ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

জনগণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমিনুল হক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:২৬ পিএম
জনগণ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায়: আমিনুল হক
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জনগণ একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জিয়া আন্তঃ থানা ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ এর উত্তরা পশ্চিম থানা বনাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার মধ্যকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

এসময় আমিনুল হক বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্রুত সময়ের ভিতরে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ ভোটের আশায়, সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে বিদায় করেছে।

একটি মহল তারা ক্ষমতার মোহে পরে নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময়ে কেউ ভোট দিতে পারে নাই। মানুষ এখন ভোট দিতে চায়। মানুষের ভোটের অধিকার নষ্ট করার জন্য পিছিয়ে দেওয়ার জন্য একটি গোষ্ঠী নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। 

পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে আন্দোলন করব উল্লেখ করে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মানুষের ভোটাধিকার ও দেশের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথে আন্দোলন করেছে সংগ্রাম করেছে। প্রয়োজনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও রাজপথে নেমে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করব। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি, এবিএমএ রাজ্জাক, আকতার হোসেন, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন আফাজ, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, শামীম পারভেজ, জিয়াউর রহমান জিয়া, হাফিজুর রহমান শুভ্র, নূরুল হুদা ভূইয়া নূরু, হান্নানুর রহমান ভূঁইয়া, তাসলিমা রিতা, উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপি নেতা মো. আবদুস ছালাম, মিরপুর থানা বিএনপি আহ্বায়ক হাজী আব্দুল মতিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী দেলোয়ার হোসেন দুলু, বিমানবন্দর থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মহিউদ্দিন তারেক, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্মআহ্বায়ক মোবারক হোসেন দেওয়ান প্রমুখ।

উত্তরা পশ্চিম থানা বনাম তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার মধ্যকার ম্যাচে উত্তরা পশ্চিম থানা ১-০ গোলে জয়ী হয়।

 

নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়, বিচার স্বাধীনভাবে চলবে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:১২ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০২:১২ পিএম
নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়, বিচার স্বাধীনভাবে চলবে: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এখন জাতীয়ভাবে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয় এবং বিচার স্বাধীনভাবে চলবে। এই সরকারের পরে যারা সরকারে আসবে, তাদের সেটা টেনে নিয়ে যেতে হবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। সেগুলোর বিচার করতে গেলে অনেক সময় লাগবে এবং সেই সময়ে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে বিচারের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে। সুতরাং, বিচারের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক সরাসরি আছে, সেটা বলা ঠিক হবে না। আর বিচারের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেওয়া অবিচারের শামিল। কারণ, বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া আমরা সবাই জানি এবং সুবিচার করতে হলে সময় দিতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশে কেউ অপরাধ করে পার পাবে না। দেশে এবং বিদেশে বসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অস্থিরতা সৃষ্টির অনেক চেষ্টা হয়েছে। অস্থির পরিস্থিতি বন্ধের উপায় হলো, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠিত করা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সেটি যত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে, ততই জাতির জন্য মঙ্গল।’

প্রধান উপদেষ্টা জবাব দেন না, মিষ্টি হাসি দিয়ে বিদায় করে দেন
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘একটিমাত্র রাজনৈতিক দল নির্বাচন চায়- অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তার এ বক্তব্যের বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি এবং তিনি কোনো জবাবদিহি করেন না। এমনকি সামনাসামনি প্রশ্ন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনি প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বিদায় করে দেন অথবা কোনো কথাই বলেন না।’

প্রশ্ন রেখে মান্না বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগে একটিমাত্র দল নির্বাচন চায়। এমন একটা ভুল করা কি অধ্যাপক ইউনূসের জন্য সংগত? এটা কি মানায় তার কাছে? মানে তিনি ভুল করে বলেছেন- এমন কি হতে পারে? তিনি জানতেনই না যে, ১টারও বেশি প্রায় ২৯টা দল ইতোমধ্যে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট চেয়েছে। এই ভুল তো তার হওয়ার কথা নয়। তিনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি।’

নির্বাচনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার
এদিকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেছেন, ‘নির্বাচনই বাংলাদেশের বড় সংস্কার। নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না এবং সবকিছু শেষও হবে না। কিন্তু নির্বাচনই জনগণকে ক্ষমতায়িত করার একমাত্র পথ। নির্বাচনই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার। আর বাকি সব সংস্কার সময়ের ব্যাপার।’

নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে পার্থ বলেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা আমরা বলিনি, আপনি বলেছেন ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা। আমরা বলেছি, আপনার সেই ওয়াদা আপনি রাখেন। আমাদের মুখ থেকে ডিসেম্বরের কথা আসেনি।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফওজুল হাকিম, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:১৩ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বাজেট দিয়েছে সরকার: বিএনপি
ছবি: খবরের কাগজ

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে গতানুগতিক বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার করারও দাবি জানিয়েছে দলটি। 

বুধবার (৪ জুন) বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা জানান। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি। 

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'দেশে এখন যেহেতু সংসদ বা গণতান্ত্রিক কোন সরকার নাই- আমরা আশা করে ছিলাম অন্তবর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে এবং সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে বাজেট ঘোষণা করবে। কিন্তু সরকার তা করেনি। বাজেট ঘোষণাটা পুরোপুরি গতানুগতিক।'

আমীর খসরু বলেন, 'শিক্ষাক্ষেত্রে কর আরোপের কোনো যুক্তি নেই। আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষার কর মওকুফ করা হবে।' 

তিনি বলেন, 'বাজেটে আমাদের আউট অফ বক্স চিন্তা করতে হবে। গতানুগতিক বাজেট থেকে বের হওয়ার সুযোগ ছিল।' 

বাজেট প্রক্রিয়া সংস্কার প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, 'বাজেট অনুমোদনের জন্য প্রচলিত সাংবিধানিক পদ্ধতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। জবাবদিহিতা এবং বাংলাদেশে সংসদীয় তদারকি শক্তিশালী করার জন্য মৌলিক সাংবিধানিক ও পদ্ধতিগত সংস্কারও করা হবে। সংসদীয় কমিটিকে শক্তিশালী করা, বচ্ছতা এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণ, নির্বাচনপূর্ব কেয়ারটেকার সরকারের জনা পরিষ্কার নির্দেশিকাসহ বিস্তৃত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'একদিকে মুলস্ফীতি অন্যদিকে জনগণের আয় কমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্যাক্স বাড়িয়ে দিলে জনগণের ওপর প্রভাব পড়বে। তাই জনগণের জীবনযাত্রার মান বাজেটের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত।  কিন্তু আমরা বৈষম্যের জন্য আন্দোলন করেছি। বাজেট উল্টো দিকে দেখছি।' 

আমীর খসরু বলেন, 'আমরা ক্ষমতায় আসলে আমাদের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করব। কোনো কিছু বাতিল প্রসঙ্গ আসবে না।' 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুব হোসেন শ্যামল, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ। 

শফিকুল/মেহেদী/

প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কমবে না মূল্যস্ফীতি

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:০৮ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ০১:১০ পিএম
প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জিত হবে না, কমবে না মূল্যস্ফীতি
খবরের কাগজ ইনফো

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে দেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। 

মঙ্গলবার (৩ মে) তাদের কেউ সংবাদ সম্মেলন করে, কেউ গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান।

সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা।

তিনি বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে এবং মধ্য মেয়াদে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আমরা আশা করছি।’

অন্যদিকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামার আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এ প্রত্যাশার কথা বলেন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, ‘এই বাজেটের প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী। প্রবৃদ্ধি নিম্নগামী হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা সম্ভব হবে না, স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হবে এবং কম রাজস্ব আদায় হবে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত এই হার ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ পর্যন্ত আনা সম্ভব হয়েছে। সামনের দিকে মূল্যস্ফীতির হার কমবে এমন কোনো লক্ষণ আমরা দেখছি না।’

প্রবৃদ্ধির নিম্নগামী অবস্থানের কারণে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দাভাব দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করে তিনি বলেন, ‘প্রাক্কলিত মূল্যস্ফীতি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত নয়। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর অবস্থায় পৌঁছাবে।’

বর্তমান বাজেট ‘বাস্তবায়নযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে জি এম কাদের আরও বলেন, ‘রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, তা অবাস্তব বা কাছাকাছি যাওয়াও সম্ভব নয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে। যতদিন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন বিদেশি ঋণ বা সাহায্য পাওয়া নিয়েও সংশয় আছে। ফলে বাজেট ঘাটতির আকার অনেক বড় হবে।’ 

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বৈষম্য দূর করার কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না থাকায় দেশে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য আরও বাড়বে।’ বাম জোট নেতারা বলেন, ‘এই বাজেটে বৈষম্যহীনতা ও টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হলেও বাস্তবে মুক্তবাজারের পুরোনো ধারাবাহিকতার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট বৈষম্য, বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগসংকট কোনোটাই মোকাবিলা করতে পারবে না।’

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি এবং ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকার সুদ পরিশোধের বোঝা রয়েছে। স্পষ্টত এ বোঝা তথা করের চাপ পড়বে জনগণের ওপর।’
 
উচ্চ মূল্যস্ফীতির বাস্তবতায় ব্যক্তি করদাতাদের করমুক্ত সীমা না বাড়ানো এবং ই-কমার্সসহ বিভিন্ন খাতে কর বৃদ্ধির প্রস্তাব সরাসরি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলবে বলে মন্তব্য করেন খেলাফত মজলিসের নেতারা।

প্রয়োজনে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথের আয়োজন করা হবে: ইশরাক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ১০:২৭ এএম
প্রয়োজনে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে শপথের আয়োজন করা হবে: ইশরাক
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে অবিলম্বে তার শপথ গ্রহণের আয়োজনের ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ঢাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়েই শপথের আয়োজন করা হবে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরের পর ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনে অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, মেয়রের চেয়ারে কে বসবেন তা নির্ধারণ করবেন ঢাকা দক্ষিণের বাসিন্দারা। নগর ভবনে বহিরাগতদের কোনো ঠাঁই হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একই সঙ্গে ঈদ সামনে রেখে আজ থেকে আন্দোলন স্থগিতের কথাও জানান ইশরাক হোসেন। বলেন, দাবি আদায় না হলে এই ছুটির পর আবারও আন্দোলন করা হবে। সেই আন্দোলন হবে আরও কঠোর।

ইশরাক বলেন, এই নগর ভবনে কোনো বহিরাগত প্রশাসক ও কোনো উপদেষ্টা প্রবেশ করতে পারবেন না। ঈদে নগরবাসীর সেবা নিশ্চিত করা ও জনগণের ভোগান্তি বিবেচনায় নিয়ে আপাতত কর্মসূচি শিথিল করা হয়েছে। সরকার এর মধ্যে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে জনগণই তাদের মেয়রকে শপথ পড়িয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন।

অবিভক্ত ঢাকা সিটির মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক মাস দু-এক আগে আদালতের রায়ে মেয়র হওয়ার সুযোগ পান। এরপর নির্বাচন কমিশন তাকে মেয়র ঘোষণা করলেও আইনি জটিলতার কথা বলে তার শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে তার সমর্থকরা প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নগর ভবনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনকে পৌনে দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস। এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি ইশরাক। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।

এর আগে গতকাল সকাল থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা মহানগরের বাসিন্দারা।

‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নগর ভবন প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচি শুরু হয়। করপোরেশনের কর্মচারীরাও এতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেন, আদালতের রায়ের পরও ইশরাক হোসেনকে শপথ না পড়ানোর কারণে পরিষ্কার হলো যে অন্তর্বর্তী সরকার আসলে নিরপেক্ষ নয়। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে নগর ভবনের মূল ফটকে ১৫ মে থেকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। এতে কার্যত বন্ধ হয়ে আছে সিটি করপোরেশনের সব ধরনের দৈনন্দিন সেবা কার্যক্রম। বন্ধ হয়ে আছে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা।

এই বাজেটের সঙ্গে হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কী: রিজভী

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৯:৫৫ এএম
এই বাজেটের সঙ্গে হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কী: রিজভী
ছবি: সংগৃহীত

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘এই বাজেটের সঙ্গে শেখ হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কী? শেখ হাসিনা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিলেন, আপনারাও তা দিয়েছেন। এটা তো অন্তর্বর্তী সরকার, এটা ড. ইউনূসের সরকার। মানুষ জানে এ সরকার সৎ সরকার। এই সরকারের হাত দিয়ে কেন খারাপ কাজ হবে, এটা মানুষ জানতে চায়।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকীতে দুস্থদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল।

রিজভী বলেন, ‘যে লুটেরা, ব্যাংক ডাকাতদের কাছে কালোটাকা রয়েছে, তারা যদি ওনার (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) হাত দিয়ে সেই টাকা সাদা করতে পারে এবং যদি স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সেক্টর বঞ্চিত হয়, ওই সব খাতে যদি বরাদ্দ না থাকে, সামাজিক সুরক্ষা খাতে যদি বরাদ্দ কম থাকে, তাহলে মানুষের কল্যাণের কী হবে?

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের ২৩ শতাংশের ওপরে চলে যাবে শুধু প্রশাসনের বেতনের জন্য। তাহলে গরিব মানুষের জন্য, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আপনি কী রেখেছেন? লাভের গুড় তো পিঁপড়ায় খেয়ে ফেলছে। তাহলে জনগণের জন্য কী করলেন? আপনি স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছেন। বরাদ্দ বেশি দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। মানুষের ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা রাষ্ট্র দেখবে। ড. ইউনূস পৃথিবীব্যাপী অনেক কথা বলেছেন। আজকে যখন তার হাতে ক্ষমতা, তিনি তো গরিব মানুষকে ভালো রাখবেন।’

রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল ড. ইউনূসকে সমর্থন দিয়েছে। বাজেটে গরিবের জন্য বরাদ্দ নেই। গরিবকে আরও গরিব করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি কমানোর পদক্ষেপ বাজেটে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজেটে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়বে।’ 

তাঁতী দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।