ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কমিটি না থাকায় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১২:১৭ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কমিটি না থাকায় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা
যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির কমিটি না থাকায় ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। ছবি: খবরের কাগজ

বিগত ১৫ বছরের বেশি সময় বহির্বিশ্বে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পরও যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির নেই কোনো কমিটি। দীর্ঘ ১৩ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র শাখা বিএনপির কমিটি হচ্ছে না। এ নিয়ে সেখানকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হামলা-মামলার রোষানলে পড়লেও তাদের নেই কোনো দলীয় পরিচয়। কমিটিবিহীন চলছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির রাজনীতি। পদ-পদবি না পেয়েও অনেক নেতা-কর্মী ক্ষুব্ধ। দলীয় নানা কর্মসূচিও পৃথকভাবে পালন করছেন কেউ কেউ। এমন অবস্থায় বিগত দেড় দশকের ত্যাগ ও পরিশ্রমের মূল্যায়নের দাবি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীদের।

এদিকে অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ব্যানারে কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ কর্মসূচি পালন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ১৭ জানুয়ারি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়, যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। সেখানকার নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন, এই নিষেধাজ্ঞা কাদের বিরুদ্ধে? তারা বলছেন, এখানে দলীয় শৃঙ্খলা কিংবা নিয়ম ভঙ্গ করার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। শুধু চলমান কর্মসূচি দলীয় ব্যানারে পালন করা হচ্ছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন ভুল বুঝিয়ে এই চিঠি ইস্যু করিয়েছেন। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট ও মহানগরের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে খোকন চরম স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি করেছেন। নিজ বলয়ের লোকদের নিয়ে ৫ থেকে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়ে খোকনের অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অনেক বড় দেশ। তাই বিভিন্ন স্টেট কমিটির মাধ্যমে চলছে বিএনপি। তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো ভূমিকা পালন করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দেওয়ার এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার নিজস্ব কোনো বলয় নেই, সবাই বিএনপির লোক। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেই আমরা রাজনীতি করি।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অনেক বড় দেশ। এখানে এক স্টেট থেকে আরেক স্টেটে যেতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। আগে নিউইয়র্ক বেজড রাজনীতি হতো। এখন পর্যন্ত ১৮ স্টেটে কমিটি দিয়েছি। কোথাও অনৈতিক কিছু কেউ দেখাতে পারবে না।’ 

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিএনপির অন্তত ছয়জন সিনিয়র নেতা জানান, চাকরি ও পেশাগত কাজের পাশাপাশি তারা নিঃস্বার্থভাবে বিএনপির রাজনীতি করছেন। বিগত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের বাধার মুখে পড়েও তারা থেমে থাকেননি। বিএনপিকে যুক্তরাষ্ট্রে সুসংগঠিত করেছেন। অথচ দলীয় পদবি না থাকায় এখন পরিবারের কাছেও এসব ত্যাগী নেতার সম্মান নেই। যুক্তরাষ্ট্রে দলীয় রাজনীতি ও কমিটির ব্যাপারে কেন্দ্রের উদাসীনতা, স্টেট কমিটির মাধ্যমে দলীয় রাজনীতি পরিচালনার সিদ্ধান্তে চরম হতাশা আর সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন প্রবাসের নেতা-কর্মীরা। তাই শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।

দলীয় সূত্রমতে, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে বহির্বিশ্বে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভূমিকা ছিল নজিরবিহীন। শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফর ঘিরে তারা সংঘবদ্ধভাবে মানববন্ধন ও বিভিন্ন স্লোগান দেওয়ায় অনেকেই বাংলাদেশে মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গত ১৫ বছর অনেকে দেশেও আসতে পারেননি।

জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাত মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি গঠনের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ প্রবাসে ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কমিটি গঠন করেছিলেন সেখানে অবস্থারত বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পরে ১৯৯৬ সালে প্রথম কমিটি অনুমোদন দেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ ২০০৫-এ আব্দুল লতিফ (সম্রাট) ও জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে কমিটি দেওয়া হয়, যা ২০১২ সালে ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর ২০১৫ সালের পর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কয়েকবার কমিটি গঠনের ব্যাপারে আলোচনা ও লন্ডনে বৈঠক করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। আর সর্বশেষ বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনকে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির রাজনীতি আরও স্থবির হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, খোকনকে আমেরিকা-ইউরোপসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়ায় বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল থেকে আরও দুর্বলতর হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থারত বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, বিগত ১৫ বছর আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, বিভিন্ন স্টেট ও মহানগর কমিটিতে তাদের অনেকের স্থান হয়নি। অথচ যখন দেশে কেউ কথা বলতে পারত না, তখন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দূতাবাস ও কূটনৈতিক পাড়ায় বহির্বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। 

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র নেতা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরাম যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, ‘গত ১৫ বছর নিউইয়র্কে নেতা-কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ব্যানারে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। শেখ হাসিনা পালানোর পরও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। কিন্তু বিশেষ একজন ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেওয়ায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা বিএনপির হাইকমান্ড উপলব্ধি করতে পারছে না। সুতরাং দলীয় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি গঠন অত্যন্ত জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।’

জানা গেছে, শুধু কয়েকটি স্টেট কমিটি গঠন করে চলছে যুক্তরাষ্ট্র শাখা কমিটি। এই সময়ের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এহছানুল হক (মিলন) কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্র সফর করলেও গঠন করা হয়নি কমিটি। খালেদা জিয়া আমেরিকায় গেলে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে শাখা বিএনপির ব্যানারে স্বাগত ও সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন। তারা উভয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির পৃথক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। এসব কর্মসূচিতে তাদের সঙ্গে দেখা করে নেতা-কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্র শাখার কমিটি ঘোষণা করার দাবিও তুলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা ও নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মিজানুর রহমান মিল্টন ভূঁইয়া বলেন, “বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যারা বেশি সক্রিয় ছিল, তাদের আজ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ‘বিএনপি করতে পারবে না’- এ কথা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বা খালেদা জিয়াও কখনো বলেননি। দেশের সংকট এখনো কেটে যায়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্র শাখা বিএনপির শক্তিশালী কমিটি গঠন করা জরুরি। যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি দিতে হবে। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে দল উপকৃত হবে।”

যুক্তরাষ্ট্র শাখা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ডা. মজিবুর রহমান বলেন, ‘স্টেট ও মহানগর কমিটি দেখে নেতা-কর্মীরা হতাশ। বিগত সময়ে যারা ভূমিকা পালন করেছেন তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। গ্রুপিং-কোন্দলের কারণেও কয়েকবার কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।’

কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাবেক সভাপতি সম্রাট, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, শরাফত হোসেন বাবু পৃথক ব্যানারে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। ২০১৯ সালের পর বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকন দায়িত্ব নেওয়ার পর জুমের মাধ্যমে তিনি স্টেট ও মহানগরের নামে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। প্রতিটি স্টেট ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটিতে ২০ থেকে ২৫ জন করে খোকনের অনুসারী। ভোটার ও প্রার্থী সবই তার। ১১ মাস আগে, বিশেষ করে নিউইয়র্ক স্টেটে পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে কুমিল্লা, সিলেট, বরিশাল ও চট্টগ্রামের লোকজনদের স্থান দিয়ে চরম আঞ্চলিকতা প্রতিষ্ঠা করেন আনোয়ার হোসেন খোকন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসূচিতে বেশির ভাগ সময়েই এসব নেতা অনুপস্থিত থাকেন। এমনি তাদের পড়াশোনা নেই এবং রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডও নেই। অথচ ১৫-২০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির রাজনীতি করছেন।

লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ২ জন নিহতের ঘটনায় বিএনপির  ১৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৯ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে ২ জন নিহতের ঘটনায় বিএনপির  ১৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দু-গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন নিহতের ঘটনায় বিএনপির  ১৭ নেতাকর্মীকে  গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: খবরের কাগজ

লক্ষ্মীপুরে রায়পুরের খাসেরহাট এলাকায় বিএনপির দু-গ্রুপের সংঘর্ষে দুইজন নিহতের ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংঘর্ষে নিহত স্বেছাসেবকদলের নেতা জসিম উদ্দিন ব্যাপারী হত্যা মামলায় বিএনপি ও বিএনপির সহযোগী সংগঠনের ১৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভোররাতে ঢাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আবুল খায়ের গাজী, খালিদ গাজী, জাকির হোসেন, আবদুল মান্নান গাজী, সিদ্দিক আলী, সোলায়ানমান দেওয়ান, নেসার উদ্দিন, ইমাম হোসেন, মিজান সরদার, শাহদাত হোসেন, খিজির আহমেদ, তসলিম উদ্দিন, হানিফ দেওয়ান ও হারুন।

এর আগে বিএনপি কর্মী সাইজ উদ্দিন হত্যা মামলায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে একই ঘটনায় পৃথক দুইটি হত্যা মামলায় ১৭জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারা সবাই বিএনপি ও বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নিজাম উদ্দিন ভূইয়া।

তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষে বিএনপির দুইজন মারা যায়। এসব ঘটনায় পৃথক দুইটি হত্যা মামলা করা হয়। এই দুই মামলায় ৭৪জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।’

এর আগে গত ৭ এপ্রিল সোমবার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রায়পুর উপজেলার ২নং চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব শামীম গাজী গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। 

এ সময় সাইজ উদ্দিন নামে এক বিএনপি কর্মী মারা যান। এর ৭দিন পর আহত স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা জসিম উদ্দিন ব্যাপারী ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনার তিনদিন পর নিহত সাইজ উদ্দিনের ভাই হানিফ দেওয়ান বাদী হয়ে বিএনপি নেতা ফারুক কবিররাজকে প্রধান করে ২৬জনের নাম উল্লেখ ও ১৮৬জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

অপরদিকে ঘটনার ৮দিন পর জসিম উদ্দিন ব্যাপারী নিহতের ঘটনায় তার বাবা হজল করিম ব্যাপারী বাদী ৪৮জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৭০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে রায়পুর থানায় পৃথক আরও একটি হত্যা মামলা করেন।

এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও কৃষকদলসহ অঙ্গসংগঠনের ১৬ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করে রায়পুর উপজেলা বিএনপি।

রফিকুল ইসলাম/সুমন/

দেশটা এখন খুব খারাপ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে: মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৪ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১১ পিএম
দেশটা এখন খুব খারাপ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে: মির্জা আব্বাস
ছবি: খবরের কাগজ

'আমাদের দেশটা এখন খুব খারাপ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে' উল্লেখ করে জনগণ, জাতি, রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণকে যদি বিভক্ত হয় তাহলে দেশ আবারও ভারতীয় আধিপত্যবাদের হাতে চলে যাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকতেই পারে। তাই বিএনপি-জামায়াত, এনসিপিসহ সব দলকে জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।' 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্র, সংস্কার ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।   

মির্জা আব্বাস বলেন, 'বাংলাদেশি জনগণের একটাই শক্তি রয়েছে, সেটা হলো ঐক্য। সেটা আমরা জুলাই-আগস্টে প্রমাণ করেছি। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমরা দেশ থেকে স্বৈরাচারকে বিদায় করেছি। আমাদের বিপরীত শক্তি দলগুলোকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।'      

দ্রুত নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আজকে আমাদের যে নির্বাচনব্যবস্থা এটা কিন্তু ধসে পড়েছে। এই নির্বাচন ব্যবস্থাকে ড. ইউনুস ঠিক করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তবে আমি আশা করছি, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী এই সরকার ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচন দিবেন। ড. ইউনুস বলেছেন নির্বাচন ডিসেম্বর না হলেও জুনের মধ্যে হবে। এই কথাটাই সবাইকে একটা বিব্রত অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।' 

বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে দেশ একটা অবস্থায় এসেছে: নির্বাচন না সংস্কার। নির্বাচনের বিকল্প অন্য কোনো কিছু হতে পারে না। দেশের জনগণ ও নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন আমরা সেই সংস্কারটুকু চাই।'

মির্জা আব্বাস বলেন, 'কয়েকটা দল বলা শুরু করেছে এইটা না হলে নির্বাচন হবে না, ওইটা না হলে নির্বাচন হবে না। যদি এগুলো বলতে থাকে তাহলে নির্বাচন কেমনে হবে! কেউ কেউ আবার বলেই ফেলেছেন যে, আমরা নির্বাচনে যাব না। কয়েকদিন আগে হলে আপনারা নির্বাচনে গেলেই কি আর না গেলেই কি! আপনাদেরকে বাংলাদেশে কে চিনত? এখন ধমক দেন আপনারা নির্বাচনে যাবেন না। এগুলো করে কোনো লাভ নেই।' 

বিদেশে বসে ব্লগাররা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়িয়ে বিদেশে বসে অপপ্রচার চালাচ্ছে ব্লগাররা। এরা দেশের শত্রু, জাতির শত্রু। সবার কথা বলার অধিকার আছে। সত্যি কথা বলেন। মিথ্যা কথা বলে কারো চরিত্রহনন করবেন না। এখন তো দেশ স্বাধীন। দেশে এসে দেশ গঠনে কাজ করুন।’

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, 'কয়েকদিন আগে শফিউর রহমান নামে একজন লোক নিয়োগ হয়েছে। এ তো আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট। আরও আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট কিন্তু আপনার ডানে বামে আছে। সচিবালয়ের চারজন সচিব, এর বাইরে আরেকজন সচিব মর্যাদায় রয়েছে- এই পাঁচজন এবং আপনার উপদেষ্টা পরিষদের কিছু লোক আপনাকে সঠিক রাস্তায় চলতে দেবে না। আপনার সারা জীবনের অর্জন কিন্তু এরা শেষ করে দেবে। আমরা আপনার সম্মান রক্ষা করে দেশটাকে সুন্দর করতে চাই। আপনি সফল হলে দেশটা ভালো হবে। আপনার সফলতার উপর নির্ভর করছে আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব।' 

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।

শফিকুল/মেহেদী/

ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হবে: রুমিন

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৯ পিএম
ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হবে: রুমিন
রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ ও জনসম্পৃক্তি কর্মশালায় কথা বলছেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হবে। তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়া যাবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের লড়াইয়ের মাটি কিন্তু কঠিন এবং আগের চেয়ে অনেক বিপদসংকুল।’

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ ও জনসম্পৃক্তি কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।

কর্মশালায় রুমিন বিএনপি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রত্যেককেই তাদের এলাকায় বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। আপনারাই তো বিএনপির প্রতিচ্ছবি, তাই আপনারা এমনভাবে চলুন যেন মানুষ বিএনপিকে আরও ভালোবাসে, আপনাদের দেখে তারা উদ্বুদ্ধ হয় এবং বিএনপির হাতকে শক্তিশালী করে।’

নতুন ধারার রাজনীতি নিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, ‘নতুন ধারা রাজনীতি কেমন যে, দল গঠনের আগে কোটি টাকার সরকারি গাড়ি ব্যবহার করা হয়? নতুন দল? নতুন সংস্কার? এমন রাজনীতি কীভাবে চলতে পারে যেখানে একেকজনের গাড়ি বহরে ১৫৫ থেকে ১৬০টি গাড়ি থাকে?’

তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এই টাকা আসে কোথা থেকে?’

আওয়ামী লীগকে নিয়ে রুমিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাদের মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কারণেই তারা রাজনীতিতে আসতে পেরেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি কখনও কারচুপি নির্বাচন করে না এবং ভবিষ্যতেও বিএনপি কারচুপি নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায় না।’

বিএনপির এই নেত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি নিজের ভুল স্বীকার করতে জানে এবং নিজের সমালোচনা নিজেরাই করতে চিন্তা করে। এটাই বিএনপির বাইরের এবং ভেতরের গণতন্ত্রের সৌন্দর্য, এবং এটি আমাদের শক্তি।’

তিনি নতুন বাংলাদেশ এবং সংস্কারের প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিভিন্ন দল এসব কথায় কথায় ব্যবহার করলেও, এসবের জনক এবং স্বপ্নদ্রষ্টা বিএনপি ও তারেক রহমান।’

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন পুতুল, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু প্রমুখ।

সেলিম/তাওফিক/ 

আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে: রিজভী

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৭ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম
আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে: রিজভী
ছবি: খবরের কাগজ

আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সমাজের বিভিন্ন স্তরে গোপনে অবস্থান করছে। তাদের হাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে, যা দিয়ে তারা পেট্রোল বোমা কিনে ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া এবং মানুষ হত্যা করার মতো ভয়ংকর কর্মকাণ্ড চালাতে সক্ষম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ঘর পরিদর্শন শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।  

তিনি বলেন, এই অস্ত্র ও অর্থ তারা কোথা থেকে পাচ্ছে, কারা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে- তা সরকার ও প্রশাসনের জানার কথা। তাদের অনেকেই পার্শ্ববর্তী দেশ বা অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে। কিন্তু দেশে তারা কোথায় লুকিয়ে আছে, তা খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব।'

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসীদের দমন করতে আপনাদের নতুন কোনো আইন প্রণয়ন করতে হবে কি না, তা জনগণের কাছে পরিষ্কার করুন। যদি সরকার এ বিষয়ে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা জনগণের চোখে একটি ব্যর্থ সরকারে পরিণত হবে।

রিজভী বলেন, 'ফ্যাসিস্ট শক্তি মানবেন্দ্র ঘোষকে কিনতে পারেনি বলেই তাকে টার্গেট করেছে। মানবেন্দ্র ঘোষ ছিলেন পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপনের মতো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিবেদিতপ্রাণ। তার প্রতিভা ও অটল মনোভাব ফ্যাসিস্টদের আতঙ্কিত করেছিল। তাই তারা তার শিল্পকর্ম পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে।'

রিজভী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি এসব দমন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণ আবারও রুখে দাঁড়াবে। জনগণ প্রস্তুতি নেবে প্রতিরোধ গড়ার। কারণ সরকারের দায়িত্বই হলো দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।'

তিনি আরও বলেন, আজ আট মাস পেরিয়ে গেছে, তারপরও তারা কীভাবে উঁকি দেয়, কীভাবে গ্রামে ঢুকে এতটা ভয়ংকর আক্রমণ চালিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিতে পারে? তা আমার মাথায় আসে না।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই বর্বর ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এই দায় এড়ানোর সুযোগ সরকারের নেই।

রিজভী বলেন, 'আপনারা যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, সেটি কোন আইনের বলে? সাংবিধানিকভাবে এর কোনও ভিত্তি নেই। সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদেরকে সমর্থন দিয়েছেন বলেই আজ আপনারা এখানে অবস্থান করছেন।'

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগকে নিয়ে কী করবেন, তা নিয়ে আপনাদের উপদেষ্টারা নানাভাবে মত প্রকাশ করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কি করবে না, সেটা আইন ও আদালতের বিষয় বলছেন। তবে এখন আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হবে, তারা কীভাবে রাজনীতি করবে? সে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এখন আপনাদের হাতে। কারণ প্রশাসন আজ আপনাদের নিয়ন্ত্রণে। যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভেতর কোথায় লুকিয়ে আছে অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে।'

বিএনপির এ সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, 'এই সরকার নির্বাচন নিয়ে কী ধরনের তালবাহানা করছে, তা দেশবাসী স্পষ্টভাবে দেখছে। অথচ এ সরকারই গণতন্ত্র সংগ্রামের ফসল। তাদের প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা থাকা উচিত। জনগণের কাছে সরকারকে জবাব দিতে হবে। মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে আগুন লাগলো কীভাবে? তিনি তো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিজের চিত্রকর্ম ও শৈল্পিক চেতনার মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন।'

পরিদর্শন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মানবেন্দ্র ঘোষের পরিবারকে এক লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানম রিতা সহ কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

আসাদ/মেহেদী

সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৩ পিএম
সোনারগাঁয়ে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান ভূইয়ার বিরুদ্ধে অসহায় পরিবারের কৃষি জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে উদ্ভবগঞ্জ এলাকায় একটি সাংবাদিক সংগঠনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী ফায়েজা বেগম ও ওসমানউদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফায়েজা বেগমের ছেলে আবুল কাশেম শিকদার ও নাতি জাহিদ শিকদার।

লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ফায়েজ বেগম দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাদিপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. শাহাজাহান ভূইয়া তাদের সঙ্গে আতাঁত করে ব্যবসা বাণিজ্যসহ এলাকায় ভূমি দস্যুতা করে গেছেন। বর্তমানে শেখ হাসিনা পালানোর পর বিএনপির পদ ব্যবহার করে এলাকার নিরীহ মানুষের জমি দখল, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রনসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। তার ১৮ শতাংশ জমিতে ফসলসহ জোরপূর্বক ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করে দখলে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৪২ বছর এ জমি ক্রয় করে ভোগ দখলে রয়েছেন তারা। হঠাৰ বিএনপি আসার পর ওই জমি নিজের দাবি করে জোরপূর্বক দখলে নিয়ে নেন। এ নিয়ে আদালতে মামলাও রয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী ওসমানউদ্দীন জানান, তার বাড়িসহ ওই এলাকার আব্দুল করিম মাস্টারের বাড়ি দখল ও ভাঙচুর করে জোরপূর্বক দখল করে বিএনপি নেতা মো. শাহাজাহান ভূঁইয়া। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি। তাকে দখলদারিত্বে বাঁধা দিলে দোনলা বন্দুক দিয়ে হত্যার ভয় দেখায়। এ ছাড়াও তার নেতা-কর্মী ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে ভূমিদস্যু বিএনপি নেতা শাহাজাহানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন ভুক্তভোগী দুই পরিবার।

মো. শাহজাহান ভূইয়া বলেন, আদালতের রায় পেয়ে আমি জমি দখলে নিয়েছি। আদালত রায়ের মাধ্যমে তাদেরকে জমিতে যাওয়ার জন্য নিষেধ করেছেন। তবে কাউকে হুমকি দেইনি। অন্য অভিযোগকারীদের আমি চিনিনা।

ইমরান/মেহেদী/