
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে মায়ানমারের রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠাতে জাতিসংঘের প্রস্তাবে শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ রাজি হয়েছে। তবে শর্তাবলির বিষয়টি পরিষ্কার করেনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান রাখাইনের মানবিক করিডর দেওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে জামায়াত আমির এ আহ্বান জানান।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, রাখাইনের সঙ্গে মানবিক করিডরের বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এ বিষয়টি জাতির সামনে স্পষ্ট করা দরকার। কারণ এর সঙ্গে অনেক নিরাপত্তা বিষয় জড়িত থাকতে পারে।
এদিকে জাতীয় স্বার্থে দল-মতনির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিজয় আসবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। দেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে জাতির স্বার্থে জাতীয় ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হলে এ জাতি বিজয়ী হবে। এতে ব্যক্তিপর্যায়ে কেউ পরাজিত হলেও জাতির বিজয় হবে।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘মাওলানা আব্দুস সুবহান: তৃণমূল থেকে শীর্ষে’ এক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। বইটির লেখক আলী আহমাদ মাবরুর।
মাওলানা আব্দুস সুবহানের ব্যক্তিত্ব দল-মতনির্বিশেষে সবাইকে মুগ্ধ করত বলে মন্তব্য করে জামায়াতের আমির বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে কনডেমড সেলে মৃত্যুর অপেক্ষায় থেকেও মাওলানা আব্দুস সুবহান কখনো ভয় পাননি। জেলে থাকা অবস্থায়ও তিনি কারাগারে থাকা সবার খোঁজখবর রাখতেন। নেতৃত্ব দিতে হলে মানুষকে বুঝতে হয়, এটার আজ বড় অভাব। মাওলানা আব্দুস সুবহান জেলে গিয়েও মানুষের সমস্যা সমাধান করতেন। তিনি ফাঁসির রায় শুনেও প্রশান্ত ছিলেন। দেশকে, মানুষকে ভালোবাসলে কেউ পালিয়ে যায় না। জামায়াত নেতারা তা প্রমাণ করেছেন।
শফিকুর রহমান বলেন, কেউ যদি দেশকে ভালোবাসে, দেশের জনগণকে ভালোবাসে, তাহলে সে দেশ ছেড়ে পালাতে পারে না।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, জুলাই বিপ্লবের বিতাড়িত সরকার আব্দুস সুবহানকে অপমানিত করতেই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি করেছিল। তবে আজ সেই আওয়ামী লীগই অপমানিত হয়ে দেশ থেকে পালিয়েছে।
সাঈদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম সাঈদী বলেন, ‘জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দিয়ে তারা চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশ থেকে ইসলামী আন্দোলনকে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার। গত বছরের আগস্টে সেই চেষ্টাও তারা করেছিল। কিন্তু তারা সে চেষ্টায় সফল হয়নি। বরং আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশের মানুষের অন্তর থেকে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।’
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার আমির সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘তৎকালীন রাষ্ট্র পরিচালনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। বাংলাদেশে এখনো যারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, ফ্যাসিবাদকে যারা উসকে দিচ্ছে এবং ফ্যাসিবাদী ভাষায় যারা তৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে এ দেশের ১৮ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে।’