
চাঁদাবাজি, মনোনয়ন বাণিজ্য ও দলীয় ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন জি এম কাদের।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহুম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে এক আয়োজনে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কাকরাইলের অনুষ্ঠানে জি এম কাদেরকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সরকারের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে আমি কথা বলছি। তাই আজ আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০১৮ সালের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তখন আমাদের নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় পার্টির রাজনীতি ও নীতি নির্ধারণী বিষয় সিদ্ধান্ত নিতেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তখন নাকি আমি দুর্নীতি করেছি। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
পদবাণিজ্য ও এমপি থাকাকালীন নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, আমি এমপি থাকা অবস্থায় গম ও বিভিন্ন যে সহায়তা দেওয়ার যে বিধান রয়েছে তাতে স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই বা ছিল না।
জি এম কাদের বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও দায়ের করা মামলাগুলো জনগণ মেনে নেবে না। তিনি আইনি পথে মামলা মোকাবেলা করবেন বলে জানান সভায়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের পতন থেকে বর্তমান সরকারও শিক্ষা নিচ্ছে না। এই দিন না আরও দিন আছে, এই দিনেরে নিয়ে যাব সেই দিনেরও কাছে।’
সরকারের সমালোচনায় জি এম কাদের বলেন, দুঃখের বিষয় হচ্ছে জুলাই আন্দোলনে জয়লাভের পর মুষ্টিমেয় মানুষ এই জয়ের কৃতিত্বের দাবিদার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল তা ধুলিস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে। নব্য ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমেরিকার সরকার থেকে যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ দুর্দিন আসতে পারে। আমাদের রপ্তানি বন্ধ হয়ে আয় ইনকাম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমরা চাল উৎপাদনেও স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়, সবকিছুই কিনতে হয়। তাই, রপ্তানিক আয় ও রেমিটেন্স বন্ধ হলে দেশে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। জঙ্গী ইস্যুতে আমেরিকা চাপ দিলে মধ্যপ্রাচ্য থেকেও আমাদের প্রবাসী আয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এর জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, আলমগীর সিকদার লোটন, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, মনিরুল ইসলাম মিলনসহ আরও অনেকে।
জয়ন্ত সাহা/মাহফুজ