ঢাকা ৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
English
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

যুবদল-ছাত্রদল সংঘর্ষ খুলশী থানার ওসি প্রত্যাহার

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:৪০ এএম
খুলশী থানার ওসি প্রত্যাহার
চট্টগ্রামে ঈদুল ফিতরের ব্যানার টানানোকে কেন্দ্র করে যুবদল ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় খুলশী থানার ওসি মজিবুর রহমান কাওসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে ঈদুল ফিতরের ব্যানার টানানোকে কেন্দ্র করে যুবদল ও ছাত্রদলের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান কাওসারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার জায়গায় কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসেনকে দায়িত্ব বুঝে নিতে বলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতেই তাকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে সকালে ওসি হিসেবে আফতাব হোসেনের দায়িত্ব পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। 

জানা যায়, শুক্রবার রাতে নগরীর জিইসি মোড়ে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার টানানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। পরে তারা খুলশী থানার কুসুমবাগ ডেবার পাড় এলাকায় মুখোমুখি হয়। এ সময় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধসহ চারজন আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন জিহাদুর রহমান জিয়াদ, কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন মোনা ও রমিজ। তাদের মধ্যে জিয়াদ ও কামাল যুবদলের সদস্য। জিয়াদের শরীরে দুটি গুলি লেগেছে। এ ছাড়াও আনোয়ার হোসেনও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে। আরও দুজন ছুরিকাহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তারা নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম শাহ আলমের সমর্থক।

সিএমপি সূত্র জানিয়েছে, খুলশী থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, বদলি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া। যেকোনো সময় যে কাউকে প্রত্যাহার করা হতে পারে। খুলশী থানার ওসিকে প্রত্যাহার এবং কোতোয়ালি থানা পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসেনকে দায়িত্ব বুঝে নিতে বলা হয়েছে।

রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে কীভাবে?

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৪ এএম
আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ পিএম
রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটবে কীভাবে?
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (লোগো)

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। গত বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের আলোচনায় আগের মতোই যে যার অবস্থানে অনড়ই থেকেছেন। বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করেছে। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এতে নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে আরেক ধাপ অনিশ্চয়তা তৈরি হলো। ফলে এই অনিশ্চয়তা কীভাবে দূর হবে বা রাজনৈতিক এই অচলাবস্থা কীভাবে কাটবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা আলোচনা রয়েছে। বিশ্লেষকরাও এ বিষয়ে নানা মতামত দিচ্ছেন।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনই করতে হবে, বিষয়টা এমন নয়। ন্যূনতম প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত শেষ করে নির্বাচন করলে সমস্যাগুলোর অনেকটা সমাধান হবে। এ ছাড়া নির্বাচিত সরকার সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে বড় সংস্কারগুলো নিয়ে কাজ করতে পারবে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, সংস্কার কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। নির্বাচনের প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো দু-এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব। তাদের আশঙ্কা- নির্বাচন পেছালে আওয়ামী লীগের দোসররা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে, দেশ ক্ষতিগ্রন্ত হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে না। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা বর্তমানে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অন্যতম দাবি। জনগণকে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসতে হবে। আলোচনার মাধ্যমেই নির্বাচনের দিনক্ষণের জটিলতার সমাধান হবে।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খবরের কাগজকে বলেন, ‘দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে- কীভাবে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারি। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল এবং গণতান্ত্রিকভাবে এগিয়ে যাবে।’

দলীয় সূত্রমতে, আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে বিএনপি সমমনা দলগুলোর মতামত নেওয়া শুরু করেছে। এরপর দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আপাতত রাজপথের বড় কোনো আন্দোলনে যাবে না বিএনপি। শিগগিরই মহানগর ও জেলা পর্যায়ের সমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।

জানা গেছে, গত বছরের ৬ আগস্টের পর থেকেই নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নানা তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা এখনো স্পষ্ট করেনি অন্তর্বর্তী সরকার। সর্বশেষ বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তার আগের বক্তব্য ধরেই ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এর আগে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও তিনি একই কথা বলেন। এ ছাড়া বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমকে প্রধান উপদেষ্টা জানান, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে এই সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একমত নয় বিএনপি। দলটি এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়ায় বিএনপিতে নতুন করে সংশয় তৈরি হয়েছে।

তবে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার করার পর নির্বাচনের দাবি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার ও এনসিপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনেকটাই একই স্ট্যান্ড নিয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। তবে জামায়াতে ইসলামী বিগত আট মাসের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসে বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলছে। দলটি এখন আগামী বছরের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে নির্বাচনের দাবি তুলছে। 

এমন পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিলেন দেশের সাধারণ জনগণ। কিন্তু ওই বৈঠকে কোনো ঐকমত্য বা সুরাহা না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে এখন নতুন করে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকের মধ্যে নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর, তারা নির্বাচিত’- দু-একজন উপদেষ্টার এমন বক্তব্য নিয়েও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। সব মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে সরকারের এই অবস্থান ও বক্তব্য মানতে পারছে না রাজনৈতিক দলগুলো।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খবরের কাগজকে বলেন, ‘নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন। সবার মত এক হবে না, এটা স্বাভাবিক। সরকারও তার সুবিধামতো সময়ে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করতে চাইছে। মূলত নির্বাচনের টাইমলাইন নিয়ে প্রত্যক দল আলাদা মতামত দিচ্ছে। এর মধ্য থেকে যেকোনো একটা সময় সরকার বেছে নিলে সংকট বা অচলাবস্থা কেটে যাবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা আছে বলে মনে করছি না।’

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের টাইমফ্রেম নিয়ে কোনো আপত্তি নেই। আমরা নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রে মৌলিক সংস্কার ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণহত্যাসহ পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চাই। এসব যদি ডিসেম্বরের আগে শেষ করা সম্ভব হয়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে কোনো বাধা নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনীতির ধারা ও লক্ষ্য হলো দেশের প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করা এবং রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে তিনটি নির্বাচনে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারেনি। দেশের মানুষও দ্রুত নির্বাচন চায়। তাই দ্রুত নির্বাচন দেওয়া বাঞ্ছনীয়। আমি মনে করি, সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তাদের দূরত্ব বা বিরোধ তৈরি হয়। তারা দলনিরপেক্ষ সরকার, ফলে তাদের বিশেষ কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার কথা নয়। নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বর সামনে রেখে তৎপরতা চালাচ্ছে, ঐকমত্য কমিশনও তাদের কাজ করছে।’ 

তিনি বলেন, ডিসেম্বর কেন, চাইলে আরও দুই মাস আগেও জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব। সুতরাং এটা নির্ভর করছে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। বাস্তবে বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না সরকার। আধা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিছু ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগ রয়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে দেশে একটা অচলাবস্থা চলছে। নির্বাচিত সরকার না এলে দেশে বিনিয়োগকারীরা আস্থা পাবেন না। তার আশা, নির্বাচনের দাবি আদায়ে বড় কোনো আন্দোলন নামা লাগবে না। প্রধান উপদেষ্টার কালকের (বুধবার) বক্তব্য শেষ কথা নয়। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানে আসা যাবে বলেও মনে করেন তিনি।

বিশিষ্টিজনের অভিমত পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন-

>সংস্কারের ভিত্তি মজবুত করতে নির্বাচন জরুরি: মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম
>রোডম্যাপ জানালে বিভ্রান্তি দূর হবে: আনু মুহাম্মদ
>সমস্যার সমাধান হবে রোডম্যাপ দিলে: ড. শাহদীন মালিক

সংবিধানের সব সংশোধনীতে গণভোটের প্রয়োজন নেই: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৫ পিএম
সংবিধানের সব সংশোধনীতে গণভোটের প্রয়োজন নেই: সালাহউদ্দিন
জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: খবরের কাগজ

সংবিধানের সব সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের উভয় কক্ষে পাস করার পরে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। বিষয়টিতে দ্বিমত জানিয়েছি। আমরা বলেছি, সংবিধানের সব সংশোধনী গণভোটের জন্য প্রযোজ্য নয়। শুধু যেসব বিষয় বর্তমানে সংবিধানে রয়েছে সেগুলো। এ ছাড়া সংবিধানের মূলনীতি, ৪৮, ৫৬ এবং ১৪২ অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হলে গণভোটে যেতে হবে। ঢালাওভাবে যদি আমরা সব সংশোধনী গণভোটের জন্য বিধান রাখি তাহলে সেটা অনুচিত হবে।’

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের শেষে তিনি এই কথা বলেন। বৈঠকে সব বিষয়ে আলোচনা শেষ না হওয়ায় আগামী রবিবার আবার বৈঠকে বসবে বিএনপি। 

সংবিধান সংস্কার কমিশন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ নিয়ে দফাওয়ারি আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না আমরা কতটি প্রস্তাবে একমত হয়েছি। আমরা প্রায় সব বিষয়ে কাছাকাছি আসতে পেরেছি। কিছু বিষয়ে ভিন্নমত থাকতেই পারে এবং আছে।’

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল ছাড়া সব বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে সংসদ সদস্যদের ভোটের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। বিএনপি বিষয়টিতে দ্বিমত জানিয়েছে। দলটির যুক্তির বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কৃতি এবং প্র্যাকটিসে যদি আমরা ৭০ অনুচ্ছেদ অর্থবিল ছাড়া বাকি সব ক্ষেত্রে ওপেন করি তাহলে সরকারের স্থায়িত্ব থাকবে না এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্যাপক বাধা আসতে পারে। আমরা বলেছি অর্থবিল, সংবিধান সংশোধন বিল, আস্থা ভোট এবং জাতীয় নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বাদে সংসদ সদস্যরা যেকোনো বিষয়ে আলাপ-আলোচনা এবং সংসদে ভোট দিতে তাদের কোনো বাধা থাকবে না। ভবিষ্যতে যদি আমরা গণতান্ত্রিক প্র্যাকটিসের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক শাসনের ধারাবাহিকতায়, যদি সেই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারি তাহলে ৭০ অনুচ্ছেদের বিষয়ে আরও অনেক বিষয় তখন আমরা ওপেন করে দিতে পারব। অথবা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পারবে, সেটা আমরা মনে করি।’

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) বিষয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। প্রাথমিক আলোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধারণার সঙ্গে একমত নই। এনসিসি আমাদের দেশে কোনো প্র্যাকটিস ছিল না। রাজনৈতিক ও সংসদীয় ইতিহাসে এটা নতুন হবে। আমরা বলেছি এই বিষয়টি পরবর্তী নির্বাচিত সংসদে বিস্তর আলোচনা করা যাবে। এখনো আমরা নীতিগতভাবে একমত হইনি।’

রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিষয়ে বিএনপি পঞ্চাদশ সংশোধনীর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চায় বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ওখানে ধর্মনিরপেক্ষতা নেই। আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস আছে। ওখানে গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদসহ সবকিছু আছে রাষ্ট্র এবং সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে। আমরা বহুত্ববাদের বিরোধিতা করেছি। তবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার যে কথাগুলো স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা আছে, সেই সব বিষয়ে তারা প্রস্তাবনায় এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, এখানে প্রস্তাব করেছে। আমরা বলেছি এ বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে একমত। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত পরে জানাব।’

সংবিধান সংস্কার কমিশনের যেসব বিষয়ে একমত হয়েছেন তা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে- এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সবার সঙ্গে আলোচনা করে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো একত্রিত করে প্রতিবেদন তৈরি করে পক্ষগুলোকে স্বাক্ষর করতে বলবেন, সেটা ওনারাই বুঝবেন, এটাকে ওনারা জুলাই সনদ বলবেন নাকি কী বলবেন তা ঠিক করবেন।’

সূচনা বক্তব্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি, গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এ দেশে।’

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিএনপির একটি বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রে এ দলটি দাবি উত্থাপন করেছে, কর্মসূচি দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের লড়াইয়ের পাশাপাশি সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে বিএনপি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সামনে অগ্রসর হতে চাই।’ 

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও ছিলেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

 

আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এনসিপি অপপ্রচার করছে: বিএনপি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এনসিপি অপপ্রচার করছে: বিএনপি
মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবশে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি- (এনসিপি) নেতারা অপপ্রচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা মহানগর উত্তরের আওতাধীন রূপনগর থানার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এমন অভিযোগ জানান সচেতন নাগরিক সমাজ সহ নেতৃবৃন্দরা। 

জাতীয় নাগরিক পার্টিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুনর্বাসন এবং গত ১৪ এপ্রিল সোমবার রূপনগরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর প্রেম সংক্রান্ত ঝামেলা নিয়ে এনসিপি নেতাদের বিশৃঙ্খলার হামলা দলীয়ভাবে নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালানোসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক এর বিরুদ্ধে ভূল তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তরের রূপনগর থানার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকের পক্ষ থেকে এ প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে রাজধানীর রূপনগরের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের পাশাপাশি প্রায় ২০ হাজার বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়। তাদের অভিযোগ, গত ১৫ এপ্রিল রূপনগরে ঘটে যাওয়া প্রেম ঘঠিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্তরে অপপ্রচার চালায় এনসিপি। যেখানে প্রেমঘঠিত ঘটনাকে উল্লেখ না করে বিএনপি চাঁদাবাজি করে এই মর্মে বক্তব্য দেয় এনসিপি নেতারা। যেখানে ক্লিন ইমেজের নেতা আমিনুল হকের বিরুদ্ধেও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়। এমন বক্তব্যের অভিযোগ জানিয়ে বিএনপি নেতারা বক্তব্যে বলেন, বিএনপি নেতা আমিনুল হকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এনসিপি অপপ্রচার করছে।

এ সময় বিএনপি নেতারা আরও বলেন-আমিনুল হকের বিরুদ্ধে যা-ই করেন, যত অপপ্রচার করেন তার কিছুই করতে পারবেন না। আমরা তৃণমূল বিএনপি নেতা-কর্মীরা আমিনুল হককে মাথায় করে রাখব। আপনারা ভালো কাজ করার সুযোগ দেন, ভালো কাজকে অ্যাপ্রিশিয়েট করেন। কোনো ব্যক্তি খারাপ কাজ করলে তার বিরুদ্ধে বলেন। কিন্তু একজন ভালো মানুষ ও দক্ষ সংগঠকের বিরুদ্ধে আপনারা এমন অপপ্রচার করতে পারেন না। 
এ সময় বিএনপি নেতারা এনসিপি নেতাদের বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানায় এবং পাশাপাশি তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, রূপনগরের সচেতন নাগরিকসহ বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রায় ২০ হাজারের অধিক লোক নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১১ নম্বর থেকে মিরপুর অরজিনাল ১০ হয়ে প্রশিকার মোড় দিয়ে রূপনগর আবাসিক মোড়ে এসে শেষ হয়। 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম মন্টুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন মহানগর সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন, মহানগর সদস্য শামীম পারভেজ, রেজাউর রহমান ফাহিম, হাফিজুর রহমান শুভ্র, হুমায়ুন কবির রওশান, নূরুল হুদা ভূইয়া নূরু, আশরাফুজ্জাহান হাহান, আবুল হোসেন আব্দুল, মাহবুবুর রহমান, তাসলিমা রিতা, স্বেচ্ছাসেবক দল মহানগর সভাপতি শেখ ফরিদ হোসেন, ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিম সভাপতি রবীন খান, সাধারণ সম্পাদক আকরাম আহমেদ, রুপনগর থানা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল হক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জি. মজিবুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমেদ রাজু, শেখ হাবিবুর রহমান হাবিব, থানা সদস্য খান মুরাদ হোসেন, পল্লবী থানা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হোসাইন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোকছেদুর রহমান আবির, আশরাফ গাজী, আনিছুর রহমান, কাফরুল থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আকরামুল হক, সাব্বির দেওয়ান জনি, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মো. আবদুস ছালাম, বানানী থানা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইমান হোসেন নূর, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মীর কামাল হোসেন, আদাবর থানা বিএনপি আহ্বায়ক সাদেক হোসেন স্বাধীন, বিমানবন্দর থানা বিএনপি আহ্বায়ক মনির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন দিলু, মহিউদ্দিন তারেক, মন্জুর হোসেন পাটোয়ারী, বশির আহমেদ, তুরাগ থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক হারুনুর রশিদ খোকা, মো. চান মিয়া, থানা আহ্বায়ক কমিটি সদস্য আব্দুল আলী, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মোবারক হোসেন, দেওয়ান সি এম আনোয়ার হোসেন, ভাষাণটেক থানা বিএনপি আহ্বায়ক আব্দুল কাদির, রুপনগর থানা বিএনপির ৭ নং ওয়ার্ড সভাপতি শফিকুর রহমান মামুন, সাধারণ সম্পাদক খোকন মাদবর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, পল্লবীর ৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, পল্লবী থানা যুবদলের আহ্বায়ক হাজী নূর সালাম সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়া, রুপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কায়সার হামিদ, সদস্য সচিব শামীম আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল আলম টুটুল, যুবদল রূপনগর থানার আহ্বায়ক সোয়েব খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাঈম হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মাসুদুর রহমান মাসুদ খান, আদাবর থানার ৩০ নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, দারুসসালাম থানা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন ভুট্টো, শাহআলী থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন দেওয়ান গিয়াস ও সোলায়মান দেওয়ান সহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

 

ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে গণমিছিল সফল করার আহ্বান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৬ পিএম
ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে গণমিছিল সফল করার আহ্বান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের সংসদে পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল বাতিল এবং দেশটিতে মুসলিম নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ২৩ এপ্রিল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান যেকোনো মূল্যে সফল করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সাভারের জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সংস্থা জামে মসজিদে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা জেলা (উত্তর) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। এতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা জেলার (উত্তর) সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইন কাসেমী সভাপতিত্ব করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী বলেন, ভারতে ওয়াক্ফ আইন সংশোধন করে মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থানের মতো পবিত্র সম্পদ হরণ করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশীর হক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ভারতের নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো। তাই ২৩ এপ্রিলের গণমিছিল যেকোনো অবস্থাতে সফল করতে হবে। এটি আমাদের ইমানি, নৈতিক ও জাতীয় দায়িত্ব।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মজলুমদের পাশে গোটা বিশ্ব দাঁড়িয়েছে, আমরাও দাঁড়িয়েছি। তবে ভারতের মুসলমানদের পক্ষে আমাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।’ 

এ সময় জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক ও সাভার থানা সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহফুজ হায়দার কাসেমীর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি ফারুক হোসাইন, সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন কাসিম, সহসভাপতি ও সাভার থানা সভাপতি হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ, মাওলানা সুলতান মাহমুদ, মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নাজমুল ইসলাম শাকিল, মাওলানা মাহমুদুল হাসান আওলাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান প্রমুখ। 

 

নতুন দলের নিবন্ধনে আরও ৩ মাস সময় চায় এনসিপি

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম
নতুন দলের নিবন্ধনে আরও ৩ মাস সময় চায় এনসিপি
জাতীয় নাগরিক পার্টি

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এখনো নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেনি নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। অথচ ইসির গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আগামী রবিবার শেষ হচ্ছে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর আবেদন করার সময়। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দলটির পক্ষ থেকে ইসিকে নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা আরও তিন মাস (৯০ দিন) বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে রবিবার সময় বাড়ানোসহ কয়েকটি দাবিতে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করবে এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল। দলটির যুগ্ম-আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঘোষিত সময় পর্যন্ত অপেক্ষার পর সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে কমিশন। 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান জানিয়ে ইসি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে গত ১০ মার্চ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮ দিন পেরিয়ে গেলেও ইসিতে আবেদন জমা দিয়েছে মাত্র ১১টি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে বাংলাদেশ কনজারভেটিভ পার্টি ছাড়া বাকি ১০টি দলই আবেদন করেছে সময় বাড়ানোর জন্য। ‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি দল নিবন্ধনের আবেদন করলেও তা যথাযথ না হওয়ায় গ্রহণ করেনি ইসি। 

আইন অনুযায়ী, নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট দলকে ইসি থেকে নিবন্ধন নিতে হয়। এনসিপি আগামী নির্বাচনে নিজেদের প্রতীকে ভোট করতে চাইলে তাদেরকে ইসির নিবন্ধন নিতেই হবে। নিবন্ধনের শর্ত পূরণ দলটির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার সময় বাড়ানো হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার খবরের কাগজকে বলেন, ‘সময় বাড়ানোর এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জমা পড়া আবেদন দলগুলোর মধ্যে অনেকে বাড়তি সময় চেয়েছেন। এ বিষয়ে রবিবার আমরা কমিশনের সিদ্ধান্ত নেবো।’ 

নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ছিলো শর্ত সহজ/শিথিল করার। একই দাবি এসেছে দলগুলোর পক্ষ থেকেও। আপনাদের সিদ্ধান্ত কী-এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়েও আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত সময় অনুযায়ী আমরা ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ৩ মাসের মধ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করে আমরা আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করতে চাই। তাই আমাদের হাতে সময় কম।’

বৃহস্পতিবার নিবন্ধন আবেদনের সময়সীমা অন্তত ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে ইসি সচিবের দপ্তরে চিঠি দিয়েছে এনসিপি। দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানিয়েছেন, ‘চিঠিতে আমরা মৌলিক সংস্কার ও দল নিবন্ধনের জন্য সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি। একই সঙ্গে আমাদের একটা টিম আগামী রবিবার দুপুর ১২টায় সিইসির সঙ্গে দেখা করে উদ্বেগগুলো জানাবে। সেখানেও নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশকিছু বিষয়ে আলোচনা হবে।’

এনসিপির চিঠিতে বলা হয়েছে, মৌলিক সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি এবং বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী করার আগেই ইসির রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করায় তা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

এনসিপি মনে করছে, ২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তাবলিসমূহ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। আগের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে প্রণয়ন করা হয়। এজন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রস্তাবকে সমর্থন করে জেলা পর্যায় ১০ শতাংশ এবং উপজেলা পর্যায়ে ৫ শতাংশ কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি ৫ বছরে নিবন্ধিত সব দলের নিবন্ধন নবায়ন বাধ্যবাধমূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধনের পর নিবন্ধন কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা এবং বিদ্যমান নিবন্ধিত দলগুলোর নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক মনে করছে এনসিপি।

২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের জন্য নিবন্ধন প্রথা চালু করে নির্বাচন কমিশন। আইন অনুযায়ী, প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে নিজ দলের প্রতীক নিয়ে ভোটে অংশ নিতে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী নতুন দলগুলোর কাছে আবেদন চায় সংস্থাটি। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৫৪টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে ৫টি দলের নিবন্ধন বাতিল করে ইসি। দলগুলো হলো- জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। ২০১৮ সালেও শর্ত পূরণ না হওয়ার কারণ দেখিয়ে আবেদনকারী ৭৬ দলের কোনটিকেই নিবন্ধন দেয়নি ইসি। পরে ২০১৯ সালে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় ববি হাজ্জাজের দল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম।