসলে কি চায় তা বোঝা যায় না। আমরা মনে করি, বিএনপি দেশের জনগণের সমর্থন আদায় করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যেন সরকার গঠন করতে না পারে, সে জন্যে নির্বাচনকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। গত ১৫ বছর যারা দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে তাদেরকে কোনো না কোনোভাবে রক্ষা করা হচ্ছে, কোনো না কোনোভাবে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’  

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদের উদ্যোগে ‘বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের সন্ধানের দাবি’তে এক যুব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে কোন দিন, কোন মাসে, কোন বছর নির্বাচন হবে তা নির্দিষ্ট করে বলার আহ্বান জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে এ ধরনের কথা বাদ দেন।’ 

তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস আলী শুধু বিএনপির নেতাই নন, তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। ইলিয়াস আলীসহ বিএনপির যুব-ছাত্র অসংখ্য নেতাদেরকে শেখ হাসিনা গুম করেছে, খুন করেছে। তার জন্য শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি করছি।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘বিচার করবেন কি করবেন না তা আমরা বুঝে গেছি। আট মাস হয়ে গেল এখনো বিচারের তেমন অগ্রগতি নাই। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টা ইলিয়াস আলীসহ গুম পরিবারের কারও বাসায় তারা যায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পাঁচ মাস পর আয়নাঘরে গিয়েছিলেন। কিন্তু যারা গুম হয়েছে তাদের বাসায় যাননি কেন? গুম-খুনের বিচারের উদ্যোগ নিন। যারা লুটপাট করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে, তাদেরকে আইনের আওতায় আনেন। আপনাকে (ইউনূস) ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছি, ফুলের মালা দিয়ে বিদায় জানাতে চাই। এটাই বিএনপির ইচ্ছে এখন পর্যন্ত।’ 

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, ‘বাংলা ভাষায় কিছু শব্দ আছে যেগুলো বাম দিক থেকে লিখলে যা হয় উল্টো করে লিখলেও তাই হয়।  বর্তমান সরকারের কাছে আমরা যে দাবি করি না কেন, তারা যা বলে যা করে সবকিছু উল্টো দিক থেকে বিচার করলে একই হয়। তাই আমার কাছে মনে হয় দাবি জানানোর চেয়ে অনুসন্ধানী টিম করে নিজেদেরই উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রশাসনের ওপর দুটি জিনিস ভর করেছে- একটি হচ্ছে কোনোরকম অফিস টাইম কাজ করে বাসায় চলে যাওয়া। আরেকটি হচ্ছে কোনো ফাইল এলে সেটা ধীরগতি করে সে ফাইলটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া। এই কাজগুলোর কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে আছে।’

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা, গণতান্ত্রিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

শফিকুল/পপি/

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে এনফ্রেল প্রতিনিধিদলের বৈঠক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম
বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে এনফ্রেল প্রতিনিধিদলের বৈঠক
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে এনফ্রেল প্রতিনিধিদলের বৈঠক। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস (এনফ্রেল) থাইল্যান্ডের নির্বাহী পরিচালক ব্রিজা রোজালেসের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলে এই বৈঠক।

জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সঙ্গে এনফ্রেল প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

বৈঠকে এনফ্রেল প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন ও গণতন্ত্র কর্মসূচির পরামর্শক মায়া বতী, প্রচারণা ও সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার থারিন্দু আবেয়ারথনা এবং প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট আফসানা আমে।

উল্লেখ্য, এনফ্রেল জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে এশিয়ায় গণতন্ত্রীকরণের প্রচার ও সমর্থনের জন্য কাজ করে। সংগঠনটি গঠিত হয়েছে ১৯৯৭ সালের নভেম্বরে। এনফ্রেলের প্রধান লক্ষ্যগুলো হলো আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ মিশন পরিচালনা, নির্বাচনি স্টেকহোল্ডারদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি যেমন- গণতন্ত্রায়ন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী, মিডিয়া এবং অন্যান্য সুশীল সমাজের সংস্থাগুলো যারা তাদের নিজ দেশে গণতন্ত্রীকরণের জন্য কাজ করে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করা।

শফিকুল/সালমান/

 

রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে কীভাবে?

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ এএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ পিএম
রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে কীভাবে?
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (লোগো)

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। গত বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের আলোচনায় আগের মতোই যে যার অবস্থানে অনড়ই থেকেছেন। বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করেছে। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এতে নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে আরেক ধাপ অনিশ্চয়তা তৈরি হলো। ফলে এই অনিশ্চয়তা কীভাবে দূর হবে বা রাজনৈতিক এই অচলাবস্থা কীভাবে কাটবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা আলোচনা রয়েছে। বিশ্লেষকরাও এ বিষয়ে নানা মতামত দিচ্ছেন।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনই করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়। ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন করলে সমস্যাগুলোর অনেকটা সমাধান হবে। এ ছাড়া নির্বাচিত সরকার সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে বড় সংস্কারগুলো নিয়ে কাজ করতে পারবে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, সংস্কার কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দু-এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব। তাদের আশঙ্কা- নির্বাচন পেছালে আওয়ামী লীগের দোসররা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে, দেশ ক্ষতিগ্রন্ত হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে না। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা বর্তমানে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অন্যতম দাবি। জনগণকে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসতে হবে। আলোচনার মাধ্যমেই নির্বাচনের দিনক্ষণের জটিলতার সমাধান হবে।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খবরের কাগজকে বলেন, ‘দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে- কীভাবে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারি। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং গণতান্ত্রিকভাবে এগিয়ে যাবে।’

দলীয় সূত্রমতে, আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে বিএনপি সমমনা দলগুলোর মতামত নেওয়া শুরু করেছে। এরপর দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আপাতত রাজপথের বড় কোনো আন্দোলনে যাবে না বিএনপি। শিগগিরই মহানগর ও জেলা পর্যায়ের সমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।

জানা গেছে, গত বছরের ৬ আগস্টের পর থেকেই নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নানা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা এখনো স্পষ্ট করেনি অন্তর্বর্তী সরকার। সর্বশেষ বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তার আগের বক্তব্য ধরেই ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এর আগে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও তিনি একই কথা বলেন। এ ছাড়া বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে এই সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একমত নয় বিএনপি। দলটি এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়ায় বিএনপিতে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে।

তবে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার করার পর নির্বাচনের দাবি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ও এনসিপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনেকটাই একই স্ট্যান্ড নিয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। তবে জামায়াতে ইসলামী বিগত আট মাসের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলছে। দলটি এখন আগামী বছরের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচনের দাবি তুলছে। 

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিলেন দেশের সাধারণ জনগণ। কিন্তু ওই বৈঠকে কোনো ঐকমত্য বা সুরাহা না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এখন নতুন করে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকের মধ্যে নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর, তারা নির্বাচিত’- দু-একজন উপদেষ্টার এমন বক্তব্য নিয়েও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। সব মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে সরকারের এই অবস্থান ও বক্তব্য মানতে পারছে না রাজনৈতিক দলগুলো।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন। সবার মত এক হবে না, এটা স্বাভাবিক। সরকারও তার সুবিধামতো সময়ে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করতে চাইছে। মূলত নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে প্রত্যক দল আলাদা মতামত দিচ্ছে। এর মধ্য থেকে যেকোনো একটা সময় সরকার বেছে নিলে সংকট বা অচলাবস্থা কেটে যাবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে বলে মনে করছি না।’

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের টাইমফ্রেম নিয়ে কোনো আপত্তি নেই। আমরা নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যাসহ পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চাই। এসব যদি ডিসেম্বরের আগে শেষ করা সম্ভব হয়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে কোনো বাধা নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতির ধারা ও লক্ষ্য হলো দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে তিনটি নির্বাচনে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারেনি। দেশের মানুষও দ্রুত নির্বাচন চায়। তাই দ্রুত নির্বাচন দেওয়া বাঞ্ছনীয়। আমি মনে করি, সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের দূরত্ব বা বিরোধ তৈরি হয়। তারা দলনিরপেক্ষ সরকার, ফলে তাদের বিশেষ কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার কথা নয়। নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বর সামনে রেখে তৎপরতা চালাচ্ছে, ঐকমত্য কমিশনও তাদের কাজ করছে।’ 

তিনি বলেন, ডিসেম্বর কেন, চাইলে আরও দুই মাস আগেও জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব। সুতরাং এটা নির্ভর করছে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। বাস্তবে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না সরকার। আধা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেশে একটা অচলাবস্থা চলছে। নির্বাচিত সরকার না এলে দেশে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাবেন না। তার আশা, নির্বাচনের দাবি আদায়ে বড় কোনো আন্দোলন নামা লাগবে না। প্রধান উপদেষ্টার কালকের (বুধবার) বক্তব্য শেষ কথা নয়। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানে আসা যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

বিশিষ্টিজনের অভিমত পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন-

>সংস্কারের ভিত্তি মজবুত করতে নির্বাচন জরুরি: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
>রোডম্যাপ জানালে বিভ্রান্তি দূর হবে: আনু মুহাম্মদ
>সমস্যার সমাধান হবে রোডম্যাপ দিলে: ড. শাহদীন মালিক

সংবিধানের সব সংশোধনীতে গণভোটের প্রয়োজন নেই: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৫ পিএম
সংবিধানের সব সংশোধনীতে গণভোটের প্রয়োজন নেই: সালাহউদ্দিন
জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: খবরের কাগজ

সংবিধানের সব সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের উভয় কক্ষে পাস করার পরে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। বিষয়টিতে দ্বিমত জানিয়েছি। আমরা বলেছি, সংবিধানের সব সংশোধনী গণভোটের জন্য প্রযোজ্য নয়। শুধু যেসব বিষয় বর্তমানে সংবিধানে রয়েছে সেগুলো। এ ছাড়া সংবিধানের মূলনীতি, ৪৮, ৫৬ এবং ১৪২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হলে গণভোটে যেতে হবে। ঢালাওভাবে যদি আমরা সব সংশোধনী গণভোটের জন্য বিধান রাখি তাহলে সেটা অনুচিত হবে।’

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের শেষে তিনি এই কথা বলেন। বৈঠকে সব বিষয়ে আলোচনা শেষ না হওয়ায় আগামী রবিবার আবার বৈঠকে বসবে বিএনপি। 

সংবিধান সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ নিয়ে দফাওয়ারি আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না আমরা কতটি প্রস্তাবে একমত হয়েছি। আমরা প্রায় সব বিষয়ে কাছাকাছি আসতে পেরেছি। কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকতেই পারে এবং আছে।’

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল ছাড়া সব বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে সংসদ সদস্যদের ভোটের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। বিএনপি বিষয়টিতে দ্বিমত জানিয়েছে। দলটির যুক্তির বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতি এবং প্র্যাকটিসে যদি আমরা ৭০ অনুচ্ছেদ অর্থবিল ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে ওপেন করি তাহলে সরকারের স্থায়িত্ব থাকবে না এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্যাপক বাধা আসতে পারে। আমরা বলেছি অর্থবিল, সংবিধান সংশোধন বিল, আস্থা ভোট এবং জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাদে সংসদ সদস্যরা যেকোনো বিষয়ে আলাপ-আলোচনা এবং সংসদে ভোট দিতে তাদের কোনো বাধা থাকবে না। ভবিষ্যতে যদি আমরা গণতান্ত্রিক প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক শাসনের ধারাবাহিকতায়, যদি সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারি তাহলে ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে আরও অনেক বিষয় তখন আমরা ওপেন করে দিতে পারব। অথবা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পারবে, সেটা আমরা মনে করি।’

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) বিষয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। প্রাথমিক আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধারণার সঙ্গে একমত নই। এনসিসি আমাদের দেশে কোনো প্র্যাকটিস ছিল না। রাজনৈতিক ও সংসদীয় ইতিহাসে এটা নতুন হবে। আমরা বলেছি এই বিষয়টি পরবর্তী নির্বাচিত সংসদে বিস্তর আলোচনা করা যাবে। এখনো আমরা নীতিগতভাবে একমত হইনি।’

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে বিএনপি পঞ্চাদশ সংশোধনীর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ওখানে ধর্মনিরপেক্ষতা নেই। আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস আছে। ওখানে গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদসহ সবকিছু আছে রাষ্ট্র এবং সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে। আমরা বহুত্ববাদের বিরোধিতা করেছি। তবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার যে কথাগুলো স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা আছে, সেই সব বিষয়ে তারা প্রস্তাবনায় এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, এখানে প্রস্তাব করেছে। আমরা বলেছি এ বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে একমত। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত পরে জানাব।’

সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব বিষয়ে একমত হয়েছেন তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে- এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সবার সঙ্গে আলোচনা করে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো একত্রিত করে প্রতিবেদন তৈরি করে পক্ষগুলোকে স্বাক্ষর করতে বলবেন, সেটা ওনারাই বুঝবেন, এটাকে ওনারা জুলাই সনদ বলবেন নাকি কী বলবেন তা ঠিক করবেন।’

সূচনা বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি, গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ দেশে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিএনপির একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এ দলটি দাবি উত্থাপন করেছে, কর্মসূচি দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের লড়াইয়ের পাশাপাশি সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে বিএনপি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হতে চাই।’ 

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

 

আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এনসিপি অপপ্রচার করছে: বিএনপি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এনসিপি অপপ্রচার করছে: বিএনপি
মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবশে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি- (এনসিপি) নেতারা অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা মহানগর উত্তরের আওতাধীন রূপনগর থানার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এমন অভিযোগ জানান সচেতন নাগরিক সমাজ সহ নেতৃবৃন্দরা। 

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুনর্বাসন এবং গত ১৪ এপ্রিল সোমবার রূপনগরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর প্রেম সংক্রান্ত ঝামেলা নিয়ে এনসিপি নেতাদের বিশৃঙ্খলার হামলা দলীয়ভাবে নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এর বিরুদ্ধে ভূল তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তরের রূপনগর থানার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকের পক্ষ থেকে এ প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে রাজধানীর রূপনগরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের পাশাপাশি প্রায় ২০ হাজার বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়। তাদের অভিযোগ, গত ১৫ এপ্রিল রূপনগরে ঘটে যাওয়া প্রেম ঘঠিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্তরে অপপ্রচার চালায় এনসিপি। যেখানে প্রেমঘঠিত ঘটনাকে উল্লেখ না করে বিএনপি চাঁদাবাজি করে এই মর্মে বক্তব্য দেয় এনসিপি নেতারা। যেখানে ক্লিন ইমেজের নেতা আমিনুল হকের বিরুদ্ধেও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। এমন বক্তব্যের অভিযোগ জানিয়ে বিএনপি নেতারা বক্তব্যে বলেন, বিএনপি নেতা আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এনসিপি অপপ্রচার করছে।

এ সময় বিএনপি নেতারা আরও বলেন-আমিনুল হকের বিরুদ্ধে যা-ই করেন, যত অপপ্রচার করেন তার কিছুই করতে পারবেন না। আমরা তৃণমূল বিএনপি নেতা-কর্মীরা আমিনুল হককে মাথায় করে রাখব। আপনারা ভালো কাজ করার সুযোগ দেন, ভালো কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করেন। কোনো ব্যক্তি খারাপ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে বলেন। কিন্তু একজন ভালো মানুষ ও দক্ষ সংগঠকের বিরুদ্ধে আপনারা এমন অপপ্রচার করতে পারেন না। 
এ সময় বিএনপি নেতারা এনসিপি নেতাদের বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানায় এবং পাশাপাশি তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, রূপনগরের সচেতন নাগরিকসহ বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রায় ২০ হাজারের অধিক লোক নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১১ নম্বর থেকে মিরপুর অরজিনাল ১০ হয়ে প্রশিকার মোড় দিয়ে রূপনগর আবাসিক মোড়ে এসে শেষ হয়। 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম মন্টুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন মহানগর সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন, মহানগর সদস্য শামীম পারভেজ, রেজাউর রহমান ফাহিম, হাফিজুর রহমান শুভ্র, হুমায়ুন কবির রওশান, নূরুল হুদা ভূইয়া নূরু, আশরাফুজ্জাহান হাহান, আবুল হোসেন আব্দুল, মাহবুবুর রহমান, তাসলিমা রিতা, স্বেচ্ছাসেবক দল মহানগর সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেন, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিম সভাপতি রবীন খান, সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ, রুপনগর থানা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল হক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জি. মজিবুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমেদ রাজু, শেখ হাবিবুর রহমান হাবিব, থানা সদস্য খান মুরাদ হোসেন, পল্লবী থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হোসাইন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোকছেদুর রহমান আবির, আশরাফ গাজী, আনিছুর রহমান, কাফরুল থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আকরামুল হক, সাব্বির দেওয়ান জনি, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মো. আবদুস ছালাম, বানানী থানা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইমান হোসেন নূর, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মীর কামাল হোসেন, আদাবর থানা বিএনপি আহ্বায়ক সাদেক হোসেন স্বাধীন, বিমানবন্দর থানা বিএনপি আহ্বায়ক মনির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, মহিউদ্দিন তারেক, মন্জুর হোসেন পাটোয়ারী, বশির আহমেদ, তুরাগ থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ খোকা, মো. চান মিয়া, থানা আহ্বায়ক কমিটি সদস্য আব্দুল আলী, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মোবারক হোসেন, দেওয়ান সি এম আনোয়ার হোসেন, ভাষাণটেক থানা বিএনপি আহ্বায়ক আব্দুল কাদির, রুপনগর থানা বিএনপির ৭ নং ওয়ার্ড সভাপতি শফিকুর রহমান মামুন, সাধারণ সম্পাদক খোকন মাদবর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, পল্লবীর ৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, পল্লবী থানা যুবদলের আহ্বায়ক হাজী নূর সালাম সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া, রুপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কায়সার হামিদ, সদস্য সচিব শামীম আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল আলম টুটুল, যুবদল রূপনগর থানার আহ্বায়ক সোয়েব খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাঈম হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ খান, আদাবর থানার ৩০ নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, দারুসসালাম থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ভুট্টো, শাহআলী থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন দেওয়ান গিয়াস ও সোলায়মান দেওয়ান সহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।