
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন আজ (২০ মার্চ)। ১৯৩০ সালের ২০ মার্চ কুড়িগ্রাম শহরে ‘লাল দালান’ বাড়িখ্যাত নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন হন তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এর চার বছর পর ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি এরশাদ প্রতিষ্ঠা করেন জাতীয় পার্টি।
এরশাদ তার শাসনামলে উপজেলা পরিষদ গঠন ও উপজেলাভিত্তিক তিন স্তরের প্রশাসনব্যবস্থা চালু করা, ৬টি জেলায় হাইকোর্টের বেঞ্চের সম্প্রসারণ ও প্রতিটি উপজেলায় মুন্সেফ কোর্ট স্থাপন, সর্বজনীন বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্য বই বিতরণ, উপজেলা সড়ক সম্প্রসারণ, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, ঢাকা বন্যা নিরোধ বাঁধ নির্মাণ, পথকলি ট্রাষ্ট গঠন, সারা দেশে ৫৬৮টি গুচ্ছগ্রাম স্থাপন করে ২১ হাজার ছিন্নমূল ভূমিহীন পরিবারের পুনর্বাসন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম চালু করেন তিনি।
উন্নয়নমূলক নানা কর্মকাণ্ড করলেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় এরশাদ নিন্দিত হন দেশজুড়ে। ‘স্বৈরাচার’ তকমা লাভ করেন তিনি। এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। গণ-অভ্যুত্থানে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন এরশাদ। পরে তিনি গ্রেপ্তার হন। জেলে থেকেই ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ৫টি করে আসনে জয়ী হন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
২০০৮ সালে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক হয়। ২০১৪ সালের বিতর্কিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পরে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসে জাতীয় পার্টি। এতে অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো জাপাকে ‘গৃহপালিত বিরোধী দলের’ তকমা দেয়।
এরশাদ জীবদ্দশাতেই তার গড়ে তোলা দল জাতীয় পার্টির ৫ দফা ভাঙন দেখে গেছেন। তার দলের কর্তৃত্ব নিয়ে ভাই জি এম কাদের ও স্ত্রী রওশন এরশাদের দ্বন্দ্ব প্রশমন করতেও পারেননি তিনি। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুর পর ২০২৪ সালের ৯ মার্চ রওশন এরশাদ মূল দলে ষষ্ঠ দফায় ভাঙন ধরান।