
নির্বাচনের কমিটমেন্ট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, 'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ নতুনভাবে স্বাধীনতা পেয়েছে। এ অবস্থায় দেশে নির্বাচন হওয়ার আগে তিনটি শর্ত পূরণ হতে হবে। মৌলিক সংস্কার, রাজনৈতিক সহাবস্থান ও গণহত্যার বিচারের শর্ত পূরণ করতে হবে। তা না হলে নির্বাচনের কমিটমেন্ট ঠিক থাকবে কি না তা আল্লাহই জানেন।'
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, 'অনেক কষ্টে যা এসেছে এতে তিনটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর প্রধান হচ্ছে দৃশ্যমান গ্রহণযোগ্য মৌলিক সংস্কার। আমরা তা সংস্কার কমিশনের কাছে দিয়েছি। এসব পরিবর্তন ছাড়া কোনো নির্বাচন হলে তা গণতন্ত্রের কোনো ভিত্তি গঠন হবে না। এ নির্বাচনও তাহলে আগের মতো খারাপ হবে। হাজার হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে যে বিজয় এসেছে সেখানে এই পরিবর্তন খুবই জরুরি।'
তিনি বলেন, 'সংস্কারের প্রধান অংশীজন হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। এতে যদি তারা সহযোগিতা করে তাহলে দ্রুত নির্বাচনে পরিবেশ হবে। তারা যদি সহযোগিতা না করে যদি গতানুগতিক নির্বাচন হয় তাহলে আগের মতো নির্বাচন হবে। যার দায় রাজনৈতিক দলগুলোকে নিতে হবে।'
শফিকুর রহমান বলেন, দ্বিতীয়ত, গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। যাতে মানুষের আস্থা ফিরে আসে। শহিদের আত্মা যেন প্রশান্তি পায়। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্মানবোধ থাকতে হবে। যাতে এমন না হয়, আমি জিতে গেলেই নির্বাচন সুষ্ঠু, না জিতলে দুষ্ট এমন মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এর জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এটি সরকারের তরফ থেকেই হতে পারে, রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে হতে পারে, সিভিল সোসাইটির উদ্যোগেও হতে পারে।'
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির আগে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হলে তখনও নির্বাচন হতে পারে। আওয়ামী লীগ গণহত্যা চালিয়েছে, ভোটের অধিকার নষ্ট করেছে। এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগকে জনগণ গ্রহণ করবে কিনা, সেটি বড় প্রশ্ন।
ইউরোপ সফর প্রসঙ্গে তিনি জানান, সফরে গণতন্ত্রকে টেকসই করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে কথা হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা থেকে আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হতে পারে, সে বিষয়ে আমরা কথা বলেছি। পাশাপাশি আমরা তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।'
জামায়াতে আমির বলেন, 'রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা চেয়েছি। সবাই মিলে চেষ্টা করলে মায়ানমার বাধ্য হবে তাদের ফেরত নিতে। অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিদেশ যাওয়ায় অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করেন। তাই স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য তাদের সহায়তা চেয়েছি। তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন। সরকারকে বলব, এই বিষয়ে উদ্যোগ নেন'।
শফিকুল/মেহেদী/