ঢাকা ১১ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে: খেলাফত মজলিস

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে: খেলাফত মজলিস
ছবি: সংগৃহীত

দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে- বলে মন্তব্য করেছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। তিনি বলেছেন, লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ৭১ এর স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সমাজিক সুবিচার নিশ্চিত করতে হবে। 

বুধবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর পুরানা পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সভার আয়োজন করে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।

আবদুল কাদের বলেন, ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার দুঃশাসনের পতনের পর সুযোগ এসেছে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে একটি অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল, সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে অগ্রসর হতে হবে।

সভায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের ও ২৪ এর ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামানা করে এবং আহতের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসাইনের পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম-মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, মহানগরী সহ-সভাপতি মাস্টার মল্লিক কিতাব আলী, সহ-সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হুম কাজী আরিফুর রহমান, মাওলানা সরদার নেয়ামত উল্লাহ, মুহাম্মদ সেলিম হোসাইন, মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মুফতি ফরিদ আহমদ হেলালী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক আহসান আহমদ খান, ইসলামী যুব মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সেক্রেটারি সিরাজুস সালেহীন প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

রওশন এরশাদের সুন্দর মহলকে ‘দালাল মহল’ করার দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৩ এএম
রওশন এরশাদের সুন্দর মহলকে ‘দালাল মহল’ করার দাবিতে মানববন্ধন
ময়মনসিংহে রওশন এরশাদের বাড়ির নাম ‘দালাল মহল’ করার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: খবরের কাগজ

ময়মনসিংহে রওশন এরশাদের বাড়ির নাম ‘দালাল মহল’ করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের ফায়ার সার্ভিস রোডে অবস্থিত ভবনটির সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্টদের সহচর রওশন এরশাদের ‘সুন্দর মহলকে’ বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তারা এ ভবনটিকে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ সরকারকে গণহত্যায় পুরোপুরি সমর্থন দিয়েছে। 

এখন তারা নিজেদের বাঁচাতে সুশীলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সুশীলতার আড়ালে তারা আওয়ামী লীগকেই পুনর্বাসন করতে চায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল নাকিব বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যতগুলো বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে, সবগুলোতেই রওশন এরশাদ শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানিয়েছেন। গণতন্ত্র হত্যাকারীদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।’

সংগঠনটির মহানগর শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ ওলি বলেন, রওশনের এই ভবনে রেস্তোরাঁ করতে দেওয়া হবে না। আমরা এই ভবনকে সুন্দর মহল হিসেবে দেখতে চাই না। এই ভবনের নাম পরিবর্তন করে দালাল মহল করতে হবে। কারণ, জাতীয় পার্টি সবসময় আওয়ামী লীগের দালালি করেছে।

মানববন্ধনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।

কামরুজ্জামান মিন্টু/সুমন/

মুসলিম নিধনে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩১ পিএম
মুসলিম নিধনে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার: মামুনুল হক
ভারতের সংসদে সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল-২০২৫ বাতিল এবং চলমান মুসলিম নিধন বন্ধের দাবি’তে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতারা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে মুসলিম নিধনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে একের পর এক আইন বাস্তবায়ন করছে মোদি সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যেকোনো কর্মসূচি গ্রহণ করুন। দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন। বাংলাদেশের মুসলিমরা আপনাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে। বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল বাতিল ও মুসলিম নিধন বন্ধ না করলে প্রয়োজনে আমরা ভারত অভিমুখে লংমার্চ ঘোষণা করব।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে ‘ভারতের সংসদে সদ্য পাস হওয়া বিতর্কিত ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল-২০২৫ বাতিল এবং চলমান মুসলিম নিধন বন্ধের দাবি’তে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। পরে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হয়।

মামুনুল হক বলেন, সারা পৃথিবীতে আজ দু'টি জনপদ সবচেয়ে বেশী সমালোচিত। একটি গাজা ভুখন্ড-যেখানে বর্বর ইসরাইলের গণহত্যা চলছে। আরেকটি হল ত্রিশ কোটি মুসলমানের ভারত। সেখানে মোদী সরকার ভারতকে মুসলিম শূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভারত সরকার মুসলিমবিরোধী নীতি অব্যাহত রাখলে উপমহাদেশজুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, ভারতের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সব পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

অন্তর্বর্তী সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করে মামুনুল হক বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনে যারা আছেন, তাদের পরিচয় নিয়ে আমরা সন্দিহান। সরকার ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিলে এক দিনের জন্যও তারা ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না। অবিলম্বে এই কমিশন বাতিল করে গণমানুষের পক্ষে অবস্থান নিন।’

ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল শান্তিনগর মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। সেখান থেকে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বারিধারাস্থ ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে পাঁচ দফা সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। এতে বলা হয়, ওয়াকফ সংশোধনী বিল অবিলম্বে বাতিল, মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত, মসজিদ, মাদরাসা ও ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর পদক্ষেপ, মুসলিমবিরোধী বৈষম্যমূলক আইনসমূহ বাতিল এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশ আরও বক্তব্য রাখেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, নায়েবে আমির মাওলানা শাহীনুর পাশা, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী ও ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি জাহিদুজ্জামান, খেলাফত শ্রমিক মজলিসের সদস্যসচিব আবু সাইদ নোমান, ছাত্র মজলিসের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল আজিজ, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রাজি, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ছানাউল্লাহ আমিনি প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/মাহফুজ

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির মশাল মিছিল
বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মশাল মিছিল করে এনসিপি। ছবি: খবরের কাগজ

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে মশাল মিছিল ও বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় মিছিল-সমাবেশ করে দলটি।

মশাল মিছিলপূর্ব সমাবেশে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার বলেন, ‘জুলাই মাসে আপনারা (পুলিশ সদস্যরা) আওয়ামী লীগের ফাঁদে পড়ে গণহত্যায় অংশ নিয়েছেন। এই পাপ মোচনের একটাই রাস্তা, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেন। ঢাকা শহরের যেখানে যেখানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা জড়ো হচ্ছেন, তাদের গ্রেপ্তার করেন। এটাই একমাত্র রাস্তা। এটা যদি নিষ্ঠার সঙ্গে করেন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা আপনাদের বুকে টেনে নেবে। যদি আপনাদের নাকের ডগা দিয়ে আওয়ামী লীগ মিছিল করতে পারে, তা হলে আমরা ধরে নেব আপনারা প্রশ্রয় দিচ্ছেন। আপনাদের পরিষ্কার করতে হবে, আপনারা আওয়ামী লীগকে রাস্তায় নামতে দেবেন কি দেবেন না। জাতীয় নাগরিক পার্টি ঢাকা মহানগরের রাজপথে থাকবে, কোন আওয়ামী লীগ আসে আমরা দেখব।’

আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, ‘কেউ কেউ আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করতেছেন। ভাবতেছেন জনগণ নাই ফাঁকা মাঠে গোল দেব, আপনাদের বলতে চাই ১৫ বছর গোল দিতে পারেন নাই। এখন আর গোল দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। জনগণ কিন্তু শক্ত ডিফেন্স তৈরি করেছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, কারচুপির বিরুদ্ধে, লুটপাটের বিরুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। যারা এলাকায় চাঁদাবাজি করতে চাইবেন আর ঢাকায় বিভিন্ন সেমিনারে সুশীল হয়ে মাঠগরম করবেন এই জিনিস আর হচ্ছে না।’ এ সময় তিনি কুয়েটের ভিসিকে না সরালে কুয়েট অভিমুখে লংমার্চ করতে বাধ্য হবেন বলে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দেন। 

বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে দলের যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে চান কি না আপনাদের স্পষ্ট করতে হবে।

বিকালে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে আয়োজিত সমাবেশে দলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘খুনি হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এই বাংলাদেশে কীভাবে আমরা নির্বাচনের কথা বলি। ওই খুনি হাসিনার খুনি শব্দটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেওয়ালে লেখা রয়েছে বাংলাদেশে আর স্বৈরাচার চাই না। রক্তের বিনিময়ে যেই স্বৈরাচার হটানো হয়েছে সেই স্বৈরাচার আমরা আর চাই না। এই স্বৈরাচার কখনো একা হয়ে উঠতে পারে না, হাসিনা কখনো একা খুনি হতে পারে না। যারা এই হাসিনাকে খুনি হাসিনা হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে তাদের বিচার ব্যতীত এই বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনের আলাপ করা যেতে পারে না।’

 

সংস্কারের যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত তা প্রকাশের দাবি বিএনপির

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৩ পিএম
সংস্কারের যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত তা প্রকাশের দাবি বিএনপির
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশে রাজনৈতিক দলগুলো কোথায় ঐকমত্য পোষণ করেছে তা জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নতুনভাবে ঐকমত্যের কোনো প্রয়োজন নেই। ঐকমত্য প্রয়োজন সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সংস্কারের বিষয়ে প্রত্যেকটি দল কমিশনে যে প্রস্তাব জমা দিয়েছে, তার মধ্যে যেসব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে সেগুলো জাতিকে জানানো। কেন জানাচ্ছেন না? যে বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা জাতিকে জানিয়ে সনদে সই করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো কাজ নেই।’

বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) সঙ্গে লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। পরে সন্ধ্যায় গণফোরামের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।

সংস্কার মানা না মানা নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি সংস্কার চায় না- একটি গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এগুলো জলঘোলা ছাড়া কিছুই না। আপনাদের (সরকার) দায়িত্ব হচ্ছে কারা কোথায় কোথায় একমত হয়েছে তা জাতিকে জানানো। এ জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার দরকার নেই।’

বৈঠক শেষে এনডিএমের চেয়ারম‌্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্য সবদলের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সনদ তৈরি করতে হবে। এই সনদ তৈরির জন্য ৩০ দিনের বেশি সময় প্রয়োজন নেই। সনদ তৈরি হয়ে গেলে নির্বাচনে কোনো ধরনের বিলম্ব হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ সবাই চাই দ্রুত একটি নির্বাচন হয়ে যাক।’

বিএনপির পক্ষে থেকে দুটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। অপরদিকে, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল আলোচনায় অংশ নেয়। এনডিএমের বৈঠক শেষে গণফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করে।

শফিকুল ইসলাম/এমএ/

স্বৈরাচারের নির্যাতনের প্রতিশোধ হবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে: তারেক রহমান

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১০ পিএম
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২২ পিএম
স্বৈরাচারের নির্যাতনের প্রতিশোধ হবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে: তারেক রহমান
রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মশালায় ভার্চুয়্যালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: খবরের কাগজ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা স্বৈরাচারের অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে। আমার ওপর যে জুলুম হয়েছে, অত্যাচার হয়েছে আমার মায়ের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে, যে জেল জুলুম হয়েছে, আমার ভাইকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিশোধ নিতে চাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ ও জনসম্পৃক্তি রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কর্মশালায় ভার্চুয়্যালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন দায়িত্ব পালন করেছেন তখন গুরুত্ব দিয়েছেন কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের সমস্যা, নিরাপত্তার সমস্যা, যাতায়াতের সমস্যা, খাদ্যের সমস্যা, কীভাবে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো যায় এসব ব্যাপারে তারা জোর দিয়েছেন। বিএনপির সময় নারীদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। আইন ব্যবস্থাকে স্বাধীন করা হয়েছে। যে ব্যবস্থাগুলো প্রতিদিন মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত সেগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ এবং দেশের মানুষ। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য নিয়েও আলোচনা করেছি। নিশ্চয়ই এগুলোই  দেশের মানুষের চাওয়া।

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি এখানে অনেক আলোচনা করেছেন গ্রামে ফিরে গেলে সাধারণ মানুষ জিজ্ঞেস করবে কী বাহে কী আলোচনা করলেন। তোমাদেরকে যদি ভোট দিয়ে সরকার গঠন করতে দেই তোমরা আমাদের জন্য কী করবে এমন কথা বলবে। আপনাদের বিএনপির এই মিটিংয়ে কী আলোচনা হল এগুলো জিজ্ঞাসা করবে। তাই যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের দরবারে নিয়ে যাই।

তারেক বলেন, আমাদের সেই অদৃশ্য প্রতিপক্ষ আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে সেই সঙ্গে আরও বিভিন্ন প্রতিপক্ষ তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। কাজেই দেশের স্বার্থে আমরা যত বেশিসংখ্যক এই ৩১ দফা মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবো এবং আমরা যত বেশি ঐক্যবদ্ধ হবো, যত বেশি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাস করব আমাদের প্রতিপক্ষকে জোরালোভাবে মোকাবেলা করতে পারব। তত রাজনৈতিকভাবে আমরা শক্তিশালী হব।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও  বলেন, আপনার এখানে যতজন আছেন প্রতিজনে একটি করে মিথ্যা মামলা ও জুলুমের শিকার হয়েছে। তাই আমরা জুলুম করে টিকে থাকতে চাই না। ফ্যাসিস্ট সরকার যা করেছে আমরা তা করতে চাই না। এই দলকে অর্থাৎ বিএনপিতে মানুষ আস্থা রাখে। তারা মনে করে দেশের জন্য যদি কিছু করা সম্ভব হয় পারলে বিএনপি পারবে। এই জনগণের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। জনগণের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব একা নিলে হবে না। শহিদ জিয়া, খালেদা জিয়ার আদর্শকে যারা বিশ্বাস করে প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন, আপনি ভালো কাজ করতে চাইলে ভালো কাজ করার আগ্রহ থাকলে জনগণ আপনার পক্ষে রায় দেবে। আজকের এই আলোচনা আপনার এলাকার প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন রাজপথে থেকেছেন, মিছিল মিটিং করেছেন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। এবার আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করি দেশ গঠনের জন্য, ৩১ দফার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করি।

এর আগে নেতা কর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। তিস্তা এই এলাকার ৩ কোটি মানুষ জড়িত। তিস্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এটি নিয়ে রাজনীতি হয়েছে কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন করেনি। দেশের স্বার্থ চিন্তা করে বিএনপি এগিয়ে এসেছে। যেভাবে করলে মানুষ উপকৃত হবে সেভাবে করবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল নাটর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফারজানা শারমিন পুতুল, রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু প্রমুখ।

সেলিম সরকার/এমএ/