ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

অনির্বাচিতদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রাখার প্রচেষ্টা অনভিপ্রেত: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ১২:১৮ পিএম
আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫, ০১:৩১ পিএম
অনির্বাচিতদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে রাখার প্রচেষ্টা অনভিপ্রেত: মির্জা ফখরুল
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: খবরের কাগজ

সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ভবিষ্যতে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োগের অযৌক্তিক প্রচেষ্টা রয়েছে, যা অনভিপ্রেত বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (২২ মার্চ) দুপুরে গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে ডাকা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালায় সাংবিধানিক কমিশনসহ (এনসিসি) নতুন নতুন বিভিন্ন কমিশনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সমস্ত কমিশনের এখতিয়ার, কর্মকাণ্ডের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে তাতে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আইন বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগকে যতটা সম্ভব অবমূল্যায়ন করা এবং ক্ষমতাহীন করাই উদ্দেশ্য, যার ফলশ্রুতিতে একটি দুর্বল ও প্রায় অকার্যকর সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।’

রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক চরিত্র, জনগণের মালিকানার প্রতিফলন হয় নির্বাচিত সংসদ এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংবিধান ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশসমূহ পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদরা অপাঙ্ক্তেয় এবং অনির্বাচিত লোকদেরই দেশ পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করাই শ্রেয়। জনগণের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ধর্মবোধ এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েই বিভিন্ন সংস্কার ও সাংবিধানিক সংশোধনী প্রণীত হওয়া বাঞ্ছনীয়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে সমুন্নত রেখে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই বর্তমান সময়ের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বৃহত্তর জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সব সংস্কার প্রচেষ্টা পরিচালিত হবে এটাই জাতীয় প্রত্যাশা।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ / পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা প্রকার লক্ষণ ও প্রমাণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে, যা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো- জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের নিশ্চয়তা বিধান করা। সর্বোপরি, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত করা।’ 

সংস্কার আগে, নির্বাচন পরে, কিংবা নির্বাচন আগে, সংস্কার পরে- এ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটিই একই সঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি সংস্কার সনদ তৈরি হতেই পারে, যা নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করবে।’

তিনি বলেন, ‘এমতাবস্থায় এখন অন্তর্বর্তী সরকারের মূলত করণীয় হচ্ছে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা। নির্বাচিত সরকার জনগণের কাঙ্ক্ষিত ঐক্যমত্যের সংস্কারসমূহ সম্পন্ন করবে। কেননা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ এবং ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই গ্রহণযোগ্য সংস্কার সম্পাদন সম্ভব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক প্রেরিত স্প্রেডশিটে যে অপশন/পছন্দগুলোর ঘরে হ্যাঁ/না টিক চিহ্ন দিয়ে উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন- প্রথমে সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না? একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ এবং আইন সভা’ হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না ইত্যাদি হ্যাঁ/না বলুন। সংবিধানের ‘প্রস্তাবনার’ মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশে থাকলেও তা স্প্রেডশিটে উল্লেখ করা হয়নি।’ 

তিনি বলেন, ‘স্প্রেডশিটে ৭০টির মতো প্রস্তাব উল্লেখ করা হলেও মূল প্রতিবেদনে সুপারিশ সংখ্যা প্রায় ১২৩টির মতো। একইভাবে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের মূল প্রতিবেদনে ১৫০টির মতো সুপারিশ তুলে ধরা হলেও স্প্রেডশিটে মাত্র ২৭টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, এগুলোর মধ্যে অধিকাংশই সংবিধান সংস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। তাই আমরা মনে করছি- স্প্রেডশিটের সঙ্গে মূল সুপারিশমালার ওপর আমাদের মতামত সংযুক্ত করে দিলে বিভ্রান্তি এড়ানো যাবে।’

বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার মূল ভিত্তি তৈরি করেছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদউত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে, যার মূল ভিত্তিটা রচনা করেছে বিএনপি ৩১ দফা। এই গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবসমূহ গৃহীত এবং বাস্তবায়ন করা আবশ্যক। জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার প্রস্তাবগুলোর সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই কেবল উপযুক্ত ফোরাম।’

বিদ্যমান ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য এই দেশ এবং দেশের মানুষের মূল চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এই ঐক্যকে অক্ষুণ্ন রেখে, এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। এই ঐক্যের চর্চাকে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে। আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না, যাতে করে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য এবং গণঐক্য বিনষ্ট হয় অথবা ফাটল ধরে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো মহলের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের অ্যাজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’

রবিবার বিএনপির সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের অনেক প্রস্তাব মিডিয়ার সামনে চলে এসেছে। যা বিশেষ বিভিন্ন ব্যক্তি ও দলের করা প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে মিল রয়েছে।’

এ সময় সংস্কার-নির্বাচনে সেনাবাহিনী আগেও সহযোগিতা করেছে ভবিষ্যতেও করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে এখনও দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। তিনি যখন উপযুক্ত সময় মনে করবেন, তখনই দেশে ফিরবেন।’ 

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার প্রস্তাবে national constitution নামে একটা ফ্রেম গঠনের কথা বলা হয়েছে। এই প্রস্তাবের গঠন প্রণালী ও কার্যাবিধি দেখলে বোঝা যায়, সমস্ত স্তরে স্তরে বিভিন্ন অনির্বাচিত ব্যক্তি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন এবং সাংবিধানিকভাবে তাদেরকে ক্ষমতায়ন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দেখা যাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কোনো গুরুত্ব নেই এবং যদি এই প্রস্তাব গৃহীত হয়, তাহলে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সুমন/

চাঁদপুর মেহের কলেজের সভাপতি পদে বৃটিশ নাগরিক, প্রত্যাহার চান সদস্যরা

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
চাঁদপুর মেহের কলেজের সভাপতি পদে বৃটিশ নাগরিক, প্রত্যাহার চান সদস্যরা
ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের মেহের ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে বৃটিশ নাগরিক ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনকে মনোনীত করায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছেন কলেজটির গভর্নিং বডির ৮ সদস্য। সম্প্রতি এ বিষয়ে তারা চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে আনোয়ার হোসেন খোকনকে মনোনীত করেছেন, যা অধ্যক্ষের মাধ্যমে জানাতে পারি। আমাদের জানামতে, তিনি একজন বৃটিশ নাগরিক এবং বর্তমানেও তিনি দেশ ও লন্ডন মিলিয়ে অবস্থান করছেন। গত ২০ বছরে তিনি বাংলাদেশে হাতেগোনা কয়েকবার এসেছেন। তাও আবার বৃটিশ পাসপোর্টে। এরকম একজন ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করায় আমরা চরমভাবে হতাশ এবং কলেজ পরিচালনা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এমতাবস্থায় এই বিদ্যাপিঠটির সুনাম ও কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনার স্বার্থে মেহের ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির মনোনয়ন প্রত্যাহার করে, কলেজ কর্তৃক দাখিলকৃত প্রস্তাব অনুসারে সভাপতি মনোনয়ন পদে নিয়োগ দেওয়ার পুনঃর্বিবেচনার দাবি জানানো হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, মূলত বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আনোয়ার হোসেন খোকন এই কলেজের সভাপতি পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির নীতিমালা ৯নং অনুসারে অধিভুক্ত কলেজে গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্যরা বাংলাদেশের নাগরিক হবেন এবং তাহারা সাধারণভাবে বাংলাদেশের বাসিন্দা হবেন। ওই হিসেবে এ নিয়োগ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নীতি বহির্ভূত ও সাংঘর্ষিক।

জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ই মার্চ সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দীন আহমেদ ও কলেজ অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান প্রতিস্বাক্ষর করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট কলেজ পরিদর্শক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর প্রেরণ করেন। প্রস্তাবে কলেজের সভাপতি পদে ৩ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। তারা হলেন- যথাক্রমে মো. আবু ইউসুফ, মোহাম্মদ কামরুল আহসান মজুমদার এবং মো. আবদুল সাত্তার। 

গভনিং বডির সদস্য ও দাতা প্রতিনিধি মো. আয়েত আলী ভূঁইয়া বলেন, আমাদের প্রস্তাবকৃত ৩ জনের নামের তালিকায় তার নাম নেই। তারপরও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি একজন বৃটিশ নাগরিককে কিভাবে নিয়োগ দিল? 

সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র আবেদনকারী সদস্যরা হলেন, মো. আবু ইউসুফ, সুফিয়া আক্তার, যদু চন্দ্র শীল, মো. জাকির হোসেন, গাজী মো. কবির হোসেন, মো. আবুল কাশেম, মো. আয়েত আলী ভূঁইয়া এবং মো. ইকবাল হোসেন। 

এই বিষয়ে বিএনপির আন্তজার্তিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খোকনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

শফিকুল/সিফাত/

জনগণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমিনুল হক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
জনগণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমিনুল হক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জনগণ একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জিয়া আন্তঃ থানা ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর উত্তরা পশ্চিম থানা বনাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার মধ্যকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

এসময় আমিনুল হক বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্রুত সময়ের ভিতরে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ ভোটের আশায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে বিদায় করেছে।

একটি মহল তারা ক্ষমতার মোহে পরে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময়ে কেউ ভোট দিতে পারে নাই। মানুষ এখন ভোট দিতে চায়। মানুষের ভোটের অধিকার নষ্ট করার জন্য পিছিয়ে দেওয়ার জন্য একটি গোষ্ঠী নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। 

পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে আন্দোলন করব উল্লেখ করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মানুষের ভোটাধিকার ও দেশের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছে সংগ্রাম করেছে। প্রয়োজনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও রাজপথে নেমে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করব। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন আফাজ, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, শামীম পারভেজ, জিয়াউর রহমান জিয়া, হাফিজুর রহমান শুভ্র, নূরুল হুদা ভূইয়া নূরু, হান্নানুর রহমান ভূঁইয়া, তাসলিমা রিতা, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মো. আবদুস ছালাম, মিরপুর থানা বিএনপি আহ্বায়ক হাজী আব্দুল মতিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী দেলোয়ার হোসেন দুলু, বিমানবন্দর থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মহিউদ্দিন তারেক, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মোবারক হোসেন দেওয়ান প্রমুখ।

উত্তরা পশ্চিম থানা বনাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার মধ্যকার ম্যাচে উত্তরা পশ্চিম থানা ১-০ গোলে জয়ী হয়।

 

ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে গণসংহতি আন্দোলন

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে গণসংহতি আন্দোলন
গণসংহতি আন্দোলন

বাংলাদেশে একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে অধিকতর সমঝোতা ও ঐক্য তৈরি করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় ঐক্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর এ বিষয়ে তৎপরতা জোরদার করতে গণসংহতি আন্দোলন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিষয়ে দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জনগণের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তাকে বাস্তবায়ন করা সব রাজনৈতিক দলের কর্তব্য, এ বিষয়ে সবাই একমত। কিন্তু সেটা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, কোন কোন ক্ষেত্রে পার্থক্য কমিয়ে অধিকতর ঐক্যমত্য সৃষ্টি করা যায়, সেসব বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব।’

দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘সংস্কার এবং নির্বাচন উভয়ই দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আবশ্যক। ফলে গণতান্ত্রিক উত্তরণের যে আকাঙ্ক্ষা জনগণের ভেতরে আছে তাকে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে আমরা শিগগিরই অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে বসতে শুরু করব।’

এ সময় দলটির নেতারা আশা প্রকাশ করেন যে, বর্তমান জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভেতর দিয়েই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও মানবিক রূপান্তর সম্ভব।

সুমন/

জনগণ কারা, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান খসরু

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম
জনগণ কারা, প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান খসরু
ছবি: খবরের কাগজ


জনগণ বলতে কাদের বুঝিয়েছে? প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, জনগণ বলতে যদি কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে অথবা কোনো বিশেষ সুযোগ-সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধাচারণ করছে। এটা তো কারো বুঝতে সমস্যা হওয়ার কারণ নেই।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এক প্রতিক্রিয়া তিনি এসব কথা বলেন।

আমির খসরু বলেন, কোনো মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করে নাই, ত্যাগ শিকার করে নাই। আর কোনো মহামানব কোনো দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য বাংলাদেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নাই।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অর্ডার ফিরিয়ে আনার জন্য। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। সেটা যেই সরকারই হোক।

নির্বাচন প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমাদের সাথে যারা রাস্তায় ছিলো ইতিমধ্যে প্রায় ৫০টি দল পরিষ্কারভাবে বলেছে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের জন্য এবং সঙ্গে সঙ্গে সংস্কারের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেই সংস্কার দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়ে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার জন্য। 

এদিন বিকালে ন্যাপ ভাসানী, আমজতার দল ও পিপলস পার্টি- তিন দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। বিএনপির পক্ষ থেকে আমির খসরু ছাড়াও বৈঠকে অংশ নেন ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

শফিকুল/সিফাত/

ঢাকায় গ্রিসসহ সব ইউরোপীয় দেশের দূতাবাস স্থাপনের দাবি ইসলামী আন্দোলনের

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫২ পিএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৪ পিএম
ঢাকায় গ্রিসসহ সব ইউরোপীয় দেশের দূতাবাস স্থাপনের দাবি ইসলামী আন্দোলনের
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ঢাকায় গ্রিসসহ সব ইউরোপীয় দেশসমূহের দূতাবাস স্থাপনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দলটির কেন্দ্রীয় প্রবাসী ও কর্মসংস্থানবিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মো.খলিলুর রহমান ও সদস্য সচিব মুহাম্মদ হাসমত আলী যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান। 

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস না থাকার কারণে বাংলাদেশি প্রবাসীদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। 

গ্রিসে বাংলাদেশিদের দুঃখের নাম ভারত। গ্রিসে বাংলাদেশি এলাকা ওমানিয়া-গেরানিয়ার পথে-প্রান্তরে শুধু ভারতের বিরুদ্ধে দুঃখগাথা। অনেকেই ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে গ্রিসের স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়েছেন। অথচ পরিবার নিতে পারছেন না। গ্রিসে বসবাসরত ৩০ হাজার বৈধ-অবৈধ বাংলাদেশির একটাই দাবি- গ্রিসের দূতাবাস বাংলাদেশে স্থাপন করা।

তারা বলেন, ‘গ্রিসের দূতাবাস ভারতে। বাংলাদেশিদের ভিসা তুলতে হলে অথবা দূতাবাসের যেকোনো কাজে যেতে হয় ভারতে। এখানেই শুরু হয় নানা রকম হয়রানির। এখন তো ভারতের ভিসা পাওয়া যায় না। যখন ভারতের ভিসা নিয়ে সমস্যা ছিল না, তখনো ভারতের কারণে হাজার হাজার বৈধ বাংলাদেশি তাদের পরিবার আনতে পারেননি।’

এ সময় অন্তবর্তী সরকারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকায় গ্রিসের দূতাবাস স্থাপন করার জোর তাগিদ দেন তারা।   

শফিকুল ইসলাম/সুমন/