ঢাকা ২৭ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
English
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

ঝটিকা মিছিলবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৭

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
ঝটিকা মিছিলবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৭
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

রাজধানীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ঝটিকা মিছিলবিরোধী অভিযানে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপিসহ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সাত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত রবিবার থেকে গতকাল সোমবার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর ধানমন্ডি, বংশাল, গোপীবাগ, কামারপাড়া, শনির আখড়া, উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
 
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাফর আলম (৬৯), তুরাগ থানার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম বাবু (৪৯), বংশাল থানার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ওয়ারেজ সিকদার (৪৮), তুরাগ থানার যুবলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহেদ আলম (৪০), যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য শহীদুল হক চৌধুরী রানা (৫৪), স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সম্প্রতি যাত্রাবাড়ী এলাকায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল সমন্বয়কারী জাহিদুল ইসলাম তুষার (৩০) ও তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি মো. রেজাউল করিম (৪৭)। 

মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সবার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে। তারা দলবদ্ধ হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নষ্ট ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির পাঁয়তারা করছিলেন। 
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

জি এম কাদেরকে চাপে ফেলতে চান বহিষ্কৃতরা

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১১:১৩ এএম
জি এম কাদেরকে চাপে ফেলতে চান বহিষ্কৃতরা
জি এম কাদের।

জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে বহিষ্কৃত নেতারা একজোট হয়ে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের অর্থাৎ জি এম কাদেরকে চাপে ফেলতে চাইছেন। দশম জাতীয় কাউন্সিলে জি এম কাদের ও তার ঘনিষ্ঠ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। তবে এতদিন তারা নিজেরাই কাউন্সিলের আয়োজন করবেন বলে যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা থেকে সরে এসেছেন। এদিকে, জি এম কাদেরের ঘনিষ্ঠ নেতারা খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, বহিষ্কৃতদের অপতৎপরতায় কিছুতেই দমে যাবেন না জি এম কাদের। সবকিছু তিনি নিয়মানুযায়ীই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 

বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে রয়েছেন জাপার সদ্য সাবেক সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে নিয়ে জাপার দশম কাউন্সিল অধিবেশন আয়োজন করে ফেলবেন বলে হাঁক দিয়েছিলেন। তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সমর্থন না পাওয়ায় এখন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তারা। বৃহস্পতিবার( ১০ জুলাই) গুলশানে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, ঘোষণা মোতাবেক জি এম কাদেরকে দলের কাউন্সিল আয়োজন করতে হবে। 

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দাবি করছেন, বহিষ্কৃত নেতা-কর্মীদের একাট্টা করে তারা দল পরিচালনা করবেন। দলটি হবে প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত ‘প্রকৃত জাতীয় পার্টি’। 

এদিকে জি এম কাদেরের অতি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসরুর মওলাসহ তিনজন গতকাল আনিসুল-হাওলাদার শিবিরে যোগ দিয়েছেন। দলটির আরও ৩০০ নেতা-কর্মী এই শিবিরে যোগ দিয়েছেন বলে তারা দাবি করেছেন। 

তবে দলছুট নেতাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন নন জি এম কাদের। তার অনুসারী নেতারা খবরের কাগজকে বলেছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মূল দল ছেড়ে গিয়ে দলছুট নেতারা কোনো সুবিধা আদায় করতে পারবেন না। 

তারা আরও বলেছেন, জি এম কাদেরকে বেকায়দায় ফেলতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ষড়যন্ত্র করছেন।

জাপার তৃণমূল নেতারা বলছেন, চেয়ারম্যানের বিপক্ষে বিদ্রোহের আভাস তারা বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই টের পেয়েছিলেন। রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে আওয়ামী লীগঘেঁষা রাজনীতি যারা করেছেন, তাদের দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশও করেছিলেন তারা। তবে দলের ভারসাম্য রক্ষায় জি এম কাদের সেসব শীর্ষ নেতাকে স্বপদে বহাল রেখেছিলেন। কিন্তু গত মে মাসে দলের প্রেসিডিয়াম সভায় সেই নেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠলে তাদের বহিষ্কার করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। 

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ প্রমাণ করতে না পেরে এখন তার ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীদের দলছুট করার পরিকল্পনা করছেন। তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সমর্থন অব্যাহত থাকায় জি এম কাদের এখনো দলের হাল ধরে রেখেছেন। তিনি কোনো পরিস্থিতিতে দমে যাচ্ছেন না। 

কাউন্সিল করার জন্য জি এম কাদেরকে চ্যালেঞ্জ
এতদিন নিজেরা কাউন্সিল অধিবেশন আয়োজন করে ফেলবেন বলে হুঙ্কার দিলেও গতকাল হঠাৎ সুর বদলে ফেলেছেন আনিসুল-হাওলাদার শিবিরের নেতারা 

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জাপার দশম কাউন্সিল আয়োজন করতে জি এম কাদেরকে আহ্বান জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘কাউন্সিল দেন। তখন দেখব আপনি কত ভোট পান আর আপনার বিপরীতে যিনি দাঁড়াবেন তিনি কত ভোট পান। দলের ভেতর আপনার (জি এম কাদের) স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাই একমত। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কারের ভয়ে অনেকে মুখে খোলেন না।’

দলের ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনোভাবেই জাতীয় পার্টিকে ভাঙতে দেওয়া হবে না। অনেক কষ্ট করে এই পার্টি করেছি। এই পার্টি যেন মুসলিম লীগ, জাসদের মতো হয়ে না যায়। সে জন্য জাতীয় পার্টিকে বড় করার চেষ্টা করছি। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, জাতীয় পার্টি ভাঙবে না। দলটি আরও বড় হবে।’ 

রুহুল আমিন হাওলাদার তার বক্তব্যে ক্ষোভ ঝাড়েন বর্তমান মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘জি এম কাদের একজন ব্যারিস্টারকে মহাসচিব করেছেন। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন যে আমরা সিনিয়ররা নাকি বেঈমানি করেছি। তার কথায় আঘাত পেয়েছি। তার উচিত, শালীনভাবে কথা বলা। তিনি যে এমপি হয়েছেন, তার পেছনে আমার কী অবদান তা যেন স্মরণ রাখেন।’ 

হুট করে দলবদল 
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সাবেক এমপি ও দলটির তিন প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, মাসরুর মাওলা ও কুমিল্লার সাবেক এমপি অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন বহিষ্কৃতদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। গতকাল গুলশানের অনুষ্ঠানেও তারা এসেছিলেন। 
লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, ‘আমি জি এম কাদেরকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করবার জন্য। কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছি।’ জি এম কাদেরের আশপাশে থাকা কিছু তথাকথিত নেতা একটা সিন্ডিকেট করে নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থে দলকে ছোট করছেন বলে তিনি দাবি করেন। বলেন, ‘তারা চায় না দল বড় হোক, ঐক্যবদ্ধ হোক।’ 

তবে দল ছেড়ে চলে যাওয়া তিন নেতা সম্পর্কে জাপার কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা খবরের কাগজকে বলেন, দলছুট নেতারা ভাবছেন নতুন দল করে নির্বাচনে যাবেন। সরকারের সহযোগিতায় তারা নির্বাচিত হবেন। এমপি হবেন এমন খায়েশ জেগেছে তাদের। তবে তাদের মনোবাসনা পূরণ হওয়ার নয়। তারা বুঝতে পারছেন না কয়দিন পরে রাজনীতির ময়দানেই নামতে পারবেন না। 

দলছুটদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: শামীম হায়দার পাটোয়ারী 
জি এম কাদের সম্প্রতি মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে দল থেকে বহিষ্কারের পর যে তিন জন নেতার মহাসচিব হওয়ার সম্ভাবনা ছিল তাদের মধ্যে লিয়াকত হোসেন খোকার নামও ছিল। অন্যদিকে, জি এম কাদেরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন মাসরুর মাওলা। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে জি এম কাদেরের বৈঠকের সময়ে তিনি উপস্থিত থাকতেন। 

এদের বিষয়ে জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী খবরের কাগজকে বলেন, ‘লিয়াকত হোসেন খোকা এবং মাসরুর মাওলা কিছুই না বলে দল ছেড়ে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেব তা পরবর্তী প্রেসিডিয়াম সভায় ঠিক করব। 

তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের মূল শক্তি দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাদের অকুণ্ঠ সমর্থনই দলে তার অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করবে।’ 

 

বিভ্রান্তি দূর করতেই নির্বাচনের প্রস্তুতির ঘোষণা

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪১ এএম
আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪২ এএম
বিভ্রান্তি দূর করতেই নির্বাচনের প্রস্তুতির ঘোষণা
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে জনমনে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতেই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাশাপাশি তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আলাপ করে এমনটি জানা গেছে। নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগের কথাও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তার এমন ঘোষণায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ-সংশয় দূর হয়েছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। 

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে নানা সন্দেহ-অবিশ্বাস জল্পনা-কল্পনা চলছিল গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই। যদিও লন্ডনে গত ১৩ জুন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর কিছুদিনের জন্য জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশ কিছু দলের বিএনপিবিরোধী তৎপরতায় নির্বাচন নিয়ে সংশয়-সন্দেহ দানা বাঁধে। কারণ এই দলগুলোর পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, সংস্কার এবং পিআর পদ্ধতি ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। 

এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নির্বাচন নিয়ে জনমনে নানা সন্দেহ ঘনীভূত হয়। অনেকে এমনও বলছেন যে, সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চাইছে না। নানা কৌশলে তারা ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চাইছে। তবে এমন নানা কথাবার্তা এবং গুঞ্জনের মধ্যেই গত বুধবার হঠাৎ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়, ‘নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক যাবতীয় প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে লোকবল নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও ক্রয়সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ শেষ করতে হবে। এ ছাড়া বিগত তিন বিতর্কিত নির্বাচনে যেসব কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন করার বিষয়টিও খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার এই নির্দেশে দলগুলোর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তার নির্দেশ অত্যন্ত ইতিবাচক বলে দলগুলো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তার নির্দেশ আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সরকার নির্বাচন দেওয়ার পথেই রয়েছে বলে দলগুলো মনে করছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব কাজ গুছিয়ে রাখার জন্য। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার। আমরা আশা করব যে, নির্বাচন কমিশন এই কাজ (নির্বাচনের প্রস্তুতি) খুব দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। এই নির্বাচন যেন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। তিনি তার দেওয়া কথা রাখার পথেই হাঁটছেন। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢেলে সাজানো, নির্বাচন কমিশনকে কাজ গুছিয়ে নেওয়ার নির্দেশ অবশ্যই ইতিবাচক।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো সংশয় ছিল না। যথাসময়ে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তার সুনাম ধরে রাখবেন বলেও আমরা বিশ্বাস করি।’

জামায়াতের ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খবরের কাগজকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ ইতিবাচক। নিরপেক্ষভাবে ভোট করতে অনেক কাজ থাকে। এ জন্য নির্বাচনের চার-পাঁচ মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হয়। এবার একটা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা জনগণের। আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।’

 ‘আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যেতে চাচ্ছি। কিন্তু বারবার একটি অপশক্তি সেই পথে বাধার সৃষ্টি করছে। কিছু দূর এগিয়ে আবার কিছু দূর পিছিয়ে যাচ্ছি’ বলে যোগ করেন জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার নির্বাচন নিয়ে জনগণের বিভ্রান্তি দূর করার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের এক ধরনের বার্তাও দিতে চেয়েছেন। তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান, আন্তর্জাতিকভাবে তার ন্যূনতম কোনো দুর্নাম হোক তা চান না ড. ইউনূস। বিশ্বজুড়ে তার যে সুনাম রয়েছে সেই সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে চান তিনি। 

এ কারণে তিনি যেনতেনভাবে আরেকটা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক সেটি কিছুতেই চান না। ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল এবং শেখ হাসিনার সময়ে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের মতো কোনো নির্বাচন হোক তিনি সেটি চান না। 

তাছাড়া নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে এক ধরনের চাপ রয়েছে। পাশাপাশি বিএনপিসহ দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই কোনো সংঘাতে যেতে চান না ড. ইউনূস। তিনি নির্বাচিত সরকারের হাতে নির্বিঘ্নে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিজের কাজে চলে যাওয়ার বিষয়ে বদ্ধপরিকর। 

সবদিক মিলিয়ে নিজের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কোনো দিকে না তাকিয়ে তার প্রেস উইংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যাপারে এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানা যায়। একই কৌশল বা মনোভাব থেকে অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপিকেও আশ্বস্ত করেছে বলে জানা গেছে। বিশেষ করে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে এপ্রিল বা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা হয়েছে। বিরোধীদের পাশাপাশি বিএনপিও এ নিয়ে নানা কথাবার্তা বলেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন করা সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপিকে আরেক দফা আশ্বস্ত করলেন ড. ইউনূস। এর মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এমন বার্তা দিলেন যে পরিস্থিতি যাই হোক নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচনের আগে ঢেলে সাজানোর বার্তা দেওয়া হলো। কারণ পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে আলোচনা আছে। তারা নির্বাচন করার মতো অবস্থায় আছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে জনমনে। ফলে এই বার্তার মধ্য দিয়েও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুনর্গঠন করতে চাইছেন প্রধান উপদেষ্টা।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘মানুষের মধ্যে নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে অনেক সংশয় ছিল বলে আমি মনে করি, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশের কারণে এখন সেই বিভ্রান্তি বা সংশয় দূর হলো। এখন মনে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের কাজ করছে এবং যথাসময়ে নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে তাদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি হোক আর এপ্রিলে হোক- এরপর আর ড. ইউনূস সরকারে থাকবেন না। যতদূর ঐক্য হয়েছে ততদূর পর্যন্ত তারা সংস্কার সম্পন্ন করবেন, বাকিগুলো ভবিষ্যতের জন্য ছেড়ে দেবেন।’ 

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের সব স্তরে এই নির্দেশ বেশ গতি সৃষ্টি করবে। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে যে সংশয় তৈরি হয়েছে, তা এর মাধ্যমে অনেকটাই কেটে যাবে।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। পুরোপুরি সংশয় দূর হয়নি। এখনো যদি কিন্তু রয়ে গেছে। কারণ এ কথাগুলো বলবে নির্বাচন কমিশন। তারা যদি বলত আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনে যাবতীয় কাজ শেষ করব, তাহলে সংশয় পুরোপুরি দূর হতো। এটাই জনগণের প্রত্যাশা ছিল।’ 

১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ নির্বাচনের ব্যাপারে একটা অগ্রগতি। চারদিকে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্ন গুজব, গুঞ্জন ও নানা চক্রান্ত চলছে। প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে নির্বাচন। আমরা তার কথা ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছি। সরকার ও নির্বাচন কমিশন যে প্রস্তুতি নিচ্ছে তাতে আমরা ধারণা করছি, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে দেশে নির্বাচন হবে। যত দ্রুত দেশ নির্বাচনের ট্র্যাকে উঠবে ততই দেশের জন্য মঙ্গলজনক।’

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘প্রথম অগ্রাধিকার হলো রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার। বিশেষ করে জুলাই গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কার। আর নির্বাচন হলো দ্বিতীয় অগ্রাধিকার। কিন্তু সরকার মৌলিক সংস্কারের ব্যাপারে কোনো কথা বলছে না। এটা জুলাইযোদ্ধাদের সঙ্গে রীতিমতো প্রতারণার শামিল। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকার তড়িঘড়ি করছে। সরকার ঘোষণা দিয়ে বলুক তারা নির্বাচন দেওয়ার জন্য এসেছে। বর্তমানে সরকার ও নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। এদের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। 

এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের বিপক্ষে নই। কিন্তু নির্বাচনের পাশাপাশি গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ দেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়ে কোনো ধারণা না দিয়ে, শুধু নির্বাচনের রোডম্যাপ দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেছে। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’

নিউইয়র্ককে জুলাই গণহত্যার চিত্রপ্রদর্শনী করবে ‘প্যাট্রয়টস অব বাংলাদেশ’

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম
নিউইয়র্ককে জুলাই গণহত্যার চিত্রপ্রদর্শনী করবে ‘প্যাট্রয়টস অব বাংলাদেশ’
ছবি: খবরের কাগজ

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগামী ৩ আগস্ট নিউইয়র্কের ডাইভার্সিটি প্লাজায় দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও চিত্রপ্রদর্শনী কর্মসূচি পালন করবে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘প্যাট্রয়টস অব বাংলাদেশ।’

বাংলাদেশ সময় বুধবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় নিউইয়র্কের একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয় প্যাট্রয়টস অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের। 

২৪'র জুলাই বিপ্লবে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাদের আত্মত্যাগের অবদানকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য দেশ-বিদেশের সব বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শহিদদের পাশাপাশি যারা জুলাই বিপ্লবে আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকার ও পরবর্তী সরকারকে করতে হবে।’ 

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে যে, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন হয়েছিল তাতে বাংলাদেশের ছাত্রজনতা ও মেহনতি মানুষের পাশাপাশি প্রবাসীরাও অংশ নিয়েছিলেন। জুলাই আন্দোলন শুধু একটি আন্দোলন ছিল না।, এটা ছিল একটা বিপ্লব। এই বিপ্লবের চেতনা ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে। যে চেতনায় পুরো জাতি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। সেই আন্দোলন পূর্ণতা লাভ করে ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পালানোর মাধ্যমে। এরপর শুরু হয় নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের জুলাইয়ের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। হাজারো শহিদদের রক্তদান ভুলে গেলে চলবে না। জুলাইয়ের এই বিপ্লবী চেতনাই হোক আমাদের আগামী দিনের পথচলার পাথেয়।’ 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিতি ছিলেন- জুলাই আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির  কনভেনার আবদুস সবুর, জাকির হাওলাদার, এ.এস.এম রহমতউল্লাহ, দেলোয়ার হোসেন শিপন, হাছান সিদ্দিকী, কমিউনিটির নেত্রী বেগম শাহানা, ইকনার সোস‍্যাল জাস্টিস ডাইরেক্টর ড. মাহতাব উদ্দিন, কমিউনিটি লিডার মোশাররফ সবুজ, জামাইকার আবদুল গনি, মুক্তিযোদ্ধা ফরহাদ আহম্মেদ , সালেহ মানিক, মুধা মোহাম্মদ জসিম, কলামিস্ট তাহের ফারুকী প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সুমন/

ফ্যাসিবাদীদের বিচার ও সংস্কার অপরিহার্য: নাহিদ ইসলাম

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪১ পিএম
ফ্যাসিবাদীদের বিচার ও সংস্কার অপরিহার্য: নাহিদ ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে জনগণের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, মানুষ পরিবর্তন চায়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখেছি, তা বাস্তবায়নে ফ্যাসিবাদীদের বিচার, দেশের মৌলিক সংস্কার এবং একটি নতুন সংবিধান অপরিহার্য।’

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) পদযাত্রার দশম দিনে মাগুরা শহরের ভায়না মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, ‘৩ আগস্টের মধ্যে আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ দেখতে চাই। সরকার বা রাজনৈতিক শক্তি ব্যর্থ হলে আমরা ছাত্র ও জনতাকে নিয়ে আবার রাজপথে নামব।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘আমরা মাগুরায় এসেছি একটি বার্তা নিয়ে, তা হলো এলাকার উন্নয়ন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব রোধে মানুষকে সচেতন হতে হবে। এই জেলার দশজন মানুষ জুলাই গণ-আন্দোলনে শহিদ হয়েছেন। তাদের রক্তের মর্যাদা দিতে হবে।’

পথসভায় এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একবছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বিশেষ কর্মসূচি পালিত হবে। এই কর্মসূচিতে মাগুরাবাসীসহ সারা দেশের মানুষকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, তাসনিম জারা, সাদিয়া ফারজানা দিনাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ থেকে গাড়িবহর নিয়ে মাগুরা পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। ওই সময় শহরের ইছাখাদা বাজারে তাদের সংবর্ধনা জানান স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। পরে ভায়না মোড় চত্বরে তারা পথসভা করেন। এ দিন সকাল থেকেই ভায়না মোড়ে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যায়। অনেকেই কেন্দ্রীয় নেতাদের একনজর দেখতে ভিড় করেন। পথসভা শেষে নেতা-কর্মীরা নড়াইলের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টাকে বন্যাদুর্গত এলাকা সফর ও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান এবি পার্টির

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টাকে বন্যাদুর্গত এলাকা সফর ও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান এবি পার্টির
দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের সঙ্গে সাক্ষাতে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। ছবি: খবরের কাগজ

দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাম্প্রতিক বন্যায় উদ্বেগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই)  দুপুরে সচিবালয়ে উপদেষ্টার দপ্তরে দেখা করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ অনুরোধ জানান।

এ সময় মজিবুর রহমান মঞ্জু ত্রাণ উপদেষ্টাকে দুর্যোগকবলিত এলাকা পরিদর্শনের আহ্বান জানান। এ ছাড়া ফেনী জেলার সদর উপজেলা, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সোনাগাজী এবং নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও পিরোজপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল এবং আকস্মিক বন‍্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ‘গত বছরের বন্যার পর যথাসময়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে এবার আকস্মিক বন্যার কবলে পড়তে হত না।’

এ সময় তিনি, মুছাপুর ক্লোজার এবং বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণে সরকারের অবস্থান জানতে চান মঞ্জু। 

এ ছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত ও বাধাহীন করার ওপর গুরুত্ব দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ও বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অনিয়ম হলে সেগুলো তদন্ত করে বের করা দরকার।’ 

২৪শের বন্যার পর সরকারের বরাদ্দ দেওয়া বিপুল অঙ্কের টাকা যথাযথভাবে কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা চান এবি পার্টির চেয়ারম্যান। 

জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতায় কোন ঘাটতি নেই, উপজেলা পর্যায়ে যথেষ্ট ত্রাণ সামগ্রী মজুত আছে। তিনি জেলা প্রশাসকদের  সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সময় বৃষ্টি কমে আসলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। যাদের কৃষি জমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিপূরণের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।