ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭:০৩ পিএম
নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে যতটুকু সংস্কার করা দরকার, ততটুকু সংস্কার করে নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আবেগেরর মধ্য দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমাদেরকে বাস্তববাদী চিন্তা করে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে। পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্যই আমাদের সবাইকে ওই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় ১৫ বছর পরে একটা মুক্ত পরিবেশে, ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে আমরা এই ইফতার মাহফিলে আয়োজন করতে পেরেছি। একটু ভারাক্রান্ত এ জন্য আজকে দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের মধ্যে উপস্থিত থাকাটা অত্যন্ত প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু আপনারা জানেন, আমাদের নেত্রী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে আছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও আছেন। তিনি এখনো বিভিন্ন মামলার সমস্যার কারণে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থাতেই আছেন। শিগগিরই দেশে ফিরে আসতে পারছেন না। 

তিনি বলেন, এখানে যারা উপস্থিত আছেন, আপনারা সবাই দেশের অত্যন্ত উচ্চ শিক্ষিত এবং জাতির বিবেক। আপনারাই দেশের মত-অভিমতকে প্রভাবিত করেন। আমরা আজকে একটা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। ভয়াবহ একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদেরকে পরাজিত করে, বিতাড়িত করে আজকে একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এবং একটা নতুন গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট এবং সরকার গঠিত হবে সে প্রত্যাশা বাংলাদেশের জনগণ অপেক্ষায়।

পেশাজীবীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করছি, যারা বিভিন্ন পেশাতে আছি, তারা যারা বিভিন্নভাবে সরকার অথবা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, তারা সবাই আমরা এমনভাবে কথা বলব ও কাজ করব যাতে আমাদের এই গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে আরও সুগম করে। আপনারা সবাই জানেন যে, আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে, সেই কারণেই প্রায় দুই বছর আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সংস্কার ও দেশ পরিবর্তনের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বতী সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের যে প্রস্তাব সে প্রস্তাবগুলোকে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমাদের মতামতগুলো সেইভাবে প্রদান করছি। সবাইকে আবার অনুরোধ করব, আপনার সবাই অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে সতর্কতার সঙ্গে আপনাদের ভূমিকা পালন করবেন। বিশেষ করে বিএনপির সঙ্গে যারা আমরা জড়িত আছি, তারা যেন আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ না নিই, যে পদক্ষেপ আমাদেরকে কোনো ভুল পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

ইফতার মাহফিলে যোগ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারপারসন শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ।

পেশাজীবীদের মধ্যে অংশ নেন, যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক এম আজিজ, আবদাল আহমেদ, নূরুদ্দিন আহমেদ, চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

মুসলিম নিধনে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩১ পিএম
মুসলিম নিধনে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক
ভারতের সংসদে সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল-২০২৫ বাতিল এবং চলমান মুসলিম নিধন বন্ধের দাবি’তে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যেকোনো কর্মসূচি গ্রহণ করুন। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন। বাংলাদেশের মুসলিমরা আপনাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে। বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল বাতিল ও মুসলিম নিধন বন্ধ না করলে প্রয়োজনে আমরা ভারত অভিমুখে লংমার্চ ঘোষণা করব।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘ভারতের সংসদে সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল-২০২৫ বাতিল এবং চলমান মুসলিম নিধন বন্ধের দাবি’তে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। পরে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়।

মামুনুল হক বলেন, সারা পৃথিবীতে আজ দু'টি জনপদ সবচেয়ে বেশী সমালোচিত। একটি গাজা ভুখন্ড-যেখানে বর্বর ইসরাইলের গণহত্যা চলছে। আরেকটি হল ত্রিশ কোটি মুসলমানের ভারত। সেখানে মোদী সরকার ভারতকে মুসলিম শূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভারত সরকার মুসলিমবিরোধী নীতি অব্যাহত রাখলে উপমহাদেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, ভারতের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সব পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

অন্তর্বর্তী সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনে যারা আছেন, তাদের পরিচয় নিয়ে আমরা সন্দিহান। সরকার ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিলে এক দিনের জন্যও তারা ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না। অবিলম্বে এই কমিশন বাতিল করে গণমানুষের পক্ষে অবস্থান নিন।’

ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। সেখান থেকে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বারিধারাস্থ ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে পাঁচ দফা সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। এতে বলা হয়, ওয়াকফ সংশোধনী বিল অবিলম্বে বাতিল, মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত, মসজিদ, মাদরাসা ও ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর পদক্ষেপ, মুসলিমবিরোধী বৈষম্যমূলক আইনসমূহ বাতিল এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, নায়েবে আমির মাওলানা শাহীনুর পাশা, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী ও ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি জাহিদুজ্জামান, খেলাফত শ্রমিক মজলিসের সদস্যসচিব আবু সাইদ নোমান, ছাত্র মজলিসের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রাজি, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ছানাউল্লাহ আমিনি প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল
বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মশাল মিছিল করে এনসিপি। ছবি: খবরের কাগজ

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মশাল মিছিল ও বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় মিছিল-সমাবেশ করে দলটি।

মশাল মিছিলপূর্ব সমাবেশে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই মাসে আপনারা (পুলিশ সদস্যরা) আওয়ামী লীগের ফাঁদে পড়ে গণহত্যায় অংশ নিয়েছেন। এই পাপ মোচনের একটাই রাস্তা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেন। ঢাকা শহরের যেখানে যেখানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা জড়ো হচ্ছেন, তাদের গ্রেপ্তার করেন। এটাই একমাত্র রাস্তা। এটা যদি নিষ্ঠার সঙ্গে করেন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা আপনাদের বুকে টেনে নেবে। যদি আপনাদের নাকের ডগা দিয়ে আওয়ামী লীগ মিছিল করতে পারে, তা হলে আমরা ধরে নেব আপনারা প্রশ্রয় দিচ্ছেন। আপনাদের পরিষ্কার করতে হবে, আপনারা আওয়ামী লীগকে রাস্তায় নামতে দেবেন কি দেবেন না। জাতীয় নাগরিক পার্টি ঢাকা মহানগরের রাজপথে থাকবে, কোন আওয়ামী লীগ আসে আমরা দেখব।’

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, ‘কেউ কেউ আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করতেছেন। ভাবতেছেন জনগণ নাই ফাঁকা মাঠে গোল দেব, আপনাদের বলতে চাই ১৫ বছর গোল দিতে পারেন নাই। এখন আর গোল দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। জনগণ কিন্তু শক্ত ডিফেন্স তৈরি করেছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, কারচুপির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। যারা এলাকায় চাঁদাবাজি করতে চাইবেন আর ঢাকায় বিভিন্ন সেমিনারে সুশীল হয়ে মাঠগরম করবেন এই জিনিস আর হচ্ছে না।’ এ সময় তিনি কুয়েটের ভিসিকে না সরালে কুয়েট অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবেন বলে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দেন। 

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চান কি না আপনাদের স্পষ্ট করতে হবে।

বিকালে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে আয়োজিত সমাবেশে দলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই বাংলাদেশে কীভাবে আমরা নির্বাচনের কথা বলি। ওই খুনি হাসিনার খুনি শব্দটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেওয়ালে লেখা রয়েছে বাংলাদেশে আর স্বৈরাচার চাই না। রক্তের বিনিময়ে যেই স্বৈরাচার হটানো হয়েছে সেই স্বৈরাচার আমরা আর চাই না। এই স্বৈরাচার কখনো একা হয়ে উঠতে পারে না, হাসিনা কখনো একা খুনি হতে পারে না। যারা এই হাসিনাকে খুনি হাসিনা হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে তাদের বিচার ব্যতীত এই বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনের আলাপ করা যেতে পারে না।’

 

সংস্কারের যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত তা প্রকাশের দাবি বিএনপির

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
সংস্কারের যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত তা প্রকাশের দাবি বিএনপির
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলো কোথায় ঐকমত্য পোষণ করেছে তা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নতুনভাবে ঐকমত্যের কোনো প্রয়োজন নেই। ঐকমত্য প্রয়োজন সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সংস্কারের বিষয়ে প্রত্যেকটি দল কমিশনে যে প্রস্তাব জমা দিয়েছে, তার মধ্যে যেসব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে সেগুলো জাতিকে জানানো। কেন জানাচ্ছেন না? যে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা জাতিকে জানিয়ে সনদে সই করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো কাজ নেই।’

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। পরে সন্ধ্যায় গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।

সংস্কার মানা না মানা নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি সংস্কার চায় না- একটি গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এগুলো জলঘোলা ছাড়া কিছুই না। আপনাদের (সরকার) দায়িত্ব হচ্ছে কারা কোথায় কোথায় একমত হয়েছে তা জাতিকে জানানো। এ জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার দরকার নেই।’

বৈঠক শেষে এনডিএমের চেয়ারম‌্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্য সবদলের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সনদ তৈরি করতে হবে। এই সনদ তৈরির জন্য ৩০ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন নেই। সনদ তৈরি হয়ে গেলে নির্বাচনে কোনো ধরনের বিলম্ব হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ সবাই চাই দ্রুত একটি নির্বাচন হয়ে যাক।’

বিএনপির পক্ষে থেকে দুটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। অপরদিকে, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়। এনডিএমের বৈঠক শেষে গণফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে।

শফিকুল ইসলাম/এমএ/

স্বৈরাচারের নির্যাতনের প্রতিশোধ হবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে: তারেক রহমান

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২২ পিএম
স্বৈরাচারের নির্যাতনের প্রতিশোধ হবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে: তারেক রহমান
রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মশালায় ভার্চুয়্যালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা স্বৈরাচারের অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমার ওপর যে জুলুম হয়েছে, অত্যাচার হয়েছে আমার মায়ের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, যে জেল জুলুম হয়েছে, আমার ভাইকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ ও জনসম্পৃক্তি রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মশালায় ভার্চুয়্যালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন দায়িত্ব পালন করেছেন তখন গুরুত্ব দিয়েছেন কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের সমস্যা, নিরাপত্তার সমস্যা, যাতায়াতের সমস্যা, খাদ্যের সমস্যা, কীভাবে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায় এসব ব্যাপারে তারা জোর দিয়েছেন। বিএনপির সময় নারীদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইন ব্যবস্থাকে স্বাধীন করা হয়েছে। যে ব্যবস্থাগুলো প্রতিদিন মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত সেগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ এবং দেশের মানুষ। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও আলোচনা করেছি। নিশ্চয়ই এগুলোই  দেশের মানুষের চাওয়া।

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি এখানে অনেক আলোচনা করেছেন গ্রামে ফিরে গেলে সাধারণ মানুষ জিজ্ঞেস করবে কী বাহে কী আলোচনা করলেন। তোমাদেরকে যদি ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে দেই তোমরা আমাদের জন্য কী করবে এমন কথা বলবে। আপনাদের বিএনপির এই মিটিংয়ে কী আলোচনা হল এগুলো জিজ্ঞাসা করবে। তাই যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের দরবারে নিয়ে যাই।

তারেক বলেন, আমাদের সেই অদৃশ্য প্রতিপক্ষ আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে সেই সঙ্গে আরও বিভিন্ন প্রতিপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। কাজেই দেশের স্বার্থে আমরা যত বেশিসংখ্যক এই ৩১ দফা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবো এবং আমরা যত বেশি ঐক্যবদ্ধ হবো, যত বেশি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাস করব আমাদের প্রতিপক্ষকে জোরালোভাবে মোকাবেলা করতে পারব। তত রাজনৈতিকভাবে আমরা শক্তিশালী হব।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও  বলেন, আপনার এখানে যতজন আছেন প্রতিজনে একটি করে মিথ্যা মামলা ও জুলুমের শিকার হয়েছে। তাই আমরা জুলুম করে টিকে থাকতে চাই না। ফ্যাসিস্ট সরকার যা করেছে আমরা তা করতে চাই না। এই দলকে অর্থাৎ বিএনপিতে মানুষ আস্থা রাখে। তারা মনে করে দেশের জন্য যদি কিছু করা সম্ভব হয় পারলে বিএনপি পারবে। এই জনগণের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। জনগণের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব একা নিলে হবে না। শহিদ জিয়া, খালেদা জিয়ার আদর্শকে যারা বিশ্বাস করে প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনি ভালো কাজ করতে চাইলে ভালো কাজ করার আগ্রহ থাকলে জনগণ আপনার পক্ষে রায় দেবে। আজকের এই আলোচনা আপনার এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন রাজপথে থেকেছেন, মিছিল মিটিং করেছেন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। এবার আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করি দেশ গঠনের জন্য, ৩১ দফার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করি।

এর আগে নেতা কর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। তিস্তা এই এলাকার ৩ কোটি মানুষ জড়িত। তিস্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এটি নিয়ে রাজনীতি হয়েছে কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি। দেশের স্বার্থ চিন্তা করে বিএনপি এগিয়ে এসেছে। যেভাবে করলে মানুষ উপকৃত হবে সেভাবে করবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল নাটর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন পুতুল, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু প্রমুখ।

সেলিম সরকার/এমএ/

বিএনপি নেতা হাজী জহিরের পিতার জানাজা সম্পন্ন, আমিনুল হকের শোক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম
বিএনপি নেতা হাজী জহিরের পিতার জানাজা সম্পন্ন, আমিনুল হকের শোক
জানাজায় আমিনুল হক। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির তুরাগ থানার যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী জহিরুল ইসলাম জহিরের বাবা আক্কাস আলী মেম্বার বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
 
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাদ জোহর ঢাকা মহানগর উত্তরের তুরাগ থানার কামাড়পাড়া স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে তার নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

জানাজায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক উপস্থিত ছিলেন। মরহুমের নামাজে জানাজা শেষে তুরাগ থানার ৫৪নং ওয়ার্ডে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৯৫ বছর। তিনি ৩ ছেলে ও ১ মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

এছাড়াও জানাজায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব হাজী মো. মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, আফাজ উদ্দিন আফাজ, মাহবুব আলম মন্টু, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য ইব্রাহিম খলিল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেব দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মো. জামির হোসেন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য মো. রাশেদ পাঠানসহ প্রমুখ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

জানাজার পূর্বে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। এতে বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। আমিনুল হক বক্তব্যে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

মাহফুজ/