ঢাকা ১০ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

ফ‍্যাসিবাদীদের বিচার, নিষিদ্ধ ও নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান বিভ্রান্তিকর: এবি পার্টি

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪১ পিএম
ফ‍্যাসিবাদীদের বিচার, নিষিদ্ধ ও নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান বিভ্রান্তিকর: এবি পার্টি
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু । ছবি: সংগৃহীত

আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, গুম, খুন, গণহত্যা, সন্ত্রাসবাদ ও লুটপাটের অভিযোগে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী ফ‍্যাসিবাদীদের বিচার, নিষিদ্ধ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান শুরু থেকেই বিভ্রান্তিকর। এর বাইরে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কিছু নেতার ভূমিকাও বেশ রহস‍্যজনক। তাদের কেউ কেউ একবার বলছেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক তারা চান না। আবার বলছেন, আওয়ামী লীগের নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবেনা। তাদের কারও কারও কাছে এখনই ‘বার বার ফ‍্যাসিবাদ শব্দ শুনতে ভালো লাগেনা’। 

তিনি দূঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে থাকা থকথকে রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি এবং তাদের একজন সাধারণ কর্মীর কণ্ঠেও ভুল স্বীকার বা ক্ষমা চেয়ে অনুতপ্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ নাই। ৬-৭ মাস যেতে না যেতে তাদের হাতে সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত দলের নেতাদের এরকম দ্বিধান্বিত অবস্থান খুবই হতাশাজনক। বিলম্ব না করে জাতিসংঘ কর্তৃক খুন, সন্ত্রাসবাদ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের ব‍্যাপারে একটি ঐকমত‍্যে পৌঁছার জন‍্য মঞ্জু অন্তর্বর্তী সরকারসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান। 

এবি পার্টি সিলেট মহানগর আয়োজিত শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে শুক্রবার (২১ মার্চ) এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ বক্তব্য রাখেন। 

দলের মহানগর আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে বিকেল ৫টায় নগরীর একটি হোটেলে এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সভা সঞ্চালনা করেন এবি পার্টি সিলেট জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ. সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, দৈনিক জালালাবাদ এর সম্পাদক মুততাবিস উন নুর, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমেদ হেলাল, টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ইমজা এর সেক্রেটারি সাকিব আহমদ মিঠু, বৈষম‍্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু সাঈদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ব‍্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মকছুদ হোসেন, এবি পার্টির মহানগর সদস‍্যসচিব রেজাউল করিম শোয়েব, জেলা সদস‍্যসচিব অ‍্যাডভোকেট হোসাইনুর রহমান লায়েস, যুবনেতা এম তানজিল হোসেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু আরও বলেন, এবারের রমজানে প্রমাণ হয়েছে সরকার যদি প্রশ্রয় না দেয় তাহলে দ্রব‍্যমূল‍্য যারা বাড়ায় তারা জনগণের পকেট কাটতে পারেনা। সরকার আরও আন্তরিক ও সিরিয়াস হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। 

দেশের বাইরে থেকে আওয়ামী লীগের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, দূর্ভাগ‍্যজনকভাবে ভারত সরকার এসব উস্কানিতে অন‍্যতম সহযোগী হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। গত তিনটি ভূয়া ও ডামি নির্বাচনে ভারত সরকার ছিল আওয়ামী লীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। তখন তারা আমাদের জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেনি বরং বলেছে এটা নাকি আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন তারা বলছে বাংলাদেশে এবার তারা একটা ইনক্লুসিভ নির্বাচন চায়। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও বলছে আওয়ামী লীগ অংশ না নিলে নাকি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবেনা। আকারে ইঙ্গিতে আমাদের সেনাপ্রধানও একই কথা বলছেন।

মঞ্জু আরও বলেন, আওয়ামী লীগ অবশ‍্যই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে, তবে তার আগে তারা যাদেরকে নৃশংসভাবে খুন করেছে, সেই হাজার হাজার সন্তানহারা মায়েদের কোলে তাদের সন্তানদের ফিরিয়ে দিতে হবে। যাদেরকে পৈশাচিক নির্যাতন করে পঙ্গু করে ফেলা হয়েছে তাদের চোখ, হাত, পা ফেরৎ দিতে হবে। আমাদের লুট করা লাখ লাখ কোটি টাকা ফেরৎ আনতে হবে। 

তিনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অধিকার নির্ধারণের জন‍্য প্রয়োজনে গণভোট দেওয়ার জন‍্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

ইফতার মাহফিলে গণ‍্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ব‍্যব্যবসায়ী নেতা আব্দুল গফুর বিপ্লব, শ্রমিক নেতা মজিবুর রহমান চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কামাল আহমদ আম্বিয়া, শ্রমিক নেতা মেহেদী হাসান সোহেল, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কৃষি বিষয়ক সহ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান রঞ্জু, যুক্তরাজ‍্য কমিটির নেতা আব্দুল মুমিত ঝুরু, হবিগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক অ‍্যাডভোকেট মোকাম্মেল হোসেন রবিন, সুনামগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন, মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক, শরিফুজ্জামান চৌধুরী, যুগ্ম সদস্যসচিব আহমদ খলিল তাপাদার, জেলা যুগ্ম সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।

মাহফুজ/

নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৩ এএম
নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক
জামালপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইসহাক হাসান ইখলাস। ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকে লাইভে এসে নিরাপত্তা চেয়েছেন জামালপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইসহাক হাসান ইখলাস। গত সোমবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চান তিনি।

লাইভে তিনি মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিলেও পরে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।

ফেসবুক লাইভে মীর ইসহাক হাসান ইখলাস বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে আমরা পতন ঘটিয়েছি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে আসামিরা গভীর রাতে আমার বাড়িতে হামলা করতে আসছেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামালপুর সদর উপজেলার ৪ নম্বর মেস্টা ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচন করা বদরুল হাসান বিদ্যুৎকে দায়ী করে তিনি আরও বলেন, বিদ্যুতের বাবা, চাচা ও তার চাচাতো ভাই যারা আছেন, তারা সবাই আমার বাড়িতে হামলা করতে আসছেন। সমন্বয়কদের লাশ রাখা হবে না, গুম করা হবে, এই জাতীয় হুমকি দিচ্ছেন। 

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার নমনীয়তায় আমাদের জীবন আজ কবরের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ সময় তিনি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এই আসামিদের আপনি বারবার সুযোগ দিচ্ছেন, আপনি সুযোগ না দিলে, বিচারের আওতায় না নিয়ে আসায়  আমার বাড়িতে হামলা চালানোর সাহস দেখায়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার পুলিশ প্রশাসন কী করে? প্রশাসন আমার ও জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইসহাক হাসান ইখলাসের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি। তার বড় ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশের একটি জমিতে মাটি ভরাট করার সময় প্রতিবেশী সদর উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক বদরুল হাসান বিদ্যুতের বাবা হাতেম আলী ঠিকাদার ও তার চাচা লতিফ ঠিকাদারসহ আরও কয়েকজন আমার বাবা ও ভাইকে মাটি ভরাট করতে বাধা দেন। পরে তারা লোকজন নিয়ে আমার বাবা ও ছোট ভাইকে ধাওয়া করেন। আমার পরিবারের লোকজনকে না পেয়ে বিদ্যুতের লোকজন আমাদের বাড়িতে গিয়ে হামলার চেষ্টা করেন। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাদের বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।’

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জামালপুর সদর উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক বদরুল হাসান বিদ্যুতের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক জানান, ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্তদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি, অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব রেখে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায়নে রাজি বিএনপি

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫০ এএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৯ এএম
প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব রেখে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায়নে রাজি বিএনপি
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব বহাল রেখে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায়নে রাজি বিএনপি। পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষতা বিলুপ্ত করার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে দলটি। এ ছাড়া সংস্কার কমিশনের ৫ শতাধিক সুপারিশের সঙ্গে একমত ও ৭৩টিতে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় সংস্কার প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে বিএনপি।

বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের তৃতীয় দিনের আলোচনা শুরু হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিনের বক্তব্যের পর শুরু হয় রুদ্ধদ্বার আলোচনা। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর আলোচনা চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। বৈঠকে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ৬৯১টি সুপারিশের মধ্যে ৭৩টিতে বিএনপি আপত্তি জানিয়েছে বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পাঁচ শতাধিক প্রস্তাবে একমত বিএনপি। বাকি প্রস্তাবে আংশিক একমত হয়েছে। এসব প্রস্তাবে আমাদের সুপারিশ রয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮টি সুপারিশের মধ্যে ১৮৭টিতে বিএনপি একমত, আংশিক একমত ৫টিতে, একমত নয় ১১টিতে, মন্তব্যসহ ৫টিতে ভিন্নমত দিয়েছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের মধ্যে ২৪৩টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৪১টিতে একমত, ২৪টিতে দ্বিমত, ১৪টিতে আংশিক একমত ও ৬৪টিতে মন্তব্যসহ ভিন্নমত রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২০টি প্রস্তাবের মধ্যে ১১টিতে একমত, বাকি ৭-৮টি প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত। শুধু আয়কর ধারা বিষয়ে আমরা আপত্তি দিয়েছি। আর বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৮৯টি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ৬২টিতে সুপারিশে একমত, ৯টিতে মন্তব্যসহ আংশিক একমত, ১৮টিতে দ্বিমত পোষণ করেছি। সংবিধান সংস্কার কমিশনের ১৩১টি প্রস্তাবের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে একমত হয়েছি।’ 

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি বিচার বিভাগের সম্পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। অধস্তন আদালতকে স্থানীয় আদালত বলতে একমত পোষণ করেছি। স্থানীয় আদালতের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টে আর্টিকেল-১১৬ পরিবর্তন আনার বিষয়ে একমত পোষণ করেছি। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেছি আমরা।’ সুপ্রিম কোর্টে একটি সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিএনপি একমত জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগসংক্রান্ত অধ্যাদেশ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জের বিষয়টি যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেসব বাস্তবায়নে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সরাসরি ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার পক্ষে বিএনপি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ কাউন্সিল গঠনের ব্যাপারেও আমরা একমত।’ 

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন আগের মতো জুডিশিয়াল অপশন রেখে হবে কি না, নাকি বিকল্প কোনো পদ্ধতিতে হবে- সেই বিষয়ে আমরা প্রস্তাব চেয়েছি বা আমরা চিন্তা করে দেখি নতুন কোনো প্রস্তাব দেওয়া যাবে।’

কমিশনের যেসব প্রস্তাবে দ্বিমত বিএনপির 

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের সুপারিশে দ্বিমত জানিয়েছে বিএনপি। দলটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সবচেয়ে সিনিয়র তিন বিচারপতির মধ্য থেকে একজনকে প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘নেসেসিটি মেকস ল। আমাদের কাছে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হচ্ছে সর্বোচ্চ আইন। ডকট্রিন অব নেসেসিটি বিবেচনা রেখেই কিছু অপশন রাখা সুবিধাজনক।’

একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না- সংবিধান সংস্কার কমিশনের এমন প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি। তবে একজন সর্বোচ্চ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন- এমন প্রস্তাবটি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে দলটি। 

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক ব্যক্তির পরপর দুই মেয়াদের পর একবার বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ রাখার কথা তারা বলেছেন। 

একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান এবং সংসদ নেতা পদে যাতে না থাকেন সেটি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে এতে বিএনপি দ্বিমত পোষণ করেছে বলে জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সংসদ নেতার পদে থাকা উচিত। আর সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত যে দলের প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কি না। আর প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন, তিনিই সংসদ নেতা হবেন। এটাই ট্র্যাডিশন। তিনি বলেন, কোনো কোনো দেশ সংসদ নেতাকে আলাদা করেছে এমন নজির আছে। কিন্তু এখানে সংসদ নেতার কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই। এখানে সংসদ নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী অনেকটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটা প্রধানমন্ত্রীর মতো আলাদা পোস্ট নয়। 

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্বে পরিচালিত। কিন্তু ওনারা বলেছেন, কালেকটিভলি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা কর্তৃক পরিচালিত। তাতে এখানে প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাকে না। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃত্ব থাকা উচিত।’

সব কমিশনকে সাংবিধানিক কমিশন করা প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, স্থানীয় সরকার কমিশনসহ বেশ কয়েকটা প্রতিষ্ঠানকে সাংবিধানিক কমিশন হিসেবে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা বলেছি, প্রত্যেকটা কমিশনকে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হলে জটিলতা বাড়বে।’

ন্যাশনাল কনস্টিটিউশন কাউন্সিল (এনসিসি), সংসদের উভয় কক্ষের মেয়াদ, সংসদ সদস্যের বয়স ২১ বছর করা, সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি প্রভৃতি বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে বিএনপি। 

যেসব প্রস্তাবে একমত 

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা যাবে না এবং স্থানীয় প্রশাসনে যে চারটি বিভাগের কথা বলা হয়েছে, সেই বিষয়ে বিএনপি সম্পূর্ণ একমত বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। 

সংস্কার কমিশনের অধিকাংশ সুপারিশের সঙ্গে বিএনপি একমত- এ কথা জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সংবিধানের অষ্টম, নবম, দশম, দ্বাদশ ও পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বের অবস্থার কথা বলেছে তারা। ধর্মনিরপেক্ষতা বিলুপ্ত করার সঙ্গে বিএনপি একমত। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আনার ক্ষেত্রেও তারা একমত। এগুলো মৌলিক অধিকারে আনার কথা বলেছে বিএনপি।

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ১৪ জন হবে এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য থেকে একজনকে মনোনীত করা হবে, সেই বিষয়ে একমত। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বিএনপি মোটামুটি একমত বলে জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, এটা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন বিভাগসহ পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত আছে। ঢালাওভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষেত্রে একটি প্রোভেশন রাখলে ইমব্যালেন্স হয়ে যেতে পারে। সে জন্য রাষ্ট্রের বিষয়, সংবিধধানের বিষয়, রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয় সেটা গভীরভাবে চিন্তা করে সংবিধানে আনতে হবে। 

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়ায় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটের বিষয়ে বিএনপি একমত পোষণ করেছে। ন্যায়পাল নিয়োগের বিষয়েও একমত হয়েছে বিএনপি। 

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ও ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নেওয়ার বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ওনারা এটার নাম রেখেছেন উচ্চ কক্ষের জন্য সিনেট, নিম্ন কক্ষের নাম জাতীয় সংসদ। এটাতে আমরা একমত। নিম্ন কক্ষের ৪০০ আসনের মধ্যে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এটা নিয়ে আমরা একমত, তবে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আমাদের মধ্যে ভিন্নমত আছে।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা আমরা বলেছি। যেখানে রাষ্ট্রপতির হাতে কী কী ক্ষমতা অর্পণ করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা না করে রাষ্ট্রপতি কী কী করতে পারবেন সেটা বিস্তারিত থাকবে। কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এমপিরা থাকতে পারবেন না এমন প্রস্তাবে একমত বিএনপি।’ 

বিএনপি সংবিধান সংশোধনীর সব ক্ষেত্রে গণভোটের দরকার নেই বলে সুপারিশ করেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট আর্টিকেল নিয়ে গণভোটের ব্যবস্থা করতে চাইলে সেটা পরবর্তী সংসদে আলোচনা করে করা যেতে পারে। 

রাষ্ট্র, প্রজাতন্ত্র ও সংবিধানের বিষয় নিয়ে তাড়াহুড়া করার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই কমিশনে যেসব সিদ্ধান্ত হবে, তা জাতীয় জীবনে মহান ভূমিকা রাখবে। তাই সময় বেশি নিলেও বিএনপি বিস্তারিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

নতুন প্রস্তাব এসেছে, আলোচনার পর সিদ্ধান্ত 

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় নতুন নতুন প্রস্তাব এসেছে। সেগুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।’ 

প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় বিএনপির সঙ্গে কিছু বিষয়ে একমত হওয়া গেছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে, বেশ কিছু বিষয়ে মতভিন্নতাও আছে। মতভিন্নতার ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে অনেকগুলো ক্ষেত্রে তারা নীতিনির্ধারকদের কাছে যাবেন, আলোচনা করবেন এবং পরবর্তী সময়ে জানাবেন। আশা করছি তা জানতে পারব শিগগিরই।’

আলোচনার বিষয়বস্তু কমিশনপ্রধান ও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে জানানো হয় উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘প্রতিটি বিষয় তাকে অবহিত করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনাও দিচ্ছেন।’

আলোচনায় অংশ নেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং আবু মো. মনিরুজ্জামান খান। ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ও রবিবার ঐকমত্য কমিশন বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল।

আওয়ামী লীগের কামব্যাকে শঙ্কায় আছি: ভিপি নুর

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮ এএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৪ এএম
আওয়ামী লীগের কামব্যাকে শঙ্কায় আছি: ভিপি নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর। ছবি: খবরের কাগজ

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘গণহত্যার বিচারে অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাস পার হলেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যেই আবারও আওয়ামী লীগের ফিরে আসার আভাস মিলছে, যা আমাদের শঙ্কিত করছে। ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ মিছিল করছে এবং বিপ্লবীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় আমরা নিজেদের জীবন অনিরাপদ মনে করছি।’

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নে গণঅধিকার পরিষদের মহানগর সহ-সভাপতি হাজী রতন ভূঁইয়ার মৃত্যুতে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ভিপি নুর আরও বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, সংস্কার ও বিচার সমান জোরে এগোতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির কথা বলা হয়েছে, সেটাও দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। গত ১৬ বছরে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো যে সংগ্রাম করেছে, তার আলোকে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ সরকারের পক্ষ থেকে জাতিকে জানানো জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের জন্য জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সরকার গঠন জরুরি। যেসব বিষয়ে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা সম্ভব, সেগুলোকে সামনে রেখে একটি জাতীয় সনদ বা ‘জুলাই চার্টার’ তৈরির প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। যেহেতু বর্তমানে সংসদ নেই, তাই সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে। এই জাতীয় সরকারের মাধ্যমেই মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’

প্রশাসনের দলীয়করণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে প্রশাসনের রাজনৈতিক দলীয়করণের চিত্র আমরা দেখেছি। এই প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ও পেশাদার রূপে গড়ে তুলতে না পারলে পুরনো ধারা আবার ফিরে আসবে। এজন্য কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি।’

দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল, সহ-সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান ইসলাম মিল্কী, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা।

ইমরান/তাওফিক/

সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না, একথা জনগণ মানে না: আমিনুল হক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না, একথা জনগণ মানে না: আমিনুল হক
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছর লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনকে যারা ধ্বংস করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে এবং তা একটি নির্বাচিত সরকার করবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জিয়া আন্তঃথানা ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর মোহাম্মদপুর থানা বনাম ভাষাণটেক থানার খেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এসময় ফুটবল ও ক্রিকেটসহ ক্রীড়াঙ্গনের দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন- ক্রীড়াঙ্গনের ধ্বংস ও লুটপাটের পরেও যে সকল স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বহাল রয়েছেন তারা যদি মনে করেন আপনাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না, তাহলে আপনারা ভুল ভাবছেন। এই দেশের ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ আপনাদের প্রতি ক্ষুব্ধ।

সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্র সংস্কার এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিচারের নামে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে, এদেশের জনগণ এটাকে কখনোই সমর্থন করে না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না, একথা জনগণ মানে না। 

নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরের ভিতরেই হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারে নাই। মানুষ ভোট দিতে চায়। বাংলাদেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, পরিপূর্ণ সংষ্কারের জন্য, শেখ হাসিনাসহ তার স্বৈরাচারের দোসরদের বিচারের জন্য নির্বাচন হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ এই নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই জনগণের সরকারই পারবে দেশকে পরিপূর্ণভাবে সংস্কার করতে, স্বৈরাচারদের বিচার করতে এবং বাংলাদেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। 

এসময় বিএনপি চেয়াপারসন উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, হাজী মো. ইউসুফ, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, শামীম পারভেজ, হাজী নাসির উদ্দীন, এমএস আহমাদ আলী, ইবরাহীম খলিল, তাসলিমা রিতা, এছাড়াও তুরাগ থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন হাসান খন্দকার, থানা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল আলী, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি আহ্বায়ক শুক্কুর মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর মো. কামাল হোসেন, মিজানুর রহমান ইসহাক, ৩৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি এ্যাড. মাসুম খান রাজেশ, সাধারণ সম্পাদক ওসমান রেজা, ৩৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি সিনিয়র সহসভাপতি ওসমান গনি সেন্টু, আদাবর থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত  আহ্বায়ক সাদেক হোসেন স্বাধীন, যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল হোসেন সরকার, থানা সদস্য হাজী নিজাম উদ্দিন, ৩০ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, ভাষাণটেক থানা বিএনপি আহ্বায়ক আব্দুল কাদির, গুলশান থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।

মোহাম্মদপুর থানা বনাম ভাষাণটেক থানার মধ্যকার ম্যাচে ২-০ গোলে মোহাম্মদপুর থানা জয়ী হয়। 

মাহফুজ/  

গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তীতে ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখতে চাই না: হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তীতে ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখতে চাই না: হাসনাত আবদুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি একাত্মতা জানান। 

হুঁশিয়ারি দিয়ে হাসনাত ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসনমূলক আচরণ করার পরিণতি কী হতে পারে, তা চব্বিশের জুলাইয়ে দেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও আমরা এমন ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখতে চাই না।’

হাসনাত আরও লিখেছেন, ‘কুয়েটের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করছি। কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।’