ঢাকা ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

বরিশাল-লালমনিরহাটে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৩:১৭ পিএম
আপডেট: ০২ জুন ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম
বরিশাল-লালমনিরহাটে জাপা কার্যালয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ

বরিশাল ও লালমনিরহাটে জাতীয় পার্টির (জাপা) কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বরিশালে গত শনিবার (১ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর ফকির বাড়ি রোডে জাপার জেলা ও মহানগর কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। 

অন্যদিকে শনিবার রাতে লালমনিরহাট শহরের আলোরুপা মোড়ে জাপার জেলা কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

বরিশালে হামলার ঘটনার সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন জাপার চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল।

রবিবার বেলা ৩টার দিকে তিনি বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জি এম কাদেরের বাসভবনে হামলার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। মিছিল শেষে দলটির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে একদল যুবক তাদের ওপর হামলা চালায়। প্রতিরোধে জাপার নেতা-কর্মীরা পাল্টা হামলা করেন। এ সময় একজনকে মেরে পুলিশে দিয়েছেন জাপা নেতারা। 

ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা নগরীর ফকির বাড়ি রোডে জাপার কার্যালয়ে ভাঙচুর চালান। হামলায় জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল, জেলা সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট এম এ জলিল, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম গফুর, আক্তার রহসান সফরু, তরুণ পার্টির আহ্বায়ক জুম্মান হায়দার আহত হন। এর মধ্যে জুম্মান হায়দারকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বরিশাল মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম সাগর জানান, বিকেলে জাতীয় পার্টি নগরীতে মিছিল বের করে। এ সময় তারা গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের নিয়ে কটূক্তি ও সরকারের সমালোচনা করে স্লোগান দিতে থাকে। গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারবিরোধী স্লোগান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান। হামলায় আমাদের ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন। এর মধ্যে ৭ জনের অবস্থা গুরুতর।   

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ২০০-২৫০ জনের বিরুদ্ধে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।  

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, হামলার ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে জাপার লোকজন একজনকে মারধর করে আহতাবস্থায় পুলিশে দিয়েছে। তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

লালমনিরহাটে জাপা অফিসে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে ৫-৭টি মোটরসাইকেলে ১৪-১৫ জন লোক এসে জাপার কার্যালয় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ঘটনাস্থলে আসা লালমনিরহাট পৌর জাতীয় পার্টির  আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে এসে দেখি অফিস পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’ কারা এ ঘটনা ঘটাতে পারে তা নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বিষয়টি দলীয় উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে বলে জানান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টাকে বন্যাদুর্গত এলাকা সফর ও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান এবি পার্টির

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টাকে বন্যাদুর্গত এলাকা সফর ও ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান এবি পার্টির
দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের সঙ্গে সাক্ষাতে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। ছবি: খবরের কাগজ

দুর্যোগ ব‍্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সাম্প্রতিক বন্যায় উদ্বেগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই)  দুপুরে সচিবালয়ে উপদেষ্টার দপ্তরে দেখা করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ অনুরোধ জানান।

এ সময় মজিবুর রহমান মঞ্জু ত্রাণ উপদেষ্টাকে দুর্যোগকবলিত এলাকা পরিদর্শনের আহ্বান জানান। এ ছাড়া ফেনী জেলার সদর উপজেলা, পরশুরাম, ফুলগাজী ও সোনাগাজী এবং নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও পিরোজপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অতিবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল এবং আকস্মিক বন‍্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ‘গত বছরের বন্যার পর যথাসময়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে এবার আকস্মিক বন্যার কবলে পড়তে হত না।’

এ সময় তিনি, মুছাপুর ক্লোজার এবং বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণে সরকারের অবস্থান জানতে চান মঞ্জু। 

এ ছাড়া পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত ও বাধাহীন করার ওপর গুরুত্ব দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ও বন্যা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অনিয়ম হলে সেগুলো তদন্ত করে বের করা দরকার।’ 

২৪শের বন্যার পর সরকারের বরাদ্দ দেওয়া বিপুল অঙ্কের টাকা যথাযথভাবে কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা চান এবি পার্টির চেয়ারম্যান। 

জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতায় কোন ঘাটতি নেই, উপজেলা পর্যায়ে যথেষ্ট ত্রাণ সামগ্রী মজুত আছে। তিনি জেলা প্রশাসকদের  সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

দাবিগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ সময় বৃষ্টি কমে আসলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। যাদের কৃষি জমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিপূরণের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

রাজশাহী জেলা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৩ পিএম
রাজশাহী জেলা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রে যৌন হয়রানির অভিযোগ
রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকারের (৭৪) বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জেলা মহিলা দলের এক নেত্রী তার বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাব ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) অভিযোগপত্রটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গৃহীত হয়। এর অনুলিপি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস এবং রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগপত্রে ওই নেত্রী দাবি করেন, বিশ্বনাথ সরকার গত চার মাস ধরে তাকে একাধিকবার অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করেছেন। সাংগঠনিক যোগাযোগের সূত্রে বিশ্বনাথ সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তবে বিশ্বনাথ সরকার তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে ভারতীয় চিকিৎসা ভিসার প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার বাসায় ও হোটেলে দেখা করার অনৈতিক প্রস্তাব দেন।

ভুক্তভোগী নেত্রী জানান, তিনি অভিযোগটি সরাসরি জেলা নেতাদের জানালেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তাকে চুপ থাকার জন্য চাপ প্রয়োগ ও আর্থিক প্রস্তাব দেওয়া হয় বলে অভিযোগে দাবি করা হয়েছে। অভিযোগের সঙ্গে কথোপকথনের কয়েকটি অডিও ক্লিপও যুক্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।’

অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বনাথ সরকার জানান, তার বয়স ৭৩ থেকে ৭৪ বছর। দলের নেতাকর্মীদের তিনি নিজের সন্তানের মতো দেখেন। দলীয় কাজেই যোগাযোগ হয়েছে, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই।

সুমন/

ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ ইতিবাচক: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৫ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম
ডিসেম্বরে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ ইতিবাচক: মির্জা ফখরুল
ছবি: খবরের কাগজ

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএফইউজে ও ডিইউজে।

প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার। আমরা আশা করব নির্বাচন কমিশন এই কাজটা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে নির্বাচনের একটা পরিবেশ তৈরি করবে। আমরা দাবি করছি যে, এই নির্বাচনে যেন সবার কাছে অবাধ-নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়।’

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক নির্ধারণের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশ-জাতি বড় সমস্যায় আছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। এই পোশাক রপ্তানিতে যদি ৩৫ শতাংশ শুল্ক আসে তাহলে পোশাক শিল্প মাটিতে শুয়ে পড়বে। দাঁড়াতে পারবে না। আমাদের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার কতটুক এ বিষয়ে মনোযোগ দিয়েছেন জানি না। যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার প্রয়োজন ছিল। তবে সময় এখন চলে যায়নি। এখনো সময় আছে, এ বিষয়গুলো বিবেচনা করার। আমাদের শিল্প যেনে বেঁচে থাকে, কর্মসংস্থান যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এই বিষয়টা সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।’

আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা সংসদ নির্বাচন করতে চাই। যদি সংসদ নির্বাচন না হয়, তাহলে দেশে একটি অন্ধকারের শক্তি আবার ক্ষমতায় আসবে। নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি একটি নির্বাচন হবে, এবং সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিজেরাই প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি না করি, তাহলে তাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। যারা অন্যায় করেছে তাদের কুকীর্তি এবং গত ১৫ বছরে তাদের কর্ম ও কথার প্রমাণ, তাদের পক্ষে নতুন কোনো রাজনৈতিক ন্যারেটিভ তৈরি করা অসম্ভব করে তুলেছে। যেসব যুবক এই সাম্প্রতিক আন্দোলনগুলোতে অংশ নিয়েছে, যারা গড়ে আরও ৫০ বছর বেঁচে থাকবে, তারা তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না।’ 

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতের ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/সুমন/

জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্তে বিএনপিতে ফের আলোচনা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্তে বিএনপিতে ফের আলোচনা
সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে এই শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটি। গত মঙ্গলবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্তে সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো নতুন প্রস্তাব নিয়ে আবারও আলোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। তবে প্রস্তাবিত খসড়াটি বড় হওয়ায় আরও বিস্তারিত আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চায় দলটি। এরপর ওই সিদ্ধান্ত তারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জানাতে চায়। 

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে বিএনপির যথেষ্ট আন্তরিকতা রয়েছে বলে বৈঠকে অভিমত প্রকাশ করা হয়। 

বিএনপি এটিকে ‘ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দলিল’ হিসেবেও দেখতে চায়। তবে ঘোষণাপত্রের ১ নম্বরে মুক্তিযুদ্ধকে রাখার প্রস্তাব করেছে বিএনপি। বৈঠকে কয়েকজন নেতা অভিমত দেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে এমন কিছু প্রস্তাব বা কথা রয়েছে, যা আসলে আলোচনায় আনারই প্রয়োজন ছিল না। এসব প্রস্তাব দেশের জনগণ মানবে না। তবে বিশদ আলোচনার পরই ভেবে-চিন্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এ জন্য গতকাল বুধবার রাতেও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আবারও বৈঠক করেছেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঘোষণাপত্রে আমরা প্রথমেই মহান স্বাধীনতার বিষয়টি অ্যাড্রেস করেছি, ৭ নভেম্বরের বিপ্লব ও সংহতি দিবস, ১৯৯০ সালের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অভ্যুত্থান এবং ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে আমরা গুরুত্ব-সহকারে উপস্থাপন করেছি। জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য বিএনপির প্রস্তাব দেওয়ার ৪ মাস পেরিয়েছে। অভ্যুত্থানেরও প্রায় এক বছর চলছে। এ অবস্থায় সরকার কবে ঘোষণাপত্র জারি করবে তা এখনো জানায়নি।’

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের রিপোর্ট পেশ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। সংসদে উচ্চকক্ষ গঠন পদ্ধতি, নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, নারীদের ১০০ আসনে কয়েকটি দলের সরাসরি ভোট চাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। তবে বিএনপি প্রচলিত পদ্ধতিতে সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচিত করার পক্ষে। পাশাপাশি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নয়। কারণ এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জনগণ জানতে পারবেন না তার এলাকার জনপ্রতিনিধি কে। তাহলে তারা কাকে ভোট দেবেন?  

 বৈঠকে দুজন সদস্য বলেন, সংস্কার কমিশনে প্রতিদিনই একই ধরনের আলোচনা হচ্ছে। অনেক বিষয়ে বিএনপি ঐকমত্য হয়েছে। কমিশনের সব প্রস্তাবে যদি একমত পোষণ করতে হয়, তাহলে তো আরেকটা বাকশাল হয়ে গেল। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো কেন সরকার বাস্তবায়ন করছে না। এটাও তো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছার জন্য বিএনপির প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং অনেক বিষয়ে ছাড় দিয়ে হলেও একমত হয়ে কমিশনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রয়াসকে সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার পর সংস্কার কমিশনগুলো যেসব প্রস্তাব পেশ করেছে, তার বিপরীত কিংবা নতুন নতুন প্রস্তাব উত্থাপন এবং তা নিয়ে অনেক সময় অচলাবস্থা সৃষ্টির কারণে কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী বলেই বিএনপির প্রতিনিধিরা ধৈর্য ধরে আলোচনা শুনছেন এবং তথ্য-প্রমাণ ও যুক্তি দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে কমিশনকে সহযোগিতা করছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জুলাই সনদ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তরিকতা দেখিয়েছে বিএনপি। আমরা জাতীয় মূলনীতির ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি যে আমরা কোন বিষয়ে একমত।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছ থেকে প্রস্তাব এসেছে তারা আবারও আলোচনা করবেন। আমরাও আলোচনায় আগ্রহী।’

জানা গেছে, রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার ( ৭জুলাই) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে এই বৈঠক শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক শেষ হয় রাত ১১টার দিকে। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। 

উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে ঐকমত্য না হওয়া এমন প্রায় ২০টি মৌলিক বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু হয় গত ৩ জুন। এখন পর্যন্ত ১০ দিনে আলোচনা হয়েছে মোটাদাগে ১৫টি বিষয়ে। এর মধ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিধান নিয়ে আইন প্রণয়ন, নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ, বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ এবং উপজেলা পর্যায়ে অধস্তন আদালত স্থাপন- এসব বিষয়ে একমত হয়েছে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো। তবে এনসিসি বা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, রাষ্ট্রের মূলনীতি, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনব্যবস্থা, নারী আসন, সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন পদ্ধতির মতো মৌলিক বিষয়ে এখনো বিপরীতমুখী অবস্থানে দলগুলো। দুদক সংস্কার কমিশনের ৪৭ সুপারিশের ৪৬টিতে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২০৮ সুপারিশের ১৮৭টিতে, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের ৮৯ সুপারিশের ৬২টিতে এবং নির্বাচনিব্যবস্থাবিষয়ক সংস্কার কমিশনের ২৪৩ সুপারিশের মধ্যে ১৪১টিতে একমত বিএনপি। এ ছাড়া আরও ২৮টি প্রস্তাবে আংশিক একমতও পোষণ করেছে বিএনপি। মোটাদাগে সংস্কার কমিশনের ৫৮৭ প্রস্তাবের মধ্যে ৪৩৬টি প্রস্তাবে একমত পোষণ করেছে বিএনপি।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম হবে: অ্যাড. জুবায়ের

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০১:২৪ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪১ পিএম
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম হবে: অ্যাড. জুবায়ের
ছবি: খবরের কাগজ

আগামী ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর ‘জাতীয় সমাবেশে’ লক্ষাধিক নেতা-কর্মীর সমাগম হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে ডিএমপির সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এ কথা জানান। 

এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী প্রচার সেক্রেটারি আবদুস সাত্তার সুমন প্রমুখ। 

এহসানুল মাহবুব বলেন, ‘৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১৯ জুলাই (শনিবার) বেলা ২টায় রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ সফল করে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, উক্ত সমাবেশে সারা দেশ থেকে লাখ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটবে এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সিভিল সোসাইটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করবেন।’ 

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সমাবেশে অংশগ্রহণ করার জন্য সারা দেশ থেকে লাখ লাখ লোক এবং শত শত যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করবে। এমন অবস্থায় বাড়তি লোক ও যানবাহনের জন্য অতিরিক্ত ট্রাফিকের ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা এবং শান্তিপূর্ণভাবে ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা ডিএমপির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছি এবং তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।’

শফিকুল/পপি/