ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে: আমীর খসরু

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে: আমীর খসরু
ছবি: খবরের কাগজ

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে দেশ সঠিক পথে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, 'সবাই ধরেই নিয়েছে ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে অনেকে বলছে, ডিসেম্বর অনেক দেরিতে। কিন্তু তার পরও ডিসেম্বর 'কাট অফ টাইম' হিসেবে ধরে নিয়েছে সবাই। সবার ধারণা, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে আমরা সঠিক পথে থাকব। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা ১৭ বছর সংগ্রাম করেছি। সেটা ফিরিয়ে দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম নির্বাচন।'

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

বেলা ১১টার দিকে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটি ও চেয়ারপারসনের  ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু বলেন, 'বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, সামাজিক, বৈদেশিক সম্পর্কের অবস্থান নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। রাজনীতির ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন এবং সংস্কার কমিশনগুলোর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে, এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। সংস্কারের যে বিষয়গুলোয় ঐকমত্য হবে, সে বিষয়গুলো এগিয়ে নিয়ে যাব। যে বিষয়গুলোয় ঐকমত্য হবে না সেখানে সাংবিধানীয় হোক, নির্বাচনী হোক বা অন্য যেকোনো বিষয় হোক- সেটা আগামী নির্বাচনে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার। তারা জনগণের কাছে উপস্থাপন করবে, জনগণের মতামত নিয়ে এসে সংসদে আলোচনা হবে, তর্ক হবে, বিতর্ক হবে- তার পর সংসদে পাস হবে। বৈঠকে আলোচনাটা এইভাবেই হয়েছে।'

তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে সবাই ভাবছে যে নির্বাচন কবে হবে, কবে দেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসবে। দেশে একটি সরকার আছে কিন্তু এখনো গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসেনি। সেটা না এলে, জনগণ সমর্থিত একটা সরকার ব্যতীত কোনো অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, পুলিশ সাপোর্ট দিয়ে সেটা দাঁড়াতে পারবে না। সেটা আমরা লক্ষ করছি। জনগণের সমর্থিত সরকার, সংসদ- যা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করতে পারলে অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হবে। অনেকগুলো সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এগুলো একটা পলিটিকাল উইং ছাড়া সমাধান করা কঠিন। এ জন্য আলোচনায় এ বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।'

ইইউতে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আগামী দিনের ইইউর সঙ্গে আমাদের কর্মপন্থা কী হবে তা আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে নির্বাচন ঘিরে, সংস্কার ঘিরে ইইউ সহযোগিতা করতে রাজি আছে। বিশেষ করে ইলেকট্রো প্রসেস থেকে শুরু করে যে প্রাতিষ্ঠান ভেঙে পড়েছে তা সংস্কার, পরিবর্তন, এগুলো সঠিক জায়গায় ফিরে আনার জন্য তারা এগিয়ে আসতে রাজি আছে।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচন আগে-পরের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে বিষয়গুলো আমরা ঐকমত্য হব, সেই বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। বিভিন্ন পার্টির বিভিন্ন চিন্তা, বিভিন্ন দর্শন রয়েছে। সবাই যদি মনে করে সব বিষয়ে সবাই ঐকমত্য হবে, তা হলে এত রাজনৈতিক দলের দরকার নাই। বাকশাল নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু আমরা তো আবার বাকশালেও ফিরে যেতে চাই না। যেখানে ঐকমত্য হবে, সে বিষয়গুলো সমাধান করতে পারব ইমিডিয়েটলি। আর যেখানে ঐকমত্য হবে না সেটা আগামী দিনে নির্বাচনে প্রত্যেকটি দল তাদের মেন্ডেট নিয়ে, মেনুফেস্টো নিয়ে, চিন্তা নিয়ে জনগণের কাছে যাবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যে সংসদ হবে সেখানে বাস্তবায়ন করবে।' 

শফিকুল/মেহেদী/

গাজীপুরে বিএনপি নেতার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫১ এএম
গাজীপুরে বিএনপি নেতার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনিরের কয়েকটি অশ্লীল ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি প্রকাশ হওয়ার পর গাজীপুরে হৈচৈ পড়ে গেছে। এ নিয়ে সচেতন মহলে সমালোচনা এবং নিন্দার ঝড় উঠেছে।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের লিড নিউজে ছাপা হওয়া 'ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজছে বিএনপি' নিউজের কাটিংয়ের সঙ্গে মনিরুল ইসলাম মনির নিজের ছবি জুড়ে দিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। এখন তার অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেলে অনেকেই ব্যঙ্গ করে দুটি ছবি শেয়ার করে বলছেন এই হলো বাসন থানা বিএনপি নেতার ক্লিন ইমেজের নমুনা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওগুলোতে তাকে বস্ত্রহীন এবং আপত্তিকর অবস্থায় দেখা গেছে।

এ দিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সুপার এডিট করা দাবি করে মনিরুল ইসলাম মনির জানান, 'ভিডিওটি তিনি দেখেছেন কিন্তু এগুলো কীভাবে তার হতে পারে তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এমন ভিডিও তার বলে মনে পড়ে না। তার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন।'

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার বলেন, 'ভিডিওটি আমি কিছুক্ষণ আগে দেখেছি। থানা বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থেকে এমন কাজে জড়িত হতে পারে বিষয়টি আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। কি বলব আমি খুবই লজ্জিত। আশা করি দলের হাইকমান্ড বিষয়টি দেখবেন। তারা যে নির্দেশনা দিবে আমরাও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।'

পলাশ/মেহেদী/

মৌলিক সংস্কার ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে কি না, তা বিবেচনার বিষয়: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম
মৌলিক সংস্কার ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে কি না, তা বিবেচনার বিষয়: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

মৌলিক রাষ্ট্রীয় সংস্কার ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে না জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে জানিয়েছি, ন্যূনতম সংস্কার নয়, বরং আমরা চাই রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার। এই পরিবর্তনগুলো ছাড়া অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে এনসিপি অংশ নেবে কি না, তা এখনো বিবেচনার বিষয়।’

তিনি জানান, ‘সংস্কার কমিশনে জমা দেওয়া দলটির প্রস্তাবনাগুলোর বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমাদের তিনটি প্রধান দাবি সংস্কার, বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচন। এগুলো বাস্তবায়ন ছাড়া একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

এ সময় বর্তমান প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এনসিপির আহ্বায়ক। নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। মাঠ প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থানে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করা হলেও তারা নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছেন। অনেক জায়গায় প্রশাসন বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে এবং চাঁদাবাজির ঘটনায়ও তারা নীরব দর্শক। এ ধরনের প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। তিনি বলেন, ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হলে নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র ও পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এসব বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরেছি।’

নির্বাচনের তারিখ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের দেওয়া টাইমলাইন ডিসেম্বর থেকে জুনের বিষয়টিতে আমাদের সমর্থন রয়েছে বলে তাদের অবহিত করেছি। তবে সংস্কার ও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচন নিয়ে আমরা কথা বলতে চাই না।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। তবে দলটির বিচারের আগে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার বিষয়ে আগের অবস্থানেই আছে জাতীয় নাগরিক পার্টি।

তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রতিনিধিদল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা আমাদের বিষয়গুলো তুলে ধরেছি।’

মার্কিন ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে এ সাক্ষাতে নাহিদসহ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) চার সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। অন্যরা হলেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা।

এনসিপি নেতারা বিশৃঙ্খলা করে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে: ছাত্রদল

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম
এনসিপি নেতারা বিশৃঙ্খলা করে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে: ছাত্রদল
মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে প্রতিবাদ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এনসিপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ছাত্রদলের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর রূপনগরে প্রেম সংঘটিত ঘটনাকে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ফায়দা হাসিলের জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা বিএনপির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছে ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদল। তাদের অভিযোগ, রূপনগরের ছোট্ট একটি ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে নিয়ে এনসিপি রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। তাদের এ অপচেষ্টা জনগণ কখনও সফল হতে দেবে না। 

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বরে একটি প্রতিবাদ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এই অভিযোগ করেন ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদল।  

প্রতিবাদ মানববন্ধনে মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, এনসিপিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। পাশাপাশি গত সোমবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর রূপনগরে প্রেম সংক্রান্ত ঝামেলা নিয়ে এনসিপি নেতারা বিশৃঙ্খলা ও হামলা করে তারা বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করছে। বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। 

এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে ছাত্রদল নেতারা বলেন, আপনারা যেটা সঠিক সেটা বলুন। বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার করে লাভ হবে না। বিএনপি গণমানুষের জনপ্রিয় একটি রাজনৈতিক দল। 

এসময় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রদল নেতাদের হাতে ‘ছাত্রলীগের পুনর্বাসন করছে এনসিপি’ এমন একাধিক ব্যানার-ফেস্টুন দেখা গেছে। এছাড়াও এনসিপি নেতারা যে ছাত্রলীগের পদধারী ছিল তার সব তথ্য উপাত্ত ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের হাতে ছিল বলে দাবি করা হয়।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের সভাপতি মো. রবিন খান, সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ, সহ-সভাপতি মো. কাওসার খান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জিন্নাহ, যুগ্ম সম্পাদক শাহরিয়ার মাহমুদ রাফি, জাকারিয়া খান সিজার, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন সোহেল, দপ্তর সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. কাওসার খান প্রমুখ। 

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপির চিঠি আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্রকে ‘ভ্রান্ত ও কূটতর্ক’ বললেন মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্রকে ‘ভ্রান্ত ও কূটতর্ক’ বললেন মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিগত সরকার পতনের পর এখনো কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ‘আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র’ বক্তব্যকে ‌‘ভ্রান্ত এবং কূটতর্ক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দলের পক্ষ থেকে দেওয়া এক চিঠিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট পতিত সরকারের মতো ‘আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র’ যেমন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের অপকৌশল ছিল, এখনো কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ‘আগে সংস্কার পরে গণতন্ত্র’ তেমনি ‘ভ্রান্ত ও কূটতর্ক’। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার মাধ্যমেই সবার জন্য উন্নয়ন সম্ভব এবং এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন, নীতি, বিধানের সংস্কার অপরিহার্য। এর সব কটি পরস্পরের পরিপূরক, কোনোটাই কোনোটার বিকল্প নয়, পরস্পর সাংঘর্ষিকও নয়।

চিঠিতে ফখরুল বলেন, ‘যেকোনো রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী ও তার সরকারের বক্তব্য ও মতামতের সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি এর কিছু ব্যতিক্রম আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা আপনাকে (ইউনূস) সমর্থন জানিয়েছি এবং আপনার ওপরই আস্থা রাখতে চাই। কিন্তু আপনার সরকারের কিছু ব্যক্তি এবং আপনাকে সমর্থনকারী বলে দাবিদার কিছু ব্যক্তি ও সংগঠনের প্রকাশ্য বক্তব্য ও অবস্থান জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আশা করি আপনি এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’

তিনি বলেন, “যারা সংস্কারের কথা বেশি বেশি বলছে এবং বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের শক্তি বলে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা করছে তাদের বিএনপির ‌‘ভিশন-২০৩০’ এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচিতে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করা হয়েছে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

নির্বাচনের গুরুত্ব দিয়ে চিঠিতে ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশের জনগণকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার যে মহান দায়িত্ব আপনার ওপর অর্পিত হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব আপনি তা পালন করবেন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যেসব আইন, বিধিবিধান সংস্কারে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব পরিবর্তন জরুরি তা সম্পন্ন করার মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্ভব বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে ইতোপূর্বে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রদত্ত আপনারই আশ্বাস অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আপনার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা এনআইডি প্রকল্প নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার এবং নির্বাচনি এলাকা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আইনি জটিলতা দ্রত নিরসনেরও প্রস্তাব করছি।’

৩১ দফার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে ফখরুল বলেন, বিএনপি বলেছে এসব প্রস্তাবের চেয়ে ভালো কোনো প্রস্তাব কেউ দিলে জনস্বার্থে তা সাদরে গ্রহণ করা হবে। অর্থাৎ সংস্কারের চলমান প্রক্রিয়া বিএনপির ঘোষণারই অংশ। বিএনপি মনে করে, সব পরিবর্তনই সংস্কার নয়। সংস্কারের উদ্দেশ্য ইতিবাচক ও গঠনমূলক পরিবর্তন। এ ব্যাপারে বিএনপি সব প্রস্তাব নিয়েই যুক্তিসংগত আলোচনাকে স্বাগত জানায়। কিন্তু দল কিংবা গোষ্ঠীস্বার্থে এবং রাজনীতি কিংবা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে হেয় ও অপ্রাসঙ্গিক করার অপচেষ্টায় অযথা সময়ক্ষেপণ করে জনগণকে তাদের ভোটাধিকার তথা রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠার অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কৌশলকে বিএনপি সমর্থন করে না। দেশ ও জনগণের স্বার্থে জনগণের সম্মতি নিয়ে ৩১ দফায় বর্ণিত সব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি সবার সহায়তা প্রত্যাশা করে।

জনগণের প্রত্যাশা তুলে ধরে চিঠিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ফ্যাসিস্ট দল, তাদের দলীয় সরকার ও তাদের দোসরদের আইনের আওতায় এনে তাদের গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা এবং দুর্নীতি-অনাচারের মাধ্যমে দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বিচার ও পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধার করতে হবে। এ ছাড়া ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতে নিহতদের পরিবার ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং দ্রব্যমূল্য ও আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পতিত সরকারের সব অপচক্র ও সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হবে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্র ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যাতে তারা সম্মিলিতভাবে দেশে সুষ্ঠু রাজনীতি, উন্নত অর্থনীতি এবং জনগণের মানবিক অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে পারে।

একই সঙ্গে পতিত ফ্যাসিস্ট দল ও সেই দলীয় সরকারের সঙ্গে যারাই যুক্ত ছিল তাদের বিচার দ্রুত করে রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহতদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার অধিকতর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।’ তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে এক-এগারোর অবৈধ সরকার এবং পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দায়ের করা সব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করছি।’

ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দ্বারা বৈষম্যের শিকার ও পদোন্নতিবঞ্চিত প্রশাসন ক্যাডারের ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে সচিবসহ বিভিন্ন পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হলেও তাদের একজনকেও এখন পর্যন্ত পদায়ন না করে পতিত সরকারের অপশাসনের দোসর ও সুবিধাভোগীদের দিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করার ফলে সরকারের কার্যক্রম ও উন্নয়ন প্রয়াস ব্যাহত হচ্ছে। অন্যান্য ক্যাডারে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি ও পদায়ন নিশ্চিত করা যৌক্তিক বিধায় তা দ্রুত সম্পন্ন করা জরুরি। 

আগামী রমজানের আগেই সংসদ নির্বাচন চায় জামায়াত

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
আগামী রমজানের আগেই সংসদ নির্বাচন চায় জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আগামী রমজানের আগেই সংসদ নির্বাচন চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘আগামী বছরের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করলে বর্ষা, ঝড়ঝাপ্টা, বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসবে, তখন নির্বাচন না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। তাই আমরা চাচ্ছি, আগামী রমজানের আগে নির্বাচনটা হয়ে যাক।’

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর গুলশানে মার্কিন ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

জামায়াতের আমির বলেন, ‘তারা জানতে চেয়েছে আমরা কখন নির্বাচন চাচ্ছি, সবগুলো দল রিফর্ম চাচ্ছে, সেই রিফর্ম কেমন হতে পারে এবং আমরা কী চাচ্ছি। আমরা বলেছি, প্রধান উপদেষ্টা এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন দিতে চেয়েছেন। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কমিটমেন্ট ঠিক আছে কি না দেখতে চাই।’

বৈঠক প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা যদি আগামীতে দেশের দায়িত্ব পাই, তাহলে ইকোনমিক পলিসি ও ফরেন পলিসি কী হবে, সেটা জানতে চেয়েছে। রিজিয়নের বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছি। তারা মাইনরিটি, উইমেন রাইটস, লেবার রাইটস নিয়ে কথা বলেছে।’

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা তাদের অনুরোধ করেছি, আমাদের দেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে ৩৭ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করেছে, সেটা যেন তারা পুনর্বিবেচনা করে। আমরা আশা করি তারা এটুকু সহযোগিতা আমাদের করবেন।’

আওয়ামী লীগের বিচার প্রসঙ্গে বৈঠকে কথা হয়েছে জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘জাতি ট্রমাটাইজড! এখনো হাসপাতালে অনেক আহত-পঙ্গুত্ববরণকারীরা পড়ে আছেন। এখনো শহিদদের মা-সন্তান-স্ত্রীরা কান্না করছেন। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগের বিচার অবশ্যই হতে হবে। তবে আমরা সঠিক বিচার ও শাস্তি চাই।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন এবং আমিরে জামায়াতের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান।